What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

নেতৃত্ব দর্শন (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,620
Messages
122,486
Credits
312,732
DVD
Whiskey
SanDisk Sansa
SanDisk Sansa
Computer
Glasses sunglasses
নেতৃত্ব দর্শন

সমাজ পরিচালনার জন্য নেতৃত্ব একটি অপরিহার্য বিষয়। মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত নে'মতসমূহের মধ্যে অন্যতম সেরা নে'মত হ'ল নেতৃত্বের যোগ্যতা। এই যোগ্যতা ও গুণ-ক্ষমতা সীমিত সংখ্যক লোকের মধ্যেই আল্লাহ দিয়ে থাকেন। বাকিরা তাদের অনুসরণ করেন। নেতৃত্ব ও আনুগত্যের গুণ আল্লাহ পশু-পক্ষীদের মধ্যেও দান করেছেন, যাতে তাদের সমাজ বিশৃংখলাপূর্ণ না হয় এবং তাদের ও মানুষের ক্ষতি কম হয়।

মানব সমাজে দু'ধরনের নেতা রয়েছেন। এক প্রকার নেতা সরাসরি আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত। এঁরা নবী বা রাসূল হিসাবে অভিহিত। যারা সরাসরি আল্লাহর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। ফলে তাদের প্রতিটি বিধানগত কথা, কর্ম ও আচরণ অন্য মানুষের জন্য যথাযথভাবে অনুসরণীয়। এঁদের সংখ্যা সীমিত। শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর পরে ক্বিয়ামত পর্যন্ত নবী আগমনের সিলসিলা বন্ধ। কেননা আল্লাহ প্রেরিত বিধানসমূহ কুরআন ও হাদীছের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গভাবে নাযিল হয়েছে, যা ইসলামী বিধান হিসাবে পরিচিত ও সকল মানব জাতির জন্য অনুসরণীয় একমাত্র দ্বীন হিসাবে আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত। মানুষের ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবন পরিচালনার জন্য অন্য কোন দ্বীন তালাশ করার অবকাশ আর নেই। আল্লাহ কাউকে সে অনুমতি দেননি। যদি কেউ সে চেষ্টা করে, তবে তা কবুল করা হবে না বলে তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কেই 'উসওয়ায়ে হাসানাহ' বা সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে তিনি তাঁর অনুগত বান্দাদের জানিয়ে দিয়েছেন। ১ লক্ষ ২৪ হাযার পয়গাম্বর হ'লেন যুগে যুগে আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত ও মানবজাতির জন্য অনুসরণীয় নেতৃবর্গ। অতঃপর শেষনবী (ছাঃ) হ'লেন সকল বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ এবং ক্বিয়ামত অবধি সকল মানুষের জন্য অনুসরণীয়।
 
দ্বিতীয় ধরনের নেতা হ'লেন মানবীয় গুণসম্পন্ন সাধারণ সমাজনেতা। আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ গুণাবলী ও যোগ্যতার ফলে তারা অন্যদের থেকে স্পষ্ট হয়ে যান। কিন্তু নেতৃত্ব যেহেতু চেয়ে নেওয়ার বিষয় নয়, তাই অন্যদেরকেই নেতা বাছাই করতে হয়। যোগ্য নির্বাচক ব্যতীত যোগ্য নেতা নির্বাচিত হওয়া সম্ভব নয়। নেতৃত্বের গুরুত্ব গাড়ির চালকের মত। যাকে সর্বদা যোগ্য, দক্ষ, সাহসী, দূরদর্শী, সদা-সতর্ক ও কর্তব্যনিষ্ঠ হ'তে হয়। নইলে যে কোন সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আর চালকের যোগ্যতা ও দক্ষতা কেবল তিনিই যাচাই করতে পারেন, যিনি নিজে এ বিষয়ে বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ। মানুষ এ বিষয়ে ভুল করবে জেনেই আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে নবী ও বিধি-বিধান প্রেরণ করে সমাজ পরিচালনার পথ ও পদ্ধতি আগেই দেখিয়ে দিয়েছেন। এখন নবীগণের দেখানো পথে মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করবে মাত্র। এ জন্য যিনি নেতা নির্বাচিত হবেন, দেখতে হবে তিনি আল্লাহর দেখানো পথে সমাজ পরিচালনায় কতটুকু যোগ্য হবেন। নির্বাচকগণ তাদের মধ্যকার সর্বাধিক আল্লাহভীরু ও যোগ্য ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করবেন সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ ও নিরপেক্ষ মন নিয়ে এবং সম্যক দূরদর্শিতা সহকারে। যদি তারা তাতে ব্যর্থ হন, তাহ'লে সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও তারা গোনাহগার হবেন। সমাজের সীমিত সংখ্যক লোক জ্ঞানী ও দূরদর্শী হয়ে থাকেন। নেতৃত্ব নির্বাচনের দায়িত্ব মূলতঃ তাদেরই। অন্যেরা কেবল সমর্থন করবেন। এর বাইরে নেতৃত্ব নির্বাচনের সকল পথই ধোঁকা ও প্রতারণায় পূর্ণ। বিগত ও বর্তমান যুগের বাস্তব অভিজ্ঞতাই এর জলজ্যান্ত প্রমাণ। এক্ষণে প্রশ্ন হ'ল, নেতৃত্বের দর্শন কি? জওয়াব, নেতৃত্বের দর্শন হ'ল, অনুসারীগণকে যথাযথভাবে আল্লাহর পথে পরিচালনা করা। যে নেতা যথার্থভাবে এতে সক্ষম হবেন, সে নেতাই প্রকৃত সফলকাম হিসাবে বিবেচিত হবেন। যে রাষ্ট্র, সমাজ ও সংগঠনে এই ধরনের নেতৃত্ব বেশী থাকবে, সে রাষ্ট্র, সমাজ ও সংগঠন তত বেশী মযবুত ও সফলকাম হবে। যে জাতি এইরূপ নেতৃত্ব লাভ করেছে, সে জাতি ধন্য হয়েছে। মানুষকে সে জন্য সর্বদা আল্লাহর কাছে প্রার্থনার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, '(হে প্রভু!) তুমি আমাদেরকে তোমার পক্ষ হ'তে অভিভাবক নির্ধারণ করে দাও এবং সাহায্যকারী দান কর' (নিসা ৭৫)। আর সফলতার মাপকাঠি হ'ল আখেরাতে মুক্তি লাভ, দুনিয়ার সমৃদ্ধি ও গৌরব নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা নেতৃত্ব ঐ ব্যক্তির হাতে সোপর্দ করি না, যে তা চেয়ে নেয় বা তার লোভ করে বা তার আকাঙ্খা করে' (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত, হা/৩৬৮৩ )। মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য শয়তান প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নানাবিধ চটকদার বক্তব্য ও লোভনীয় প্রতিশ্রুতির ফাঁদে ফেলে মানুষকে সে জাহান্নামের দিকে তাড়িত করছে। সেজন্য সর্বাগ্রে সে নেতাদেরকে পথভ্রষ্ট করে। যাতে তার সঙ্গে তার অনুসারী সমাজ ও সংগঠন পথভ্রষ্ট ও অভিশপ্ত হয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী সামাজিক অশান্তি ও বিশৃংখলার অন্যতম প্রধান কারণ হ'ল ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনীতি এবং দল ও প্রার্থীভিত্তিক নেতৃত্ব নির্বাচনব্যবস্থা। অতএব নেতৃত্বের প্রকৃত দর্শন মনে রেখে দেশের নির্বাচন কমিশন এবং সমাজের সচেতন ও দূরদর্শী ভাই-বোনদের পা ফেলতে হবে। যাতে সর্বত্র আল্লাহভীরু ও যোগ্য নেতৃত্ব দায়িত্বে আসেন ও কর্মতৎপর থাকেন। এ জন্য সর্বদা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হৌন।- আমীন !! ।

সর্বত্র দল ও প্রার্থীবিহীন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রথা চালু করুন। নির্বাচক ও নির্বাচিতদের জন্য বিশেষ গুণাবলি নির্ধারণ করুন। ইমারত ও শূরা পদ্ধতি অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করুন। রাষ্ট্রের একজন নির্বাচিত 'আমীর' থাকবেন, যিনি তাঁর মনোনীত স্বল্পসংখ্যক সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে মজলিসে শূরা বা পার্লামেন্ট গঠন করবেন ও তাদের পরামর্শে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে দেশ চালাবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top