What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কেউ কেউ জানি, কেউ কেউ জানি না (1 Viewer)

gmb96

Member
Joined
Aug 6, 2022
Threads
13
Messages
100
Credits
1,603
মোল্লা নাসিরউদ্দিন যে এলাকায় বাস করতেন সেখানকার লোকজন বেশ কিছুদিন ধরেই তাকে অনুরোধ জানাচ্ছিল যে, তাদের স্কুলে গিয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে কিছু জ্ঞানের কথা শোনাতে হবে। ওদের অনুরোধ ফেললে না পেরে হোজ্জা শেষমেষ গেল স্কুলে। তারপর উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দেশ্য করে হোজ্জা বললেন, “আমি আজ তোমাদের যা বলতে চাই, তা কি তোমরা জানো?”

খুব স্বাভাবিকভাবেই ছাত্ররা জবাব দিল, “না মোল্লা সাহেব, আমরা কেউই জানি না আপনি কী বলবেন।”

হোজ্জা তখন বললেন, “জানোই না যখন, তখন আর জেনে কী হবে?”

এই কথা বলে হোজ্জা গটগট করে হেঁটে চলে আসল।

পরের সপ্তাহে স্কুল থেকে আবার কয়েকজন এল হোজ্জাকে নিয়ে যেতে। হোজ্জা আবারও ওদের সামনে গিয়ে বললেন, “আমি আজ তোমাদের যা বলতে চাই, তা কি তোমরা জানো?”

এবার কিন্তু ছাত্ররা খুবই সাবধান। ওরা সবাই একসঙ্গে বলল, ‘জি মোল্লা সাহেব, আমরা সবাই জানি আপনি কী বলবেন।”

হোজ্জা তখন বললেন, “জানোই যখন, তখন আর আমার বলার দরকার কী?”

এই কথা বলে হোজ্জা আবার গটগট করে হেঁটে চলে আসল।

স্কুলের ছাত্ররা তো দমবার পাত্র না। ওরা করল কি, পরের সপ্তাহে আবার হোজ্জাকে ধরে নিয়ে গেল ওদের উদ্দেশে কিছু বলার জন্য। হোজ্জা এবারও ওদের সামনে গিয়ে বলল, “আমি আজ তোমাদের যা বলতে চাই, তা কি তোমরা জানো?”

ছাত্রদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘জি মোল্লা সাহেব, জানি।”

আর কেউ কেউ বলল, “না মোল্লা সাহেব জানি না।”

ভাবখানা এমন, এবার বাছাধন কোথায় যাবে? কিন্তু হোজ্জাও দমবার পাত্র না। তিনি বললেন, “তোমাদের মধ্যে যারা জানো তারা এক কাজ করো। কাজটি হলো- যারা জানে না, তাদের তা জানিয়ে দাও।” এই কথা বলে আবার হোজ্জা গটগট করে হেটে বাসায় চলে আসল।
 
মোল্লার বাবা একদিন মাছের কাবাব নিয়ে বাসায় এলো। মোল্লা তখন বাসায় ছিল না। মা খাবার দিতে দিতে বলল: 'মোল্লা কখন আসে না আসে তার ঠিক নেই, চলো আমরা খেয়ে ফেলি। ও থাকলে তো মাছ সহজে আমাদের গলা দিয়ে নীচে নামবে না।'

বলতে না বলতেই মোল্লা ঘরের দরোজায় টোকা দিল। মা বড় দুটি মাছের কাবাব খাটের নীচে লুকিয়ে রেখে ছোট্ট মাছটি দস্তরখানে রাখল। ব্যাপারটা মোল্লা দরোজার ফাঁক দিয়ে দেখে ফেলল। দরোজা খুলে খেতে বসল মোল্লা। তার বাবা তাকে জিজ্ঞেস করল: বাবা! হযরত ইউনূস (আ) এর কাহিনীটা জানো?

মোল্লা কাবাব করা ছোট মাছটির মুখ কানের কাছে নিয়ে বলল: ওকে জিজ্ঞেস করে নিই, তারপর বলছি। কিছুক্ষণ পর মাছটা প্লেটে রেখে বলল: এই মাছ বলছে, সে সময় ও নাকি খুব ছোট ছিল। এই ঘটনাটা খাটের নীচের বড় মাছ দুটিকে জিজ্ঞেস করতে বলেছে।
 
(হোজ্জার অঙ্ক কষা)

পাড়ার এক ছেলে মোল্লা নাসিরউদ্দিনের হোজ্জা কাছে অঙ্ক বুঝতে এসেছে। হোজ্জা আবার অঙ্কে একেবারে অজ্ঞ। তাই বলে ছেলেটির কাছে ছোটও হতে চাচ্ছিল না। নিজের দুর্বলতা গোপন করে তিনি বিজ্ঞের মতো বললেন, 'বল্‌, কোন্‌ অঙ্কটা বুঝতে পারছিস না?'

ছেলেটা বলল, 'একটা ঝুড়িতে ৫০ টা কমলালেবু ছিল। ১৫ জন ছাত্রকে সমান ভাগ করে দিতে হবে। ঝুড়ি খুলে দেখা গেল তার মধ্যে ১০টা কমলালেবু পচে গেছে। তাহলে কয়টা কমলালেবু কম বা বেশি হবে?'

একটু মাথা চুলকে হোজ্জা বললেন, 'অঙ্কটা কে দিয়েছে রে?'

ছেলে জবাব দিল, 'স্কুলের মাস্টারমশাই।'

হোজ্জা রেগে বললেন, 'তোর কেমন স্কুল রে! এমন বাজে অঙ্ক দিয়েছে? আর তোর মাস্টারমশাইয়েরও জ্ঞানবুদ্ধি একেবারেই নেই। আমাদের ছেলেবেলায় এ রকম অঙ্ক কখনো দিত না। আমাদের অঙ্ক থাকত আপেল নিয়ে। কমলালেবু তো পচবেই। আপেল হলে পচত না, আর অঙ্কটাও তাহলে সোজা হয়ে যেত। যেমন তোর পচা মাস্টার তেমনি তোর পচা অঙ্ক। এখন কেটে পড় দেখি, পচা কমলালেবুর বিশ্রী গন্ধ বেরোচ্ছে!'

ছেলেটা আর কী করে! অঙ্ক না করেই বাড়ি ফিরে গেল।
 
(হোজ্জার কান কামড়ানো)

মোল্লা নাসিরউদ্দিন হোজ্জা তখন কাজী। একদিন দু'জন লোক এল বিচার নিয়ে। একজনের অভিযোগ, আরেকজন তার কান কামড়ে দিয়েছে।

অভিযুক্ত বলল, না হুজুর! ও নিজেই নিজের কান কামড়েছে।

বাদি বলল, তা কী করে সম্ভব! কেউ কি নিজের কান কামড়াতে পারে?

মোল্লা দোটানায় পড়লেন। বললেন, 'আগামীকাল এসো। কাল রায় দেব।' এরপর মোল্লা বাড়ি ফিরে নিজের কান কামড়াতে চেষ্টা করলেন। লাফিয়ে নিজের কান মুখে আনার চেষ্টা করেতে লাগলেন। একসময় উল্টে পড়ে তার মাথা ফেটে গেল।

পরদিন রায় দিলেন, ও নিজেই নিজের কান কামড়েছে। নিজে শুধু কান কামড়ানো যায় না মাথাও ফাটানো যায়।
 
(কে অপয়া?)

একবার শিকারে বের হলেন রাজা। যাত্রা শুরু পর প্রথমেই পড়ে গেলেন নাসিরুদ্দীন হোজ্জার সামনে। রাজা ক্ষেপে গেলেন। পাইক-পেয়াদারের ডেকে বললেন, 'হোজ্জা একটা অপয়া। যাত্রাপথে ওকে দেখলাম, আজ নির্ঘাত আমার শিকার পণ্ড। ওকে চাবুক মেরে দূর করে দাও।'

রাজার হুকুম তামিল হলো। কিন্তু সেদিন রাজার শিকারও জমে উঠল বেশ। গুণে গুণে ছাচ্ছিশটা নাদুসনুদুস হরিণ শিকার করলেন তিনি। প্রাসাদে ফিরে রাজা অনুতপ্ত হয়ে ডেকে পাঠালেন হোজ্জাকে। হোজ্জা দরবারে আসতেই রাজা বললেন, 'কিছু মনে করো না, আমি তোমাকে ভুল বুঝেছিলাম। ভেবেছিলাম তুমি অপয়া, আমার শিকার জুটবে না। কিন্তু এখন দেখছি আমার ধারণা উল্টো।'

রাজার কথা শুনে মওকা পেয়ে হোজ্জাও এবার রাগ দেখাল। বললেন, 'আপনি আমাকে অপয়া ভেবেছিলেন। অথচ দেখুন, আমাকে দেখার পর আপনি ছাব্বিশটা হরিণ পেলেন, আর আপনাকে দেখে আমি খেলাম বিশ ঘা চাবুক। তাহলে অপয়া যে কে, সেটা বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই?'
 
হোজ্জার হিউমার সেরা ছিলো, পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ ভাই
 

Users who are viewing this thread

Back
Top