পাগল মানুষ
পরিচালনা : প্রয়াত এম এম সরকার, বদিউল আলম খোকন
অভিনয়ে : শাবনূর, শাহের খান, মিশা সওদাগর, ডন, রেবেকা, বিপাশা কবির, শিবা শানু, কাবিলা, ইলিয়াস কোবরা, সাদিয়া আফরিন ও আসিফ ইকবাল।
রেটিং : ০.৫/ ৫
চকচক করলেই যেমন সোনা হয়না, তেমনি ভাঙা কাঁচ দেখেও যে সবসময় ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে-তাও নয়। ভাঙা কাঁচের মধ্যেও তো থাকতে পারে সৌন্দর্য। শুধুমাত্র এ বিশ্বাস মাথায় রেখেই প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছয় বছর পুরনো ছবি ‘পাগল মানুষ’ দেখতে গিয়েছিলাম।
সেকেলে পোস্টার কিংবা মস্তিষ্ক বেদনাদায়ক ট্রেলার দেখেও ‘পাগল মানুষ’-এর ব্যাপারে আমি কখনো আশাহত হইনি। বরং প্রিয় নায়িকা শাবনূরকে দীর্ঘদিন পর বড় পর্দায় দেখবো বলে অতি উৎসাহী হয়েছিলাম। যদিও আমি নিশ্চিত, আমার মত ‘পাগল মানুষ’-ও (দর্শক) এ ছবি নিয়ে যতটা আগ্রহী ছিল, ছবির প্রযোজক কিংবা অন্যরাও ততটা ছিলেন না। বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক খুঁজেও এ ছবির প্রেক্ষাগৃহের তালিকা পাইনি। সবাই যেন ধরেই নিয়েছিলেন, এ ছবি কেউ দেখবেন না। প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকার জাঁদরেল সাংবাদিক থেকে শুরু করে অনেক নির্মাতাকে পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করেছি ছবিটি কোথায় চলছে? সাহায্য করতে পারেননি কেউই। পরবর্তীতে এ ছবি সংশ্লিষ্টই একজন জানান, ঢাকার অভিসার, আনন্দ, সেনা অডিটোরিয়াম, সনি প্রেক্ষাগৃহে চলছে ‘পাগল মানুষ’।
হাতে সময় কম ছিল বলে নিকটস্থ সনি সিনেমা হলে উপস্থিত হই। কিন্তু হায়! সেখানে ‘পাগল মানুষ’ নয়, চলছে শাকিব খানের ‘অহংকার’। বাধ্য হয়েই আবারো গাড়ি ঘোরালাম। ছুটলাম সেনা অডিটোরিয়ামের উদ্দেশ্যে। সম্পূর্ণ ডিজিটাল বলা হলেও জীর্ণশীর্ণ এই প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করে নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল। তারপরও নিজেকে প্রবোধ দিলাম, আজ আমাকে যে করেই হোক ‘পাগল মানুষ’ দেখতেই হবে। অবশ্য বাংলা ছবির জন্য নিবেদিতপ্রাণ ‘পাগল দর্শক’ সেদিন আমি একাই ছিলাম না, খেটে খাওয়া আরো অনেক ‘পাগল মানুষ’কে পেয়েছিলাম সঙ্গী হিসেবে, যারা নির্মাতাদের বিশ্বাস করে কষ্টার্জিত টাকায় টিকেট কেটে ঐ শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হয়েছিলেন।
আগেই জেনেছি ‘পাগল মানুষ’ এর নির্মাতা এম এম সরকার মারা যাবার পর পরবর্তীতে এ ছবির হাল ধরেন তারই শিষ্য সফল নির্মাতা বদিউল আলম খোকন। দুজনই সফল মানুষ, সফল পরিচালক। ১৯৮৩ সালে ‘নবাব’ নির্মাণ করে আলোচনায় আসা এম এম সরকারকে দেখেছি সালমান শাহ-শাবনূরকে নিয়ে ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ পরিচালনা করতে। বদিউল আলম খোকনের ঝুলিতেও হিট ছবির সংখ্যা ম্যালা। অথচ এই দুই সফল নাম একটি ছবির সঙ্গে যুক্ত থাকার পরও শেষ রক্ষা হয়নি ‘পাগল মানুষ’-এর। অজুহাত আসতে পারে-৬ বছর পুরনো ছবি, একটু তো সেকেলে হতেই পারে। তবে মূল সমস্যা সময়ে নয়, গল্প বলায়।
২০১২ সালেই তো আমরা পেয়েছিলাম চোরাবালি, দ্য স্পিড, খোদার পরে মা, মোস্ট ওয়েলকাম, ভালোবাসার রঙ, লালটিপ-এর মত ছবি। অথচ একই সময়ে শুটিং শুরু হওয়া ‘পাগল মানুষ’ এর গল্প ’৮০র দশকের গল্পকেও হার মানায়। দুঃখজনক হলেও সত্যি, এ ছবির একটি দৃশ্যও আমি পাইনি যে দৃশ্যে আবেগ আছে, বোধ আছে, বিনোদন আছে। এই গল্পে নায়ক শাহের খান কাঁদলে দর্শক হাসেন। প্রেমের সংলাপ বললে দর্শক অশ্রাব্য গাল দেন। দর্শকেরও বা কি দোষ? তারা নায়ককে নায়কোচিত ভঙ্গিমায় সুপুরুষের বেশে দেখতে চান। অথচ এখানে বেশির ভাগ দৃশ্যেই নায়ক নায়িকার কাছ থেকে রূপসজ্জার উপকরণ ধার করে নিজেকে সাজিয়েছেন। চড়া মেকআপের সাগরে হাবুডুবু খেয়েছেন। নায়িকা যতটা লিপস্টিক ব্যবহার করেছেন, নায়কও তার সাথে পাল্লা দিয়েছেন। চড়া আইশ্যাডো, কানের দুল, লিপস্টিকের বাহুল্য তো ছিলই, বেশ কয়েকটি দৃশ্যে বলিউডের হৃতিক রোশানের ‘কৃষ’-ছবির সিগনেচার কস্টিউমেরও অদ্ভুত নকল পোষাক গায়ে জড়িয়েছেন তিনি। নায়িকার সাথে প্রেমের সংলাপ বলার সময় তার মুখের চেয়ে ভুঁড়ি এগিয়ে ছিল বেশ কিছু দৃশ্যে। সচরাচর বানিজ্যিক ছবিতে নায়িকার দেহসৌষ্ঠব দেখাবার চেষ্টা করেন নির্মাতারা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস: ‘পাগল মানুষ’ ছবির পাগল দর্শকদের (!) একটি দৃশ্যে নায়কের পশ্চাতদেশের ক্লিভেজ দেখতে হয়েছে। শুধু কি তাই, কিশোর কমেডি অভিনেতার আগুনে পুড়ে যাওয়া নিতম্বও দেখানো হয়েছে এ ছবিতে।
মেকআপের প্রতিযোগিতায় অবশ্য দ্বিতীয় নায়ক আসিফ ইকবালও কম যাননি। কুৎসিত একটি পরচুলা মস্তকে জড়িয়েছেন, নায়িকাদের চেয়েও কড়া লিপস্টিক ব্যবহার করেছেন। খুব সম্ভবত তিনি পণ করেছিলেন, জান দেবেন তবু লিপস্টিক ছাড়বেন না। আর এ কারণেই মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী হবার দৃশ্য হোক কিংবা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে থাকার দৃশ্য হোক-আসিফ ইকবাল একটিবারও এই লিপস্টিকের রঙ হালকা করেননি। শুধু তাই নয়, ছবিতে সবাই আসিফকে ‘সোহেল’ সম্বোধন করেন। কিন্তু তার পুলিশের পোষাকের নেমপ্লেটে লেখা ‘ইকবাল’। মেনে নিলাম, হয়তো তার পুরো নাম সোহেল ইকবাল। কিন্তু গণহারে সবাই তাকে সোহেল বলেই ডাকে কেন? একটি মানুষও কি এই পৃথিবীতে নেই, যিনি পুলিশ ইন্সপেক্টরকে ইকবাল বলে ডাকতে পারেন? এই নায়ক আবার দ্বিতীয় নায়িকাকে রক্ষা করতে গিয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী হন। অবশ্য হাসপাতালের বিছানায় বিশ্রাম নিতে নারাজ তিনি। বরং শুয়ে শুয়ে নায়িকার সাথে লুডু খেলার প্রতি তার সমস্ত মনোযোগ।
দ্বিতীয় নায়িকা অর্থাৎ এ ছবিতে নায়কের বোনের অবস্থা আরো শোচনীয়। তিনি পণ করেছিলেন, পৃথিবী ধ্বংস হলে হোক, কিন্তু কমলা রঙের ঐ নির্দিষ্ট পোষাক পড়েই তিনি ছবির অধিকাংশ দৃশ্যে অভিনয় করবেন। সঙ্গে একই কানের দুল, একই সাজ। এই দৃশ্যগুলোও অতি বিস্ময়কর। হোক সেটা নায়কের বাড়ি কিংবা নায়িকার, পুলিশ স্টেশন, মহিলা হোস্টেল, বার অথবা হাসপাতাল-সবকিছুই বিএফডিসি’র আঙিনায় মিলেমিশে একাকার। তাছাড়া ‘হোস্টেল’ শব্দের সঙ্গে আমরা পরিচিত। কিন্তু ‘হোষ্টেল’ কি? বানানের ব্যাপারে আমরা কবে আরেকটু সচেতন হবো? জহির রায়হান কালার ল্যব, ঝর্ণা স্পট, ডাবিং থিয়েটার-বিএফডিসি’র কোনো অলিগলিই বাদ যায়নি এ ছবিতে। অবাস্তব, অদ্ভুত এসব সেট এবং কাচের গুড়োগুড়ো হওয়া ভিএফএক্স দেখে আমার পাশে বসা ঝালমুড়িওয়ালাও হাসছিলেন। কারণ এই তুলোর সেটে অ্যকশন দৃশ্য দেখা আর সি-গ্রেডের ‘উদ্ভট’ কার্টুন ছবি দেখা একই কথা। এই ছবিতে নায়কের হাত শূণ্যে ওঠা মানেই এলোমেলো বাতাসে খলচরিত্রের গালে ঢেউ তোলা।
মেকআপের সব বাজেট লিপস্টিকে ব্যয় করা হয়েছে বলেই কিনা জানিনা, ছবিতে ব্যবহৃত রক্তে লাল রঙের পরিমাণও ছিল কম, পানির পরিমাণ ছিল বেশি। জোড়া তালি গল্পের পুরোটা জুড়েই ছিল নানা ধরনের অসঙ্গতি: এ গল্পে নায়ককে বনে জঙ্গলে গাছের সঙ্গে জড়িয়ে হাতকড়া পড়ান দ্বিতীয় নায়ক। সেই মোমের (!) হাতকড়া আবার কোদাল দিয়ে এক চান্সেই বিয়োগ করেন নায়িকা। শেষ ক্লাইমেক্সে বাবা আছফ খানের (মিশা সওদাগর) সঙ্গে দীর্ঘদিনের হিসাব নিকাষের ফয়সালা করতে হাজির মেয়ে রানী (শাবনূর)। এই দৃশ্যে নায়িকার বাবা আবার নায়িকার মাকে অর্থাৎ নিজের স্ত্রীকে অপহরণ করেন। বিদ্রোহিনী নায়িকার বাবার ওপর রাজ্যের রাগ। পরিস্থিতি থমথমে, কিন্তু কী অদ্ভুত! মা-বাবা এবং তেজস্বিনী কন্যা (নায়িকা) তিনজনই এই অ্যাকশন দৃশ্যেও ম্যাচিং করে নীল আর লাল রঙয়ের পোষাক পড়েন। যিনি পোষাক পরিকল্পনা করেছেন, তিনি কি বুঝে অ্যকশন দৃশ্যে তিনজনকে এই দৃশ্যে এমন পোষাক পড়ালেন-খুব জানতে ইচ্ছে হয়। প্রতিশোধের নেশায় মত্ত নায়কের একের পর এক খুন মহামান্য আদালত খুব সহজেই ক্ষমা করে দেন। মাত্র দুই বছরের সাজা ভোগের পর বেরিয়ে আসেন রবি, এ ছবির নায়ক। চলচ্চিত্রে নির্মাতার সিনেমাটিক লিবার্টি থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে এতটা স্বাধীনতা নেয়া আমাদের দর্শকদের জন্য রীতিমত বিস্ময়কর। চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ রচয়িতাও এ ছবিতে আমাকে বিস্মিত করেছেন। মিশা সওদাগরের একটি কুরুচিপূর্ণ সংলাপ প্রায় ডজনখানেকবার ব্যবহার করা হয়েছে (লুজ মোশন পেট ঢিলা/ কাপড় নষ্ট, বড়ই কষ্ট)। আমজনতাকে বিনোদন দেবার নিমিত্তে যে সংলাপ লেখা হয়েছে, তা সত্যি জনতার মন যুগিয়েছে কিনা-ছবি সংশ্লিষ্টরা দয়া করে প্রেক্ষাগৃহে এসে দেখে যান। কারণ আমি দেখেছি এ ছবি দেখে খেটে খাওয়া মানুষদের পর্দায় বোতল ছুঁড়ে মারতে। সরল দর্শকরা শুধুমাত্র বাংলা ছবিকে ভালোবেসে প্রিয় নায়িকার ছবি দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শুরু থেকে শেষ প্রতারিত হয়েই দর্শকদের ফিরতে হয়েছে। শাবনূরের অনুপস্থিতি পূরণ করার জন্য একের পর এক অপ্রয়োজনীয় চরিত্র ও গানের যোগান দেয়া হয়েছে। ছবিতে নায়িকা শাবনূরের ঠোঁটে গান রয়েছে মাত্র একটি। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কথা ও সুরে ‘মেঘ ডাকছে ডাকুক’ গানের শুরুর হামিংয়ের সঙ্গে আবার হিন্দি ‘ধুম’ ছবির ‘কোয়ি নেহি হ্যয় কামরে মে’ গানের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে সার্বিকভাবে এ গানটি আমার মন ছুঁয়ে গেছে। গানের কথা, সুর এবং বিশেষ করে ন্যান্সি ও এস আই টুটুলের কণ্ঠ এক কথায় অপূর্ব। যদিও গানের দৃশ্যায়ণ এবং শাবনূরের স্থূল শারিরীক গড়ন আমাকে আশাহত করেছে। ছবির বাকি গানগুলো অবশ্য শুধুমাত্র আশাহত বললে ভুল হবে, হতাশার ষোলকলা পূর্ণ করেছে। গানের কথা ছিল: ওরে মাইয়ারে তোর বিজলী জ্বলা রূপ/ জইল্যা পুইড়া যাইতে আছি থাহিস না আর চুপ কিংবা আজ রাতে করবি যা কর না, পেয়ার কিয়া তো হায় কিউ অ্যয়সা ডারনা, সুখ পাবি এই হাত দুটি ধরনা! সত্যিই কী বিচিত্র চলচ্চিত্র, কী বিচিত্র গানের কথা, বিচিত্র শিল্পীদের অভিনয়।
চিত্রনায়ক শাহের খান এ ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ঠিক, তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি অভিনয়ের প্রাথমিক পাঠ-ও তিনি শিখে আসেননি। এতটা সাহস তিনি না দেখালেও পারতেন। তাছাড়া এ ছবিতে তিনি ডাবিংও করেননি। যিনি ডাবিং করেছেন, অধিকাংশ দৃশ্যে ডাবিং মেলেওনি। অতিথি দৃশ্যে বিপাশা কবিরের সংলাপও ডাবিং শিল্পী দিয়েছেন। দৃষ্টিকটু ছিল। মিশা সওদাগর তার স্বভাবসুলভ অভিনয় করেছেন। তবে চমক দেখানোর মত সুযোগ পাননি।
এবার আসি শাবনূরের কথায়। ২০১৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় দেখেছিলাম তাকে। এরপর প্রায় ৫ বছরের বিরতি। কিন্তু যে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শাবনূরকে আমরা ফিরে পেলাম, তা না দেখতে পেলেই বোধ হয় শাবনূর ভক্তদের জন্য ভালো হতো। কথায় আছে সাফল্য অর্জন করা সহজ, কিন্তু তা ধরে রাখা কঠিন। এ ব্যাপারে শাবনূর এবং দর্শক প্রিয় তারকাদের আরো সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। নতুন নায়কদের বিপরীতে কাজ করা অবশ্যই সাহসিকতার ব্যাপার। শাবনূর এর আগেও নতুন নায়ক সাব্বির, শামস, মাসুদ শেখ, শাহরিয়ার নাজিম জয়, শাহেদ শরীফ খান, এসডি রুবেল, আমান, রাশেদ মোর্শেদের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। কিছু ক্ষেত্রে সফল, কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তবে ‘পাগল মানুষ’ ছবির নায়ক কিংবা এ ছবির গল্পে কিংবা ‘রানী’ চরিত্রে শাবনূর ২০১২ সালে কি দেখেছিলেন-জানতে ইচ্ছে করে। এক সাক্ষাতকারে সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘পাগল মানুষ’ একদম ভিন্ন ধরনের গল্প। কোন কোন দিক দিয়ে ভিন্ন এ প্রশ্নটিও শাবনূরের উদ্দেশ্যে থাকলো। তবে এটা সত্যি, দুর্বল চিত্রনাট্য কিংবা দুর্বল চরিত্রও শাবনূরের কাছ থেকে সুঅভিনয়ের গুণটি ছিনিয়ে নিতে পারেনি। শাবনূরের স্বাস্থ্য যেমনই হোক, দেখতে যেমনই লাগুক, এ ছবিতেও সুঅভিনয় করার চেষ্টা করেছেন। তবে ছবির সবক’টি বিভাগের অবহেলার কারণে শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরে যেতে হয়েছে তাকে।
তবে আমার বিশ্বাস শাবনূরের বয়স উপযোগী চরিত্র লেখা হলে এবং সে চরিত্রগুলোতে অভিনয়ের ব্যাপারে আগের মত শতভাগ আন্তরিক হলে শাবনূর নতুন করে আবারো জ্বলে ওঠার ক্ষমতা রাখেন। একটি ‘পাগল মানুষ’ শাবনূরের জন্য এবং আমাদের মত বাংলা ছবি প্রেমী পাগল দর্শকের জন্য একটি দুঃস্বপ্নই হয়ে থাকুক। তবে বাংলা ছবি এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আমাদের সৃষ্টিশীলতার সব পাগলামী ছড়িয়ে দিতে হবে ভালো গল্পে, ভালো উদ্যোগে, ভালো চলচ্চিত্রে। দর্শক কিন্তু ভালো চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবছেন। নির্মাতারা কি দর্শকের কথা ভাবছেন???