What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কিছু অদ্ভুত, রহস্যময় আর বিরল মানসিক রোগ (1 Viewer)

Nirjonmela

Administrator
Staff member
Administrator
Joined
Mar 1, 2018
Threads
2,764
Messages
23,601
Credits
946,219
Pistol
Crown
Thread Title Style (One)
Profile Music
FCtEHnG.jpg


পরিসংখ্যান অনুসারে পৃথিবীতে প্রতি চারজনে একজন মানুষ মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। বিভিন্ন ধরণের মানসিক বা আচরণগত সমস্যা তাদের মধ্যে দেখা যায়। কিছু অদ্ভুত, রহস্যময় আর বিরল মানসিক রোগ আছে পৃথিবীতে, যেগুলোর কথা আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা। এমন কিছু মানসিক ব্যাধির কথা, চলুন জেনে আসি-

অ্যাডেল সিনড্রোম (Adele Syndrome)

ফ্রেঞ্চ লেখক ভিক্টোর হুগোর কন্যা অ্যাডেল হুগোর নামানুসারে এই রোগের নাম অ্যাডেল সিনড্রোম। অ্যাডেল সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। সিজোফ্রেনিয়ার কারণেই কিনা, তার নতুন ধরণের এক আসক্তি দেখা দেয়। সে একজন ব্রিটিশ মিলিটারি অফিসারের প্রেমে এতটাই আসক্ত হয়ে পরে যে মিলিটারি অফিসারটি তাকে প্রত্যাখ্যান করলে সে পাগলপ্রায় হয়ে যায়। এই রোগের পরিণতি হিসেবে সেই মিলিটারি অফিসারটি অন্য একজনকে বিয়ে করলে শেষ পর্যন্ত অ্যাডেলের ঠাঁই হয় পাগলাগারদে।

প্রেম নিয়ে এই ভয়াবহ আসক্তি যে একধরণের অসুস্থতা তা অনেকেই মানতে চায় না। কিন্তু সাইক্রিয়াটিস্টরা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখেছেন যে, এ আসক্তি তামাক, অ্যালকোহল বা ক্রেপটোম্যানিয়া আসক্তির মতই ভয়াবহ যা রোগীর শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। এ ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বিষন্নতায় ভুগতে থাকে। তারা নিজেই নিজেকে নানাভাবে কষ্ট দিতে থাকে, অবাস্তব আশায় বুক বাঁধে, নিজেই নিজেকে বিভিন্নভাবে ধোঁকা দিতে থাকে, কারো কোন উপদেশ মানতে চায়না, বেপরোয়া আচরণ করতে থাকে, কারো সাথে মিশতে চায়না এবং ভালবাসার মানুষটি ছাড়া পৃথিবীর যাবতীয় ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

’দ্য স্টোরি অব অ্যাডেল এইচ’ নামক সিনেমায় এ রোগটি উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, ভারতীয় একটা সিনেমা আছে “পেয়ার তুনে কিয়্যা কিয়া”। উর্মিলা মার্তন্ডোকার সে সিনেমায় অ্যাডেল সিনড্রোমে আক্রান্ত একজন রোগীর চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন।

কুয়াসিমোডো সিনড্রোম (Quasimodo syndrome)

কুয়াসিমোডো সিনড্রোম বা বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার এমন এক ব্যাধি যেটায় আক্রান্ত হলে রোগী নিজেই নিজের খুঁত বের করতে মরিয়া হয়ে পড়বে। নিজের ছোটখাট শারীরিক ত্রুটিও আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে বড় হয়ে দেখা দিবে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রতিনিয়ত আয়নার সামনে দাঁড়াবে এবং বিভিন্ন দিক থেকে নিজের এমন এমন সব শারীরিক ত্রুটি খুঁজে বের করবে যেটা আসলে তার মধ্যে নেই। ছবি তোলার ব্যাপারে তাদের মধ্যে ব্যাপক অনীহা দেখা দিবে। ক্যামেরার সামনে যেতে চাইবে না, ছবিতে তাদের ত্রুটি দেখা যাবে সেই ভয়ে। রোগী তার চেহারার অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া শুধু করবে। নিজের চেহারা নিয়ে এই অতিরিক্ত খুঁতখুঁতানির ফলে তার প্রেমের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিবে। তার মধ্যে আত্মমর্যাদার ঘাটতি দেখা দিবে এবং লোকের সামনে যেতে সে অস্বস্তি বোধ করবে। নিজের চেহারার কাল্পনিক ত্রুটির কারণে তার সামাজিক জীবন-যাপনও ব্যাহত হবে। কারো সামনে গেলেই তার মনে হবে, এই বুঝি সবাই তার ত্রুটি ধরে ফেলবে এবং তাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে।

এরোটোম্যানিয়া (Erotomania)

এই ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি সবসময় চিন্তা করতে থাকবে যে কেউ একজন তার প্রেমে পড়েছে। সেই কেউ একজন আবার তার চেয়ে বেশি সামাজিক মর্যাদা সম্পূর্ণ(বিশেষত,কোন সেলিব্রেটি)হওয়ার সম্ভাবনা। মানে পরিচিত বা স্বল্প পরিচিত কেউ যদি রোগীর প্রতি স্বাভাবিক সহানুভূতি, সৌজন্যতা, এবং আন্তরিকতা দেখায়, তবে রোগী নিশ্চিত কল্পনা করে নেয়, সে ব্যক্তি তার প্রেমে পড়েছে। রোগী কল্পনা করতে থাকে, সে ব্যক্তি তার প্রতি প্রেম নিবেদনের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের গোপন ইঙ্গিত দিচ্ছে। এমনকি যদি কল্পিত ব্যক্তি স্বাভাবিক একটা ‘না’ ও বলে তবে রোগী কল্পনা করে নেয় যে এটা হয়ত কোন গোপন ইঙ্গিত ছিল। কোন কোডেড ম্যাসেজ। যার মাধ্যমে ব্যক্তিটি তার গোপন ভালবাসার কথা অন্যদের কাছ থেকে আড়াল করতে চাচ্ছে।

“ফ্রম দ্য ল্যান্ড অব দ্য মুন” সিনেমায় এ রোগটি উপস্থাপন করা হয়েছে।

ক্যাপগ্রেস ডেল্যুশন (Capgras delusion)

ক্যাপগ্রেস ডেল্যুশনে আক্রান্ত ব্যক্তি তার পাশেই খুব কাছের একজনকে, কোন বন্ধু বা নিজের জমজকে কল্পনা করতে থাকে, যার আসলে বাস্তবে কোন অস্তিত্বই নেই। রোগী নানা ধরণের খারাপ কাজ করতে থাকে এবং সে বুঝতে পারে না যে সেই কাজগুলো তার দ্বারা হয়েছে। সে তার পাশের কাল্পনিক মানুষটাকে তার করা বিভিন্ন খারাপ কাজের জন্য দোষারোপ করতে থাকে। এই রোগটি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের হয়ে থাকে।

“দ্য ডাবল” নামের একটি হলিউডি মুভিতে এ রোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তির চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আবার, কলকাতার নায়ক আবীর চ্যাটার্জীর একটা সিনেমা দেখেছিলাম, নাম মনে করতে পারছি না। সেই সিনেমায় আবীরও এই ব্যাধীতে আক্রান্ত এক ব্যক্তির চরিত্রে অভিনয় করেছিল।

ফ্রেগোলি ডেল্যুশন (Fregoli delusion)

‘ফ্রেগোলি ডেল্যুশন’ বা ‘দ্য ডেল্যুশন অব ডাবলস্’ এমন এক ব্যাধি যেটাতে আক্রান্ত হলে রোগী সবসময় কল্পনা করতে থাকে যে, তার আশেপাশে মুখোশধারী সব মানুষেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাকে অনুসরণ করছে। নিজের কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি বা একই ব্যক্তি মুখোশ, মেকাপ এবং পোশাক বদলে নিজের চেহারা পরিবর্তনের মাধ্যমে তাকে অনবরত অনুসরণ করছে।

এই সিনড্রোমটির কথা প্রথম আলোচনায় আসে ১৯৭২ সালে। সেসময় এক কিশোরী মেয়ের দেখা পাওয়া যায়্ যে কল্পনা করত, সে যে থিয়েটারে নাটক দেখতে যায় সেখানকার দু’জন অভিনেতা তার পরিচিত বিভিন্ন ব্যক্তির বেশ ধরে তাকে প্রতিনিয়ত অনুসরণ করছে কোন উদ্দেশ্য হাসিলের অভিপ্রায়ে।

অ্যানিমেশন মুভি “অ্যানোমালিসা”তে এ রোগের আংশিক কিছুটা উপস্থাপন রয়েছে।

ক্রিপটমনেশিয়া (Cryptomnesia)

ক্রিপটমনেশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি মনে করতে পারে না একটা নির্দিষ্ট ঘটনা ঠিক কখন বা কোথায় ঘটেছে। যেমন ধরুন, সে যদি একটা বই পড়ে তবে পরে বইয়ের লাইনগুলো বা ঘটনা মনে আসলেও ঘটনাটি সে আসলে কোথায় দেখেছে, সেটা কি সত্যি নাকি কল্পনা তা সে মনে করতে পারেনা। অর্থ্যাৎ কোন কিছুর উৎস সম্পর্কে রোগী নিশ্চিত হতে পারে না। কোন জিনিস বা চিন্তা কি তার, নাকি সেটা অন্য কারও কাছ থেকে পাওয়া সে সম্পর্কে সে কিছুই মনে করতে পারে না। এটা স্মৃতিশক্তির একধরণের অক্ষমতা।

এ সিনড্রোম রোগীকে এমন এক অবস্থায় ফেলে দেয়, যে অবস্থায় খুব পরিচিত কোন জায়গা বা মানুষকে দেখে সহসাই তার কাছে অপরিচিত অনুভূত হতে থাকে।

“দ্য সাইন্স অব স্লিপ” সিনেমায় এ রোগে আক্রান্ত রোগীর অবস্থা দেখানো হয়েছে।

এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম (Alice in Wonderland syndrome)

এ সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির নিজেকে এবং চারপাশের সবকিছুকে দেখার চোখ বদলে যায়। অর্থাৎ কোন জিনিস বা কোন জায়গার সঠিক অবস্থা বা আকৃতি সম্পর্কে তার কোন ধারণা থাকে না। সবকিছুকে হয় অনেক বড় না হয় অনেক ছোট বলে কল্পনা করতে থাকে। আবার কোন কিছুর অবস্থান সম্পর্কেও সে দ্বিধান্বিত হয়ে পরে। খুব কাছের জিনিসকেও খুব দূরের বলে মনে হয়। আবার অনেক দূরের জিনিসকেও মনে হয় খুব কাছের। এ রোগ সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে, যখন রোগী নিজের শরীরের আকৃতিও সঠিকভাবে নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয়। এটা রোগীর চোখ বা অন্য কোন ইন্দ্রিয়ঘটিত সমস্যা না, কেবল একধরণের মানসিক সমস্যা।

অবসেসিভ–কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (Obsessive-compulsive disorder)

অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার এমন এক মানসিক সমস্যা যার ফলে সব ব্যাপারেই রোগী বেশি বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পরে। দুশ্চিন্তা আর উদ্বেগের মাত্রা এত বেশি যে সেটার ওপর রোগীর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না এবং সে এ সমস্যা থেকে মুক্ত হতেও পারে না। ফলে, সে একই চিন্তা বা কাজ বার বার করতে থাকে মানসিক শান্তির জন্য। এ ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতে পারে যে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই এবং একই কাজ বার বার করার কোন দরকার নেই। কিন্তু সে কিছুতেই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পারে না, এবং এটা একসময় এত অসহনীয় হয়ে ওঠে যে সেই একই কাজ সে আবারও করতে থাকে। “দ্য অ্যাভিয়েটর” সিনেমায় লিওনার্দো দ্য ক্যাপ্রিওর চরিত্রটি এ রোগের উৎকৃষ্ট উপস্থাপন।

প্যারাফ্রেনিয়া (Paraphrenia)

প্যারাফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগী যে ধরণের বিভ্রমের শিকার হয় তাতে সে নিজেকে খুব মহান ব্যক্তি হিসেবে কল্পনা করতে থাকে। ছদ্ম হাল্যুসিনেশন এবং মিথ্যা স্মৃতিশক্তির দ্বারা রোগী বিভ্রান্ত হতে থাকে। সে নিজেকে বিশ্বব্রহ্মান্ডের অধিপতি কল্পনা করতে থাকে এবং নিজেকে অমর বলে মনে করে। তারঁ ঐশ্বরিক ক্ষমতা রয়েছে, সে অনেক বিখ্যাত বইয়ের লেখক এসব কল্পনাও তার মধ্যে বিস্তার লাভ করে। তার বর্তমানের সাধারণ পরিচয়ের আড়ালে তার খুব অসাধারণ একটা পরিচয় আছে বলে সে বিশ্বাস করতে থাকে। এই মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা খুব রাগী আর একরোখা হয়। তারা খানিকটা রহস্যময়ও হয়ে থাকে।

মাল্টিপল পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার (Multiple personality disorder)

ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার বা মাল্টিপল পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার একটি বিরল মানসিক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির আচরণ বিভিন্নভাগে ভাগ হয়ে যায়। মানে একই ব্যক্তির আচরণে বিভিন্ন ধরণের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। “একই শরীরে বিভিন্ন মানুষের বাস”- এভাবেও ব্যাপারটাকে ব্যাখ্যা করা যায়। একব্যক্তির শরীরেই সেই আলাদা মানুষগুলো বয়স, লিঙ্গ, জাতীয়তা, মানসিক অবস্থা, মেজাজ-মর্জি, দুনিয়াকে দেখার দৃষ্টি প্রভৃতি ক্ষেত্রে সর্ম্পূর্ণ আলাদা হয়ে থাকে। শিশুকালে ভয়ানক শারীরিক ও মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণে নিজেকে রক্ষার তাগিদে শিশুদের মধ্যে এ রোগ বেড়ে উঠতে পারে। এ রোগের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি জানা যায় ১৯৭০সালে। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রে বিলি মিলিগান নামক একজন ব্যক্তিকে ধর্ষণের দায়ে আটক করা হলে দেখা যায় তার মধ্যে আলাদা আলাদা ২৪জন ব্যক্তিত্বের বাস।

“স্পিল্ট” নামক একটা হলিউডি সিনেমার প্রধান চরিত্র এ মানসিক রোগে আক্রান্ত। এছাড়াও এ রোগের স্বরুপ ভালোভাবে বুঝতে হলে কোরিয়ান একটি ধারাবাহিক আছে, ‘কিল মি হিল মি’, দেখতে পারেন ধারাবাহিকটি।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top