What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Keto Diet : Myth vs Reality (1 Viewer)

Joined
Aug 23, 2020
Threads
74
Messages
111
Credits
7,126
ফেসবুকে কিটো ডায়েটের ফলে রেনাল ফেইলিউর হয়ে ভারতীয় এক অভিনেত্রীর মারা যাওয়ার নিউজ ঘুরে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশেও ডা জাহাঙ্গীর কবির এর কিটো ডায়েট ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই ডায়েট এত জনপ্রিয় হওয়ার কারন হচ্ছে খুব অল্প সময়ে ওজন কমানো যায়। ডা জাহাঙ্গীর কবির নি:সন্দেহে অনেকের উপকার করছেন এবং এতে অনেকে সুফল পাচ্ছেন। কিন্তু এই ডায়েট কারা করবেন, কতদিন করবেন, কোন বয়সীরা করতে পারবে, কারা করতে পারবেন না ইত্যাদি অনেক বিষয়ই অনেকে জানে না। যার ফলে অনেকে অন্ধ অনুকরণ করে নিজের স্বাস্থ্যের জন্য বিপদ ডেকে আনছেন।

প্রথমেই একটা বাস্তব ঘটনা শেয়ার করি। আমার বান্ধবী হাইটের তুলনায় খানিকটা ওভারওয়েট ছিল। বিয়ের আগে লেহেঙ্গাতে নিজেকে সুন্দর দেখতে কে না চায়! কিন্তু এত অল্প সময়ে ওজন কমানোর জন্য সে কিটো ডায়েট বেছে নিল। ফলশ্রুতিতে অনেক ওজন কমে গেল। কয়েকমাস কিটো ডায়েট করার পর তার সাইড ইফেক্ট হিসেবে চুল পড়া, মাথা ব্যাথা, দুর্বল লাগা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, মেজাজ খিটখিটে হওয়া এধরনের সমস্যা দেখা দিল। স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাচ্ছে বিধায় সে কিটো ডায়েট বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ততদিনে Anorexia বা ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। অর্থাৎ সে চাইলেও আগের মত খেতে পারে না। চেহারার লাবন্যতা একদম নষ্ট হয়ে গেল। এর মধ্যেই সে তার হাজবেন্ডের সাথে দেশের বাইরে চলে যায়। কিছুদিন পর তার পিরিয়ডের ডেট মিস হয়, স্বাভাবিকভাবে সে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করায় কিন্তু টেস্টে নেগেটিভ আসে। ভাবলো কিছুদিন অপেক্ষা করলে পিরিয়ড হবে। আরো একমাস চলে যায় কিন্তু পিরিয়ড হয় না। বলা বাহুল্য সে একজন রেগুলার মেন্সট্রুয়েটিং পারসন, কোন হরমোন ইস্যুও কখনো ছিল না। পুরো ফিট যাকে বলে। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেলে, তাড়াতাড়ি তাকে হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর পরীক্ষা করে দেখা গেল রক্তশূন্যতা, ইলেক্ট্রোলাইটের সামান্য তারতম্য, ভিটামিন ডি এর পরিমান কম, হরমোনেও সমস্যা। ওখানের ফিজিশিয়ান তার হিস্টরি নিলে সে জানায় বছর খানেক আগে সে কিটো ডায়েট করে এবং ৬ মাস করে ছেড়ে দেয়, তবে এখন সে চাইলেও রেগুলার খাবার দাবার খেতে পারে না। ডাক্তার তাকে জিজ্ঞেস করে যে সে কি কোন পুষ্টিবিদ বা Nutritionist এর চার্ট ফলো করেছে কিনা। কারন কোন নিউট্রিশনিস্টের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট করলে এমন সমস্যা হওয়ার কথা না। যাই হোক পরে তাকে একজন নিউট্রিশনিস্টের কাছে রেফার করা হয়। সেখানের পরামর্শ, ডায়েট এবং বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে প্রায় ৬মাস পর সে কনসিভ করতে সক্ষম হয়। কিছুদিন আগেই তার ডেলিভারি হয়। বললে বিশ্বাস করা কষ্টকর হবে, কিন্তু প্র্যাগনেন্সিতে মোটা হয়ে গেলেও তার চেহারায় আগের লাবন্য, স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। ডাক্তার হওয়ার কারনে সবসময় সে আমার সাথে শেয়ার করতো, কি করবে না করবে এগুলা নিয়ে বলতো। ওর এই সাফারিং গুলা থেকে যারা ওকে দেখে কিটো ডায়েট শুরু করছিলো সবাইকে সে এখন নিরুৎসাহিত করে।

একজন মানুষ অনেক কারনে মোটা হতে পারে। শুধুমাত্র বেশি খাওয়া বা পরিশ্রম না করা মোটা হওয়ার কারন না। যেমন, হরমোনের সমস্যা, মেয়েদের পলিসিস্টিক ওভারী সিনড্রোম, ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন, জিনগত কারন, বিভিন্ন মেটাবলিক ডিজিজ, দীর্ঘদিন ধরে কিছু ওষুধ খাওয়া ইত্যাদি নানা কারনে মোটা হতে পারে। আমাদের শরীরটা একটা ইঞ্জিনের মত। ইঞ্জিন চলতে যেমন ফুয়েল বা তেল লাগে, আমাদের শরীরেরও লাগে। আর আমাদের ফুয়েল হল "গ্লুকোজ", যেটা মেইনলি আসে কার্বোহাইড্রেট থেকে। শরীর যখন কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা পায় না, তখন সে বিকল্প রাস্তা হিসাবে ফ্যাট ভেঙে শক্তি তৈরি করে। এই ফ্যাট ভেঙে শক্তি তৈরি করা কিন্তু একটা Alternative pathway. মানে আপনি কার্ব না খেয়ে আপনার শরীরকে বাধ্য করেন বিকল্প রাস্তায় চলতে। আমাদের শরীর তখন ফ্যাট ভেঙে কিটোন বডি তৈরি করে। ফ্যাট ভাঙার কারনে আমরা দ্রুত ওজন হারাই। কিন্তু এই কিটোন বডি যদি কোন কারনে স্বাভাবিক মাত্রার বেশি তৈরি হয়ে যায়, তখন তা মৃত্যুর কারন পর্যন্ত হতে পারে।

ধরেন, আপনার কাছে একটা কার আর একটা ট্রাক আছে। আপনি কি দুইটাকে সমান তেল দিয়ে সমান দূরত্ব চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন? পারবেন না! কারন সমান দূরত্ব যেতে একটা প্রাইভেট কারের যে পরিমান তেল লাগে ট্রাকের আরো বেশি লাগে। আমাদের শরীরটাও ঠিক তেমনি। একজন মানুষের দৈনিক কতটুকু শক্তি লাগবে, কতটুকু খেতে হবে সেটা আরেকজনের সাথে মিলবে না। তার জন্যই কিন্তু নিউট্রিশনিস্টরা প্রত্যেকের চাহিদা অনুযায়ী আলাদা চার্ট তৈরি করে দেন। আপনি হয় তো ভাববেন সিনেমার নায়ক নায়িকারা কত তাড়াতাড়ি ওজন কমিয়ে ফেলে! জানার জন্য বলি, সিনেমার নায়ক নায়িকারা কিন্তু ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত ডায়েট চার্ট ফলো করেন না। তাদের নিজেদের নিউট্রিশনিস্ট থাকে, পার্সোনাল ট্রেইনার থাকে যারা সারাক্ষন তার স্বাস্থ্য মনিটর করে থাকেন। এই কারনে তারা ওজন কমালেও তাদের চেহারার গ্লো হারায় না। তারা ভিটামিন, মিনারেলস এগুলার ঘাটতি হতে দেয় না।

ডা জাহাঙ্গীর কবির একজন মৃদুভাষী, বিনয়ী মানুষ। কিন্তু উনার কিছু অন্ধ ভক্ত প্রচন্ড উগ্র। এই ডায়েটের সমালোচনা করলে তারা ব্যক্তিগত আক্রমন পর্যন্ত শুরু করে দেয়। তাই অনেকে জেনেও চুপ থাকে। আর এই সুযোগ নিয়ে তার ফলোয়ারদের গ্রুপগুলোতে প্রচুর ভুলভাল তথ্য দেয়া হয়, মিসগাইডিং করা হয়। যার কারনে একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। কিটো ডায়েটের ফলে চুল পড়া, দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা, বমি ভাব, ক্ষুধা মন্দা, হরমোনগত সমস্যা এগুলা এখন কমন। অনেকে অসুস্থ হয়ে বন্ধ করে দিচ্ছে কিন্তু এর লং টার্ম ইফেক্ট থেকে যাচ্ছে। ওজন কমাতে হলে কার্বোহাইড্রেট কমান, চিনি বাদ দিয়ে বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার করেন, সফট ড্রিংকস, ভাজা পোড়া বাদ দেন, নিয়মিত হাঁটেন, ব্যায়াম করেন। তাতে কাজ না হলে প্রফেশনাল নিউট্রিশনিস্টের কাছ থেকে ডায়েট চার্ট নেন। শুকানোর চেয়েও সুস্থ থাকাটা বেশি জরুরি। আরেকটা কথা মনে রাখবেন,
There is nothing too good to be true.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top