ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে তিনটি ‘ডি’ অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয়। সেগুলো হচ্ছে ডায়েট, ড্রাগ ও ডিসিপ্লিন। এর পাশাপাশি চিকিৎসকেরা আরেকটি ডি যুক্ত করছেন, সেটি হচ্ছে ‘ডেন্টাল’ বা মুখের ভেতরকার যত্ন। এখানে দাঁতসহ মাড়ি, জিহ্বা, তালু, চোয়ালের ভেতরের অংশ, ঠোঁট, লালা ও লালা গ্রন্থি, চোয়ালের হাড়—সবই অন্তর্ভুক্ত। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত না থাকলে মুখের মধ্যে যে পরিবর্তনগুলো আসতে পারে:
লালা নিঃসরণ কমে গিয়ে মুখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। ফলে লালার স্বাভাবিক কাজ যেমন মুখ ও দাঁতকে পরিচ্ছন্ন রাখা, জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করা, খাবার খেতে ও স্বাদ গ্রহণে সাহায্য করা, মুখে ঘর্ষণজনিত ক্ষুদ্র আলসার প্রতিরোধ করা প্রভৃতি ব্যাহত হয়।
১
রক্তনালির স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়া, রক্তে শ্বেতকণিকার কার্যকারিতা কমে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস, সংক্রমণ দ্রুত ছড়ানোর প্রবণতা ও সহজে প্রতিহত না হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এতে ডায়াবেটিক রোগীদের মুখে ছত্রাক সংক্রমণসহ নানা ধরনের সংক্রমণ ও ঘা অনেক বেশি দেখা যায়। ওষুধেও ভালো হয় না। ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি থেকে মুখের মধ্যে অনেক সময় জ্বালাপোড়া হতে পারে।
২
মাড়ি রোগের সঙ্গে ডায়াবেটিসের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। মাড়ির সংক্রমণ থেকে মাড়ি ফুলে যায়, রক্ত পড়ে, দাঁত নড়ে যায় এমনকি পড়েও যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি মাড়ি রোগ ইনসুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস করে। মাড়ির রোগ থেকে সংক্রামক রক্ত বাহিকায় মিশে শরীরের যেকোনো অংশে চলে যেতে পারে। হৃদ্রোগের একটি কারণ দীর্ঘমেয়াদি মাড়ি রোগ। মাড়ির রোগ, দাঁতে গর্ত, মুখে জ্বালাপোড়া, খাদ্য গ্রহণে সমস্যা, মুখে দুর্গন্ধসহ নানা সমস্যা দেখা যায়।
৩
ডায়াবেটিস জটিলতার হাত থেকে রোগীরা হৃদ্যন্ত্র, কিডনি, নার্ভ বা চোখকে বাঁচাতে এখন সচেতন হচ্ছেন। পার্ক বা খোলা জায়গায় ব্যায়াম করা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার প্রবণতা। কিন্তু মুখের যত্নে অবহেলাটা এখনো স্পষ্ট। সারা বিশ্ব মুখের যত্নে নিয়মিত ও সঠিক নিয়মে মুখ পরিষ্কার, স্বাস্থ্যবান্ধব খাদ্য গ্রহণ আর ছয় মাস পরপর অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
[FA]pen[/FA] লেখক: ডা. মো. আসাফুজ্জোহা, রাজ ডেন্টাল সেন্টার, কলাবাগান, ঢাকা