আগেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ম্যাগাজিনের বিষয় হয়েছেন ফারনাজ আলম। বাংলাদেশের এই তরুণ সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞের সাক্ষাৎকার এবং তাঁর ব্র্যান্ড ‘কণা বাই ফারনাজ আলম’–এর বিভিন্ন প্রসাধনী দিয়ে ছাপা হয়েছে মেকওভারের ছবি। এই তো কিছুদিন আগে ‘এল ইন্ডিয়া’তে ছাপা হলো তাঁর সাক্ষাৎকার। সেই তালিকায় এবার যোগ হলো ‘লোফিসিয়েল’। ফ্রান্সের এই বহুজাতিক ফ্যাশন ম্যাগাজিনটির আরব সংস্করণের ফেব্রুয়ারি সংখ্যার প্রচ্ছদকন্যা হলেন ফারনাজ আলম। আগে কখনো তিনি প্রচ্ছদকন্যা হননি। শুধু তাই নয়, তিনিই প্রথম বাংলাদেশী যিনি লোফিসিয়েলের প্রচ্ছদকন্যা হলেন।
গত রাতে দুবাই থেকে ফিরেছেন ফারনাজ। লোফিসিয়েল অ্যারাবিয়ার ফটোশুট বিষয়ে জানালেন, বছরের বেশ বড় একটা সময় এখন তাঁকে দুবাইতে থাকতে হয়। সেখানেই রূপবিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন তিনি। এ ছাড়া বিভিন্ন সাময়িকীর ফটোশুটে মেকআপ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। এভাবেই শুটের প্রোডাকশন টিমের সঙ্গে তাঁর সংযোগ তৈরি হয়। যোগাযোগ হয় লোফিসিয়েল অ্যারাবিয়ার কুশীলবদের সঙ্গে। তারাই ফারনাজকে প্রচ্ছদকন্যা হওয়ার প্রস্তাব করে।
পোশাক: অ্যাটিলিয়ের জুহরা, ইয়ারিং, বালা ও আংটি: মেসিকা
জানুয়ারিতেই দুবাইয়ে শুট হয়। শুট এক দিনের হলেও এর আগে তিন দিন ধরে চলে গ্রুমিং। হিল তিনি পরেন না। যদিও এই শুটে হিল পরতে হয়েছে। এ জন্য হিল পরে অনুশীলনও করেছেন। হাসতে হাসতে বললেন, এ জন্য পায়ে ফোসকাও পড়েছে। সঙ্গে যোগ করলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হয়েছে এই শুট।
ম্যাগাজিনে মোট চারটি ছবি ছাপা হয়েছে। এই পোশাকগুলো ছিল অ্যাটেলিয়ার জুহরা ব্র্যান্ডের। কিছু গয়না আর ব্যাগ ছিল বিখ্যাত ব্র্যান্ড বালগেরির। এ ছাড়া কিছু গয়না ছিল মেসিকা ও শার্লট শেনের। ঘড়ি ছিল শোপার। জুতা পরেছেন জিমি জু আর ক্রিস্টিয় লুবাতঁর।
পোশাক: অ্যাটিলিয়ের জুহরা, গয়না ও ব্যাগ: বুলগারি
পাশাপাশি নিজস্ব ব্র্যান্ড কণা বাই ফারনাজ আলমের তিনটি প্রসাধনী ফাউন্ডেশন, লিপস্টিক আর আইশ্যাডো দিয়ে তাঁর মেকআপ করা হয়েছে। এল ইন্ডিয়ার শুটেও তাঁর প্রতিষ্ঠানের প্রসাধনীই ব্যবহার করা হয়। প্যারিস ফ্যাশন উইকেও এই প্রসাধনী দিয়ে মেকাআপ করা হয়েছে। ‘এভাবে বাংলাদেশকেও বিশ্বদরবারে তুলে ধরার প্রয়াস পাচ্ছি আমরা,’ বললেন ফারনাজ।
পোশাক: অ্যাটিলিয়ের জুহরা, ইয়ারিং: মেসিকা, ব্রেসলেট ও আংটি: শার্লট শেনে
এই শুটের পোশাকগুলো যথেষ্ট ভারী। একটি পোশাক ছিল ১০ কেজির মতো। এই ওজনের সঙ্গে জুতা এবং অন্যান্য অনুষঙ্গ মিলিয়ে যথাযথ লুক দেওয়াটাও বেশ কষ্টসাধ্য। তবে তিনি সেটা ভালোভাবেই করতে পেরেছেন। এই পোশাকগুলো পরে মূলত লালগালিচায় হাঁটা হয় বা ওই ধরনের অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়।
এবারের প্রচ্ছদের থিমটাও ফারনাজ আলমের দেওয়া। এই থিমে তাঁর লুকটা করা হয়েছে রাজকন্যার মতো। তবে তিনি চিরচারিত রূপের রাজকন্যা নয়। রাজকন্যার সংজ্ঞাও পাল্টেছে। এখন তারা আর চার দেয়ালের চৌহদ্দিতে বন্দী নয়। বরং নারীর ক্ষমতায়নের মূর্ত প্রতীক। তাঁর চিন্তাভাবনায় সেই ছাপ স্পষ্ট।
পোশাক: অ্যাটিলিয়ের জুহরা, হাতঘড়ি: শোপা
যে বছর ভোগ সাময়িকীর প্রকাশনা শুরু হয়, সেই ১৯২১ সাল থেকে প্রকাশিত লোফিসিয়েল ফ্যাশন বিশ্বে অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন। বেশ কটি ভাষায় রয়েছে এর সংস্করণ। বিভিন্ন লোফিসিয়েল ইন্ডিয়ার প্রচ্ছদ হয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন, জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ, ক্যাটরিনা কাইফ কিংবা সানিয়া মির্জারা।
বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ রূপসদন চেইন ওম্যান’স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ফারনাজ আলম এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা কণা আলমের কন্যা। ফারনাজ একাধারে স্থপতি এবং সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞও। লরিয়েলের ব্রাশ কন্টেস্টের বিজয়ীও।