What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected ''''নীলু'''' By Pegasus (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
চাচ্চু?
-হ্যা আম্মা বলেন৷
-কাল স্কুলের মিস এর জন্মদিন৷ তোমাকে যেতে
বলেছে!
'
আফিয়ার কথা শুনে অবাক লাগলো! স্কুলের মিস এর
জন্মদিন আর আমাকে যেতে বলেছে!
ব্যাপারটা এমন না যে, আফিয়াকে আমিই প্রতিদিন
স্কুলে নিয়ে যায়৷ বা নিয়ে বাসায় নিয়ে আসি৷
এই কাজটা সবসময় আব্বা নিজে করে থাকে৷ মাঝে
মাঝে ভাইয়া নিয়ে আসে৷ আর গার্ডিয়ানের জায়গায় ও
ভাইয়ার নামই আছে৷ গার্ডিয়ানের নাম্বারটাও ভাইয়ারই৷
আমি শুধূ গত এক সপ্তাহ ধরে কাজটা করছি৷ এর
আগে কখনো শুনিনি যে স্কুলের কোনো
মিসের জন্মদিনে ছাত্রীর চাচ্চু স্পেশাল দাওয়াত
পেয়েছে!
" গোলাপি ফ্রেমের চশমার ভেতরের চোখ
জোড়া আমার বড্ড পরিচিত৷ গালগুলো আগের
চেয়ে নাদুস নুদুস হয়েছে৷ মুখে মিষ্টি হাসি৷
গালের টোলগুলো একটু গভীর হয়েছে৷
সলোয়ার কামিজ পরা চন্ঞ্ছল মেয়েটি আর নেই৷
সবকিছুতেই পরিণতর ছাপ৷
আমি মুগ্ধতার ঘ্রাণ পাই নীলুর দিকে তাকিয়ে৷ মুখে
মিষ্টি হাসি ঝুলিয়ে নীলু যে সামনাসামনি এসে
পরেছে খেয়ালই করিনি৷
আমার কোল ছেড়ে নীলুর কোলে জায়গা
করে নিলো আফিয়া৷
আফিয়ার গালে চুমু খায় নীলু৷ আদর জড়ানো কন্ঠে
জিজ্ঞেস করে,
-পরিচয় করিয়ে দাও তোমার চাচ্চুর সাথে!
আফিয়া বাধ্য মেয়ের মত পরিচয় করিয়ে দিতে
থাকে৷
আমি হাসি ৷ মনে মনে বলি,
পরিচয় করানোর কি দরকার নীলু৷ তোর সাথে
তো আমার জন্ম-জন্মান্তরের চেনা পরিচয়৷
আফিয়ার চাচ্চু হিসেবে স্কুলের মিসের জন্মদিনে
আমার দাওয়াত পাওয়ার কারণ পরিষ্কার হয়েছে
এতক্ষণে৷
'
'
আমাদের দুই ঘর পরেই নীলুদের ঘর৷ সেই
ছোট্টবেলা থেকেই আমার বন্ধূ বলতে নীলুই
ছিল৷ লুডু খেলা, আম চুরি করা, পুকুরে সাঁতার কাটা !
সবকিছুর সঙ্গী ছিল নীলু৷ পড়ালেখাটাও একসাথে
ছিল৷
আমার মন খারাপের সঙ্গি ছিল নীলু৷ একজনের
মনের বিষণ্নতাগুলো ছড়িয়ে পরতো অপরজনের
মনে৷ আমার কান্না দেখে নীলুও কাঁদতো৷
আমি খুশি থাকলে নীলুও খুশি৷ কি সুন্দর করে
হাসতো নীলু৷ খিলখিল করে হাসতো৷ আমি মুগ্ধ
হয়ে দেখতাম৷ নীলুর মুক্তা ঝড়ানো হাসির সাথে
সাথে আমার মন খারাপগুলোও গায়েব হতো৷
নীলুর লম্বা চুল৷ খোপা বাঁধতো মাঝে মাঝে৷
খোপা বাঁধা চুল আমার ভালো লাগতো না৷ নীলুর
খোপা খুলে দিতাম৷ নীলু মেকি রাগ করতো৷
চেহারা শক্ত করতো৷ আবার হেসে দিতো৷ আহ!
মাতাল করা হাসি ছিল একদম৷
তারপর নীলু আর খোপা বাধেনা৷ চুলগুলো ছড়িয়ে
দেয়৷
চোখগুলো অসম্ভব রকমের সুন্দর ছিলো৷
কাজল কালো চোখ৷ কাজল ছাড়াই সুন্দর ছিল
চোখগুলো৷ এরকম চোখ সবার থাকে না৷ থাকলে
হয়তো কাজলের সৃষ্টিই হতো না৷
নীলুর গালগুলো নাদুস নুদুস ছিলো৷ দেখলেই
টানতে ইচ্ছে করবে৷ নীলুর গালে হাত দিলেই
নীলু রেগে যেত৷ সে কি রাগ! ভয়ংকর রকমের
রাগ করতো সবার সাথে৷
রাগী নীলুকে আমি ভয় পাই৷ খুব ভয়৷ সে ভয়ের
কোনো অর্থ পাইনি আমি৷ নীলুর গালটানার তীব্র
ইচ্ছাটা দমিয়ে রাখলাম অনেকদিন৷

'
 
অবশ্য খুব বেশিদিন লুকিয়ে রাখতে পারিনি৷ ভরদুপুরে
নীলুদের বাড়ি গিয়েছিলাম একদিন৷ নীলুর জ্বর ছিল
হালকা৷ চাচী মা নীলুকে বেরোতে দেয় নি৷
স্কুল ছুটির পর সোজা নীলুদের দরজার সামনে৷
টোকা দিতেই চাচী মা দরজা খুলে দিলেন৷
নীলুর কথা জিজ্ঞেস করার আগেই, আঙুলের
ঈশারায় দেখিয়ে দিলেন৷ নীলু ঘুমাচ্ছো৷
চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে৷ মুখের
সাথে লেপ্টে আছে অল্পখানেক৷ মুখটা একটু
শুকিয়েছে জ্বরের প্রভাবে৷
আমি আস্তে আস্তে নীলুর শিয়রে গিয়ে বসি৷
তাকিয়ে থাকি কিছুক্ষণ৷
নীলুর গালগুলো টানি খুব সাবধানে৷ একবার, দু'বার
করে কয়েকবার টানলাম৷ তারপর স্বাদ মেটে না
আমার৷ আবার টানি৷
শেষবার টানার পরই অদ্ভূত কান্ড ঘটলো৷ নীলু
ঘুমের মধ্যেই ফিক করে হেসে উঠে৷ আমার
শরীরে বিদ্যুৎ খেলে যায়৷ ভয় পেলাম একটু৷
এই বুঝি নীলু রেগে যাবে৷ কাজলকালো চোখ
দু'টো রক্তলাল করে বলবে, আর আসবিনি আমার
সামনে!
'
নীলু উঠে বসে৷ আমার চোখের দিকে
তাকালো একবার৷ আমি তাকানোর সাহস পাই না৷ নীলু
তাকিয়েই থাকে৷
'
আমার হাতের উল্টো পিটে হাত রাখে নীলু৷ মিষ্টি
হেসে বলল,
-এই পাগল! গাল টানতে ইচ্ছে হলে টানবি৷ এত
ভয়ের কি আছে শুনি?
নীলুর কথায় অবাক হই আমি৷ মনে সাহস আসে
একটু৷
-যদি তুই রাগ করিস! আমার সাথে কথা না বলিস!
নীলু আবার হাসে৷ মুচকি হাসি নয়৷ মুক্তাঝড়ানো হাসি৷
আমার বোকা বোকা চেহারা দেখে নীলু হাসতে
হাসতে গড়িয়ে পরে৷
আমার হাতটা তার গালের পাশে নিয়ে বলে,
-নে টান৷ ইচ্ছেমত টানবি৷ যখন ইচ্ছে তখনই টানবি৷
আমি রাগ করবো না৷
আর তোর সাথে কথা না বলে আমি থাকতে
পারবো বল?
জবাবে আমি কিছু বলিনা৷ গালগুলো টানি যত্ন করে৷
আমার গালটানা দেখে নীলু ভ্রু কুঁচকিয়ে বলে,
-গাল টানছিস! না মুরগির বাচ্চাকে আদর করছিস৷
আমি কিছু বলি না৷ নীরব থাকি৷ গাল টানতে ভালো
লাগে আমার৷
'
শৈশব পেরিয়ে কৈশরে পা দিলাম৷ স্কুল পেরিয়ে
কলেজ৷ আমি অনূভব করি৷ চন্ঞ্চল মেয়েটার মায়ায়
জড়িয়ে গেছি আমি৷ আষ্ঠেপৃষ্টে জড়িয়ে
পরেছি৷ শুধূ বলাটাই বাকি৷
আয়নার সামনে কত রিহার্সেল করেছি তার হিসাব
নেই৷ কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি চাপা উত্তেজনায়৷
নীলুকে ভালোবাসার কথা বলতে গেলে, অনূভব
হতো এই বুঝি কলিজাটা ফেটে বেরিয়ে যাবে৷
অথচ কত বছরের পরিচিত আমরা৷
'
'
মনের আকাশটা একদম বিষন্ন হয়ে গেল এক
রৌদ্রজ্জল সকালে৷ আম্মুর হাতে ভাত খেয়ে
কলেজে গিয়েছিলাম৷ নীলু একটু আগেভাগেই
চলে গিয়েছিল৷
গত কয়েকদিনে নীলুর অাচরণে কষ্ট হয় আমার৷
গলার অগ্রভাগে ব্যাথা লাগে আমার৷ ঝকঝকা
আকাশটাকে ও আমার মেঘলা মনে হয়৷
'
কলেজ মাঠের কোণার দিকে ডালপালা মেলা
জলপাই গাছটার নিচে চোখজোড়া থমকে গেল
আমার৷ সাথে কয়েকটা হূদস্পন্দন বাদ পরেছে
জীবন থেকে৷ গলার ব্যাথাটা তীব্রতর হয়ে
উঠে৷ চোখের কোণা বেয়ে বেরোনো
পানিগুলোর ঘনত্ব একটু বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
সেদিনের আকাশটা রোদ্রজ্জল থাকলেও মনের
আকাশটা বড্ড মেঘলা বিষণ্ণ হয়ে গেল৷ খুব করে
চাচ্ছিলাম আমার মনের আকাশটার মত এই আকাশটাতে
বৃষ্টি হোক৷ যে বৃষ্টিতে আমার চোখের
জলগুলো খুব সহজেই লুকোতে পারবো৷
'
'
নীলুর ডাকে আমি গুটি গুটি পায়ে হেঁটে যাই৷
ক্লাসের সেকেন্ড বয়টার সাথে পরিচয় করিয়ে
দেয় নীলু৷ ছেলেটাকে চিনি আমি৷ ক্লাসমেট
হিসাবে যতটুকু চেনা দরকার ততটুকু না৷ আমার সবকিছু
জুড়ে শুধুই নীলু৷ অন্যকাউকূ চিনতে চাই নি আমি৷
চেনার প্রয়োজন বোধ করিনি৷
আমার চোখ আর মন কে ফাঁকি দিয়ে নীলু এই
ছেলেটার প্রেমে পড়েছে৷ বুঝতেই পারিনি৷
নিজেকে নিজের কাছে বোকা মনে হচ্ছিল৷
'
'
এরপর থেকে লুকিয়ে কাঁদতাম৷ নীলুর সামনে
গেলে চোখের জলগুলো অবাধ্য হয়ে যেত৷
বড় বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যেতাম৷
মাঝে মাঝে ইচ্ছে হতো, নীলুকে শক্ত করে
জড়িয়ে ধরে বলি, নীলু! তুই শুধু আমার!
বলা হয়ে উঠে না আর৷ এখন আর রোজরাতে
"ভালোবাসি" বলার রিহার্সেল করি না আমি৷
তার জায়গায় চোখ জল লুকোনোর রিহার্সেল করি৷
নীলুর সামনে যাওয়ার আগে মুখে পানি ছিটিয়ে
যেতাম৷ চোখের জলগুলো ভালোই লুকোতে
পারতাম৷ কথার জবালে হু, হা করতাম৷
বেশি কিছু বলতে গেলেই গলা চেপে আসতো৷
নীলু হয়তো বুঝতে পেরেছিল আমার সবকিছু৷
'
'
কলেজ শেষে বাড়ি ফিরছিলাম৷ রাস্তার মোড়ে
নীলু দাঁড়িয়ে আছে৷ হাতের ঈশারায় কাছে ডাকে৷
আমার ভয় হয়৷ এই রে আজ তো মুখে পানি
ছিটানো হয়নি৷ এই বুঝি ধরা পরে যাবো৷
নাহ! ধরা পড়িনি৷ নীলু তো কথাই বলেনি৷ হাতে
ছোট্ট একটা চিরকুট গুজে দিয়েই দৌঁড়ে পালালো৷
আমার অদ্ভূত লাগলো নীলুকে৷ এই নীলুকে
আমি কখনো দেখিনি৷
চিরকুটখানা খুলে দুনিয়া থেকেই হারিয়ে গিয়েছিলাম
আমি৷
চিরকুটের "আমাকে ভুলে যা" তিনটে শব্দই আমার

জীবনটাকে ভালোভাবেই বিশিয়ে তুলেছিলো৷"
 
মনের ভালোবাসাগুলো নিষ্ঠুরতার চাদরে ঢেকে
দিয়ে পালিয়ে এসেছিলাম শহরে৷ জনবহুল অথচ
ভয়ংকর রকমের একাকিত্বে ভোগা এই আমার
একবুক ভালোবাসাগুলো ধুলোবালি জমতে জমতে
পুরু আস্তরণ জমে গিয়েছে৷ যে আস্তরণটা সাফ
করা হয় নি কখনো৷ যত্নহীন পড়ে রয়েছে
সেই দিন থেকে৷
নীলুকে বলতে না পারা কথাগুলো স্থান
পেয়েছে নীলরঙা ডায়রীটাতে৷
জোৎস্না রাতে ছাদের মাঝখানে বসে বসে পড়ি
ডাইরিটা৷
ভালো লাগে না আমার৷ "হা করে চাঁদের জোৎস্না
গেলার চেষ্টা করি আমি৷ আমার মনের আকাশটাও যদি
এরকম জোৎস্নাময় হতো! ইশশ! কি সুখীটাই না
হতাম আমি৷
'
'
'
পান্ঞ্জাবির পেছনটাতে টান পরতেই অতীতের
ডায়রিটা বন্ধ হলো৷ আফিয়া হাত দু'টো বাড়িয়ে
দিয়েছে৷ আমি পরম মায়ায় বুকে টেনে নিই
পিচ্চিটাকে৷
আমার প্রচন্ড মন খারাপের দিনে এই পিচ্চিটাকে
বুকের সাথে লেপ্টে রাখি৷ পিচ্চিটাও আমার মন
খারাপগুলো বুঝে৷
'
আমার গলা জড়িয়ে কানে ফিসফিস করে বলল,
-মিস বলেছে তোমাকে নিয়ে ছাদে যেতে!
আফিয়ার কথা শুনে অবাক হই আমি৷
নীলু কেন ছাদে ডাকবে আমাকে? ভয় হয় আমার৷
চোখগুলোর মায়ায় পরে যাবো আবার৷ গালগুলো
টানতে ইচ্ছে করবে৷ এমনিতে দেখার পর
থেকে মনটা নিষফিষ করেই চলেছে৷
'
গেটের দিকে পা বাড়ায় আমি৷ বাড়ি যাবো৷ মনটা
এখনো ছাদেই পড়ে আছে! আমার কি যাওয়া উচিত৷
উল্টোফিরে ছাদের দিকে হাটা দিলাম৷
"ভালোবাসি" বলতে না পারাটা আমাকে অনেক
পুড়িয়েছে৷ শেষে যদি এই ছাদে না যাওয়াটাও
পোড়ায় আমাকে৷
'
'
ছাদের কোণটাতে দাঁড়িয়ে আছে নীলু৷ নীলুর
পাশে গিয়ে দাঁড়ায় আমি৷ এখনো ভাবলেশহীন
ভাবে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে৷
আমার গলার ব্যাথাটা আবার ফিরে আসে৷ চাপা
উত্তেজনায় বুকের ভেতর চিনচিনে ব্যাথা অনুভব
করি আমি৷
আজব তো! আমার কেন এমন লাগছে!
একজন বেঈমানের জন্য৷
একটু কাশলাম৷
ফাযিল মেয়েটা এখনো চুপ করে আছে৷ আফিয়া
আমার বুকেই ঘুমিয়ে পরেছে৷ দুই মিনিটের মধ্যে
এই পিচ্চি ঘুমিয়ে পড়লো!
আমি গলায় কাঠিন্য ভাব এনে বললাম,
-কেন ডেকেছেন?
নীলু ফিরে তাকায় আমার দিকে৷ গোলাপি
ফ্রেমের চশমাটা নেই এখন৷ আমি আবার হারিয়ে যায়
ভয়াল সুন্দর চোখগুলো মধ্যে৷
না! হারানো যাবে না৷ নিজেকে সামলিয়ে বলি,
-কি ব্যাপার? কেন ডেকেছেন বলুন৷ রাত অনেক
হয়েছে বাসায় যাবো৷
নীলু আরেকটু কাছে আসে আমার৷ আমার নাকটা
টিপে দিয়ে বলে,
-আমার উপর খুব রাগ তাই না?
-না! আপনার উপর রাগ থাকার কথা আমার?
-অবশ্যই থাকার কথা৷
-জ্বী না৷
নীলু একটু চুপ থাকে৷ হাঁটতে হাঁটতে আবারো
ছাদের কোণটাতে গিয়ে দাঁড়ায়৷ আমি মুখে একটু
বিরক্তি ভাব আনি৷ যদিও মন চাচ্ছে নীলুর সাথে
আরো কিছুক্ষণ থাকি৷
ছাদের রেলিং ধরে নীলু বলা শুরু করে,
-জানিস তো! তোকে ছাড়া আমার একটুও চলতো
না৷ এখনও চলে না৷ তারপর জোর করে চালাচ্ছি৷
নীলুর কথা শুনে রাগ হয় আমার৷
-এতই যদি না চলে সেদিন ছেড়ে দিয়েছিলি কেন?
নীলু শান্ত চোখে তাকায় আমার দিকে৷
-শুভ্র তোর মনে আছে, আমার সামান্য অসুখ
হলেই তুই মন খারাপ করতি! লুকিয়ে কাঁদতি৷ খাওয়া দাওয়া
ছেড়ে দিতি!
হ্যা৷ তুই হয়তো অবাক হচ্ছিস আমি এসব কিভাবে
জানলাম৷ তোর মায়ের কাছ থেকে জেনেছি আমি৷
যেদিন আমার টিউমার ধরা পরলো! সেদিন শুধু তোর
মুখটাই ভেসে উঠছিলো বারবার৷ নিজের চেয়ে
তোকে নিয়ে চিন্তা হতো বেশি৷
আমি জানতাম, আমার সামনে কথা বললেই তোর গলা
ধরে আসে৷ চোখগুলো টলমল হয়৷
তারপরও তোর সামনে হাসিমুখে থেকেছি৷ তুই
হয়তো ভেবেছিলি, তোর মন খারাপের
বিষন্নতাগূলো আর আমার মনের আকাশে দাগ
কাটেনা৷ তুই ভাবতি, ক্লাসের সেকেন্ড বয়টার সাথে
ছুটিয়ে প্রেম করছি৷
কিন্তু বিশ্বাস কর, সেদিনের পর থেকে
প্রত্যেকটা দিন আমার বিষণ্নতায় কেটেছে৷
তোর মনের ডায়রিতে হয়তো, এতদিনে আমার
নামের সাথে "বেঈমান" শব্দটা জড়িয়ে গেছে৷
কিন্তু বিশ্বাস কর আমি নিজের জন্য বেঈমানি করিনি৷"
'
নীলুর বিপরীতে কিছু বলতে পারি না আমি৷ চোখ
দিয়ে পানি বেরিয়ে আসে আপনাআপনি৷ গলার ব্যাথাটা
আর অনুভব করছিনা ৷
মন খুলে শ্বাস নিই আমি৷
'
'
-নীলু!
-হু!
-গালগূলো টানি?
-মানা করেছি কখনো?
-চুলের খোপা আমার একদম পছন্দ না৷
নীলু হাসে৷ স্নিগ্ধ হাসি৷
চুলের খোপাটা খুলে দিগল কালো চুলগুলো
ছড়িয়ে দেয় ছাড়িদিকে৷
হাত দু'টো বাড়িয়ে বলল,
-আফিয়াকে আমার কাছে দে৷ তুই গাল টান ইচ্ছে
মতো৷
'
মেয়েটা আগের মতোই চন্ঞ্চল এখনো৷
হয়তো এতোদিন আমার মতো বিষণ্ণতার ধুলোর

আস্তরণ জমে গিয়েছিল তার চন্ঞ্চলতার উপর৷
 

Users who are viewing this thread

Back
Top