প্রায় ১০ বছর আগে তাঁদের পরিচয়। দীর্ঘ এই সময়ে তাঁদের মধ্যে ছিল না কোনো প্রেম। পরিচয়ের পর থেকে তাঁদের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল। সে সম্পর্ক বিয়েতে গড়াবে, সেটা ধারণাই করতে পারেননি গায়িকা নিশিতা বড়ুয়া। পরিচয়ের এই দীর্ঘ সময়ে গায়িকার কাছে মনে হয়েছে, তাঁর পছন্দের মানুষটি ভালো। এটা বিয়ের পিঁড়িতে বসার একমাত্র কারণ।
গতকাল গায়েহলুদ পর্ব শেষ হয়েছে নিশিতার। কাল ২৪ ফেব্রুয়ারি এই গায়িকার বিয়ে। বরের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন করেন, তাঁর নাম দিয়ে এখনই কী হবে। আমরা তো বিয়ে করিনি। বলেই হাসলেন তিনি। পরে জানালেন, বরের নাম দীপঙ্কর বড়ুয়া। তিনি একজন ব্যাংকার। তিনি ঢাকার বাসাবোতে থাকেন। তাঁদের ১০ বছরের সম্পর্ককে প্রেম বলতে নারাজ এই গায়িকা। পরিচয়ের পর থেকেই তাঁরা একে অন্যের নাম ধরে ডাকতেন। নিশিতা বড়ুয়া জানান, আজকাল প্রেমের যে ট্রেন্ড চলছে, সে রকম প্রেমের সম্পর্ক তাঁর কারও সঙ্গেই ছিল না। তিনি খুবই কাটখোট্টা ধরনের মানুষ। তিনি খুবই কম কথা বলেন। তাঁরা একই কমিউনিটির হওয়ায় একে অন্যের সঙ্গে প্রথম দিকে হাই–হ্যালো সম্পর্ক ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় নিজেকেই বেশি সময় দিয়েছি। নিজেকে নিয়েই মগ্ন থাকতাম। এ জন্য আমাকে দিয়ে প্রেমটা হয়নি। আগে থেকেই জানতাম হবে না। আমার বিয়েটাও শেষ পর্যন্ত প্রেমে হচ্ছে না।’ এ জন্য তিনি আগে থেকেই বলে রাখলেন, তাঁদের মধ্যে বিয়ের আগে তেমন উপহার লেনদেন হয়নি।
নিশিতা বড়ুয়া, ছবি: সংগৃহীত
২০১৮ সালের দিকে তাঁরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। কিন্তু দুজনের ব্যস্ততার কারণে পিছিয়ে যায় বিয়ে। গত বছর বিয়ের কথা থাকলেও করোনার কারণে সেটা বদলে যায়। এখন করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন তিনি। এই গায়িকার মতে, বিয়ে যেহেতু করতেই হবে। এটা একটি সামাজিক বন্ধন। এ জন্য আর দেরি না করে দুই পরিবারের মতেই দ্রুত বিয়েটা সেরে নিচ্ছেন। আপনাদের ১০ বছরের পরিচয়, এই সময়ে কেন তাঁকে আপনার মনে ধরেছে? নিশিতা জানান, তাঁর সম্পর্কে এখনো তেমন কিছুই জানেন না। বিয়ে হলেই বরের সম্পর্কে তিনি নিজেই সবাইকে জানাবেন। দীর্ঘদিনের এই চেনাজানার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘তাঁকে আমি কখনো সেভাবে জানার চেষ্টা করিনি। তবে বিয়ে করে কারও সঙ্গে সারা জীবন কাটানো কথা চিন্তা করে, সব সময় চেয়েছি আমার যেন একটা ভালো মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। ওকে দেখে আমার মনে হয়েছে, ও ভালো একজন মানুষ, সে জনই বিয়ে করছি।’
নিশিতার গায়ে হলুদের তার সহকর্মীরা, ছবি: সংগৃহীত
‘ক্লোজআপ ওয়ান–২০০৬’-এর দ্বিতীয় রানারআপ ছিলেন নিশিতা বড়ুয়া। ‘রংধনু ভালো লাগে, নীল আকাশ ভালো লাগে’ গানটির মাধ্যমে ক্লোজআপ ওয়ানের দ্বিতীয় আসরের প্রিয়মুখ হয়ে উঠেছিলেন এই তরুণ শিল্পী। ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম ‘আমায় নিয়ে চলো’। এরপরে চলচ্চিত্র ছাড়াও বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। নিশিতার ভালোবাসা দিবসে ‘আহা ভালোবাসা’ শিরোনাম একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এটি লিখেছেন গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। তাঁর বেশ কিছু গান প্রস্তুত করা আছে। সেগুলো বিয়ের ব্যস্ততার কারণে রিলিজ দিতে পারছেন না। গানগুলো মিউজিক ভিডিওসহ শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান নিশিতা।
নিশিতা বড়ুয়া, ছবি:সংগৃহীত