maruftamimauthor
Member
মেলার সে-কাল এ-কাল
পহেলা বৈশাখ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
১৪ এপ্রিল ২০২২ ইংরেজি
১২ রমজান ১৪৪৩
আজ পহেলা বৈশাখ। ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ সাদা শাড়ি লাল পাড় পাঞ্জাবি বা যেকোনো নতুন শাড়ি পরে রমনার বটমুলে টিএইসি মোড়ে চারুকলায় মহা আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রায় সবার মাথায় হাতে ফুল থাকবেই। খাবে পান্তা ইলিশ জিলাপি মুড়ি মুরকি। বাঁশি ঢোল একতায় সুর তুলে দল বেধে ঘুরে বেড়াচ্ছে শিশু কিশোর কিশোরী যুবক যুবতি আর বুড়া-বুড়ি রাও।
সবার মুখে হাসির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। আ চলে হরদম ডাব আইসক্রিম ও পিঠা খাওয়ার ধুম।
লাল রেশমি চুরি পরার ধুম লেগে যায়। বেদেনিরা তাদের চুরির ডালা নিয়ে রাস্তার পাশে মাঠে বসে কাটায় ব্যস্ত সময়।
হাত ধরে টিপে টিপে বাছাই করে চুড়ির সাইজ।
হাটু গেড়ে বসে থাকে নতুন শাড়ি পরা নববধু সহ সব ধরনের নারীরা। সে এক অন্য রকম দৃশ্য, অন্যরকম অনুভূতি।
এছাড়াও প্রায় প্রতিটি পাড়া মহল্লায় চলে বৈশাখী উৎসব৷
মিষ্টি মুখ করে পাড়ার শিশু কিশোর কিশোরী যুবক যুবতী ও বন্ধু বান্ধবরা।
আজ কোনো বাধা নাই। শুধুই আনন্দে ঘুরে বেড়ানো।
আজ মাইলের পর মাইল হেটে পৌঁছাতে হবে গন্তব্যে।
তবুও কোনো ক্লান্তি নাই।
এতো গেল ঢাকা শহরের দৃশ্য।
যারা বাইরে বের হবে না তারা উপভোগ করবে টিভির পর্দায় লাইভ অনুষ্ঠান।
প্রতিটি জেলা শহরেও চলে নানান উৎসবের আয়োজন।
কিন্তু আমাদের বৈশাখী উৎসব বা মেলার ধরন ছিল অন্যরকম।
হিন্দু এলাকাগুলোতে বসতো বৈশাখী মেলা আর দোকানে দোকানে হালখাতা।
তারজন্য মাসব্যাপী চলত আমাদের টাকা জমানোর প্রস্তুতি। আমারদের সময় যে দুই এক টাকা টিফিনের জন্য দিতেন কিছু পরিবার তা বন্ধুদের নিয়ে আইসক্রিম আর ঝালমুড়ি খেয়েই শেষ করে ফেলতাম। জমানো যেতো না। চৈত্র মাসে চলত চৈতালী ফসলের বতর। উঠানে উঠানে কলাই মুসুরি,ছোলা রাই সরিষা মইসনা ধুনিয়ার ছড়াছড়ি।
মা চাচি সহ কাজের লোকেরা সারাদিন বাহির উঠানে সেসব উড়িয়ে পরিস্কার পরিছন্ন করতেন৷ আমরা গিয়ে হাত লাগাতাম তাদের সাথে। প্রতিদিন কাজের বিনিময়ে দুই এক সের করে ফসল জমাতাম মেলার টাকা জমানোর জন্য।
প্রতিদিন প্রতিযোগিতা চলত কে কত কাজ করতে পারে। তার উপর পেতাম ফসল।
বাড়িয়ে বাড়িতে লোক আসতো ফসল কেনার জন্য। তাদের কাছে আমরা কিছু কম দামে হলেও তা বিক্রি করতাম৷ হাট বাজারে গেলে যে তা বাবা দাদার চোখ এড়াবে না৷
এসব লেনাদেনা চলত মা দাদির সাথে৷
নিজেদের বাড়তি খরচের জন্য এমনটা করতাম।
পহেলা বৈশাখে মা ভালো মন্দ রান্না করতেন৷ বলতেন আজ ভালো খেলে সারা বছর ভালো কাটবে।
নতুন জামা কাপড় তখনো আমরা দুই ঈদ ছাড়া পেতাম না।
তবু আমরা কোনো বায়না করতাম না৷ মেলায় যাওয়াই ছিল বড় আনন্দের। দাদার হাত ধরে সকালেই যেতাম হালখাতা খেতে। রঙিন কাগজ কেটে সাজানো হতো প্রতিটি দোকান
লাল মলাটের মোটা মোটা খাতা আর হরেক রকমের মিষ্টি সাজানো থাকতো দোকানে দোকানে। দাদার সাথে বাবার সাথে যে-সব দোকানে যেতাম সে-সব দোকানে আমাদের টাকা দিতে হতো না৷
কিন্তু সব ধরনের মিষ্টি খাওয়ার জন্য অন্য দোকানে দুই এক টাকা দিয়ে খেতাম পছন্দের মিষ্টি। ভাইবোন দল বেধে কি যে আনন্দ করতাম। গ্রামে খাওয়া হতো তরমুজ বাংগি ।
মা বড় বড় পিচ করে কেটে হাতে দিতেন। আমরা সবাই গাছ তলায় মাদুর বিছিয়ে বসে খেতাম।
দুপুর হলেই গোসল সেরে খেতাম পোলাও মাংস পটল কুমড়া ভাজি আর দুধের পায়েস।
খাওয়া শেষ করে চলতো সাজগোছ। বারে বারে তাড়া দিতাম কখন যাবো মেলায়৷ আমাদের বাড়ির পাশেই ছিল মেলায় যাবার রাস্তা৷ অন্য গ্রাম থেকে হেটে যেতো সেই রাস্তা ও জমির আইল ধরে৷ কেউ কেউ বাড়ি ফিরত মেলা শেষ করে সাজানো মাটির হাড়িতে নানান রঙের মিষ্টি সাজ বাতাসা আর বাঁশি বাজাতে বাজাতে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য উপভোগ করতাম৷ মা চাচিরাও দূরে দাঁড়িয়ে তা দেখতেন।
নানান ধরনের বাঁশির সুরে কান ঝালাপালা হয়ে যেতো।
আমাদের বাড়িতেও ময়রা এনে মিষ্টি বানানো হতো৷ বাবার এতে খুব সখ ছিল। আমরা মেলায় যেতাম। চুড়ি লাল ফিতা আলতা বাঁশি মাটির হাঁড়িপাতিল কিনতাম। কত জিনিস যে কিনতে মন চাইতো৷ চাচাতো ভায়েরা খুব দুষ্টুমি করতো। কয়েকজন মেলায় ঢুকে বাঁশি খেলনা চুড়ি করতো৷ আমাকে এনে দেখাতো৷ আমি তাই দেখে একবার কোমড়ে গুজে একটা বাঁশি আনতে গিয়ে ধরা খেয়ে কি যে লজ্জা পেয়েছি৷
কিন্তু তা মনে পড়লে এখন হাসি পায়। কি ছেলে মানুষী করতাম আমরা।
এরপর তাদের সাথে সাথে লটারি ধরতাম আমরা। অনেক জিনিস সাজিয়ে তারমধ্য রিং ফেলে জিতে নিতে পারতো সে-সব জিনিস। কিন্তু সবাই তা পেতো না।
তখনো সব মেলায় পুতুল নাচ সার্কাস চড়কি ছিল না।
কিছু কিছু মেলায় গান হতো। দল বেঁধে দাঁড়িয়ে গান শুনতাম৷
রাত হলেই বাড়িতে ফিরে আসতাম৷ এসে কে কি কিনেছে তা দেখতাম, কে কি খেয়েছে সেই গল্প করতাম। হাত ভরে চুড়ি পরে ঝুনঝুন শব্দ করে ঘুরে বেড়াতাম। ছেলেরা বাঁশি পিস্তল টিনের লঞ্চ পানিতে ছেড়ে খেলা করতো। ঢোল একতারা ভনভনানি কিনে এনে তা কীভাবে বানিয়েছে দেখতাম৷ নিজেরা বানানোর চেষ্টা করতাম৷
সারাদিন কি ব্যস্ত সময় কাটাতাম সেসব খেলনা নিয়ে।
মেলার পরের দিন আব্বা গ্রামের ময়রা রওশন কাকাকে ডেকে এনে জিলাপি আর রসগোল্লা বানাতেন৷
পেট ভরে আমরা সেসব খেতাম৷ চুলার পাড়ে বসে বসে দেখতাম কীভাবে বানায়। জানার চেষ্টা করতাম রেসিপি।
পাল্লা দিতাম কে কয়টা রসগোল্লা খেতে পারে।
সেই দিন গুলো খুবই মজার ছিল।
এখন দেশ উন্নত হয়েছে। মানুষ এখন আর হেটে মেলায় যায় না প্রতিটি অলিগলিতে পাঁকা রাস্তা হয়েছে৷ শত শত অটোরিকশা হয়েছে।
এখন আর বাড়িতে যাওয়া হয় না৷ বাড়িতে এখন আর কেউ নাই। দাদা-দাদি মা-বাবা সবাই চলে গেছেন৷ পড়ে আছে শূন্য বাড়ি।
কিন্তু এখনো মেলা হয়। সবাই মেলায় যায় আনন্দ করে ।
আর আমরা বাসায় বসে মা দাদির মতো কর্তব্য পালন করি৷ ভালো মন্দ রান্না করি বাচ্চাদের খাইয়ে আনন্দ পাই।
ঘরে বসেই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই।
ফোনে কথা বলি শুভেচ্ছা বিনিময় করি। দিন বসে থাকে না কেটেই যায়। শুধু মনে থাকে সব স্মৃতিগুলো।
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা৷ ভালো থাকো সবাই আনন্দে থাকো।
পহেলা বৈশাখ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
১৪ এপ্রিল ২০২২ ইংরেজি
১২ রমজান ১৪৪৩
আজ পহেলা বৈশাখ। ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ সাদা শাড়ি লাল পাড় পাঞ্জাবি বা যেকোনো নতুন শাড়ি পরে রমনার বটমুলে টিএইসি মোড়ে চারুকলায় মহা আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রায় সবার মাথায় হাতে ফুল থাকবেই। খাবে পান্তা ইলিশ জিলাপি মুড়ি মুরকি। বাঁশি ঢোল একতায় সুর তুলে দল বেধে ঘুরে বেড়াচ্ছে শিশু কিশোর কিশোরী যুবক যুবতি আর বুড়া-বুড়ি রাও।
সবার মুখে হাসির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। আ চলে হরদম ডাব আইসক্রিম ও পিঠা খাওয়ার ধুম।
লাল রেশমি চুরি পরার ধুম লেগে যায়। বেদেনিরা তাদের চুরির ডালা নিয়ে রাস্তার পাশে মাঠে বসে কাটায় ব্যস্ত সময়।
হাত ধরে টিপে টিপে বাছাই করে চুড়ির সাইজ।
হাটু গেড়ে বসে থাকে নতুন শাড়ি পরা নববধু সহ সব ধরনের নারীরা। সে এক অন্য রকম দৃশ্য, অন্যরকম অনুভূতি।
এছাড়াও প্রায় প্রতিটি পাড়া মহল্লায় চলে বৈশাখী উৎসব৷
মিষ্টি মুখ করে পাড়ার শিশু কিশোর কিশোরী যুবক যুবতী ও বন্ধু বান্ধবরা।
আজ কোনো বাধা নাই। শুধুই আনন্দে ঘুরে বেড়ানো।
আজ মাইলের পর মাইল হেটে পৌঁছাতে হবে গন্তব্যে।
তবুও কোনো ক্লান্তি নাই।
এতো গেল ঢাকা শহরের দৃশ্য।
যারা বাইরে বের হবে না তারা উপভোগ করবে টিভির পর্দায় লাইভ অনুষ্ঠান।
প্রতিটি জেলা শহরেও চলে নানান উৎসবের আয়োজন।
কিন্তু আমাদের বৈশাখী উৎসব বা মেলার ধরন ছিল অন্যরকম।
হিন্দু এলাকাগুলোতে বসতো বৈশাখী মেলা আর দোকানে দোকানে হালখাতা।
তারজন্য মাসব্যাপী চলত আমাদের টাকা জমানোর প্রস্তুতি। আমারদের সময় যে দুই এক টাকা টিফিনের জন্য দিতেন কিছু পরিবার তা বন্ধুদের নিয়ে আইসক্রিম আর ঝালমুড়ি খেয়েই শেষ করে ফেলতাম। জমানো যেতো না। চৈত্র মাসে চলত চৈতালী ফসলের বতর। উঠানে উঠানে কলাই মুসুরি,ছোলা রাই সরিষা মইসনা ধুনিয়ার ছড়াছড়ি।
মা চাচি সহ কাজের লোকেরা সারাদিন বাহির উঠানে সেসব উড়িয়ে পরিস্কার পরিছন্ন করতেন৷ আমরা গিয়ে হাত লাগাতাম তাদের সাথে। প্রতিদিন কাজের বিনিময়ে দুই এক সের করে ফসল জমাতাম মেলার টাকা জমানোর জন্য।
প্রতিদিন প্রতিযোগিতা চলত কে কত কাজ করতে পারে। তার উপর পেতাম ফসল।
বাড়িয়ে বাড়িতে লোক আসতো ফসল কেনার জন্য। তাদের কাছে আমরা কিছু কম দামে হলেও তা বিক্রি করতাম৷ হাট বাজারে গেলে যে তা বাবা দাদার চোখ এড়াবে না৷
এসব লেনাদেনা চলত মা দাদির সাথে৷
নিজেদের বাড়তি খরচের জন্য এমনটা করতাম।
পহেলা বৈশাখে মা ভালো মন্দ রান্না করতেন৷ বলতেন আজ ভালো খেলে সারা বছর ভালো কাটবে।
নতুন জামা কাপড় তখনো আমরা দুই ঈদ ছাড়া পেতাম না।
তবু আমরা কোনো বায়না করতাম না৷ মেলায় যাওয়াই ছিল বড় আনন্দের। দাদার হাত ধরে সকালেই যেতাম হালখাতা খেতে। রঙিন কাগজ কেটে সাজানো হতো প্রতিটি দোকান
লাল মলাটের মোটা মোটা খাতা আর হরেক রকমের মিষ্টি সাজানো থাকতো দোকানে দোকানে। দাদার সাথে বাবার সাথে যে-সব দোকানে যেতাম সে-সব দোকানে আমাদের টাকা দিতে হতো না৷
কিন্তু সব ধরনের মিষ্টি খাওয়ার জন্য অন্য দোকানে দুই এক টাকা দিয়ে খেতাম পছন্দের মিষ্টি। ভাইবোন দল বেধে কি যে আনন্দ করতাম। গ্রামে খাওয়া হতো তরমুজ বাংগি ।
মা বড় বড় পিচ করে কেটে হাতে দিতেন। আমরা সবাই গাছ তলায় মাদুর বিছিয়ে বসে খেতাম।
দুপুর হলেই গোসল সেরে খেতাম পোলাও মাংস পটল কুমড়া ভাজি আর দুধের পায়েস।
খাওয়া শেষ করে চলতো সাজগোছ। বারে বারে তাড়া দিতাম কখন যাবো মেলায়৷ আমাদের বাড়ির পাশেই ছিল মেলায় যাবার রাস্তা৷ অন্য গ্রাম থেকে হেটে যেতো সেই রাস্তা ও জমির আইল ধরে৷ কেউ কেউ বাড়ি ফিরত মেলা শেষ করে সাজানো মাটির হাড়িতে নানান রঙের মিষ্টি সাজ বাতাসা আর বাঁশি বাজাতে বাজাতে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য উপভোগ করতাম৷ মা চাচিরাও দূরে দাঁড়িয়ে তা দেখতেন।
নানান ধরনের বাঁশির সুরে কান ঝালাপালা হয়ে যেতো।
আমাদের বাড়িতেও ময়রা এনে মিষ্টি বানানো হতো৷ বাবার এতে খুব সখ ছিল। আমরা মেলায় যেতাম। চুড়ি লাল ফিতা আলতা বাঁশি মাটির হাঁড়িপাতিল কিনতাম। কত জিনিস যে কিনতে মন চাইতো৷ চাচাতো ভায়েরা খুব দুষ্টুমি করতো। কয়েকজন মেলায় ঢুকে বাঁশি খেলনা চুড়ি করতো৷ আমাকে এনে দেখাতো৷ আমি তাই দেখে একবার কোমড়ে গুজে একটা বাঁশি আনতে গিয়ে ধরা খেয়ে কি যে লজ্জা পেয়েছি৷
কিন্তু তা মনে পড়লে এখন হাসি পায়। কি ছেলে মানুষী করতাম আমরা।
এরপর তাদের সাথে সাথে লটারি ধরতাম আমরা। অনেক জিনিস সাজিয়ে তারমধ্য রিং ফেলে জিতে নিতে পারতো সে-সব জিনিস। কিন্তু সবাই তা পেতো না।
তখনো সব মেলায় পুতুল নাচ সার্কাস চড়কি ছিল না।
কিছু কিছু মেলায় গান হতো। দল বেঁধে দাঁড়িয়ে গান শুনতাম৷
রাত হলেই বাড়িতে ফিরে আসতাম৷ এসে কে কি কিনেছে তা দেখতাম, কে কি খেয়েছে সেই গল্প করতাম। হাত ভরে চুড়ি পরে ঝুনঝুন শব্দ করে ঘুরে বেড়াতাম। ছেলেরা বাঁশি পিস্তল টিনের লঞ্চ পানিতে ছেড়ে খেলা করতো। ঢোল একতারা ভনভনানি কিনে এনে তা কীভাবে বানিয়েছে দেখতাম৷ নিজেরা বানানোর চেষ্টা করতাম৷
সারাদিন কি ব্যস্ত সময় কাটাতাম সেসব খেলনা নিয়ে।
মেলার পরের দিন আব্বা গ্রামের ময়রা রওশন কাকাকে ডেকে এনে জিলাপি আর রসগোল্লা বানাতেন৷
পেট ভরে আমরা সেসব খেতাম৷ চুলার পাড়ে বসে বসে দেখতাম কীভাবে বানায়। জানার চেষ্টা করতাম রেসিপি।
পাল্লা দিতাম কে কয়টা রসগোল্লা খেতে পারে।
সেই দিন গুলো খুবই মজার ছিল।
এখন দেশ উন্নত হয়েছে। মানুষ এখন আর হেটে মেলায় যায় না প্রতিটি অলিগলিতে পাঁকা রাস্তা হয়েছে৷ শত শত অটোরিকশা হয়েছে।
এখন আর বাড়িতে যাওয়া হয় না৷ বাড়িতে এখন আর কেউ নাই। দাদা-দাদি মা-বাবা সবাই চলে গেছেন৷ পড়ে আছে শূন্য বাড়ি।
কিন্তু এখনো মেলা হয়। সবাই মেলায় যায় আনন্দ করে ।
আর আমরা বাসায় বসে মা দাদির মতো কর্তব্য পালন করি৷ ভালো মন্দ রান্না করি বাচ্চাদের খাইয়ে আনন্দ পাই।
ঘরে বসেই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই।
ফোনে কথা বলি শুভেচ্ছা বিনিময় করি। দিন বসে থাকে না কেটেই যায়। শুধু মনে থাকে সব স্মৃতিগুলো।
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা৷ ভালো থাকো সবাই আনন্দে থাকো।