খুব সহজ অঙ্ক !
অবশেষে পাখির আর শেষ রক্ষা হলো না। দিনের বেলায়ও আকাশে চাঁদ খুঁজতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলো তার বউয়ের কছে। কিছুদিন ধরেই পাখি দিনের বেলায় বাড়ির ছাদে উঠে আকাশ পানে চেয়ে কি যেনো খুঁজে বেড়ায়। কথাটা পড়শির কাছ থেকে জানার পর পাখির বউ তক্কে তক্কে ছিলো, ঘটনা কি জানার জন্য। ঐদিন যখন ভর দুপরে পাখি আকাশের দিকে তাকিয়েছিলো তখন পিছন থেকে পাখির বউ জানতে চাইলো আকাশে পাখি কি দেখে ? কিছু না ভেবেই পাখি জবাব দিয়েছিলো, "চাঁদনী " ! আর এতেই কপাল পুড়লো পাখির...
পাখি পাগল হয়ে গ্যাছে কথাটা প্রচার হতে খুব বেশী সময় লাগলো না। বাড়ির আরো দুয়েকজন সদস্য সহ আশেপাশের অনেকেই দেখেছে পাখি দুপরে ছাদে উঠে আকাশে চাঁদ খোঁজে। আর এটা যে পাগল হয়ে যাবার অন্যতম লক্ষন সেটা খুব সহজে সবাই মেনে নিলো। ফলাফল সেই আগের মতোই। পাখিকে সবাই ধরে মেন্টাল হাসপাতালে ভর্তি করে দিলো। তবে একেবারে যারা বদ্ধ পাগল তাদের থেকে আলাদা আরো দুজন পাগলের সাথে অন্য একটা ওয়ার্ডে রাখা হলো পাখিকে।ডাক্তারের ভাষ্যমতে এই দুজন পাগল খুব দ্রুত উন্নতি করায় তাদেরকে কিছুদিনের মাঝেই ছেড়ে দেয়া হবে। আর পাখি যেহেতু এখনো বদ্ধ পাগল হয়ে যায়নি সেজন্য তাদের সাথে রাখাই নিরাপদ।
যা হউক, অল্প কিছুদিন পরেই পাখিদের তিনজনকে তাদের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য বিশেষ বোর্ড রুমে ডেকে নেয়া হলো। ডাক্তার তাদের পরীক্ষা করার জন্য একে একে জিজ্ঞেস করছেন...
ডাক্তারঃ আচ্ছা হাবলু, তুমি বলো তো, তিনের সাথে তিন গুন করলে কতো হয় ?
হাবলুঃ ৩৯৮ হয়, স্যার !
হাবলুর জবাব শুনে ডাক্তার বেশ হতাশ হয়ে দ্বিতীয় জনকে একই প্রশ্ন করলেন।
ডাক্তারঃ এবার গাবলু তুমি বলো তো তিনকে তিন দিয়ে গুন করলে কতো হয় ?
গাবলু বেশ তড়িৎ জবাব দিলো,
গাবলুঃ মঙ্গলবার হয়, স্যার !
এবার ডাক্তার বেশ হতাশ হবার পাশাপাশি বেশ বিরক্তও হলেন। হাবলু না হয় একটা সংখ্যা হলেও বলেছিলো। কিন্তু এই গাবলুটা যে সংখ্যাও বলেনি। ডাক্তার হতাশায় তার মাথা ডানে বামে নাড়তে নাড়তে পাখিকে জিজ্ঞেস করলেন,
ডাক্তারঃ আচ্ছা পাখি, এবার তুমি বলো, তিনকে তিনের সাথে গুন করলে কতো হয় ?
ডাক্তার প্রশ্ন করার সময়ই পাখি মিটি মিটি করে হাসছিলো। প্রশ্ন শেষ হতেই পাখি বললো,
পাখিঃ এটা তো খুব সহজ অঙ্ক স্যার ! তিনকে তিন দিয়ে গুন করলে নয় হয়, স্যার !
পাখির জবাব শুনে ডাক্তারের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। এতোক্ষন বাকি দুইজনকে প্রশ্ন করার পর যে হতাশা ডাক্তারকে ঘিরে ধরেছিলো সেটি কেটে গিয়ে হাসিতে মুখ ভরে উঠলো। হাসি মুখে ডাক্তার বললো,
ডাক্তারঃ ভেরী গুড ! এই তো তুমি সঠিকটা বলতে পেরেছো। এবার বলো তো এটা তুমি কি করে বের করলে ?
তখনো ডাক্তারের মুখে বিজয়ের হাসি লেগে রয়েছে...
পাখিঃ এটা খুব সহজেই আমি বের করে ফেলেছি। আমি শুধু ৩৯৮ থেকে মঙ্গলবারকে বিয়োগ করে নিয়েছি, স্যার !