এক সময়ের ব্যস্ত নায়ক শাহীন আলম আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, সোমবার রাত ১০টা ৫ মিনিটে শাহীন আলম ইন্তেকাল করেছেন।
ঢালিউডের এ অভিনয়শিল্পীর শারীরিক অবস্থা কয়েক দিন ধরে আশঙ্কাজনক ছিল। গত শনিবার থেকে শাহীন আলমকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
গত মাসের শেষের দিকে এই অভিনেতা শরীরে জ্বর ও হালকা ব্যথা নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে এই অভিনেতার ছেলে ফাহিম নুর সোমবার জানিয়েছিলেন, প্রথম দিকে ঠিকমতো ডায়ালাইসিস না হওয়ায় এই অভিনেতার অবস্থা এখন সংকটাপন্ন।
পাঁচ বছর ধরে শাহীন আলম জটিল কিডনি রোগে ভুগছেন। সম্প্রতি তার অসুস্থতা আরও গুরুতর হয়। বাড়তে থাকে তার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপজনিত কিছু সমস্যা। এ অভিনেতা অসুস্থতা নিয়ে খুব একটা বাইরে বের হতেন না।
শাহীন আলম দীর্ঘদিন ধরে সিনেমা থেকে দূরে আছেন। সিনেমা থেকে সরে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, তার মেয়ের বয়স তখন ১৮। পড়তেন কলেজে। পরীক্ষায় খারাপ ফেল করলেন। আবেগে আত্মহত্যা করেন মেয়ে। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর শোকে তিনি ভেঙে পড়েন। তারপর হাতে থাকা কাজ শেষ করে সিনেমাকে বিদায় জানান। অভিনয় ছাড়ার পর পুরোপুরি গামের্ন্ট ব্যবসায় মনোযোগ দেন তিনি। এর পরে শুরু হয় তার শারীরিক অসুস্থতা।
ঢাকায় বেড়ে উঠেছেন শাহীন আলম। অভিনয় করতেন মঞ্চে। ১৯৮৬ সালে নতুন মুখের কার্যক্রমে অংশ নিয়ে প্রবেশ করেন সিনেমায়। তখনই নজরে পড়েন ‘বে-দ্বীন’খ্যাত নির্মাতা এস এম শফির। তিনি তার স্বপ্নের প্রকল্প ‘মাসুদ রানা’ ছবিতে মাসুদ রানা হিসেবে নির্বাচিত করেন শাহীন আলমকে। এই ছবির কাজ পরে এগোয়নি।
১৯৯১ সালে শাহীন আলম অভিনীত ‘মায়ের কান্না’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর একসঙ্গে সাতটি ছবিতে সাইন করেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি ‘ঘাটের মাঝি’, ‘এক পলকে’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘প্রেম প্রতিশোধ’, ‘টাইগার’, ‘রাগ-অনুরাগ’, ‘দাগি সন্তান’, ‘বাঘা-বাঘিনী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আলিফ লায়লা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘অজানা শত্রু’, ‘গরিবের সংসার’, ‘দেশদ্রোহী’, ‘আমার মা’, ‘পাগলা বাবুল’, ‘তেজী’, ‘শক্তির লড়াই’, ‘দলপতি’, ‘পাপী সন্তান’, ‘ঢাকাইয়া মাস্তান’, ‘বিগবস’, ‘বাবা’, ‘বাঘের বাচ্চা’, ‘বিদ্রোহী সালাউদ্দিন’, ‘তেজী পুরুষ’ ইত্যাদি।