‘রঙিন রূপবান’-সহ আলোচিত অনেক ফোক-ফ্যান্টাসি সিনেমার নায়ক সাত্তার আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় এ অভিনেতা মারা যান। মৃত্যুর সময় সাত্তারের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
’৭০ ও ’৮০–এর দশকের জনপ্রিয় নায়ক সাত্তার কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে কদিন ছিলেন হাসপাতালে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যান তিনি। প্রথম আলোকে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন অভিনেতার স্ত্রী আয়েশা আক্তার কাকলী।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়ার সময় অভিনেতা সাত্তারের মৃত্যু হয়। ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৮ সালে তিনবার তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। তারপর থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত এই অভিনেতা। আক্রান্ত হয়েছিলেন নানা রোগে। গত দুই বছর সাত্তার ছিলেন বিছানায়। তাঁর ডান চোখ প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ছিল ডায়াবেটিস। তাঁর চিকিৎসার জন্য ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা অর্থসহায়তা দেন। এর আগে ২০১৪ সালেও চিত্রনায়ক আবদুস সাত্তারকে ২০ লাখ টাকার অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী। আয়েশা আক্তার জানান, শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে কাল বুধবার সাত্তারকে দাফন করা হবে।
‘রঙিন রূপবান’ সিনেমায় অভিনয় করে সবার মন জয় করেছিলেন চিত্রনায়ক সাত্তার। ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘মধুমালা মদন কুমার’, ‘অরুণ বরুণ কিরণ মালা’, ‘সাগরকন্যা’, ‘শিশমহল’, ‘ঝড় তুফান’, ‘ঘরভাঙ্গা সংসার’, ‘জেলের মেয়ে রোশনী’সহ দেড় শতাধিক দর্শকনন্দিত সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। নায়ক হিসেবে সাত্তার ছিলেন সুদর্শন, স্টাইলিশ ও রোমান্টিক।
চলচ্চিত্রে সাত্তারের প্রথম উপস্থিতি ১৯৬৮ সালে। ইবনে মিজানের ‘আমির সওদাগর ও ভেলুয়া সুন্দরী’ ছবিতে শিশুশিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।১৯৮৪ সালে অংশ নেন ‘নতুন মুখের সন্ধানে’। এরপর কাজ করেন কাজী হায়াৎ-এর ‘পাগলী’ ছবিতে। আজিজুর রহমানের ‘রঙিন রূপবান’ তাকে তারকা খ্যাতি এনে দেয়। এরপর শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন।
শাবানা, রোজিনা, অঞ্জু, জিনাত, কবিতা, অলিভিয়া, রানীসহ অনেক সুপারহিট নায়িকার নায়ক ছিলেন সাত্তার। তাঁর স্ত্রী আয়েশা আক্তার জানান, ৭০-৮০ সালজুড়ে সাত্তার ছিলেন ব্যস্ত নায়ক। তিনি ১১০টির মতো সিনেমায় কাজ করেছেন। বছর দুই আগে সাত্তারের অসুস্থতার কথা শিল্পী সমিতিতে জানানো হলেও তারা কোনো খবর নেয়নি।