ইসলাম নারীদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। অথচ অপপ্রচার রয়েছে, ইসলাম নারীদের অসম্মান করে এবং নিচু স্থানে রাখে। ইসলাম সম্পর্কে না জেনেই কিছু মানুষ এই মিথ্যাচারে বিশ্বাস করে। সর্বযুগের আদর্শ ব্যক্তিত্ব মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সবকিছুই অনুকরণীয়। পরিবারের নারীদের সঙ্গে যেমন তাঁর মধুর ব্যবহার ছিল, তেমনই চমৎকার ব্যবহার ছিল সমাজের অন্য নারীদের সঙ্গেও।
রাসুল (সা.)–এর জীবনাচার লক্ষ করলে আমরা বুঝতে পারি তিনি নারীদের প্রতি কত অমায়িক আর তাঁদের প্রতি কত উদার ছিলেন।
নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও প্রশংসা জ্ঞাপনে তাঁর কোনো কার্পণ্য ছিল না। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, একদল নারী ও শিশুকে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আসতে দেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয়। এ কথা তিনি তিনবার বলেন। (ইবনে মাজাহ: ১৮৯৯)
হজরত আসমা বিনতে আবুবকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) জুবায়েরের জন্য যে জমি বরাদ্দ করেছিলেন, সেখান থেকে খেজুরের কাঁদি মাথায় করে বহন করে আনতাম। একদিন এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহর (সা.) সঙ্গে দেখা হয়। তিনি তাঁর উটের পেছনে আমাকে বসতে বলেন। কিন্তু আমার সংকোচ দেখে তিনি চলে যান। (বুখারি: ৫২২৪) রাসুলুল্লাহ (সা.) কতটা বিচক্ষণ ছিলেন যে হজরত আসমা (রা.)–এর সংকোচ দেখে তাঁকে দ্বিতীয়বার অনুরোধ করেননি অথচ তাঁর কষ্ট দেখে ব্যথিতও হয়েছিলেন।
নারী বা পুরুষ সব অতিথিকে সব সময়ই হাসিমুখে স্বাগত জানাতেন প্রিয় রাসুল (সা.)। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত খাদিজার (রা.)–এর বোন হালা বিনতে খুয়াইলেদ রাসুলুল্লাহর কক্ষে প্রবেশের অনুমতি চাইলে তাঁর কণ্ঠ শুনে প্রিয় স্ত্রী খাদিজার কথা মনে পড়ে যায়। এটা তাঁর খুব ভালো লাগে, তাই তিনি বলেন কে, হালা নাকি? (মুসলিম: ২৪৩৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) কেউ অসুস্থ হলে তাঁর খোঁজ নিতেন। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মুস সায়েবকে দেখে বলেন, কেন কাঁপছ তুমি? তিনি জানালেন জ্বর হয়েছে। রাসুল (সা.) তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন কামারের হাঁপরে যেমন লোহার মরিচা চলে যায়, তেমনি জ্বরে আদম সন্তানের গুনাহ নষ্ট হয়। (মুসলিম: ২৫৭৫)
রাসুলুল্লাহ নারীদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখেননি। উম্মু সুলাইম ও অন্য নারীদের বিভিন্ন যুদ্ধে নিয়ে যেতেন আহত ব্যক্তিদের শুশ্রূষা করার জন্য। এই নারীরা লড়াই করার যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন। রাসুল (সা.) এই সাহসী নারীদের অবদান সব সময় গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করতেন।
উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ওহুদ যুদ্ধে আমি যেদিকেই তাকিয়েছি, উম্মু আম্মারাহকে আমাকে রক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে দেখেছি। (আত তাবকাতুল কুবরা, দার সদর, বৈরুত,৮ম খণ্ড, ৪১৫ পৃ.)
রাসুলের যুগে নারীরা ছিলেন জ্ঞানানুরাগী ও স্বাধীনচেতা। ব্যক্তিগত ও সামাজিক বিষয়ে নারীরা সরাসরি জিজ্ঞাসা করতেন রাসুলকে। নারীদের ঋতুস্রাব, যৌন কামনা বা একান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেন অকপটে, যে বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে এ যুগের নারীরাও সংকোচ বোধ করেন। এসব বিষয়ে নারী সাহাবিরা সঠিক মাসায়ালা জানার জন্য প্রশ্ন করতেন, আর রাসুল (সা.)-ও অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে তাঁদের কথা শুনতেন এবং সব প্রশ্নের উত্তর দিতেন।
মহানবী (সা.) নানাভাবে নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করেছেন। তিনি মদিনার আনসারি নারীদের প্রশংসায় বলতেন, আনসার নারীরা কতই না উত্তম! লজ্জা কখনোই তাঁদের ধর্মীয় জ্ঞানার্জনে বিরত রাখতে পারে না। (মুসলিম, হাদিস: ৭৭২)
মুসলিম নারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের জন্য পৃথক দিন নির্ধারণ করেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। আবু সাঈদ খুদরি থেকে বর্ণিত, নারীরা একবার বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! পুরুষেরা আপনার কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে সব সময়, তাই আমাদের জন্য পৃথক একটি দিন ঠিক করে দিন, যেদিন শুধু নারীরাই শিখতে পারবেন আপনার কাছে। (বুখারি, হাদিস: ১০১)
রাসুলের সঙ্গে নারীরা খুবই সহজ আর অকপট ছিলেন। নিজেদের মনের একান্ত ইচ্ছাও তাঁরা প্রকাশ করতে লজ্জা পেতেন না। সাহল বিন সাদ থেকে বর্ণিত, এক নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর কাছে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি নিজেকে আপনার কাছে উৎসর্গ করতে এসেছি। রাসুল (সা.) তাঁকে আপাদমস্তক দেখে মাথা নিচু করলেন। তখন নারীটি বসে পড়লেন।
রাসুল (সা.)-কে ভালোবেসে নারীরা বিভিন্ন উপহার আনতেন। রাসুল (সা.) সানন্দে গ্রহণ করতেন এসব উপহার। হজরত সাদ বিন সাহল (রা.) থেকে বর্ণিত, এক নারীরা বুরদা বা নকশা করা চাদর নিজ হাতে বুনে নিয়ে আসেন রাসুলের জন্য। রাসুল (সা.) সাগ্রহে তা গ্রহণ করেন। (বুখারি: ৫৮১০)
নারীদের প্রতি রাসুলের সম্মান ও মর্যাদা প্রদান শুধু মৌখিক ছিল না। চরম শত্রুগোষ্ঠীর নারীদের প্রতিও তিনি অতুলনীয় সম্মান দেখিয়েছেন। খায়বার যুদ্ধে বিজয়ের পর বিশ্বাসঘাতক বনু কুরাইজা ও বনু নাদির গোত্রের যুদ্ধবন্দী নারীদের দাসী হিসেবে মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। এর মধ্যে গোত্র সরদারের কন্যা সাফিয়্যা বিনতে হুওয়াই (রা.)-কে গ্রহণ করেন হজরত দেহইয়া (রা.)। কিন্তু তাঁর মর্যাদা লক্ষ করে সাহাবিদের অনুরোধে রাসুল (সা.) সাফিয়্যাহ (রা.)-কে স্বাধীনতা দেন এবং বিয়ে করার মাধ্যমে উম্মুল মুমেনিনের মর্যাদা দেন। আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, খায়বার অভিযানের পর বনু নাজিরের সরদারকন্যা সাফিয়া বিনতে হুয়াই (রা.)-কে দেহইয়ার হাতে সমর্পণ করা হয়। এক ব্যক্তি বললেন, সে তো আপনার যোগ্য, তাঁকে কেন দেহইয়াকে দান করলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে স্বাধীন করে দেন এবং বিয়ে করেন। (মুসলিম: ১৩৬৫)
আবদুল্লাহ ইবনে বুরায়দা (রা.) তাঁর পিতা বুরায়দা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, হজরত সাবিবিয়্যা আল গামেদিয়া (রা.) একবার এসে জানালেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি ব্যভিচার করেছি, আমাকে পবিত্র করুন। রাসুল (সা.) তাঁকে ফিরিয়ে দেন। কারণ, তিনি তখন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সন্তান জন্মদানের পর তিনি আবার আসেন। রাসুল (সা.) আবারও তাঁকে ফিরিয়ে দেন সন্তানকে দুধপানের জন্য। দুধপান শেষে সে আবার এসে বলেন, আমার সন্তান এখন খাবার খেতে শিখেছে। তখন রাসুল (সা.) তাঁকে শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। রাসুল (সা.) বলেন, সে তাওবা করেছে, তাঁকে আল্লাহ মাফ করেছেন। এরপর তাঁর জানাজা পড়ান রাসুল (সা.)। (মুসলিম: ১৬৯৫)
কত প্রিয় ছিলেন রাসুল (সা.) মুমিন বা অনুতাপকারী পাপী সবার কাছে।
সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার কিছু কুরাইশ নারী রাসুল (সা.)–এর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছিলেন। ঠিক এমন সময় উমর (রা.) সেখানে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেন। নারীরা সঙ্গে সঙ্গেই পর্দার আড়ালে চলে যান। রাসুলুল্লাহ মুচকি হেসে উমর (রা.)-কে বলেন, নারীদের এমন আচরণে আমি বিস্মিত। তোমার কণ্ঠ শুনেই তারা আড়ালে চলে গেল! উমর বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! অথচ এই নারীদের উচিত ছিল আপনাকেই অধিক ভয় করা। এরপর তিনি নারীদের উদ্দেশে বলেন, আমাকে নয়, তোমাদের উচিত ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে ভয় করা। নারীরা জবাব দেন, তা ঠিক, তবে আপনি অধিক রূঢ়ভাষী এবং কঠোর। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহর শপথ, শয়তান পর্যন্ত তোমাকে কোনো পথ দিয়ে যেতে দেখলে অন্য পথ দিয়ে যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর যেকোনো কথাই যখন মোমিনদের জন্য আদেশ ছিল, তখনো নারীরা রাসুলকে তাঁদের স্বাধীন ইচ্ছার কথা জানানোর সাহস পেতেন তাঁর উদারতার কারণে। বিশেষ করে বিয়ে বা তালাকের ব্যাপারে মুসলিম নারীরা সম্পূর্ণই স্বাধীন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, বারিরাহ (রা.) ছিলেন হজরত আয়েশা (রা.)–এর মুক্ত করে দেওয়া একজন দাসী। মুক্ত হওয়ার পর তিনি তাঁর স্বামী মুগিসকে তালাক দেন। মুগিস তাঁকে খুব ভালোবাসতেন, তাই কাঁদতে কাঁদতে তাঁর পেছনে পেছনে সর্বত্র যেতেন।
কখনো কখনো মুগিসের দাড়ি ভিজে যেত চোখের পানিতে। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুগিসের ভালোবাসা এবং বারিরাহর ঘৃণা দেখে বারিরাহকে বলেন, তুমি যদি তাঁর ব্যাপারে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে, তাহলে কতই না ভালো হতো। বারিরাহ (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আপনি কি আমাকে আদেশ করছেন তাঁর ব্যাপারে? রাসুল (সা.) বলেন, আমি শুধু সুপারিশ করছি; আদেশ নয়। বারিরাহ (রা.) বলেন, তাহলে তাঁকে আমার কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি: ২৫৭৯)
শিফা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) মক্কাতেই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং প্রথম পর্বে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতকারী নারীদের সঙ্গে হিজরত করেন। মুহাম্মদ (সা.) যেসব সাহাবির বাড়িতে প্রায়ই যেতেন, তাঁদের মধ্যে শিফাও একজন। রাসুল (সা.) তাঁর বাড়িতে বিশ্রামও নিতেন। তিনি হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর স্ত্রী উমরকন্যা হাফসা (রা.)-কে পড়ালেখা শিখিয়েছিলেন। পুত্র সুলায়মানকে নিয়ে তিনি রাসুলের দান করা একটি বাড়িতে বসবাস করতেন।
রাসুল (সা.) ছিলেন সবার জন্যই নিরাপদ আশ্রয়। তাই ইসলামের চরম হিংস্র শত্রুও যখন ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তখন রাসুলের কাছে নির্দ্বিধায় আশ্রয় পেয়েছেন। যেমন হিন্দা বিনতে উতবা (রা.) ছিলেন উতবা বিন আবু রাবিয়ার কন্যা, উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ানের মাতা এবং কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানের স্ত্রী। এই নারী উহুদ যুদ্ধে রাসুলের (সা.)–এর চাচা হজরত হামজা (রা.)-এর কলিজা চিরে বের করে চিবানোর জন্য কুখ্যাত হয়েছিলেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কায় নওমুসলিমদের বায়আত গ্রহণের একপর্যায়ে আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দা বিনতে উতবাহ (রা.) ছদ্মবেশে রাসুলের মজলিশে উপস্থিত হন। কারণ, তাঁরা লজ্জিত আর অনুতপ্ত ছিলেন তাঁদের অতীত কৃতকর্মের জন্য। রাসুল (সা.) যেন চিনতে না পারেন, তাই মুখ ঢেকেই ছিলেন হিন্দা। বায়আতের যে পর্যায়ে রাসুল (সা.) মেয়েদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছু শরিক এবং চুরি করবে না। এ কথা শুনে হিন্দা বলে ওঠেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কসম! আপনার পরিবারের চেয়ে অন্য কোনো পরিবারের ব্যাপারে আমি এত বেশি আকাঙ্ক্ষা করতাম না যে তাঁরা লাঞ্ছিত হোক।
কিন্তু এখন পৃথিবীর বুকে আপনার পরিবারের ব্যাপারেই আমি সবচেয়ে বেশি চাই যে আপনারা সম্মানিত হোন। রাসুল (সা.) তাঁকে চিনতে পেরে হেসে উঠে বললেন, তাহলে তুমি হিন্দা? তিনি উত্তর দেন, হ্যাঁ। হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! অতীতে যা করেছি, তার জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে ক্ষমা করে দেন এবং বলেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম! তুমি যা বলছ, তা সঠিক। এরপর হিন্দা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ লোক। আমি যদি তাঁর থেকে কিছু না জানিয়ে নিই, তাহলে কি তা চুরি হবে? রাসুল বলেন, ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যয় করলে কোনো দোষ নেই। রাসুলুল্লাহ আরও বলেন, তাঁরা যেন ব্যভিচার না করে।
হিন্দা বলেন, কোনো স্বাধীন নারী কি জিনা করতে পারে? রাসুল বলেন, তাঁরা যেন নিজ সন্তানকে হত্যা না করে। হিন্দা বললেন, আমরা শৈশব থেকে তাদের লালন–পালন করেছি আর আপনারা তাদের যৌবনে হত্যা করেছেন। এখন এ বিষয়ে আপনিই ভালো জানেন। এ কথা বলার কারণ, তাঁর পুত্র হানজালা বিন আবু সুফিয়ান বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের হাতে নিহত হয়েছিলেন। হিন্দার এ কথা শুনে উমর (রা.) পর্যন্ত হেসে ওঠেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃদু হাসেন। এরপর রাসুল (সা.) বলেন, তারা যেন কাউকে মিথ্যা অপবাদ না দেয়। হিন্দা বললেন, আল্লাহর কসম! অপবাদ অত্যন্ত জঘন্য কাজ।
আপনি আমাদের বাস্তবিকই সুপথ ও উত্তম চরিত্রের নির্দেশনা দিয়েছেন। রাসুল (সা.) আরও বলেন, তারা কোনো ভালো কাজে রাসুলের অবাধ্য হবে না। হিন্দা বললেন, আল্লাহর কসম! আপনার অবাধ্য হব—এমন মনোভাব নিয়ে আমরা মজলিশে বসিনি। অতঃপর হিন্দা বাড়ি ফিরে নিজ হাতে মূর্তি ভেঙে ফেলেন। (আল বিদায়াহ ৪/৩১৯)
রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে হিন্দা (রা.)–এর এই প্রাণবন্ত কথোপকথনেই বোঝা যায় কত অমায়িক আর প্রিয় ছিলেন রাসুল (সা.) সব মানুষের কাছে।
* তাসনীম আলম: শিক্ষক, ইসলামিক স্টাডিজ, খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ।