কোয়ান্টাম কম্পিউটার বুঝতে হলে সাধারণ কম্পিউটারের (অর্থাৎ ক্লাসিক কম্পিউটার) ধারণাটি আগে বুঝতে হবে ।
সাধারণ কম্পিউটার পরিচালিত হয় বাইনারি লজিক অনুসারে। বাইনারি লজিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় বাইনারি ডিজিট অর্থাৎ বিট। বিট গঠনের জন্য দরকার শুধু দু’টি সংখ্যা- শূন্য ও এক। শূন্য ও এক দ্বারা যথাক্রমে একটি সুইচের বন্ধ ও চালু দশা বোঝানো হয়। সুইচগুলো আবার ট্র্যান্সিস্টর নামেও পরিচিত। কম্পিউটার তৈরিতে এ রকম অসংখ্য ট্র্যান্সিস্টর ব্যবহার করা হয় (নিচের ছবি )।
একটি মডার্ন ল্যাপটপে প্রায় ২ বিলিয়নেরও বেশি ট্র্যান্সিস্টর আছে। তার মানে, একটি সাধারণ কম্পিউটারের প্রসেসিং পাওয়ার নির্ভর করে ব্যবহৃত ট্র্যান্সিস্টরের সংখ্যার ওপর।
বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী, প্রতি দুই বছরে ট্র্যান্সিস্টরের সংখ্যাও দিগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ধারা বজায় থাকলে নিকট ভবিষ্যতে মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে অস্বাভাবিক সংখ্যার ট্র্যান্সিস্টর সংযোজন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। মূলত এই অসুবিধার কথা বিবেচনা করে চিরস্থায়ী সমাধান হিসেবে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের কথা ভাবা হয়।
কোয়ান্টাম সিস্টেম ক্লাসিক্যাল সিস্টেমের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা। ক্লাসিক বিটের পরিবর্তে কোয়ান্টাম কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয় কোয়ান্টাম বিট, যেটা কিউবিট (Qubit) নামেও পরিচিত। উপরের ছবিটি একটি ৫০ কিউবিট এর কোয়ান্টাম কম্পিউটার ।
মজার ব্যাপার হলো, এই কিউবিট একই সাথে শূন্য ও এক উভয়ের মতো আচরণ করতে পারে (উপরের ছবি )। বস্তুর ক্ষুদ্রতম কণা, যেমন ফোটন, নিউকিয়াস, ইলেকট্রন ইত্যাদিকে কিউবিট হিসেবে ব্যবহার করা হয় (“কোয়ান্টাম” শব্দটির অর্থ বস্তুর ক্ষুদ্রতম কণা )। উদাহরণস্বরূপ, একটি ইলেকট্রনের কথা বিবেচনা করা যাক। প্রতিটি ইলেকট্রন একেকটি অতি ক্ষুদ্র চুম্বক হিসেবে আচরণ করে। তাই চুম্বকীয় ক্ষেত্রে ধর্ম অনুযায়ী এটি উত্তর-দক্ষিণ মেরু বরাবর অবস্থান করবে। ইলেকট্রনের এই বিশেষ ধর্ম ইলেকট্রন স্পিন (Electron Spin) নামে পরিচিত। ক্লাসিক বিটের সাথে তুলনা করলে আমরা ঊর্ধ্বমুখী স্পিনকে এক ও নিম্নমুখী স্পিনকে শূন্য হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, স্বাভাবিক অবস্থায় একটি ইলেকট্রন যুগপৎভাবে ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী দুই অবস্থায়ই থাকতে পারে।
তার মানে, একই সাথে শূন্য ও এক হিসেবে আচরণ করে। কোয়ান্টাম বস্তুকণার এই ব্যতিক্রমধর্মী বৈশিষ্ঠ্যকে বলা হয় কোয়ান্টাম সুপারপজিশন (Quantum Superposition-নিচের ছবি)।
এ পদ্ধতিতে যেহেতু দু’টি ডিজিট একটির মতো আচরণ করে, সেহেতু প্রসেসরের লজিক্যাল ইউনিট অতি দ্রুত যেকোনো জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার সহজলভ্য হলে (যদিও আপাতত কোয়ান্টাম কম্পিউটারের ব্যবহার স্বল্প পরিসরেই সীমাবদ্ধ) মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আসবে ব্যাপক পরিবর্তন । পুরো পৃথিবীর চেহারাই পরিবর্তন হয়ে যাবে । নিচে কয়েকটি ক্ষেত্রের নাম উল্লেখ করলাম যেখানে কোয়ান্টাম পদ্ধতি ব্যবহার করে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব ।
(১) কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সাহায্যে অ্যামিনো এসিডের সঠিক ম্যাপিং এবং ডিএনএ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপযুক্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে অনেক জটিল রোগেরও প্রতিষেধক বের করা সম্ভব। তা ছাড়া কোয়ান্টাম কম্পিউটেশনাল মডেল ক্যান্সার রোগের যথাযথ কারণ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে।
(২) আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্তের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাস বলে দিতে পারবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার।
(৩) গুগল কোম্পানি ইতিমধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত গাড়ির সফটওয়্যার নির্মাণকাজ শুরু করে দিয়েছে। এ কাজে তারা ব্যবহার করছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। নিরাপদ ও চালকবিহীন গাড়ি ব্যবহার করে গুগল স্ট্রিট ভিউকে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এর মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক ভৌগোলিক রহস্যের উন্মোচন হবে।
(৪) মহাশূন্যে দূরবর্তী গ্রহের সন্ধানকাজে বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে শক্তিশালী টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপে প্রাপ্ত ডেটা সাধারণ কম্পিউটারের পক্ষে বিশ্লেষণ করা কষ্টসাধ্য। কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সিমুলেশন কাজে লাগিয়ে এ কাজটি অনায়াসে করা যাবে। এতে করে সৌরজগতের বাইরে বিদ্যমান থাকা পৃথিবীসদৃশ গ্রহ সম্পর্কে অনেক ধারণা পাওয়া যাবে।
সাধারণ কম্পিউটার পরিচালিত হয় বাইনারি লজিক অনুসারে। বাইনারি লজিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় বাইনারি ডিজিট অর্থাৎ বিট। বিট গঠনের জন্য দরকার শুধু দু’টি সংখ্যা- শূন্য ও এক। শূন্য ও এক দ্বারা যথাক্রমে একটি সুইচের বন্ধ ও চালু দশা বোঝানো হয়। সুইচগুলো আবার ট্র্যান্সিস্টর নামেও পরিচিত। কম্পিউটার তৈরিতে এ রকম অসংখ্য ট্র্যান্সিস্টর ব্যবহার করা হয় (নিচের ছবি )।
একটি মডার্ন ল্যাপটপে প্রায় ২ বিলিয়নেরও বেশি ট্র্যান্সিস্টর আছে। তার মানে, একটি সাধারণ কম্পিউটারের প্রসেসিং পাওয়ার নির্ভর করে ব্যবহৃত ট্র্যান্সিস্টরের সংখ্যার ওপর।
বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী, প্রতি দুই বছরে ট্র্যান্সিস্টরের সংখ্যাও দিগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ধারা বজায় থাকলে নিকট ভবিষ্যতে মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে অস্বাভাবিক সংখ্যার ট্র্যান্সিস্টর সংযোজন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। মূলত এই অসুবিধার কথা বিবেচনা করে চিরস্থায়ী সমাধান হিসেবে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের কথা ভাবা হয়।
কোয়ান্টাম সিস্টেম ক্লাসিক্যাল সিস্টেমের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা। ক্লাসিক বিটের পরিবর্তে কোয়ান্টাম কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয় কোয়ান্টাম বিট, যেটা কিউবিট (Qubit) নামেও পরিচিত। উপরের ছবিটি একটি ৫০ কিউবিট এর কোয়ান্টাম কম্পিউটার ।
মজার ব্যাপার হলো, এই কিউবিট একই সাথে শূন্য ও এক উভয়ের মতো আচরণ করতে পারে (উপরের ছবি )। বস্তুর ক্ষুদ্রতম কণা, যেমন ফোটন, নিউকিয়াস, ইলেকট্রন ইত্যাদিকে কিউবিট হিসেবে ব্যবহার করা হয় (“কোয়ান্টাম” শব্দটির অর্থ বস্তুর ক্ষুদ্রতম কণা )। উদাহরণস্বরূপ, একটি ইলেকট্রনের কথা বিবেচনা করা যাক। প্রতিটি ইলেকট্রন একেকটি অতি ক্ষুদ্র চুম্বক হিসেবে আচরণ করে। তাই চুম্বকীয় ক্ষেত্রে ধর্ম অনুযায়ী এটি উত্তর-দক্ষিণ মেরু বরাবর অবস্থান করবে। ইলেকট্রনের এই বিশেষ ধর্ম ইলেকট্রন স্পিন (Electron Spin) নামে পরিচিত। ক্লাসিক বিটের সাথে তুলনা করলে আমরা ঊর্ধ্বমুখী স্পিনকে এক ও নিম্নমুখী স্পিনকে শূন্য হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, স্বাভাবিক অবস্থায় একটি ইলেকট্রন যুগপৎভাবে ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী দুই অবস্থায়ই থাকতে পারে।
তার মানে, একই সাথে শূন্য ও এক হিসেবে আচরণ করে। কোয়ান্টাম বস্তুকণার এই ব্যতিক্রমধর্মী বৈশিষ্ঠ্যকে বলা হয় কোয়ান্টাম সুপারপজিশন (Quantum Superposition-নিচের ছবি)।
এ পদ্ধতিতে যেহেতু দু’টি ডিজিট একটির মতো আচরণ করে, সেহেতু প্রসেসরের লজিক্যাল ইউনিট অতি দ্রুত যেকোনো জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার সহজলভ্য হলে (যদিও আপাতত কোয়ান্টাম কম্পিউটারের ব্যবহার স্বল্প পরিসরেই সীমাবদ্ধ) মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আসবে ব্যাপক পরিবর্তন । পুরো পৃথিবীর চেহারাই পরিবর্তন হয়ে যাবে । নিচে কয়েকটি ক্ষেত্রের নাম উল্লেখ করলাম যেখানে কোয়ান্টাম পদ্ধতি ব্যবহার করে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব ।
(১) কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সাহায্যে অ্যামিনো এসিডের সঠিক ম্যাপিং এবং ডিএনএ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপযুক্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে অনেক জটিল রোগেরও প্রতিষেধক বের করা সম্ভব। তা ছাড়া কোয়ান্টাম কম্পিউটেশনাল মডেল ক্যান্সার রোগের যথাযথ কারণ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে।
(২) আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্তের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাস বলে দিতে পারবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার।
(৩) গুগল কোম্পানি ইতিমধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত গাড়ির সফটওয়্যার নির্মাণকাজ শুরু করে দিয়েছে। এ কাজে তারা ব্যবহার করছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। নিরাপদ ও চালকবিহীন গাড়ি ব্যবহার করে গুগল স্ট্রিট ভিউকে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এর মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক ভৌগোলিক রহস্যের উন্মোচন হবে।
(৪) মহাশূন্যে দূরবর্তী গ্রহের সন্ধানকাজে বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে শক্তিশালী টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপে প্রাপ্ত ডেটা সাধারণ কম্পিউটারের পক্ষে বিশ্লেষণ করা কষ্টসাধ্য। কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সিমুলেশন কাজে লাগিয়ে এ কাজটি অনায়াসে করা যাবে। এতে করে সৌরজগতের বাইরে বিদ্যমান থাকা পৃথিবীসদৃশ গ্রহ সম্পর্কে অনেক ধারণা পাওয়া যাবে।