এ বছর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ২৪টি পশুর হাট বসবে যেখানে একটি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। রাজধানীর হাটগুলিতে কর্তব্যরত প্রতিটি মেডিকেল টিমে ১ জন ভেটেরিনারি সার্জন, ১/২ জন টেকনিক্যাল কর্মচারী (ভিএফএ/ইউএলএ) এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপের ১ জন করে ভেটেরিনারি সার্জন থাকবেন। সরকার গত কয়েক বছর ধরে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে পশু কোরবানি দেওয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়ার এবং বর্জ্য ফেলার জন্য ব্যাগ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে বর্ণিত সুবিধাদি গ্রহণ করে নিজ নিজ এলাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব রাখা সম্ভব। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করা এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থাপনা কমিটির সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। তবে শুধু সরকারি পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করলে চলবে না। এলাকাভিত্তিক ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত ছোটো-ছোটো পদক্ষেপই বৃহৎ আকারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কোরবানি করা পশুর হাড়, লেজ, কান, মাথার খুলি ও পায়ের অবশিষ্টাংশ অবশ্যই এলাকার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে কোনো মোটা প্লাস্টিকের ব্যাগে জড়িয়ে সেটি কাছাকাছি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেওয়া। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ১-২ দিনের মধ্যেই তা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে থাকে। কোরবানির সময় ব্যবহৃত পাটি, হোগলা, ন্যাকড়া, কাপড় বা কাঠের গুঁড়ি- এ ধরনের সামগ্রী রাস্তায় না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করতে কোরবানি আদায়কারীর সচেতন হতে হবে। কোরবানি যেন অন্যের বিরক্তি বা অসুবিধার কারণ না হয় সেদিকে অবশ্যই যত্নবান থাকতে হবে। বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। ডাম্পার, পে লোডার, টায়ার ডোজার, পানির গাড়ি (জেট স্প্রেসহ), প্রাইম মুভার, ট্রেইলার, স্কেভেটর, চেইন ডোজার পরিচ্ছন্নতা কাজে গতিশীলতা আনতে ব্যবহার করা হবে যা দ্রুত কোরবানি পরবর্তী বর্জ্য অপসারণে সহায়ক হবে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরূপণ করে কোরবানি পরবর্তী পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে লিফলেট, ফোল্ডার, পোস্টার ইত্যাদি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং সকল প্রিন্ট মিডিয়াতেও তা প্রচারের উদ্যোগ নিতে হবে। তাছাড়া মোবাইলে এ বিষয়ক ক্ষুদে বার্তা প্রচার করেও সচেতনতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। কোরবানির মাধ্যমে শুধু আত্মত্যাগ নয়, আত্মসচেতনতার শিক্ষাও নিতে হবে। কারণ পশু জবাইয়ের ফলে সৃষ্ট বর্জ্য যদি পরিবেশ দূষণ করে তবে তা ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে। প্রত্যেকের সচেতনতায় কোরবানিদাতার আত্মার শুদ্ধতার পাশাপাশি পরিবেশের শুদ্ধতাও নিশ্চিত হবে- এ প্রত্যাশা সকলের।