করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটেছে। চলমান মহামারি থেকে উত্তরণে আমরা সবাই কমবেশি প্রযুক্তির সহযোগিতা নিচ্ছি। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের দেওয়া লকডাউনে ঘরে থেকে কাজ করতে ডিভাইস নির্ভরশীলতাও বেড়েছে অনেক। শিক্ষার্থীদের ক্লাস কিংবা বড়দের অফিস—প্রয়োজন হচ্ছে স্মার্টফোনের। নতুন ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি আর ভক্তদের ভালোবাসা নিয়ে বিশ্ববাজারে এখন শাওমির অবস্থান বেশ সুসংহত, বাংলাদেশের বাজারেও সমান জনপ্রিয় শাওমি।
সম্প্রতি শাওমি বাংলাদেশের বাজারে ভক্তদের জন্য এনেছে উদ্ভাবনী সব স্মার্টফোন। এই তালিকায় রয়েছে মি ১১এক্স, রেডমি নোট ১০এস, পোকো এক্স৩ প্রো, পোকো এম৩, রেডমি নোট ৮ (২০২১) ও রেডমি ৯ ডুয়াল ক্যামেরা সংস্করণের স্মার্টফোন।
মি ১১এক্স
ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস হিসেবে দেশে সম্প্রতি শাওমি এনেছে ফাইভ–জি প্রযুক্তির মি ১১এক্স স্মার্টফোন। ফোনটিতে উচ্চ পারফরম্যান্স ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে দেওয়া হয়েছে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৮৭০ প্রসেসর, ১২০ হার্জের ই ৪ অ্যামোলেড ডট ডিসপ্লে, ৪৮ মেগাপিক্সেলের এআই ট্রিপল ক্যামেরা, ২০ মেগাপিক্সেলে ফ্রন্ট ক্যামেরা। দীর্ঘ সময় ব্যাপআপ দিতে ফোনটিতে শক্তিশালী ব্যাটারি ও ফাস্ট চার্জিং সুবিধা থাকায় মাত্র ১৯ মিনিটেই হয় ৫০ শতাংশ চার্জ।
রেডমি নোট ১০এস
বাংলাদেশের বাজারে আনা আরেক অসাধারণ ডিভাইস রেডমি নোট ১০এস। এতে আছে স্লিক ডিজাইন, অসাধারণ ক্যামেরা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ও স্মুথ ডিসপ্লে। ফোনটিতে মিডিয়াটেকের শক্তিশালী হেলিও জি৯৫ প্রসেসরের সঙ্গে আছে ৬৪ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। সঙ্গে আরও আছে সেলফি তোলার জন্য ১৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। সর্বনিম্ন ৬ জিবি র্যামের সমন্বয় রয়েছে ফোনটিতে। সর্বোচ্চ মানের ছবি প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে যাঁরা গেমিং কিংবা ফটোগ্রাফি করতে চান, তাঁদের জন্য ডিভাইসটি উপযুক্ত হবে। নতুন মিইউআই ১২.৫ ব্যবহারকারীকে দেবে অ্যাপ ব্যবহারের স্বাধীনতা।
পোকো এক্স৩ প্রো
দেশের তরুণদের বড় একটা অংশ পোকো ফোনের ফ্যান। বাংলাদেশে ২০১৮ সালে প্রথম যখন পোকো ফোন আনা হয়, তখন এটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। ব্যাপক চাহিদার জন্য আবারও দেশের ব্যবহারকারীদের জন্য পোকো ফোন এনেছে শাওমি।
সম্প্রতি এসেছে পোকো এক্স৩ প্রো মডেলের হ্যান্ডসেটটি। ফোনটিতে আছে কোয়ালকমের সর্বশেষ প্রযুক্তির ফোরজি চিপসেট স্ন্যাপড্রাগন ৮৬০, যা নিশ্চিত করবে স্মুথ পারফরম্যান্স। যেকোনো ধরনের অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম পোকো এক্স৩ প্রো। এর ৪৮ মেগাপিক্সেলের কোয়াড ক্যামেরা সেটাপ, ২০ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা দুর্দান্ত স্পষ্ট ছবি দেয়। এতে আছে ৫, ১৬০ এমএএইচ ব্যাটারি এবং ৩৩ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট, যা দেয় দীর্ঘ ব্যাকআপ ও দ্রুত চার্জের সুবিধা।
পোকো এম৩
এ ছাড়া সম্প্রতি ৪৮ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ ও শক্তিশালী ৬০০০ এমএএইচ ব্যাটারির ফুল এইচডিপ্লাস ডিসপ্লের পোকো এম৩ আনা হয়েছে দেশের বাজারে। কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৬৬২ প্রসেসরের ফোনটিতে টানা ব্যবহারে দেড় দিন পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যায়।
রেডমি নোট ৮ (২০২১)
চমৎকার সব ফিচার ও উন্নত ৪৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা নিয়ে পুনরায় বাজারে এল রেডমি নোট ৮ (২০২১) সংস্করণটি। ফোনটিতে দেওয়া হয়েছে শক্তিশালী মিডিয়াটেক হেলিও জি৮৫ প্রসেসর, যা বাজেট রেঞ্জে অনন্য গেমিং অভিজ্ঞতা দিতে সক্ষম। ক্যামেরায় থাকছে উন্নত ৪৮ মেগাপিক্সেলের কোয়াড ক্যামেরা, সঙ্গে থাকছে ৬.৩ ইঞ্চির এফএইচডি+ ডট ড্রপ ডিসপ্লে এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন চার হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি। ডিভাইসটির সামনের ও পেছনের দিকে রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫।
রেডমি ৯ ডুয়াল ক্যামেরা
রেডমির এন্ট্রি লেভেল ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে শাওমি এনেছে রেডমি ৯ ডুয়াল ক্যামেরা সংস্করণ। সুন্দর ও স্পষ্ট ছবি তুলতে এতে আছে ১৩ মেগাপিক্সেলের প্রধান ক্যামেরা, সামনে সেলফি তোলার জন্য দেওয়া হয়েছে ৫ মেগাপিক্সেলের এআই ক্যামেরা। মিডিয়াটেক হেলিও জি ৩৫ প্রসেসরের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে শক্তিশালী ৫০০০ এমএএইচের ব্যাটারি।
শাওমি সব সময় গুরুত্ব দিয়েছে ব্যবহারকারীদের। এ জন্য আফটার সেলস সার্ভিসে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান রেড কোয়ান্টার জরিপে বাংলাদেশে আফটার সেলস সার্ভিসে সেরা ব্র্যান্ডের তকমা পেয়েছে শাওমি। এর ফলে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই শাওমি আরও উন্নত বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
দেশে শাওমিই একমাত্র টেকনোলজি ব্র্যান্ড, যাদের আছে সুবিশাল এক ফ্যান কমিউনিটি, যা মি কমিউনিটি নামে পরিচিত। মি কমিউনিটিতে বর্তমানে প্রায় তিন লাখ নিবন্ধিত ব্যবহারকারী রয়েছেন, যাঁরা প্রতিনিয়ত নিজেদের মধ্যে প্রযুক্তিবিষয়ক জ্ঞান শেয়ার করার পাশাপাশি অন্যদের সঙ্গেও প্রযুক্তিবিষয়ক আলোচনা করেন। এতে মি কমিউনিটি বাংলাদেশ শাওমি ভক্তদের পরিবারে পরিণত হয়েছে।
প্রথম আলো অনলাইন গ্যাজেট ও ইলেকট্রনিকস ফেয়ারের মাধ্যমে আমরা সহজেই গৃহবন্দী মানুষের অন্যতম অনুষঙ্গ স্মার্টফোন পৌঁছে দিতে পারছি। বিধিনিষেধের কারণে সারা দেশের ফিজিক্যাল স্টোরগুলো বন্ধ থাকায় প্রথম আলোর অনলাইন গ্যাজেট ও ইলেকট্রনিকস ফেয়ার থেকে গ্রাহক তাঁর পছন্দের পণ্যটি অর্ডার করে দ্রুত হোম ডেলিভারি পাচ্ছেন। এটি নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।