What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other নব্বই দশক আখ্যান (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,016
Credits
220,387
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
iMNXkJc.jpg


নব্বই দশক ছিল আশীর্বাদ দেশের গোটা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। তারুণ্যের নবজাগরণ যেমন ছিল প্রবীণদের অবদানও ছিল। দুটির সংমিশ্রণে এ দশকটির কথা স্মরণীয়। যারা ঐ সময়টিকে বেড়ে উঠেছে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছে তারা মন থেকে উপলব্ধি করতে পারবে। দেশের চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, নাটক, বিজ্ঞাপন বিনোদন মাধ্যমের সব কটি ধারাতেই মানসম্মত কাজের জোয়ার ছিল নব্বই দশকে। একটা নীরব বিপ্লব বয়ে গিয়েছিল।

চলচ্চিত্রে নব্বই দশক পূর্ববর্তী আশির দশকের সাফল্যকে ধারণ করেছে পরিপূর্ণভাবে। বাণিজ্যিক ও অফট্র্যাক ছবি নির্মিত হয়েছে সমান্তরালে যদিও বাণিজ্যিক ছবির জোয়ার ছিল। বাণিজ্যিক ছবির মধ্যেই বিভিন্ন ধরনের এক্সপেরিমেন্ট ছিল। নির্মাতারা মন খুলে মানসম্মত ছবি যেমন নির্মাণ করেছেন দর্শকও তেমনি তাদের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। বহু ছবি ব্যবসাসফল হয়েছে, সুপারহিট হয়েছে। বাণিজ্যিক ছবিই ইন্ডাস্ট্রিকে টিকিয়ে রাখে আর অফট্র্যাক মাঝে মাঝে সেখানে আসা-যাওয়া করে। নব্বই দশকে বাণিজ্যিকের রাজত্ব ছিল। ঢালিউডের বেশকিছু ছবি টলিউডে রিমেক হয়েছিল এতে কনে তাদের বাণিজ্যিক ছবির ধারা পরিবর্তন হয়েছিল। আমাদের ‘বাবা কেন চাকর, সন্তান যখন শত্রু, প্রেমের প্রতিদান, স্নেহের প্রতিদান, মায়ের দোয়া, ঝিনুক মালা, নয়নের আলো, মায়ের অধিকার’ ছবিগুলো একই নামে টলিউডে রিমেক হয়েছিল। আরো কিছু ছবি ছিল। আমাদের প্রেমের সমাধি তারা রিমেক করেছিল ‘বকুল প্রিয়া’ নামে। ‘এই ঘর এই সংসার’ রিমেক করেছিল ‘ঘর সংসার’ নামে। তাদের ইন্ডাস্ট্রি তখন টাইপড অবস্থায় ছিল। আমাদের কিছু সফল বাণিজ্যিক ছবির স্বত্ব কিনে নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এফডিসিতে বসে থাকত তাদের প্রযোজকরা। এ গল্পগুলো অনেকেরই অজানা। তাদের বাণিজ্যিক ছবির ভাষা বদলে দিতে আমাদের বাণিজ্যিক ছবির অবদান আছে। আমাদের সেসময় অনেক প্রতিষ্ঠিত নায়ক ছিল আর টলিউডে প্রসেনজিৎ ছাড়া বলার মতো তেমন স্ট্রং পজিশনের নায়ক তাদের ছিল না। প্রসেনজিৎ এপারে এসে ‘প্রিয়শত্রু’ ছবিতে অভিনয়ও করেছিল দিতির বিপরীতে।

পরিবার নিয়ে ছবি দেখার যে প্রচলন সত্তর দশকে বেড়ে ওঠা দর্শকরা বলে সেই ধারাবাহিকতা নব্বই দশকেও ছিল। ছবি দেখে বাস্তবসম্মত কিছু শেখার প্রবণতা ছিল দর্শকের মধ্যে। ফ্যামিলি ড্রামা ছবি তাই অবধারিত ছিল দর্শক রুচির মধ্যে। নব্বই দশকের উল্লেখযোগ্য ফ্যামিলি ড্রামাগুলো ছিল- আজহারুল ইসলাম খানের ‘মরণের পরে’, কামাল আহমেদের ‘গরিবের বউ’, নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘সাজানো বাগান’, সোহানুর রহমান সোহানের ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস, অগ্নিস্বাক্ষী’, এ জে মিন্টুর ‘পিতা মাতা সন্তান, বাংলার বধূ, বাপের টাকা’, সাইফুল আজম কাশেমের ‘স্বামীর আদেশ’, রায়হান মুজিবের ‘কাজের বেটি রহিমা’, মতিন রহমানের ‘অন্ধ বিশ্বাস, স্নেহের বাঁধন’, বেলাল আহমেদের ‘বন্ধন’, মোতালেব হোসেনের ‘হিংসা, ভালোবাসার ঘর, শাসন’, কবীর আনোয়ারের ‘বেয়াদব’, আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপি এখন ঢাকায়, আদরের সন্তান’, সৈয়দ হারুনের ‘চরম আঘাত, আত্মত্যাগ’, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু-র ‘চাকরানী, গরিবের সংসার, রাগ অনুরাগ’, রায়হান মুজিবের ‘হিংসার আগুন’, নূর হোসেন বলাই-র ‘শেষ খেলা’, মনোয়ার খোকনের ‘সংসারের সুখ দুঃখ, ঘাত-প্রতিঘাত, স্বামী কেন আসামী’, মোস্তফা আনোয়ারের ‘বাংলার মা’, দীলিপ বিশ্বাসের ‘অজান্তে’, ছটকু আহমেদের ‘সত্যের মৃত্যু নেই, মিথ্যার মৃত্যু’, শিবলি সাদিকের ‘বদসুরত, মায়ের অধিকার, অনুতপ্ত’, জাকির হোসেন রাজুর ‘জীবন সংসার, আজিজ আহমেদ বাবুলের ‘স্নেহের প্রতিদান’, ইফতেখার জাহানের ‘নিষ্ঠুর’, মালেক আফসারীর ‘দুর্জয়’, এম এম সরকারের ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ইস্পাহানি আরিফ জাহানের ‘লাট সাহেবের মেয়ে’, রাজ্জাকের ‘বাবা কেন চাকর, সন্তান যখন শত্রু’, মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘সুখের ঘরে দুখের আগুন’, মোখলেসুর রহমান গোলাপের ‘শেষ প্রতীক্ষা’, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘স্নেহ, পরাধীন’, মহম্মদ হান্নানের ‘ভালোবাসি তোমাকে’, শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘গৃহযুদ্ধ, ম্যাডাম ফুলি’ ইত্যাদি। পরিবারের ভেতরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্পর্কের টানাপড়েন, মান-অভিমান, বিচ্ছেদ, মিলন এ ধরনের জীবনমুখী গল্পের ছবি এগুলো।

রোমিন্টিক বা রোমান্টিক ড্রামা বিষয়ক ছবির ভক্ত অনেক দর্শকই ছিল। ফ্যামিলি ড্রামা যেমন হিট হত রোমান্টিক ড্রামাও হত। নব্বই দশকে এ ধরনের ছবির অসাধারণ সাফল্যের পাশাপাশি চাহিদা ছিল প্রচুর। দর্শকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে নির্মিতও হত অনেক। উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো ছিল-‘সি বি জামানের ‘কুসুমকলি’, এহতেশামের ‘চাঁদনী, চাঁদনী রাতে’, শেখ নিয়ামত আলীর ‘চাঁদের আলো’, ফজল আহমেদ বেনজিরের ‘প্রেমের প্রতিদান’, নাজমুল হুদা মিন্টুর ‘মৌসুমী’, মোহাম্মদ হোসেনের ‘আবুঝ দুটি মন’, তোজাম্মেল হক বকুলের ‘পাগল মন, বালিকা হলো বধূ’, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘প্রেমগীত, হারানো প্রেম, প্রেম’, দিলীপ সোমের ‘দোলা, মহামিলন, হৃদয় আমার’, আওকাত হোসেনের ‘আশিক প্রিয়া’, জহিরুল হকের ‘তুমি আমার’, শিবলি সাদিকের ‘অন্তরে অন্তরে, আনন্দ অশ্রু’, শাহ আলম কিরণের ‘রঙিন সুজন সখি’, মতিন রহমানের ‘আগুন জ্বলে’, কাজী হায়াতের ‘লাভ স্টোরি’, শাহাদাত খানের ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’, এ জে মিন্টুর ‘প্রথম প্রেম’, এম এ খালেকের ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, তমিজ উদ্দিন রিজভীর ‘আশা ভালোবাসা’, হাফিজ উদ্দিনের ‘প্রিয় তুমি’, আজিজুর রহমানের ‘লজ্জা’, সোহানুর রহমান সোহানের ‘স্বজন’, রানা নাসেরের ‘প্রিয়জন’, মতিন রহমানের ‘তোমাকে চাই, আগুন জ্বলে, বিয়ের ফুল’, মনোয়ার খোকনের ‘গরিবের রাণী’, ইফতেখার জাহানের ‘প্রেমের সমাধি’, এম এম সরকারের ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, মোতালেব হোসেনের ‘মিথ্যা অহংকার’, রেজা হাসমতের ‘প্রেম পিয়াসী’, মনতাজুর রহমান আকবরের ‘কুলি’, শাহ আলম কিরণের ‘শেষ ঠিকানা’, নাসির খানের ‘স্বপ্নের নায়ক’, উত্তম আকাশের ‘কে অপরাধী’, মোখলেসুর রহমানের ‘হৃদয়ের আয়না’, শিল্পী চক্রবর্তীর ‘রঙিন উজান ভাটি’, মহম্মদ হান্নানের ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’, হাছিবুল ইসলাম মিজানের ‘প্রেমের কসম’, ইস্পাহানি আরিফ জাহানের ‘তুমি সুন্দর’, বাদল খন্দকারের ‘পৃথিবী তোমার আমার, মধুর মিলন, সাগরিকা’, জাকির হোসেন রাজুর ‘এ জীবন তোমার আমার’, বাসু চ্যাটার্জীর ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ওয়াকিল আহমেদের ‘ভুলোনা আমায়’, ছটকু আহমেদের ‘বুক ভরা ভালোবাসা’, সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত, অনন্ত ভালোবাসা’, আজাদী হাসনাত ফিরোজের কাজের মেয়ে’ ইত্যাদি। রোমান্টিক ড্রামা ঘরানার ছবিগুলো দেশীয় ছবিকে নব্বই দশকে গর্বিত কিছু জুটিকে উপহার দিয়েছে। যেমন: ইলিয়াস কাঞ্চন-দিতি, সোহেল চৌধুরী-দিতি, নাঈম-শাবনাজ, সালমান শাহ-শাবনূর, সালমান শাহ-মৌসুমী, মৌসুমী-ওমর সানী, মৌসুমী-ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজ-শাবনূর, শাবনূর-শাকিল খান ইত্যাদি।

অ্যাকশন ছবির দিক থেকে নব্বই দশক বলতে গেলে মাঠ কাঁপিয়েছে। মার্শাল আর্টভিত্তিক ছবি যেটা রুবেলের মাধ্যমে আশির দশকে শুরু হয়েছিল তার পূর্ণতা আসে নব্বই দশকে। এছাড়া জসিমের প্রতিষ্ঠিত ‘জ্যাম্বস ফাইটিং গ্রুপ’ এবং আরমান ফাইটিং গ্রুপও অবদান রেখেছিল। নব্বই দশকে অ্যাকশন নায়কের অবদান ছিল প্রধানত জসিম, মান্না ও রুবেলের। অ্যাকশন ছবির নির্মাতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিলেন শহীদুল ইসলাম খোকন। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো ছিল-‘সন্ত্রাস,

বিপ্লব, উত্থান পতন, অপহরণ, ঘাতক, সতর্ক শয়তান, কমান্ডার, বিশ্বপ্রেমিক, রাক্ষস, লম্পট, চারিদিকে শত্রু, নরপিশাচ, পাগলা ঘণ্টা’ ইত্যাদি। এর মধ্যে ‘অপহরণ’ ছবিটি কমেডিও ছিল। খোকনের ছবির নায়ক বেশিরভাগ ছিল রুবেল। রুবেলের মার্শাল আর্টের ফাইটিং দেখতে দর্শকের উপচে পড়া ভিড় থাকত সিনেমাহলে। রুবেলের অন্যান্য অ্যাকশন ছবিগুলোর মধ্যে ছিল-‘মালেক আফসারীর ‘ঘৃণা’, নব্বই দশকে জসিম ছিল অ্যাকশনে এ জে রানা-র ‘মূর্খ মানব, ডন, আজকের হিটলার, আজকের দাপট, সেয়ানা পাগল’ ইত্যাদি। সিনিয়র নায়কদের মধ্যে প্রধান। জসিমের অ্যাকশনে আলাদা মাহাত্ম্য ছিল। মান্নার মতো অসাধারণ অ্যাকশন নায়কও জসিমের ভক্ত ছিল। জসিম নিজে ফাইটিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করে নিজের অবস্থান মজবুত করেছিল। তাঁর অভিনয় অনবদ্য ছিল। তাঁর আলাদা একটা দর্শকশ্রেণি ছিল তারা জসিমের ছবি মিস করত না। জসিমের উল্লেখযোগ্য অ্যাকশন ছবিগুলো হলো-‘মাস্তান রাজা, হিংসা, কালিয়া, বাংলার নায়ক, গরিবের ওস্তাদ, ঘাত-প্রতিঘাত, বিশ্বনেত্রী, বিস্ফোরণ, গর্জন, স্বামী কেন আসামী, টাইগার, মেয়েরাও মানুষ, চিরশত্রু, মর্যাদার লড়াই, আখেরি মোকাবেলা, রাজা গুণ্ডা, জিদ্দি, জোর’ ইত্যাদি। মান্না ছিল অ্যাকশনে শীর্ষ নায়কদের একজন। প্রথমদিকে বিভিন্ন ধরনের ছবিতে অভিনয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছিল মান্না। পরে অ্যাকশনে থিতু হয় বিশেষত নব্বই দশকে সেটার আয়োজন বাড়ে। মান্নার অ্যাকশন ছবির বিশেষত্ব হচ্ছে শুধুই অ্যাকশন না ছবিগুলো, সাথে আছে তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক বক্তব্য। মান্নার অ্যাকশনের মধ্যে আছে-‘দাঙ্গা, ত্রাস, চাঁদাবাজ, শেষ খেলা, শেষ সংগ্রাম, খলনায়ক, ডিস্কো ড্যান্সার, দেশদ্রোহী, মৃত্যুদাতা, লুটতরাজ, তেজী, শান্ত কেন মাস্তান, মুক্তি চাই, লাঠি, লাল বাদশা, দেশ দরদী, ধর’ ইত্যাদি। অন্যান্য নায়কদের মধ্যে কিছু অ্যাকশন ছবি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তখন এমন একটা সময় ছিল যে অলরাউন্ডার নায়কের অভাব ছিল না তারা সব ধরনের ছবিতে অভিনয় করত এবং মানিয়ে যেত। অ্যাকশনের মধ্যে এর মধ্যে আছে ইলিয়াস কাঞ্চন। তার ‘বদসুরত, কালপুরুষ, সিপাহী, অপরাজিত নায়ক, চরম আঘাত’ ইত্যাদি। সালমান শাহ অভিনীত ‘বিক্ষোভ, বিচার হবে, স্বপ্নের পৃথিবী’ অ্যাকশন ও রাজনৈতিক বক্তব্যের ছবি। ‘চেতনা’ নামে একটি ছবি হয়েছিল যে ছবিতে গল্পটাই ছিল অ্যাকশনেবল। মাসুদ শেখ অভিনীত ‘পাগলা বাবুল’ ছিল কাজী হায়াতের আরেকটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ছবি। বাপ্পারাজ,আমিন খান অভিনীত ‘বাংলার কমান্ডো’ দুর্দান্ত অ্যাকশন ছবি।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য থেকে নির্মিত ছবির মধ্যে নব্বই দশকে সেরা দুটি ছবি ‘আগুনের পরশমনি’ ও ‘হাঙর নদী গ্রেনেড।’ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ছবি ছিল এ দুটি। সাহিত্যভিত্তিক অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি ছিল ‘শঙ্খনীল কারাগার।’ গৌতম ঘোষের ‘পদ্মানদীর মাঝি’ মাস্টারপিস ছিল। মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত মুহাম্মদ জাফর ইকবালের কিশোর সাহিত্য থেকে নির্মিত ‘দীপু নাম্বার টু’ নব্বই দশকের ক্লাসিক ছবি।

ULVhWXS.jpg


জীবনমুখী ছবির মধ্যে ভিন্নধর্মী নির্মাণে কিছু কাজ হয়েছে নব্বই দশকে। ‘মরণের পরে’ বাণিজ্যিক ছবির মধ্যে সেরা জীবনমুখী ছবি। শাবানা-আলমগীরের অসাধারণ অভিনয়ে সন্তান দত্তক দেয়া আর জীবনের নির্মম বাস্তবতা মেনে নেয়ার ছবি ছিল। কাঁদিয়ে ছেড়েছিল দর্শককে। কাজী হায়াতের ‘দেশপ্রেমিক’ প্যাথেটিক স্টোরি টেলিং-এর ছবি। একজন দেশপ্রেমিক মানুষের শেষ বয়সের নির্মম বাস্তবতা ছিল ছবিতে। আলমগীর অসাধারণ অভিনয় করেছিল। শেখ নিয়ামত আলীর ‘অন্যজীবন’ সমালোচকের দৃষ্টি আকন্ষণ করা প্রশংসিত ছবি ছিল। মালেক আফসারী নির্মিত ‘এই ঘর এই সংসার’ একান্নবর্তী পরিবারের সহজ, সাধারণ, বাস্তব গল্পের ছবি। সালমান শাহর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ছবি। আখতারুজ্জামান পরিচালিত ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ সমালোচকের কাছে প্রশংসিত আনেকটি জীবনমুখী ছবি। নায়করাজ রাজ্জাকের পরিচালনায় ‘বাবা কেন চাকর’ বাবাদের শেষ বয়সের করুণ বাস্তবতার অনবদ্য উপস্থাপনা ছিল। মোরশোদুল ইসলামের ‘দুখাই’ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার অসামান্য দলিল। রাইসুল ইসলাম আসাদের জীবনমুখী অভিনয়ে মাস্টারপিস কাজ।

নব্বই দশকে কমেডি ছবিও দারুণভাবে হয়েছে। দর্শকের পছন্দের শীর্ষে থাকার মতো কাজ হয়েছে তখন। এখনো তারা খোঁজ করে সেসব ছবির ইউটিউব বা অন্য মাধ্যমগুলোতে। কমেডি ছবিগুলোর মধ্যে ছিল-‘জিনের বাদশা, লম্পট, পালাবি কোথায়, ভণ্ড, লঙ্কাকাণ্ড’ ইত্যাদি। ‘ভণ্ড’ ছবিটি সুপার ডুপার হিট ছিল।

ফোক-ফ্যান্টাসি ছবির মধ্যেও ভালো কাজ হয়েছে নব্বই দশকে। এ ছবিগুলোর টার্গেট অডিয়েন্স ছিল। তারা এসব ছবি দেখত। বিশেষত মহিলা দর্শক খুব পছন্দ করত এ ছবিগুলো। কল্পনা আর বাস্তবের মিশ্রণে বিনোদনধর্মী ছবি। যেমন-‘আয়না বিবির পালা, বনের রাজা টারজান, সুপারম্যান, কাল নাগিনীর প্রেম, কান্দো ক্যানে মন, শক্তির লড়াই, বাহরাম বাদশা, গরিবের রাজা রবিনহুড।’ এ ধরনের নব্বই দশকীয় দক্ষ নির্মাতা ছিলেন ইফতেখার জাহান।

কমেডিয়ান দিলদারকে নায়ক করে ‘আব্দুল্লাহ’ নামে একটি ছবি হয়েছিল। নব্বই দশকের ব্যতিক্রমী ঘটনা এটি।

লেডি অ্যাকশন ছবির জোয়া ছিল নব্বই দশকে। নায়কের পাশাপাশি নায়িকারাও অ্যাকশনে পর্দা কাঁপিয়ে দর্শককে বিনোদিত করত। দিতি, শাবনাজ, মৌসুমী, শাবনূর এ নায়িকারা লেডি অ্যাকশন ছবি করেছে। দিতি-র ‘পাপী শত্রু, প্রিয়শত্রু, লেডি ইন্সপেক্টর’, দিতি ও শাবনাজের ‘আজকের হাঙ্গামা’, মৌসুমীর ‘বাঘিনী কন্যা, বিদ্রোহী বধূ, মিস ডায়না’, শাবনূরের ‘মৌমাছি, জীবন সংসার’ উল্লেখযোগ্য।

নব্বই দশকে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিভা ছিল সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা এ অভিনয়শিল্পী মাত্র ২৭ টি ছবির মধ্য দিয়ে ঢালিউডে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। নব্বই দশকের শেষের দিকে আসে রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস ও শাকিব খান। তারা একুশ শতকে এসে নিজেদের মেলে ধরেছিল। এদের মধ্যে শাকিব খান এখন ধারাবাহিক কাজ করছে। তবে তারা সবাই নব্বই দশকের আবিষ্কার এটাই তাদের উল্লেখযোগ্য পরিচয়।

নব্বই দশকে অসংখ্য ক্লাসিক, জনপ্রিয় গান আছে তার মধ্যে কিছু উল্লেখ করা যায় :

পৃথিবী তো দুদিনেরই বাসা – মরণের পরে

পিতামাতার পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত – পিতা মাতা সন্তান

কতদিন পরে দেখা হলো দুজনাতে – চাঁদনী

ওগো মাতৃভূমি কি দিলে প্রতিদান – দাঙ্গা

রংচটা জিন্সের প্যান্ট পরা – উত্থান পতন

একটাই কথা আছে বাংলাতে – বন্ধু আমার

আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা – প্রেমের প্রতিদান

কাল সারারাত ছিল স্বপনের রাত – প্রেমের প্রতিদান

একতা শান্তি শৃঙ্খলা – ত্রাস

ও আমার বন্ধু গো – কেয়ামত থেকে কেয়ামত

একা আছি তো কি হয়েছে – কেয়ামত থেকে কেয়ামত

এখন তো সময় ভালোবাসার – কেয়ামত থেকে কেয়ামত

নকল মানুষ সেজে রে তুই – ত্যাগ

সেই মেয়েটি – মৌসুমী

চারিদিকে শুধু তুমি – মৌসুমী

স্বর্গ হতে এই জগতে – অবুঝ দুটি মন

পাগল মন মন রে – পাগল মন

কথা যদি শুরু করি – চাঁদনী রাতে

আমার সুরের সাথী আয়রে – প্রেমগীত

তুমি এসেছিলে পরশু – অনুতপ্ত

তুমি সুন্দরও আমারও অন্তরও – দোলা

তুমি একবার এসে দেখে যাও – দোলা

আমি আশিক তুমি প্রিয়া – আশিক প্রিয়া

আমি এক ডিস্কো ড্যান্সার – ডিস্কো ড্যান্সার

আমার একদিকে পৃথিবী – আত্ম অহংকার

তুমি আমার ভালোবাসার গান – তুমি আমার

জ্বালাইয়া প্রেমের বাতি – তুমি আমার

এখানে দুজনে নিরজনে – অন্তরে অন্তরে

কাল তো ছিলাম ভালো – অন্তরে অন্তরে

ভালোবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া – অন্তরে অন্তরে

এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি – আগুন জ্বলে

একাত্তরের মা জননী – বিক্ষোভ

বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয় – বিক্ষোভ

তারায় করে ঝিকিমিকি – গোলাপি এখন ঢাকায়

ওগো মোর প্রিয়া – প্রেমযুদ্ধ

প্রেম নগরের জংশনে – প্রথম প্রেম

স্বর্ণালী সঙ্গিনী গো – হিংসার আগুন

শুধু একবার বলো ভালোবাসি – দেন মোহর

সুন্দর সন্ধ্যায় এ গান দিলাম – শেষ খেলা

নীল সাগর পার হয়ে – স্বপ্নের ঠিকানা

এই দিন সেই দিন – স্বপ্নের ঠিকানা

তোমাকে আমি রাখব ধরে – হৃদয় আমার

পৃথিবীকে ভালোবেসে সুরে সুরে – হৃদয় আমার

তোমরা কাউকে বোলো না – বিশ্বপ্রেমিক

তোমাকে আমার কিছু বলার ছিল – প্রিয়শত্রু

চিঠি কেন আসে না – প্রিয়শত্রু

গান আমি গেয়ে যাবো – আশা ভালোবাসা

প্রেমপ্রীতি আর ভালোবাসা – আশা ভালোবাসা

তুমি এমন কোনো কথা বোলো না – প্রিয় তুমি

দুঃখ দেয়ার মানুষটাও – প্রিয় তুমি

তুমি যে কখন এসে – লজ্জা

ভালোবাসার পাঠশালা নাই – প্রেমের অহংকার

তুমি কবি আমি তোমার কবিতা – স্বজন

আমার মন এত পাগল – স্বজন

অনেক ভালোবেসে হয়েছি তোমার – স্বজন

তুমি টাঙ্গাইলের চমচম – ঘাত-প্রতিঘাত

এলো বসন্ত আমার গানে – হারানো প্রেম

আমি যে তোমার কে – বিচার হবে

পুরুষ বড় হয় জগতে – এই ঘর এই সংসার

এ জীবনে যারে চেয়েছি – প্রিয়জন

ভালো আছি ভালো থেকো – তোমাকে চাই

তুমি আমায় করতে সুখী – তোমাকে চাই

ও চাঁদ তুমি – গরিবের রাণী

বৃষ্টি রে বৃষ্টি – স্বপ্নের পৃথিবী

তুমি বন্ধু আমার চিরসুখে থেকো – প্রেমের সমাধি

মাগো তুমি একবার খোকা বলে ডাকো – অজান্তে

ভালোবাসা জীবন থেকে – অজান্তে

খুলো না ঢাকনা – আত্মত্যাগ

এ জীবন তোমাকে দিলাম – আত্মত্যাগ

পৃথিবীতে সুখ বলে – জীবন সংসার

পিঁপড়া খাবে বড়লোকের ধন – মায়ের অধিকার

সাথী তুমি আমার জীবনে – চাওয়া থেকে পাওয়া

কে জানে কতদূরে – শিল্পী

আমি পাথরে ফুল ফোটাব – শেষ ঠিকানা

নিশিদিন প্রতিদিন স্বপ্নে দেখি – স্বপ্নের নায়ক

তুমি মোর জীবনের ভাবনা – আনন্দ অশ্রু

তুমি আমার এমনই একজন – আনন্দ অশ্রু

আমার মতো এত সুখী – বাবা কেন চাকর

আজ বড় সুখে – বেঈমানী

পিছু নিয়েছে কিছু লোক – বেঈমানী

এতদিনে বুঝলাম দুঃখ না পেলে – সুখের ঘরে দুখের আগুন

তুমি চাঁদের জোছনা নও – হৃদয়ের আয়না

কেন আঁখি ছলছল – হৃদয়ের আয়না

দিনের কথা দিনে ভালো – রঙিন উজান ভাটি

বিদেশ গিয়া বন্ধু – রঙিন উজান ভাটি

একদিকে পৃথিবী একদিকে তুমি – ভুলোনা আমায়

আমি তো একদিন চলে যাব – ভুলোনা আমায়

অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে – লুটতরাজ

শিকল ভাঙার গান গেয়ে যা – হাঙর নদী গ্রেনেড

আমরা সূর্যটা কেড়ে এনেছি – এখনো অনেক রাত

তুমি ছাড়ে না কাটে না – ভালোবাসার ঘর

প্রেমেরও গীত হয়ে এলো রে – তুমি সুন্দর

মনে আগুন জ্বলে – অগ্নিস্বাক্ষী

মন দিলাম প্রাণ দিলাম – ঘাটের মাঝি

আমাকে দুঃখ দিয়ে – এ জীবন তোমার আমার

ও সাথী রে – ভণ্ড

তোমায় দেখলে মনে হয় – বিয়ের ফুল

ঐ চাঁদমুখে যেন – বিয়ের ফুল

একদিন স্বপ্নের দিন – হঠাৎ বৃষ্টি

সোনালি প্রান্তরে – হঠাৎ বৃষ্টি

আমি জানতাম জানতাম আসবে – হঠাৎ বৃষ্টি

অনেক সাধনার পরে আমি – ভালোবাসি তোমাকে

বুক ভরা ভালোবাসা রেখেছি – বুক ভরা ভালোবাসা

তোমার ঐ মিষ্টি হাসি – অনন্ত ভালোবাসা

আমি পথকে করেছি সাথী – পাগলা ঘণ্টা

আম্মাজান আম্মাজান – আম্মাজান

একদিন তোমাকে না দেখলে – কাজের মেয়ে

এত ভালোবেসো না আমায় – মিস ডায়না

আমার ভাগ্য বড় আজব জাদুকর – সন্তান যখন শত্রু

নব্বই দশক জীবন্ত থাকবে সেইসব দর্শক-সমালোচকের কাছে যারা ঐ সময়টিকে দেখেছে দু’চোখ ভরে।
 
২০০০ এর পরের হলেও এসব কিছুই পেয়েছি বলে নিজেকে লাকি মনে হয়
 

Users who are viewing this thread

Back
Top