পৃথিবীতে বেশ কিছু পরিত্যক্ত শহরের দেখা মেলে। বাড়ি ঘর, রাস্তা ঘাট- সবই আছে সেখানে। কিন্তু কোন এক অদ্ভুত কারনে সেখানে মানুষ বাস করে না। এক সময় যে শহর মানুষের কোলাহলে মুখরিত ছিল, আজ তা জনশুন্য! তেমনই এই শহর হচ্ছে- কলম্যানস্কোপ। এই শহরের অবস্থান নামিবিয়ারতে। অনেকেই একে নামিবিয়ার ভুতের শহর বলে থাকেন। আজ থেকে ৫০ বছর পূর্বে এই শহরটি ছিল জনবসতি পরিপূর্ণ প্রাণবন্ত একটি শহর। কিন্তু সেই শহর এখন নিষ্প্রাণ। কোথাও জনবসতির কোন চিহ্ন নেই। তাই মানুষজন এখন এই শহরের নাম দিয়েছে ভুতের শহর।
নামিবিয়ার ভুতের শহর
এই শহরের অবস্থান দক্ষিন নামিবিয়ায়। মূল শহর লুদেরিজ থেকে ১০ কিলোমিটার ভেতরে। ধারণা করা হয় যে এক সময় অন্তত ৭০০ পরিবারের ২৫০০ মানুষ বসবাস করতো এই ছোট্ট শহরটিতে। মূলত হীরার খনির শ্রমিকেরা তাদের বসবাসের প্রয়োজনে গড়ে তুলেছিল এই শহর। কিন্তু এক সময় শহরটি তার আবেদন হারায়। মানুষজন তাদের বাড়িঘর ফেলে চলে যায়। কিন্তু কেন চলে গিয়েছিল তারা? চলুন সে বিষয়ে জেনে নেই এবার।
শহর ছেড়ে সবার চলে যাবার কারন?
১৯০০ সালের দিকে একটা গুজব ছড়িয়ে পরে। কলম্যানস্কোপ শহরের আশে পাশেই বালির তলায় নাকি আছে একটা হীরের খনি। গুজব ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যুতের গতিতে। তখন দলে দলে খনি শ্রমিকেরা আসতে শুরু করে এই শহরে। অনেক আশা নিয়ে একের পর এক পরিবার হীরের মোহে ভিড় জমায় এবং বসবাস শুরু করে এই শহরে। বালির ওপর গড়ে ওঠে অত্যাধুনিক এক শহর। কিন্তু সেভাবে কিছুই না মেলায় হতাশ হয়ে কলম্যানস্কোপ শহর ছাড়তে হয় তাদের। তারপর থেকেই এই শহর সম্পূর্ণ নির্জন। চারদিক নিরব শুনশান। কোথাও কেউ নেই। পড়ে রয়েছে শুধু ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, ভগ্ন বাজার, দোকান-ঘাট। পুরো শহরটিতে একধরনের ভুতুরে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
কেন বালির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে এই শহর?
আফ্রিকার দক্ষিণপশ্চিম প্রান্তের নামিবিয়ার এই ভূতড়ে শহর এখন বিশ্বের অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের সেরা আকর্ষণ। যতই হোক ভূতের শহর বলে কথা। তবে প্রতিনিয়ত বালি ঝড়ে ধীরে ধীরে এই শহর তলিয়ে যাচ্ছে বালির নিচে। ঝড়ে শহরের বেশ কয়েকটি বাড়ির প্রায় অর্ধেক চলে গিয়েছে বালির নিচে। বালির ঝড়ে শোঁ শোঁ আওয়াজ ভূতের শহরকে আরও ভৌতিক করে তুলেছে। খুব বেশিদিন এই শহর টিকবে বলে মনে হয় না। অচিরেই মিলিয়ে যাবে বালির নিচে।
কলম্যানস্কোপ সম্পর্কে আরও তথ্য পাবেন তাদের অফিসিয়াল সাইটেঃ
আজ এই পর্যন্তই। সামনে নতুন কোন ঘটনা নিয়ে হাজির হয়ে যাবো। ধন্যবাদ।