‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ সিনেমায় আশনা হাবিব ভাবনা, ছবি : সংগৃহীত
নাটকের মানুষ আশনা হাবিব ভাবনার প্রথম চলচ্চিত্র ‘ভয়ংকর সুন্দর’। অনিমেষ আইচের এই ছবির পর পার হয়ে গেছে তিনটা বছর। এই সময়ে বেশ কিছু টেলিভিশন নাটক করলেও আর কোনো সিনেমায় তাঁকে দেখা যায়নি। কেন? নতুন কোনো সিনেমার প্রস্তাব কি তাঁর কাছে আসেনি? এসেছে, একাধিক চলচ্চিত্রের প্রস্তাবই এসেছে, তিনিই রাজি হননি। কারণ, মনের মতো গল্প পাননি। ‘ভালো গল্প ও ভালো নির্মাতার জন্য অপেক্ষা করেছি এত দিন।’ নুরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ তাঁকে সেই রকম গল্প ও চরিত্র দিতে পেরেছে।
‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ সিনেমায় আশনা হাবিব ভাবনা ও নুরুল আলম আতিক, ছবি : সংগৃহীত
ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠানো কয়েকটি স্থিরচিত্রে সেই চরিত্রের কিছুটা আভাস পাওয়া গেল, বাকিটা ভাবনাই জানালেন। তাঁর চরিত্রটি সাঁওতাল, নাম পদ্ম। স্বভাবতই তাঁকে সাঁওতালি ভাষায় কথা বলতে হয়েছে। ভাবনা জানালেন, ‘সাঁওতালি ভাষায় কথা বলাটা আমার জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। তবে দর্শকের বোঝার সুবিধার্থে পুরোটায় সাঁওতালি ভাষা ছিল না।’ চরিত্রটা হয়ে উঠতেও তাঁকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। কী রকম কষ্ট? ভাবনা বললেন, ‘ছবিতে একটা ফাইটার মোরগ আমার সহশিল্পী। মোরগটার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হয়েছে। ২ মাস মোরগটি আমার বাসায় ছিল। শুটিং শুরু হতে দেরি হওয়ায় মোরগটা মারা যায়। পরে আরেকটা মোরগ আনা হয়েছে। বঁটি দিয়ে বাঁশ কাটা শিখছি। অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে কাজটা শেষ করতে পেরেছি। দেহভাষা থেকে শুরু করে সবকিছুতে পরিবর্তন আনতে হয়েছে।’
আশনা হাবিব ভাবনা, ছবি : সংগৃহীত
লোকেশনের কারণেও কষ্ট হয়েছে। ভাবনা বলেন, ‘অন্য নাটক-সিনেমার মতো ছিল না এই সিনেমার শুটিং লোকেশন। স্পটে কোনো মেকআপ রুম ছিল না। সহশিল্পী সব মেয়ে একটা রুমে থাকতাম। তবে একটা অন্য রকম ঘোর ছিল। ভালো কাজের জন্য সব সময়ই আমি কষ্ট করতে রাজি।’
আতিকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ভাবনার আরেকটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘একটা চরিত্রের শুরুর দিকে দৃশ্য শুটিং করতে করতে চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমনটাই হয়ে থাকে। এতে আমার অনেক সুবিধাও হয়। কিন্তু ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’তে ঘটেছে একদম উল্টো। শেষ দৃশ্যটাই প্রথমে শুটিং হয়েছে।’
ভাবনা, ইনস্টাগ্রাম
কথায় কথায় ভাবনা জানালেন, নুরুল আলম আতিককে তিনি ভীষণ ভয় পান। তাঁর সঙ্গে আগে কখনো কাজ না হওয়াটাও এই ভয়ের একটা কারণ। বললেন, ‘এই সিনেমায় কাজ করে সেই ভয়টা কেটে গেছে। একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা আমার অভিনয়জীবনে যোগ হলো।’
অক্টোবরে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’র শুটিং শেষ করেছেন ভাবনা। শুটিং-পরবর্তী সব কাজ শেষ। এখন সেন্সর। ভাবনা বলেন, ‘ছাড়পত্র পেলেই সুবিধাজনক সময় দেখে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে।’
এই সিনেমায় আরও আছেন জ্যোতিকা জ্যোতি, স্বাগতা, দোয়েল ম্যাশ, আহমেদ রুবেল, আশীষ খন্দকার, দীপক সুমন, ইলোরা গওহর, শাহজাহান সম্রাট, অশোক ব্যাপারী প্রমুখ।