১. রংবাজ
ধরন : রোমান্টিক একশন
পরিচালক : আব্দুল মান্নান/শামীম আহমেদ রনি
কাস্ট : শাকিব খান (সাল্লু রংবাজ), বুবলি (বুবলি), নূতন (নূরজাহান), কাজী হায়াৎ (ডা. আ. মান্নান), অমিত হাসান (অমিত চৌধুরী)
নামকরণ : সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে সাল্লু রংবাজকে কেন্দ্র করে, যার লক্ষ্য মায়ের স্বপ্নপূরণ ও বাবার খুনের প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য বিখ্যাত রংবাজ হিসেবে গড়ে উঠা। তাই সিনেমার “রংবাজ” নামকরণের সার্থকতা আছে।
কাচিস (কাহিনী+চিত্রনাট্য+সংলাপ) : পুরো সিনেমার প্লট খণ্ড খণ্ড আকারে বিভিন্ন বিদেশি সিনেমা থেকে ধার করা। তবে সবচেয়ে বড় অংশ নেওয়া হয়েছে ২০০২ সালের একটি হিন্দি সিনেমা থেকে। পুরো সিনেমার থিম “লাভ ম্যারেজ” বা “বসগিরি”র চেয়ে ভিন্ন বা উন্নততর কিছু ছিল না। চিত্রনাট্য তেমন একটা গোছানো ছিল না এবং ক্লাইম্যাক্স ছিল টিপিক্যাল ও পূর্বানুমেয়। কিছু অংশে সংলাপে জৌলুস থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ছিল নিরস।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ২৫।
টিমওয়ার্ক : বরাবরের মতো নাম ভূমিকায় শাকিব খান ভালো কাজ উপহার দিয়েছেন। তবে সেটাকে সেরা বা গড়ের উপরে বলা যাবে না। বুবলি চরিত্রে বুবলির ভালো পারফরম্যান্স দেখানোর যথেষ্ট সুযোগ ছিল। কিন্তু তিনি চরিত্রটি গভীরভাবে ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন। কিছু ব্যাপারে তার আরো হোমওয়ার্ক করার প্রয়োজন ছিল। এই সিনেমায় নিজ চরিত্রের সদ্ব্যবহার করেছেন একমাত্র নূতন ম্যাডাম। তিনি “নূরজাহান” চরিত্রটির সাথে যে পুরোপুরি মিশে গিয়েছিলেন সেটা সকল দর্শকই স্বীকার করবেন। কাজী হায়াৎ সাহেবের “ডা. আ. মান্নান” চরিত্রটির প্রথমার্ধ কমিক হলেও শেষার্ধ ছিল সিরিয়াস। সিরিয়াস অংশ ঠিকঠাক থাকলেও তার ডায়লগ ডেলিভারি দেওয়ার স্টাইলের কারণে কমিক অংশটা তেমন ফুঁটে উঠেনি। অমিত হাসান বরাবরের মতো একই ধরনের চরিত্রে একই ধরনের অভিনয় করেছেন। তার সংলাপ ছাড়া আর কিছুতেই বৈচিত্র্য ছিল না। এছাড়া সাদেক বাচ্চু, লিয়ানা, চিকন আলীসহ অন্যান্যরা নিজনিজ চরিত্রের ধরন ও ব্যাপ্তি অনুযায়ী এভারেজ কাজ উপহার দিয়েছেন। ছবির পরিচালক নিয়ে জট থাকলেও বোঝা গেছে শামীম আহমেদ রনি বা আব্দুল মান্নান; কেউই তাদের পূর্বের কাজের চেয়ে আপডেট কিছু দিতে পারেননি।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৬০।
কারিগরি : কারিগরি বিষয়গুলোর মধ্যে সবার আগে প্রশংসার দাবি রাখে লোকেশন নির্বাচন। দেশের ভেতরের (বিশেষ করে পাবনার) ও বিদেশের লোকেশনে চিত্রায়ন ভালো ছিল। পিকচার, লাইটিং ও সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো লেগেছে; সিনেমাটোগ্রাফি ভালো হলেও এডিটিং আরো ভালো করা যেত। যথেষ্ট ম্যানপাওযার থাকলেও তাদের যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়নি; এই ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু লেগেছে। অ্যারেঞ্জমেন্ট ভালো ছিল; ড্রেসআপ, গেটআপ ও মেকআপে কিছুটা বৈচিত্র্য আনার চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৬০।
বিনোদন : সিনেমার তিনটি গানের সাথে বিদেশি তিনটি গানের যথেষ্ট মিল পাওয়া গেছে। যদিও গানগুলো আহামরি কিছু হয়নি। তারপরও একমাত্র “তুই চাঁদ ঈদের” গানটাকে মন্দের ভালো মনে হয়েছে। কোরিওগ্রাফি মোটামুটি ভালো ছিল; তবে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আরো ভালো হতে পারত। প্রথম দিকে অ্যাকশন দৃশ্যগুলো মোটামুটি ভালো লাগলেও শেষ ফাইটিংটা হয়েছে একদম মান্ধাতার আমলের। বিনোদন যতটুকু পাওয়ার কিছু কমেডি দৃশ্য থেকে পাওয়া গেছে; যার কিছু ছিল আবার সুড়সুড়ি দেওয়ার মতো।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৪৫।
ব্যক্তিগত : অনেক সাধারণ দর্শকের মতো আমিও ছবিটির ট্রেলার দেখে “ছবিটা খুব ভালো হবে” এমন ধারণা পোষণ করেছিলাম। কিন্তু দুয়েকটি দৃশ্য দেখার পর যখন বুঝতে পারলাম ছবিটি আমার দেখা একটি হিন্দি সিনেমার নকল, তখন সব প্রত্যাশা হাওয়া হয়ে গেল। যেসব দৃশ্যগুলো নকল করা হয়নি, সেগুলোও টিপিক্যাল সিনেমার মতো উপস্থাপন করায় আরো বাজে লেগেছে। সিনেমাটির বেশকিছু ভুলও চোখে পড়েছে।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৫০।
রেটিং : ২.৪/৫
ছবিটি কেন দেখবেন : কমেডি অ্যাকশন মুভি যাদের ভালো লাগে তারা ছবিটি দেখতে পারেন। সাথে শাকিব-বুবলির রোমান্স তো আছেই। তাছাড়া ২০০২ এর ঐ হিন্দী সিনেমাটি না দেখে থাকলে বা তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সিনেমাটি দেখতে গেলে আশা করি মজা পাবেন। আশা করব রংবাজ টিমের সকলের কাছ থেকে ভবিষ্যতে এত ভালো কিছু পাবো, যা রংবাজের ক্ষত মুছে দেবে।
সিনেমা হলে গিয়ে দেখুন দেশিয় সিনেমা। আসুন পাইরেসি দূর করতে একেকজন হয়ে উঠি একেকটি ‘রংবাজ’।
…………………………………………….
২. সোনা বন্ধু
ধরন : মিউজিক্যাল রোমান্টিক ড্রামা
পরিচালক : জাহাঙ্গীর আলম সুমন
কাস্ট : ডিএ তায়েব (নয়ন), পপি (রোশনি), পরী মনি (কাজল), বড়দা মিঠু (নয়নের বাবা), আনোয়ারা (কাজলের মা)
নামকরণ : সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে রোশনি, নয়ন ও কাজল নামের তিন প্রেমীর ত্রিমুখী প্রেমের টানাপোড়েন নিয়ে। গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত বলে প্রেমী শব্দের ভাবার্থক হিসেবে “সোনা বন্ধু” নামটাই মানানসই।
কাচিস (কাহিনী+চিত্রনাট্য+সংলাপ) : আগেই বলে রাখি, ২ ঘন্টা ১৭ মিনিটের এই ছবিতে মোট ১৩টি গান আছে!!! একটি গান গড়ে ৪ মিনিট করে ধরলে মোট সিনেমার প্রায় ৪০% জুড়েই শুধু গান। তাই বলে এটাকে মিউজিক ভিডিও মনে করার অবকাশ নেই। কারণ ছবিটি দেখলেই বুঝবেন গল্পের প্রেক্ষাপটই এত গান ডিমান্ড করেছে। কাহিনী সম্পর্কে শুধু এতটুকু বলব, একটি ইউনিক মৌলিক গল্প। শুরুর চিত্রনাট্য কিছুটা টিপিক্যাল ও একগেয়ে গ্রামীণ সিনেমার মতো মনে হলেও ঠিক মাঝের গল্পের মোড় আপনাকে শেষ পর্যন্ত দেখতে উৎসুক রাখবে। দুই নায়িকা এক নায়ক দেখে ক্লাইম্যাক্স তথাকথিত ত্রিভুজ প্রেমের ছবির মতো মনে করলে আপনি ভুল করবেন। মজা যাতে নষ্ট না হয় তাই কোন ক্লুও দিতে চাচ্ছি না। ছবির সংলাপগুলো বেশ প্রাণবন্ত ও মানানসই ছিল।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৮০।
টিমওয়ার্ক : এটা ডিএ তায়েবের প্রথম ছবি হলেও তার জন্য কঠিন কিছু ছিল না, কারণ বহু বছর ধরেই তিনি মিউজিক ভিডিও ও বিজ্ঞপনের মডেলিং এবং ছোটপর্দার সাথে যুক্ত। নয়ন চরিত্রটি তিনি খুব দরদ দিয়ে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন সেটা অনস্বীকার্য। রোশনি চরিত্রটিও পপি’র জন্য নতুন কিছু ছিল না। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম উপস্থাপনার এই চরিত্রটিতেও পপি বরাবরের মতো ভালো কাজ উপহার দিয়েছেন। গ্রামের মেয়ে কাজল চরিত্রটি পরি মনির ক্যারিয়ারে একেবারেই নতুন সংযোজন ছিল। পরী মনি ভালো মার্ক নিয়েই এই চরিত্র ফুটিয়ে তোলার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। নয়নের বাবা চরিত্রটি একটু ভিন্নরকম হলেও বড়দা মিঠু সেটাতেও বরাবরের মতো নিজের সেরাটা উপহার দিয়েছেন। কাজলের মায়ের চরিত্রে আনোয়ারা ম্যাডামের সাবলীল অভিনয়, বাচনভঙ্গি দেখে তার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম সুমন তার মুন্সিয়ানা বেশ দেখালেও কিছু বিষয়ে আরো যত্নবান হওয়া উচিত ছিল।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৭০।
কারিগরি : গল্পের প্রয়োজনেই এই সিনেমাতে বাজেট কম লেগেছিল এবং সেটাই স্বাভাবিক। আর সেই কারণে কারিগরি প্ৰপঞ্চের বাহুল্যতা ছিল না। গল্পের পটভূমির উপর ভিত্তি করে গ্রামীণ লোকেশনে চিত্রায়ণ ভালো ছিল। এডিটিং মোটামুটি ভালো হলেও, সিনেমাটোগ্রাফি আরো ভালো হতে পারতো। পিকচার, সাউন্ড ও বিশেষ করে অন্ধকার দৃশ্যে লাইটিং কোয়ালিটি ভালো ছিল। অ্যারেঞ্জমেন্ট ভালো ছিল এবং অতিরিক্ত ম্যানপাওয়ার নিয়ে অকারণে গল্পের সাবলীলতা নষ্ট করা হয়নি বলে খুশি হয়েছি। তবে মেকআপ-গেটআপ নিয়ে কিন্তু আছে, একটি অজপাড়াগাঁয়ের তরুণীর প্লাক করা ভ্রু, দামী মেকআপ ও সদ্য বিধবা নারীর চোখের লেন্স পরিবর্তন ইত্যাদি সিনেমাটির সাবলীলতা নষ্ট করেছে।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৪০।
বিনোদন : ছবিতে নতুন-পুরাতন মিলিয়ে ১৩টি গান ব্যবহার করা হয়েছে। তবে গানগুলোর উপস্থাপন বা কোরিওগ্রাফি খারাপ লাগেনি। গল্পের প্রয়োজনেই কোন অ্যাকশন বা কমেডি দৃশ্য ছিল না। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক মোটামুটি ভালো লেগেছে। আসলে ছবিটিতে বিনোদনের মসলা ছিল গল্পের টার্নিং পয়েন্ট আর কিছু গান। তবে সেগুলো বিনোদনের ষোলআনা পূরণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। গল্পের ধারাবাহিকতা বা সারমর্ম ঠিক রেখে সাধারণ দর্শকদের অভিরুচির কথা মাথায় রেখে বিনোদনের মসলা আরো বাড়ানো উচিৎ ছিল।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৫০।
ব্যক্তিগত : ছবিটির ট্রেলার দেখেই ধারণা করেছিলাম এটা গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে নির্মিত টিপিক্যাল ত্রিভুজ প্রেমের ফরম্যাটের কোন সিনেমা হবে। আমার ধারণা ভুল নয়, তবে ছবির টার্নিং পয়েন্ট বা চমকটা অন্য সাধারণ মুভি থেকে ব্যতিক্রম দেখে ভালো লেগেছে। ঘনঘন এত গানের সমারোহ বিরক্তির পরিবর্তে কিছুটা ভালো লাগাও দিয়েছে। পরীমনি ও আনোয়ারা ম্যাডামের কাজ মুগ্ধ করেছে।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৬০।
রেটিং : ৩/৫
ছবিটি কেন দেখবেন : এই সিনেমাটিই ঈদের একমাত্র মৌলিক গল্পের পরিচ্ছন্ন সিনেমা। গান, রোমান্স, বিরহ, গ্রামীণ পটভূমির গল্প ও পরিবার নিয়ে দেখার উপযোগী সিনেমা আপনার ভালো লাগলে নিঃসন্দেহে আপনি ‘সোনা বন্ধু’ দেখতে পারেন।
সিনেমা হলে গিয়ে দেখুন বাংলাদেশের সিনেমা। দেশের সিনেমাই হয়ে উঠুক আপনার আমার ‘সোনা বন্ধু’।
…………………………………………….
৩. অহংকার
ধরন : সোশ্যাল একশন
পরিচালক : শাহাদাৎ হোসেন লিটন
কাস্ট : শাকিব খান (মাহিম), বুবলি (মায়া), তমা মির্জা (তানিয়া), নূতন (আম্মাজান), জ্যাকি আলমগীর (মামা)
নামকরণ : সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে নিষ্ঠুর সুদ ব্যবসায়ী যুবতী মায়ার আত্মঅহঙ্কার ও আত্মোপলব্ধিকে কেন্দ্র করে। সে হিসেবে ‘অহংকার’ নামকরণে সার্থকতা আছে।
কাচিস (কাহিনী+চিত্রনাট্য+সংলাপ) : এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে ছবির গল্প ২০০৫ সালের একটি কন্নড় মুভি থেকে কপি করা। তাই বলাবাহুল্য যে ছবিটির চিত্রনাট্য ও সংলাপগুলোও উক্ত কন্নড় মুভির হুবহু কপিপেস্ট। তাই এই ছবির কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ রচয়িতাদের মার্জিত ভাষায় অনুবাদক বলাই শ্রেয়। তবে এটা অনস্বীকার্য যে, সবকিছু নকল হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সিনেমাটির গল্পের অভিযোজনের ব্যাপারটা মানানসই ছিল।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৪০।
টিমওয়ার্ক : এই সিনেমার নায়ক শাকিব খান হলেও গল্পের নায়ক ছিল বুবলি। ‘মায়া’ চরিত্রটি তার ক্যারিয়ারের অন্যান্য চরিত্রগুলোর চেয়ে যথেষ্ট বৈচিত্র্যময় এবং আশার কথা হচ্ছে যে বুবলি এই চরিত্রটিতে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে তার এক্সপ্রেশন ও ডায়লগ ডেলিভারি স্কিল উন্নত হয়েছে বলে মনে হয়েছে। মাহিম চরিত্রে শাকিব খান ‘বাড়তি’ কিছু দেওয়ার সুযোগ পাননি, তবে যতটুকু দিয়েছেন ততটুকুই যথেষ্ট ছিল। তমা মির্জার করা ‘তানিয়া’ চরিত্রটি তেমন গুরুত্ব না পেলেও তমা প্রমাণ করেছেন ছোট-বড় সব চরিত্রেই তিনি সাবলীল। নূতন ম্যাডাম হয়তো পরিচালকের নির্দেশে মূল কন্নড় সিনেমার তার চরিত্রে রূপদানকারীকে ‘ফলো’ করতে গিয়ে নিজের স্বতঃস্ফূর্ততা হারিয়েছেন। তবে সাদেক বাচ্চু, জ্যাকি আলমগীর, আফজাল শরীফসহ অন্যান্যরা মোটামুটি ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। ছবিটির পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন লিটন সম্পর্কে শুধু এতটুকু বলবো ‘তিনি হচ্ছেন ক্লাসের সেই ছাত্র, যে বন্ধুর খাতা দেখে দেখে লিখে পরীক্ষায় A+ পায়।’
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৭০।
কারিগরি : কারিগরি দিকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো লেগেছে ম্যানপাওয়ারের যথার্থ ব্যবহার, বড় ক্যানভাস ও সেট অ্যারেঞ্জমেন্ট। পিকচার ও সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো হলেও নাজুক সম্পাদনা আশাহত করেছে। চিত্রগ্রহণ ভালো লাগলেও লোকেশন নির্বাচনে আরো যত্নবান হওয়া উচিৎ ছিল। গেটআপ বা ড্রেসআপে তেমন বৈচিত্র্য ছিল না। একটু যত্ন নিলে মেকআপ আরো ব্যালেন্সড হতো। বেশকিছু কারিগরি ত্রুটি ও দুর্বলতা চোখে পড়েছে।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৫৫।
বিনোদন : গানগুলো তেমন শ্রুতিমধুর ছিল না এবং বৈচিত্র্য বা নতুনত্বহীন ছিল। তবে টাইটেল সংটা মোটামুটি ভালো লেগেছে। কোরিওগ্রাফি ভালো লাগলেও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু ছিল।একশন দৃশ্যগুলো আশানুরূপ হয়নি। রোমান্স বা কমেডি সিকোয়েন্স কম থাকলেও দর্শকদের শিস ও হাততালি দেওয়ার মতো যথেষ্ট মসলা এতে আছে। গল্পের আকস্মিক টুইস্টও বিনোদনের অন্যতম কারণ ছিল। তবে হুবহু কপিপেস্ট না হলে হয়তো আরো বিনোদনের বিভিন্ন পয়েন্ট তৈরী করা যেত।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৬৫।
ব্যক্তিগত : সিনেমার মান্ধাতার স্টাইলের ট্রেলার দেখে এবং নকল সিনেমা উপলব্ধি করতে পেরে প্রথম থেকেই সিনেমাটি সম্পর্কে আমার মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কিন্তু গল্প নকল ও নির্মাণশৈলী দুর্বল হলেও ছবিটা ঈদের অপর দুই ছবির তুলনায় দর্শকদের ভালো বিনোদন দিয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।
এই অংশ পাবে ১০০-তে ৬০।
রেটিং : ২.৯/৫
ছবিটি কেন দেখবেন : উক্ত কন্নড় মুভিটি না দেখে থাকলে আপনার এই ছবিটা বেশ ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস। কারণ ছবিটির গল্প সোশ্যাল অ্যাকশন, রোমান্স, কমেডি ও ফ্যামিলি ড্রামার একটি ককটেল। তাই পয়সা উসুল হওয়ার একটা নিশ্চয়তা রয়ে যায়।
সিনেমা হলে গিয়ে দেখুন বাংলাদেশের সিনেমা। সিনেমার প্রতি আপনার আমার ভালোবাসাই হোক, বাংলা সিনেমার ‘অহংকার’।