What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made নারী পুরুষের ধৈর্য (1 Viewer)

Joined
Aug 23, 2020
Threads
74
Messages
111
Credits
7,054
'ইউনিভার্সিটি' মানেটা কী তা আমি জানিনা, কলেজটা কেমন ছিল সেটাও ঠিক বুঝি না৷ তবে 'হাইস্কুল' এবং 'প্রাইমারি' বিষয় সম্পর্কে ঠিকই বুঝতে পারি ও পড়েছি বলেই তদুপরি জানি৷ 'ইউনিভার্সিটি' ও 'কলেজ' এদুটি বিষয় নিয়ে যদিও আমি এতটুকুও বুঝিনা বা জানিনা, তবুও কেউ যদি তাঁরই প্রসঙ্গে কিছু বিষয় ধরে আলোচনা করেন সেইক্ষত্রে কিছুটা হলেও তাঁর রহস্যটা উপলদ্ধি করতে পারি৷ এছাড়াও কোন সময় যদি ইউনিভার্সিটি ও কলেজের চারপাশের পরিবেশ গুলোর দিকে একটিবার দুচোখ ভরে দেখি তবে তাঁরই অনুভবে ইত্যাদি সব বিবরণের কথাটিও বলতে পারি৷ হয়তো কেউ কেউ ভাবছেন- আমি একজন মূর্খ ব্যক্তি হয়ে এতকিছু কিভাবে জানলাম! আর যে যাই ভাবুন তবে হ্যাঁ এ ব্যাপারে জানবার কারণটিও ছিল ইউনিভার্সিটি ও কলেজের কিছু বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আমার খুব একটা ভালো সম্পর্ক ছিল বলেই৷ আর সেই উৎসে তাঁদেরই জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু দুঃখজনক ইতিহাস ঘটে গিয়েছিল বলে সেই বিষয়ের উপরই কিছু আলোচনা চলমান লেখায় তাহাই তুলে ধরার জন্য আমার এ অসহায় কলমটি কয়েক লাইন লিখিত বাক্য ভাষা লিখে তা আপনাদের সকলের দৃষ্টির সম্মুখে প্রকাশ করতে চাইছে! অনুগ্রহপূর্বক আপনারা সকলেই আমার লিখিত কলমের লিখিত বাক্য লাইন গুলোর সাথেই থাকবেন এবং সকলের নিকট অনুরোধ রইলো দয়াকরে আপনারা সকলেই চলিত কলমের বলপিনটির প্রতি দৃষ্টিটি রাখবেন যেন, অসহায় কলমটি তাঁর কী এমন বাক্য ভাষা গুলো লিখে আপাদের জানাতে চাইছে! ছোট বেলা থেকেই মা বাবা এবং বড় ভাই ও বোনেরা অনেক মারধর করে গ্রামের সেই পুরোনো প্রাইমারি স্কুলটিতে পাঠাতেন৷ কখনো আমি স্কুলে যেতে না চাইলেও তাঁরা আমায় জোরপূর্বক পাঠিয়ে দিতেন৷ একেকটা সময় আমার খুব খারাপ লেগেছিল আবার কোন এক সময় খুব ভালও লাগতো৷ প্রাইমারি স্কুলে পড়বার সময় কয়েকজন আমার সহপাঠী ছিল, তারা সকলেই ছিল যথেষ্ট ভাল স্বভাবের ও নম্র ব্যবহারের৷ প্রায় সময়ই তাঁরা আমাকে বুঝিয়ে বলতো-

"পড়ালেখা গুলো ঠিকঠাক ভাবে না করলে অন্যের ক্ষেতে হালচাষ করতে হবে- বুঝলি?"

আর আমি ওঁদেরই ঐকথাটির উপর ভেবে এতটাই অসহ্যবোধ সহে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, যতটা কষ্টই হউক আমাকে আমার পড়ালেখাটার লক্ষ্যে যেভাবই হোক অন্তিম প্রান্তে পৌঁছাতে হবে৷ ভাবনার এরই কিছুদিন পর থেকে আমার পরিবারের এমনি কাউকে পূর্বের মতো আমাকে আর শাসন করেও স্কুলে পাঠাতে হতো না৷ নিজের ইচ্ছা মতই আমি আমার বই খাতা গুলো গুছিয়ে তাড়াহুড়ো করে স্কুলে চলে যেতাম এবং সবার আগই শ্রেণিকক্ষে গিয়ে উপস্থিত থাকতাম৷ আমার এই দ্রুতগামী প্রতিভার আগ্রহ গুলো দেখে স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে সকল সহপাঠীরাই আমাকে অত্যন্ত ভালবাসতে শুরু করেছিল৷ এছাড়াও পাশাপাশি আমি প্রতিটি বার্ষিকী পরীক্ষায় বেশ ভাল ফলাফলটি অর্জন করে জীবনের একেকটি ধাপও পার করেছিলাম৷ প্রাইমারি পড়া শেষ করে ভর্তি হয়েছিলাম আমার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত নামকরা একটি হাইস্কুলে৷ হাইস্কুলে নূতন ভর্তি হবার পর প্রথমে প্রথমে আমার ভীষণ খারাপ লেগেছিল, তবে তা পরে আমার সেই খারাপ মনোভাবটা ধীরে ধীরে কেটে গিয়েছিল৷ বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দেবার মজাটাই ছিল অন্যরকম ধরনের৷ যখন আমি নবম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম ঠিক ঐ সময়ে আমার স্কুলেরই একজন সহকারী শিক্ষক আমার ব্রেঞ্চটির সামনে এসে হাস্যকর ভাষায় বললেন_

"আচ্ছা আশিক, তুমি কী এভাবই শুধুশুধু কলম ও খাতাটি নিয়েই সারাক্ষণ বসে থাকো, নাকি...?"

সহকারী শিক্ষকের উক্ত প্রশ্নোত্তরে আমি বললাম_

"স্যার, আমি যদি আমার কলম ও খাতাটি নিয়েই শুধু সারাক্ষণ বসে থাকতাম তবে কী আপনাদের দেওয়া পাঠ্যপুস্তকের অধ্যায় গুলো দৈনিক ঠিকঠাক ভাবে তা বুঝিয়ে দিতে পারতাম? বলুন তো দেখি স্যার?"

"তা অবশ্য তুমি এক হিসেবে কথাটি মন্দও বলোনি! তবুও কেন জানি তোমাকে নিয়ে আমার মাঝেমধ্যে ভাবনা হয়, আচ্ছা বলো তো- তুমি পড়ো কখন শুনি?"

"স্যার, পড়ার টেবিলটায় যখন আমি বসি ঠিক ঐ সময়ে আমি আমার পাঠ্য বইয়ের পড়া গুলো যথার্থ মনোযোগী হয়েই তা পড়তে থাকি৷"

স্কুলের সকল শিক্ষকদের এরকম বিভিন্ন ধরনের কিছু প্রশ্নের উত্তর গুলো আমি এভাবই জানিয়ে দিয়েছিলাম৷ পড়ালেখার পাশাপাশি লেখালেখির অভ্যাসটিও ছিল আমার যথেষ্ট প্রিয়৷ এমতাবস্থায় আমি নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলটিও বেশ ভালই করেছিলাম৷ দশম শ্রেণী আর আমাকে ঠিকমতো পড়তে দেয়নি৷ এ জীবনের গোছানো আশা ভরসা গুলো যা কিছু ছিল সবেই তা হঠাৎ একটা বড় ঝড় এসে বন্যায় সম্পূর্ণ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে অথৈ জলের অজানা সীমান্তে! সেই বন্যার অথৈ জলের উপর ভেসে থাকার মতো সুখ শান্তি টুকুও ছিল না৷ জলের উতালপাতাল ঢেউ তরঙ্গ আমায় ঠেলে পৌঁছে দিয়েছিল দশমে চলে আসা একটি নারীর ঠিকানায়! যাঁর কারণে আজও আমি কলেজ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি৷ এই অদ্ভুদ অন্তরটি শুধু একটিমাত্র নারীর অবুঝ ভালবাসার মায়াজালের ফাঁদে আটকে গিয়েছিল৷ সেই থেকে তাঁকে নিয়েই আমি আমার জীবনের প্রতিটি স্তর গুলি ধাপেধাপে সাজাতে শুরু করেছিলাম৷ তাঁরই অধীর ঘনঘোর প্রেমের কারণে একেকটা সময় পড়ালেখাটা কী জিনিস সেটিও আমি ভুলে গিয়েছিলাম৷ একটা সময় ঠিকই ভেবে নিয়েছিলাম যে, এ জীবনে পড়ালেখা করে কী আর হবে! এমনি বিভিন্ন ধরনের আজগুবি বাজে চিন্তাভাবনা গুলো এ বদ্ধ অন্তরটিতে পুষে শুধু তাঁরই পিছে আমি আমার অলস সকাল ও ক্লান্ত জীবনের দিনরাত গুলো অনাসয়ে ব্যয় করেছিলাম৷ এমতাবস্থায় হঠাৎ একদিন তাঁহারই ভালোবাসার মায়াজালে বিবাহ বন্ধনে নিজেকে বন্দিশালায় আবদ্ধ করে ফেললাম৷ এবং তাঁর সাথেই শুরু করা হলো আমি/ আমাদের নতুন সংসার জীবন৷ কোন একটা সময় এটিও কখনো ভাবিনি যে, ভবিষ্যৎতে আমরা দুজনে কী করবো৷ আজ না হয় বাবার আছে বলে তাঁরই হোটেলে খাচ্ছি! দুইদিন গত হলেই যখন বাবাও বলে দেবেন, তোমাদের মতো তোমরা কিছু একটা করে নিয়ে খাও তখন আমরা কী করবো সেটিও বড় ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ অথচ এমনি চিন্তাভাবনা গুলো কখনই তা আমরা করিনি৷ ঠিকানাবিহীন ভালোবাসার মোহে পড়ে আমরা দু'জনই স্বপ্নের এক অচেনা দেশে হারিয়ে গিয়েছিলাম৷ এই অন্ধ ভালোবাসার রূপ এখন আর আমাদের দুজনার হৃদয়ের গভীরে এতটুকুও নেই! অবশ্য ভালোবাসা না থাকারও কারণটি ছিল একমাত্র অভাবের জন্য৷ অভাবে পরলে যেমনতর ভাগ্যে জোটে- সেরকমটাই ঘটেছিল! জীবনের সুন্দর মুহূর্ত গুলো অপচয় করার কারণেই সেও আজ এই অন্ধ ভালোবাসার প্রিয় মানুষটিকে অনেক দূরে সরিয়ে রেখেছে৷ দু'জনার মাঝে যোগাযোগ ছিল বিচ্ছিন্ন৷ দুটি অন্তরে ছিল না যত্ন করে রেখে দেবার পুরোনো যতসব মুগ্ধময় বাক্যের ভাষা গুলিও! দুচোখের দৃষ্টি যে দিকেই পড়েছিল যেন মনে হয়েছিল ধুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে শুধু বিচ্ছিন্নতার চিহ্ন গুলো৷ আজও অনেক দূরে অবস্থান করছি৷ তবে হ্যাঁ তবুও আমি তাঁকে ছাড়া নূতন নূতন কিছু বন্ধুদের নিয়ে মোটামুটি যথেষ্ট ভালই রয়েছি৷ আমার মতো সেইসব বন্ধুদের জীবনেও ঘটে গিয়েছিল তেমনি ধরনের দুঃখজনক বিভিন্ন কাহিনীর ইতিহাস৷ তাঁদের ঐসব দুঃখজনক কাহিনী গুলো মাঝেমধ্যে আমি তা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতাম৷ এবং পর্বতীয় সময় সেইসব কাহিনী গুলো আমি আমার কালি ভর্তি একটা কলম দ্বারা লিপিবদ্ধ করে রাখতাম পুরনো একটি ছেঁড়া পাতার ডায়েরিতে৷ তেমনি একজন বন্ধু তাঁরও জীবনে ঘটেছিল গোপনীয় কিছু ইতিহাস- তা আমি তাঁরই আপন মুখে শুনেছিলাম৷ আর সেটারই কিছু ইতিহাস এই গল্পের আলোচনায় তুলে ধরেছি_

সেই বন্ধুটি যখন সে সরকারি কলেজে পড়ালেখা করছিল আমাদের দুজনার মতো অন্ধ ভালবাসায় আসক্ত হয়ে অন্য একটি নারী তাঁর জীবনেও এসে ধরা দিয়েছিল৷ তবে ঐ নারীটির মূল উদ্দেশ্যটি ছিল কোন স্বার্থ হাঁচিল করবার৷ তবে হ্যাঁ তাঁর সেই মূল স্বার্থটি ছিল শুধু অর্থের৷ অর্থকে সে খুব বেশিই ভালবেসে থাকতো৷ এমতাবস্থায় একটা সময় আমার বন্ধুটি মনে করে বসলো, বোধহয় ওঁর পারিবারের সাংসারিক কোন বিষয়ে এই অর্থ গুলির প্রয়োজন ছিল৷ এটাই মনে করে আমার বন্ধুটি সেই নারীটিকে যথেষ্ট সাহায্য সহযোগিতা করতে লেগে পড়লো৷ এবং একটা সময় সে এই সুযোগে ভেবেই নিয়েছিল যে যদি তাঁকে এভাবে সাহায্য সহযোগিতা গুলো করা যেতে পারে তবে তো স্বার্থকের খাতায় নিজেকেই লিপিবদ্ধ করে ধন্য মনে করা যেতে পারে! কিন্তু এসব বিষয়ের সব কিছুতেই ছিল আমার বন্ধুটির ভুল চিন্তাভাবনা৷ কিছুদিন পরে যখন সে বুঝতে পেয়েছিল যে লোভী নারীটি তাঁর স্বার্থ হাঁচিল করবার জন্যই ওঁর নিকট নেওয়া সমস্ত অর্থ গুলো নিজের ব্যাংক একাউন্টে জমিয়েছিল, ঠিক পরেক্ষণই আমার সেই বন্ধুটিকে চিরদিনের জন্য ঐ নারীটি নমস্কার জানিয়ে চলে গিয়েছিল! এরমাঝে আরো কিছু সত্য ঘটনা লুকিয়ে ছিল, তবে সেগুলো লিখে বললে হয়তো আমার এই ভরা কলমটির কালি গুলো শেষও হয়ে যেতে পারে! এছাড়া ঐসব বিষয়ের কথা গুলো যদিও এখানে লিখতে যাই তবে তা লিখেও শেষ করাটি অসম্ভব বলে মনে করছি৷ তবে ঐসব ঘটনার সত্য কাহীনি গুলো পরে কোন একদিন অবসর সময় পেলে তা অবশ্যই আপনাদের সামনে ধৈর্য সহকারে লিখে তুলে ধরবো৷ যাই হোক এইসব সত্য কাহীনি গুলো হয়তো কাহারো নিকট পড়তেও খারাপ লাগছে! আবার কাহারও নিকট হয়তোবা ভালও লাগছে! তবে যাঁদের কাছে ভাল লাগছে তাঁদের জন্যই বলছি, চলুন অন্য আরেকটি বন্ধুর জীবন ডায়েরিটির পাতায় চলে যাই!

বাবার একমাত্র ছেলে ছিল আশিক৷ বাংলাদেশ 'ইউনিভার্সিটি' শেষ করেই সে উন্নত পড়ালেখা করার জন্য বাহিরের দেশে চলে গিয়েছিল৷ ওখানে গিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই পরিচয় হয়েছিল বাংলাদেশেরই কোন একটি জেলার সুন্দরী একজন নারীর সঙ্গে৷ সুন্দরী সেই নারীটির নামটি ছিল মীম৷ মিষ্টি মধুর মুখের ভাষা গুলো শুনতে পেয়ে আশিকও হারিয়ে গিয়েছিল মীমের ছলনাময়ী ভালবাসায়! দু'জনে কোনরকম তাঁদের পড়ালেখার ধাপ গুলো সমাপ্তি করেছিল৷ এরই মধ্যে হঠাৎ কোন একদিন তাঁরা দু'জনই ফিরে এসেছিল নিজস্ব জন্মভূমি বাংলাদেশের মাটিতে৷ নিজের দেশে ফিরেই কিছুদিন পর বাবা মায়ের অবাধ্যগত হয়ে নিজ নিজ ইচ্ছায় তাঁরা দুজনই বিবাহ সম্পন্ন করে নিয়েছিল৷ কিন্তু ওঁরাও কখনো ভেবে দেখেনি যে, তাঁদের তো কোন পেশাগত কর্মটিও ছিল না! তবে এটুকুই শুধু তখন ভেবেছিল তাঁরা তো উচ্চ শিক্ষিত, তারজন্য হয়তো নিজের দেশেই কোন না কোন একটা উপায় খুঁজে নিয়ে সুখ শান্তিতেই জীবন অতিবাহিত করতে পারবে৷ বিয়ের পর তাঁরা নিজের পরিবারটি ছেড়ে দূরে কোথাও সংসার সাজিয়ে নিয়েছিল৷ এমতাবস্থায় হঠাৎ তাঁরা একটা কর্মেরও সুব্যবস্থা করে নিয়েছিল! দুজনার মাঝে শুরু হলো কর্মের পাশাপাশি নতুন সংসার জীবন৷ কেউ কোনদিন সন্ধ্যার আগই বাসায় ফিরে আসতো আবার কেউ কোনদিন রাত এগারোটার পর ফিরতো৷ দীর্ঘদিন এভাবই তাঁদের বিভিন্ন দ্বন্দ্ব ঝামেলার মধ্য দিয়ে কাটছিল সংসার! একদিন আশিক তাঁর স্ত্রীর অফিসের সামনের পথটি ধরে বাসায় হেঁটে আসছিল, ঠিক ঐ সময়ে আশিক দেখতে পেল তাঁর সেই স্ত্রী অপর আরেকজন পুরুষের সাথে প্রাইভেট কারে চড়ে কোথাও যেন যাচ্ছিল৷

ঐ থেকেই শুরু হলো আশিকের জোড়া মনের অসহ্য অস্থিরতার এক মহা তাণ্ডব৷ তখনকার ঐসব স্ত্রীর দৃশ্য গুলো দেখার পর থেকে বাসায় ফিরেও আশিকের সময় গুলো একদম কাটছিল না৷ সেদিনেও ওঁর স্ত্রী মীম যখন বাসায় ফিরেছিল ঘড়িতে তখন বেজেছিল রাত্রি এগারোটার মতো৷ আশিক অবশ্য মীমের ঐসব ঘৃণিত দৃশ্য গুলো দেখার পরেও সেসব বিষয়ে মীমকে সে কোন কিছুই প্রশ্ন করেনি৷ প্রতিদিনের মত সেদিনও সে তাঁকে এই প্রশ্নটিই করেছিল_

"এই চাকরিটা করতে গিয়ে তোমার যদি বেশি কষ্ট হয়ে থাকে তবে তুমি আর সেটা করো না!"

আশিকের কথাটির জবাবে মীম বলেছিল_

"না, তা কেন হবে! আমি একদম ভাল আছি৷"

মীমের হাতের ব্যবহারিক ফোনটির রিংটোনটা প্রায় সময়ই সে বন্ধ করে রাখতো৷ সেদিন রাত্রি বেলাতেও সে তাই করে রেখেছিল৷ সেদিন মীম ফ্রেশ হবার জন্য টেবিলের উপর তাঁর হাতের ফোনটি রেখে বার্থরুমে চলে গিয়েছিল আর আমি তখন বিছানাতে শুয়েই ছিলাম৷ হঠাৎ আমার চোখের দৃষ্টি গেল মীমের ফোনটির উপর৷ আমি তখন দেখছিলাম মীমের ফোনটির স্ক্রিনের আলোটি বারবার জ্বলছে ও নিভছে৷ বিছানা থেকে উঠেই আমি ধীরে ধীরে ফোনটির কাছে গেলাম৷ মীমের ফোনটি হাতে নিয়ে ফোনের স্ক্রীনে দেখতে পেলাম অজানা একটি নামে সেভ করা নাম্বার৷ নাম্বারটির নামটিতে লেখা ছিল সৌরভ৷ এ নামেই মীমের ফোনটিতে গত কিছু দিনে কয়েক শতবার তাঁকে ফোন করা হয়েছিল৷ তাহাই দেখতে পেয়েছিলাম মীমের ফোনটির কল লিস্টে গিয়ে৷ যেটাই হোক না কেন তখনই আমি ফোনের কলটি খুব দ্রুত তা রিসিভ করে ফেলাম৷ কিন্তু কোনরকম ভাবে কথা না বলেই ওপাশের কথা গুলো শুধু চুপচাপ শুনছিলাম৷ ওপাশের ছেলেটির কথা গুলোর মাঝে যা শুনেছিলাম তাঁর ভাষা গুলো ছিল এরকমটাই_

"আজ হয়তো একটু বেশিই তৃপ্তি ভোগ করেছিলে তাইনা!"

এছাড়াও আরো অনেক কিছুই সে তখন ফোনের ওপাশ থেকে বলছিল৷ ঐসব বাজে কথাবার্তা গুলো শুনতেও আমাকে অনেকটা ঘৃণাবোধ করেছিল৷ চট করে ফোনটির লাইনটা কেটে দিয়েই ফোনটি অনুরূপ ঠিক আগের জায়গায় রেখে দিয়েছিলাম৷ ফোনটি কেটে দেবার পরেও বিছানায় শুয়ে দেখছিলাম ছেলেটি আবারও বারবার ফোনের উপর ফোন দিচ্ছিল৷ পরে মীম বার্থরুম থেকে বাহির হয়ে এসে ফোনটি তাঁর হাতের মুঠোয় নিয়ে ঘরের বারান্দার সামনের দিকে গিয়ে চুপিচুপি কীসব যেন কথা সমাপ্ত করে ফোনের লাইনটা কেটে ফোনটি রেখে দিয়েছিল টেবিলটির উপরই৷ পর পরই আমি খাবারের জন্য টেবিলে চলে গেলাম৷ খাবার প্লেটে দুই চামচ ভাত বেড়ে নিয়েই মীমকে বললাম_

"মীম, তুমি হয়তো আজ খাবে না, তাইনা?"

মীম অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলল_

"কেন?"

"না এমনিতেই জিজ্ঞেস করলাম আর কী৷"

"ও, তাই বল"

সত্যিই সেদিনের সেই রাতে মীম আর কোন কিছুই তখন খায়নি৷ আমি কোনরকম খাবারটি সেরেই বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম৷ বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ পর মীমকে আমি তখন কয়েকটি কথা বললাম_

"মীম, তোমাকে আমি কিছু কথা বলছি শোনো! আমার একথা গুলো তুমি তা মনোযোগ সহকারে শুনবে! শোনো, আমি শুধু আজকের এই রাতটির জন্যই তোমার এই ঘরে রয়েছি! তবে তোমার স্বামীর পরিচয়ে নয় বরং একজন মেহমান হিসেবে৷ ভোর হলেই আমি তোমার এ ঘরটি ছেড়ে চলে যাবো আমার অতীত জীবনের পরিবারের কাছে৷ তুমি ভাল থেকো তোমার সৌরভ নামের সেই নতুন স্মার্ট ছেলেটিকে নিয়ে৷"

আশিকের কথা গুলো শোনার পর মীমের মুখ থেকে আর একটি কথাও বের হচ্ছিল না যে, হঠাৎ করে কেন আজ আশিক তাঁকে এইসব কথা গুলো বলছিল৷

আশিক আরও কিছু কথা মীমকে বলেছিল, যাহা নিম্নে উল্লেখ করা হলো_

"আচ্ছা মীম, বলো তো সত্যিই কী নারীরা বুঝি এমনটাই হয়? নাকি তাঁদেরও এক একটি সুন্দর বিবেক মনুষ্যত্ববোধ বলে কিছু আছে? তাই যদি থেকে থাকে তবে কেন তাঁরা এমনিভাবে মিছে সুখের আশায় অধিক পুরুষের জীবনে পা রাখে? কেন তাঁর স্বামীর গভীর ভালবাসা গুলো পাবার পরেও হৃদয়টা ভরে না? তবে কী এটাই বুঝে নেবো সেই পুরুষটা তাঁর সত্যিকারের ভালবাসা গুলো দিতে পারেনি? কেনইবা তাঁরা যথাসাধ্যের সুখ ও দুঃখ গুলো ভাগাভাগি করে নিয়ে গড়তে পারে না ছোট্ট একটি সুখের সংসার? আচ্ছা বলো তো কেনইবা তাঁরা অন্য আরেকটি অপর পুরুষকে পেয়েই গত জীবনের সবকিছু ফেলে রেখে চলে যায়? তবে কী সত্যিই পুরুষেরা ধন্য মনে করবে তোমাদের মত নারীদের বিয়ে করে? অবশ্য খুব ভালই পারো তোমরা দশ দশটি ছেলের জীবন নিয়ে খেলতে- তাই না?"

সেদিন আশিক বুকের মাঝে অজস্র বেদনা লুকিয়ে রেখে অনেক কিছুই সে মীমকে বলাবলি করে ঘর থেকে বাহির হয়ে চলে গিয়েছিল৷ ঘরের সমস্ত কিছু মীমের হাতে বুঝিয়ে দিয়ে সে পূর্বের ন্যায় তাঁর অতীত জীবনের ঠিকানায় চলে গিয়েছিল৷ নতুন করে এখন তাঁর একটাই চিন্তাভাবনা তা হলো পরিবারের কাছে ফিরে গিয়ে তাঁর ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া ও পরবর্তীয় সময় তাঁকে তাঁর বাবা মায়ের পাশে থেকে ভাল একটি কর্মের উপার্জিত অর্থে পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা করা ছাড়া অন্য আর কিছুই কল্পনার সাধনা নেই৷

এরই ধারাবাহিকতায় সমগ্র নারী ও পুরুষদের নিকট আমিও কিছু প্রশ্ন তুলে ধরছি_

দয়াকরে কোন নারী/ পুরুষ জাতি আমার এই প্রশ্নে আপনারা কেউ রাগান্বিত হবেন না৷ এছাড়াও সবাইকে এটিও বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, আশা করি আমার প্রশ্নটির জন্য সবাই আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!

প্রশ্ন গুলো হচ্ছে এমনটাই_

০১. সংসারের সামান্য একটু সুখই কী আপনার জীবনে শান্তি ফিরিয়ে দিতে পারে না?

০২. জীবনে একটিবার বিয়ে করেই কী জীবনের বড় সম্মানটি পাওয়া সম্ভব নয়?

০৩. জীবনে একটিমাত্র সংসারে থেকেই আপনারা কী সেটাকেই স্বর্গ মহলে সাজাতে পারো না?

০৪. অল্প কিছু অর্থের দ্বারাই কী আপনার সামান্য সম্পদকে বিশাল আকারে গড়ে তুলতে পারে না? সেটিও কী অন্যরকম করে অন্তত একটু ভাবা যায় না?

০৫. জীবনে একটি কথাই স্মরণ রাখবেন, নিজের প্রতিভা, নিজের সঠিক লক্ষ্য, নিজের একটু ধৈর্য খেয়ালের কারণেই সকল অসম্ভবকে দ্রুত সম্ভাব্যে পরিনত করা যেতে পারে, এটা জানার পরেও তবুও কেন সেই ধৈর্যটি ধরে রাখতে পারেন না?

০৬. অতএব আসুন আজকের পর থেকে সকলেই এটাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই যে, আমাদের মনোভাবটির চরিত্রটিকে সৎ, সুন্দর ও সুখের জীবনে গড়ে তুলবো! এরপর থেকে যেন দেখতে না হয়- পথের ধারের নোংরা নর্দামায় পড়ে আছে নারী কিংবা পুরুষ কেউ বা কেউ?

সবশেষে সকলের নিকট এটুকুই প্রত্যাশা করছি- সকলের স্বভাব চরিত্র ও চলাফেরা গুলো সুন্দর হউক এই কামনায় ইতি টানছি৷ সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন৷ সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ৷

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ভুলত্রুটি মার্জনীয়, লেখাটি আধুনিক যুগের কিছু নারী ও পুরুষ উভয় পক্ষের স্বভাব চরিত্র গুলো লক্ষ্য রেখেই লেখা৷
 
খুব ভাল লিখেছেন। একেবারে মনের গভীরে থাকা কথাগুলো আপনার লেখনীতে উঠে এসেছে।
 
Good observations. Very long write up testing patience of reading. Title justified.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top