What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মধ্যপ্রাচ্য- খেলার মাঠে চীনের আগমন (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,653
Messages
117,045
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
UZZCP8T.jpg


ঐতিহাসিক এবং ভূ-কৌশলগত দুই দিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে মধ্যপ্রাচ্য। পৃথিবীর প্রধান তিনটি ধর্মের প্রচারকদের আগমন ঘটেছিলো এই মধ্যপ্রাচ্যেই( ইসলাম, খৃষ্টান,ইহুদী)। আবার ভূ-কৌশলগত দিক দিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্য। এই অঞ্চল সংযোগ স্থাপন করেছে তিনটি মহাদেশের মাঝে (ইউরোপ,আফ্রিকা,এশিয়া)।

পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সঃম্পদের এক বিশাল ভান্ডার আছে এই এলাকাতেই। আবার ভূ-কৌশল গত সংঘাতের কেন্দ্রেও আছে মধ্যপ্রাচ্য। সিরিয়া-ইরাক-ইরান-সৌদি আরব-তুরস্ক বলতে গেলে আরব্য রজনীর রাত শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু গল্প শেষ হবে না। এতোদিন মধ্যপ্রাচ্যে একচেটিয়া আধিপত্য ছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে দৃশ্যপটে। এক দিকে যুক্তরাষ্ট্র তাঁর ঘর গোছানোর দিকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছে অন্য দিকে চীন ক্রমেই আগ্রহী হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে।

চীনের নয়া কৌশল

২০১৯ সালের ২৭ এবং ২৮শে নভেম্বর বেইজিং এ অনুষ্ঠিত হয় মধ্যপ্রাচ্য নিরাপত্তা ফোরামের বৈঠক। সেখানে মধ্যপ্রাচ্য এবং চীনের প্রায় ২০০ প্রতিনিধি অংশ নেন। দুই প্রান্তের প্রতিনিধিদের মাঝে একটা বিষয়ে বেশ মিল ছিলো। তাঁরা দুই পক্ষই এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমলোচনা করেন। এই অবস্থায় চীন মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে তাদের নতুন ধারণা উপস্থাপন করে। যা মূলতো ভেদাভেদ এবং সংঘাতের বদলে উন্নয়নকে পুঁজি করে এগিয়ে যেতে চাইছে। তবে এটা আসলে পুরোনো চীনা কৌশল। তাঁরা বরাবরই গণতন্ত্র এবং উন্নয়নকে বিপরীতার্থক অর্থে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। তো এই সম্মেলনে অংশ গ্রহণকারীরা চারটি বিষয়ে সমঝোতায় পৌছান। এর মাঝে প্রধান দুইটি হচ্ছে –

  • আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন একটা ধারণার সূত্রপাত
  • ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সহ অন্যান্য সংঘাতের স্থায়ী সমাধান
যেখানে চীনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম এর নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলার, যেখানে চীন নিজ দেশে উইঘুরদের উপর চালানো নির্যাতনের জন্য কাঠগোড়ায় এবং যেখানে চীন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যার বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিতে পারেনি সেখানে এসব প্রতিশ্রুতি যে ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছু নয় তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হবার দরকার হয় না।

সত্যিকার অর্থে নতুন খেলোয়াড় হলেও চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চাচ্ছে। তাই বিবদমান পক্ষগুলোর ক্ষেত্রে কোন একটা দেশের পক্ষে না গিয়ে সুকৌশলে দুই নৌকায় পা দেওয়াই চীনের উদ্দেশ্য। তাই আঞ্চলিক সহযোগিতা আর উন্নয়নের বুলি মুখে নিয়ে চীন এক দিকে সৌদি আরবের সাথে বাণিজ্য করছে আরেক দিকে ইরান এর সাথে নৌ-মহড়া চালাচ্ছে।

কেন মধ্যপ্রাচ্য গুরুত্বপূর্ণ

চীনের কাছে মধ্যপ্রাচ্য গুরুত্বপূর্ণ মূলতো দুইটি কারণে। প্রথমত জ্বালানির জন্য চীন এখনো আমদানি নির্ভর। জ্বালানি আমদানিকারক দেশ গুলোর মাঝে চীন এখন দ্বিতীয়। চীনের প্রাথমিক উন্নয়ন কাজগুলো কয়লা নির্ভর হলেও চীন সেখান থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানির জন্য বিকল্প সোর্স থাকলেও চীনের নেই। তাই চীনের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতীশীলতা খুব জরুরী। আর দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে নিউ সিল্ক রোড। চীনের অভ্যন্তরীন প্রবৃদ্ধি কমে যাবার পর চীন নজর দিচ্ছে বাইরে। ঋণের ঝুলি নিয়ে হাজির হচ্ছে দেশ গুলোর কাছে। একদিকে তুলনা মূলক উচ্চ সুদে ঋণ অন্য দিকে ঋণের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করে দেওয়া হচ্ছে চীনা কোম্পানি গুলোকেই কাজ দিতে হবে। এ যেনো মাছের তেলে মাছ ভাজা। ফলে আফ্রিকা,আরব দেশগুলোতে ভীড় বাড়ছে চীনাদের।

সারা বিশ্বকে এক সুতোয় বাঁধার চীনের যেই মহা পরিকল্পনা তাঁর একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়েও আছে মধ্যপ্রাচ্য। তাই মধ্য প্রাচ্যের ভূ-কৌশলগত অবস্থানকে কাজে লাগানোর জন্য চীনারাও হাজির হচ্ছে বিশাল বাণিজ্য আর বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে।

তবে এতো কিছুর পরেও চীন স্থানীয় রাজনীতিতে জড়াতে আগ্রহী ছিলো না। চীনের ধারণা ছিলো আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কাজটা করবে আর চীন এই সুযোগে বিনিয়োগ করে ব্যবসা বাড়াবে। কিন্তু এটাতো স্পষ্ট মধ্যপ্রাচ্যে আর একক ভূমিকা রাখতে আমেরিকা নারাজ। কারণ তেলের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বয়ংসম্পূর্ণ হবার পথে। তাই যুক্তরাষ্ট্র এখন ধীরে ধীরে মধ্য প্রাচ্যে তাদের উপস্থিতি কমাতে চাচ্ছে। তাদের নজর এখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। তাই এই মুহূর্তে বাধ্য হয়েই চীনকে স্থানীয় অনেক ইস্যু গুলোতে জড়াতে হচ্ছে। যার জন্য চীন এখনো প্রস্তুত নয়।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোও চীনের এই সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবগত। তাই তারাও পুরোপুরি চীনের দিকে ঝুঁকতে পারছে না। আপাতত চীনা বিনিয়োগ আর অবকাঠামোর বিষয়গুলো নিয়েই তারা খুশি থাকছে ।

তবে সামরিক অবস্থান চীনকে দৃঢ় করতেই হবে। জিবুতিতে সেনা ঘাটি স্থাপন এবং পাকিস্তানি বন্দর গুলোতে সামরিক অবস্থান দৃঢ় করার মাধ্যমে চীন হরমুজ প্রণালীর আশেপাশে তাঁর অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সঃমস্যা হচ্ছে এই খেলায় চীন অনভিজ্ঞ। দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে তাঁর মাঠে চীনকে নাকানি-চুবানি খাওয়ানোর জন্য নতুন কূট-কৌশল আটছে না তাই বা কে বলবে? তাই সাবধানে পা ফেলতে হচ্ছে চীনকে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top