What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কৌশিকি ।। কৌশিকি - এক সমভ্রান্ত প্রফেসর গৃহবধু ।। A Well-Known Professor Housewife (1 Viewer)

Black Knight

Not Writer or Creator, Only Collector
Staff member
Supporter
Joined
Mar 6, 2018
Threads
265
Messages
25,763
Credits
560,024
Purse
Birthday Cake
Billed Cap
Rocket
Pizza
Mosque
কৌশিকি
লেখক- Nirjonsakhor


সকালে চা খেতে খেতে খবরের কাগজটা দেখছিল কৌশিকি।মানদা'র ডাকে হুশ ফিরলো।
"বৌদি খাবার বেড়ে দিয়েছি।চলে এসো।"
কৌশিকি ঘড়ির দিকে তাকিয়েই বুঝলো ন' টা বাজে।৯:৩৫ তাকে ৩৬/B বাস ধরতে হবে।যাওয়ার সময় ঋতমকে স্কুল বাসে তুলে দিতে হবে।
কৌশিকি সেনগুপ্ত।ইতিহাসের অধ্যাপিকা।সুদীপ্তের সাথে বিয়েটা হয়েছিল মাত্র এক বছরের পরিচয়ে।কৌশিকি বরাবরের মেধাবী ছাত্রী ছিল।বিশ্বভারতী থেকে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করে সবে তখন কলকাতায় অধ্যাপনা শুরু করেছে।সুদীপ্ত তখন কেন্দ্র সরকারের কোল বিভাগে চাকরি পেয়েছে।আর্ট গ্যালারিতে আলাপ হয়েছিল সুদীপ্তের সাথে কৌশিকির তারপর আসতে আসতে সম্পর্কটা গড়ে ওঠে দু'জনের।সুদীপ্তের মা তখনও বেঁচে।কৌশিকির সাথে অনুষ্ঠানেই বিয়ে হয়।ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কৌশিকি আধুনিকা হলে উগ্র মডেলার দের মত নয়।কৌশিকি শাঁখা-সিঁদুর না পরাতে সুদীপ্ত বা তার শাশুড়ির কোনো আপত্তি ছিল না।তবে কৌশিকি শাড়ি পরতেই ভালো বাসে।বাড়ীতে গাউন বা নাইটি পরলেও বাইরে সবসময়ই শাড়ি পরে।ঋতম জন্মাবার দুই বছর পর কৌশিকির শাশুড়ি গত হন।বলতে বলতে কৌশিকি ৩৫ এ পা দিয়েছে।রূপের ছটা এখনও কমেনি।গায়ের রং এমনিতেই খুব ফর্সা।তার ওপরে স্লিম চেহারা হলেও মডেলদের মত রুগ্ণ নয়।যেখানে যেমন প্রয়োজন তেমনই।মুখের মধ্যে একটা বাঙালি মিষ্টতা রয়েছে।যেকোনো মানুষ যে কৌশিকির রূপে মূগ্ধ হবে তা নিশ্চিত।সুদীপ্তের এক ছবি আঁকিয়ে বন্ধুতো কৌশিকির ছবি আঁকবার জন্য একদা প্রায়ই বলতো।সেই সাথে কৌশিকির ব্যক্তিত্ব কলেজের ছাত্রী থেকে অধ্যাপকরাও সমীহ করে।এমনিতে কৌশিকি সামাজিক হলেও নির্জনতা পছন্দ করে।সুদীপ্ত সে জন্যই বেলঘরিয়ার এক হাইওয়ে ধারে বিস্তীর্ন মাঠের মাঝে বড় জমি কিনে বাড়ী করেছে।কৌশিকি মানদা না থাকলে নিজেই সব কাজ সামলায়।ঋতমটাও যত বড় হচ্ছে দুস্টুমি বাড়ছে।কৌশিকি নিজের কলেজ, বাড়ী,ঋতমকে সামলানো সবই একসাথে করে।
কৌশিকি শাড়ি পরছিল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে।মানদার চোখ পড়ছিল কৌশিকির দিকে।সত্যিই বৌদি কি সুন্দরী।
মানদা কৌশিকিকে দেখে মুগ্ধ হয়।এ বাড়িতে সে ঋতমের জন্মের সময় থেকে কাজ করছে।কৌশিকির কলেজে চারদিন ক্লাস থাকে।বাকি দিন গুলো তাকে বাড়ীতে একাই কাটাতে হয়।অবশ্য একা থাকলে বই তার সঙ্গী আর মানদা যতক্ষন থাকে তার সাথে কথা বলে কেটে যায়।কৌশিকি ঋতমকে বাসে তুলে নিজে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল।
এই জায়গাটা বাসস্টপ নয়।হাইরোডের ধারে কৌশিকি হাত দেখালেই বাস দাঁড়িয়ে যায়।প্রতিদিনের যাত্রী বলে বাস এখানে দাঁড়ায়।কৌশিকির মনে হল বাস বোধ হয় আজ দেরি করছে।
গরমের দিন।তার ওপর সিল্কের শাড়ি পরলে ঘামে শরীর ভিজে যায়।কৌশিকি একটা পুরোনো পরিত্যাক্ত দোকানঘরের ছায়া তলে দাঁড়িয়েছিল।হঠাৎ কৌশিকি দেখলো সামান্য দূরে যেখান থেকে ফ্লাইওভার শুরু হয়েছে তার তলায় একটা পাগল বসে বিড়ি টানছে।লোকটাকে আগে কখনো দেখেনি কৌশিকি।লোকটার পরনে ঝোলা একটা পুরোনো ছেঁড়া জামা।জামাটা এতোটাই ময়লা তার রং চেনা মুস্কিল।গাল ভরতি দাড়ি।তার সাথে কুৎসিত দর্শন।তবে লোকটা ভিখারি বা পাগল হলে কি হবে।চেহারা দেখে মনে হয় খেতে পায়।লম্বায় প্রায় ৬'ফুট।একসময় মনে হয় ভালো চেহারা ছিল।বয়স বোঝা মুস্কিল।ঠিক সেসময়ই কৌশিকি দেখলো বাস আসছে।হাত দেখাতেই বাস দাঁড়িয়ে পড়লো।বাসে উঠতেই জানলার পাশে একটা সিট পেয়ে বসতে গিয়ে কৌশিকির নজর আবার একবার জানলার বাইরে ওই লোকটির দিকে পড়তেই কৌশিকি দেখলো লোকটি একটা লাঠি ধরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।লোকটির একটি পা' নেই।হাঁটুর কাছ থেকে পা'টা কাটা।

থার্ড পিরিয়ডে ক্লাস থেকে ফিরেই স্টাফরুমে এসে বিশ্রাম নেয় কৌশিকি।পাশের টেবিলে চারুশীলা দি বসে টিফিন করছিলেন।চারুদি কলেজের সবচেয়ে বয়স্ক অধ্যাপিকা।একমাস পরই রিটায়ার্ড নিচ্ছেন।কলিগদের সাথে কৌশিকি ভালো ব্যবহার রাখলেও চারুদিই কৌশিকির কাছের।অবসরের পর চারুদি ছেলের কাছে ইউএসএ চলে যাবেন।চারুদির ছেলে নিউজার্সিতে থাকে।কৌশিকিকে দেখেই চারুদি বলল,'তোর ফোনটা বেশ বাজছিল,সুদীপ্ত ফোন করেছিল।আমি অবশ্য ধরিনি।'
কৌশিকি ক্লাসে গেলে ফোনটা রেখে যায়।ফোনের দিকে তাকাতেই নজরে এলো চারটে মিসড কল।সুদীপ্ত ফোন করেছিল।
কৌশিকি ফোন ঘোরাতেই সুদীপ্ত বলল;
'কোথায় ছিলে?ক্লাসে?'
'হ্যা, খেয়েছো?,ডিউটি যাবার আগে একবার ফোন করো।কাল মানদা আসবে না।ঋতমের আবার সকাল স্কুল।কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না!'
'কাল দিনটা না হয় ছুটি নিয়ে নাও।'
'তাই করতে হবে,'
'জানো রাঁচিতে খুব বৃস্টি হচ্ছে।'
তবু ভালো।এখানে গরমে আগুন ঝরছে।তোমার আবার ঠান্ডার ধাত আছে সাবধানে থেকো।
কৌশিকির সাথে সুদীপ্তর ফোনে কথা খুব অল্প সময় হয়।ফোনটা কাটবার পর চারুদি নীচুস্বরে বলল,'শুনেছিস তমালিকার আর মৃন্ময়ের ব্যাপারটা?'
চারুদি গসিপ ভালোবাসে,কৌশিকি ভালো করেই জানে।কৌশিকির অবশ্য গসিপ একেবারেই না-পসন্দ।তমালিকা কৌশিকির কলিগ,ইংরেজী বিভাগের।ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের আর এক অধ্যাপক মৃণ্ময়ের স্ত্রী।সম্প্রতি তাদের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে একথা বহুবার কৌশিকি চারুদির মুখ থেকে শুনেছে।তমালিকার এক্সট্রাম্যারিটাল এফেয়ার আছে।
চারুশীলা ফুসফুসিয়ে বলল,'ওদের সামনেই ডিভোর্স।'
কৌশিকি মৃন্ময় দা'র কথা ভাবছিল।বেশ হাঁসিখুশি মানুষ।তমালিকাও তাই।ওদের জীবনে এরকম নেমে আসাটা সত্যিই অকল্পনীয়।

****
 
বাড়ী ফিরবার সময় কৌশিকি দেখলো আকাশ মেঘলা হয়ে রয়েছে।সঙ্গে অবশ্য ছাতা রয়েছে।বাসে উঠেই কৌশিকি দেখলো লেডিস সিটে একটা ছেলে বসে আছে।কৌশিক সেদিকে যেতেই ছেলেটা উঠে গেল।কৌশিকি ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করে সুদীপ্তকে ফোন করলো।ওপাশ থেকে সুদীপ্ত ব্যস্ত গলায় বলল 'হ্যাঁ আমি অফিস পৌঁছে গেছি।তুমি কোথায়?'
সুদীপ্তর আজ নাইট শিফট।নাইট শিফট থাকলে বিকেলেই তাকে অফিস পাড়ি দিতে হয়।
কৌশিকি বলল,'ঠিক আছে।আমি বাড়ী ফিরছি।'
বাস থেকে নেমেই কৌশিকি বুঝতে পারলো,বৃষ্টি দু-এক ফোঁটা পড়তে শুরু করেছে।দ্রুত হাঁটতে শুরু করলো কৌশিকি।কৌশিকিদের বাড়ীর কাছাকাছি খুব একটা বাড়ী নেই।ফ্লাই ওভার থেকে ফাঁকা কচুরিপানা ভর্তি মাঠ রাস্তা টা একটু ঘুরে দুএকটি নতুন বাড়ী ও একটি বড় কনস্ট্রাকশন বিল্ডিংয়ের পাশ দিয়ে গেছে।ছাতাটা খুলে কৌশিকি এগিয়ে যেতেই রাস্তা থেকে চোখ পড়লো ফ্লাইওভারের তলায়।সকালের দেখা সেই পাগলাটে ভিখারিটা বসে রয়েছে আর একটি বাচ্চা মেয়ে খেলে বেড়াচ্ছে।মেয়েটির বয়স চার-পাঁচ বছর হবে।একটা ময়লা ফ্রক চুলগুলো ধূসর হয়ে গেছে।আবর্জনার ধারে কাছেই একমনে খেলছে।

রাতে খাবার পর বই পড়তে পড়তে ঘুমোন অভ্যেস কৌশিকির।আজ বৃষ্টিটা সারাদিন ধরেই হচ্ছে।একটু ঠান্ডা ঠান্ডা করছে।কৌশিকি ঋতমের গায়ে বেডকভারটা টেনে বাকিটা নিজের গায়ে টেনে নিল।সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের লেখা 'স্বর্নচম্পার উপাখ্যান' বইটা পড়ছিল সে।ঘুম আসতেই বেড সুইচটা অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।তমালিকা ও মৃন্ময়দার কথা বারবার মনে হতে থাকলো।কোন এক মাড়োয়ারি ছেলের সাথে তমালিকার সম্পর্ক রয়েছে চারুদির কাছে জেনে ছিল।সত্যিই হয়তো হাসিখুশির আড়ালে তাদের সম্পর্কে জটিলতা ছিল।কৌশিকি ফেমিনিস্ট কোনো ধারণার বশবর্তী না হলেও পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যেরও সমর্থক নয়।তাই শুধু মৃণ্ময়ের প্রতি নয় তমালিকারও হয়তো মৃন্ময়দার সাথে সম্পর্কে কোনো সুখ ছিল না এই ভারসাম্য বোধ কাজ করছিল।ভাবতে ভাবতে চোখ জুড়িয়ে গেল।পাশে ঋতম ঘুমের মধ্যেই হাত পা ছুড়ে পাশ ফিরল।
*****
 
মানদা না আসায় কৌশিকি আজ ছুটি নিয়েছে।ঋতমের সকাল স্কুল।দুপুরে সারাদিন দস্যিপনা করে বেড়াচ্ছে।সকাল ১১টা নাগাদ কৌশিকি স্নান সেরে একটা হালকা সবুজ সুতির শাড়ি পরে নেয়।বাড়ীর সামনে বাগানে বেশ কিছু গাছ ঝোপের মত হয়ে রয়েছে সেখানেই বল নিয়ে দাপাদাপি করছে ঋতম।কৌশিকি বই হাতে চেয়ার নিয়ে বসলো বারান্দায়।
ঝোপের মধ্য থেকে ঋতমের গলা পেল কৌশিকি।কার সাথে কথা বলছে ও।কৌশিকি গ্রিল খুলে বাইরে বেরিয়ে দেখলো,পেছনের অব্যবহৃত আগাছা ভরা গেটে দাঁড়িয়ে কাছে একটি বাচ্চা মেয়ে।মেয়েটিকে চিনতে ভুল হল না কৌশিকির।কালকের সেই ফ্লাইওভারের তলায় খেলতে দেখেছিল এই মেয়েটাকে।কৌশিকি এগিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলো 'কি নাম তোর?'
মেয়েটি যেন লজ্জা পেল।কৌশিকি বলল ভেতরে আয়।বলতেই মেয়েটি গেটটা খোলবার চেষ্টা করলো।এই গেট ব্যবহার হয়না বলে তালা ঝোলানো থাকে।কৌশিকি মেয়েটিকে সামনের গেট দিয়ে আসতে বললো।
মেয়েটি আসতেই কৌশিকি দেখলো রোগা লিকলিকে চেহারার মেয়েটি।কালকের সেই ময়লা জামাটাই পরা।ঋতম বলে উঠলো,
'মা দেখো ওর জামা ছেঁড়া'
কৌশিকি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলল 'কি নাম?'
মেয়েটি বললো, 'মুস্কান'
কৌশিকি মেয়েটির দিকে হেসে বললো 'কোথায় থাকিস?'
'ব্রিজ কা নীচ মে'
কৌশিকি বুঝলো মুস্কান বাংলা বুঝলেও বলতে পারে না।
ঋতম আর মুস্কানকে খেলা করতে দিয়ে নিজে বাড়ীর মধ্যে চলে গেল।
কৌশিকি ফ্রিজ থেকে দুটো আপেল এনে একটা মুস্কানকে ও একটা ঋতমকে দিল।
বই পড়তে পড়তে ১২:৩০ বেজে গেছে।কৌশিকি বইটা রেখে উঠতেই দেখলো মুস্কান আর ঋতম এখনও খেলা করছে।ওদের দুজনের ভাব জমেছে।ঋতমের বয়স ছয় আর মুস্কান আর একটু ছোট হবে।ঋতম খেলার সঙ্গী পায়না।তাই মুস্কানকে পেয়ে তার আনন্দ ধরে না।কৌশিকি ঋতমকে খাবার জন্য ডাকতেই মুস্কানের মন শুকিয়ে গেল।ঋতমও খেলার সঙ্গী হারিয়ে ব্যথিত হয়ে পড়েছে।কৌশিকি মেয়েটিকে বলল দুপুরে খাবি কখন?
মেয়েটি বললো, 'আব্বা আনে কা বাদ'
তোর মা কোথায়?
মুস্কান কেমন যেন একটা মুখে বললো,'নেহি হ্যায়।'
কৌশিকি বুঝতে পারলো কালকের যে লোকটাকে পাগল ভাবছিল সে আসলে মুস্কানের আব্বা।কৌশিকি জিজ্ঞেস করলো 'তোর আব্বা কি করে?'
মেয়েটি ভ্রুক্ষেপহীন ভাবে বললো 'ভিখ মাঙনে গ্যায়া হ্যায়।'
কৌশিকির মেয়েটির উপর দয়া হলো বললো 'আমার সাথে আয়'
মুস্কান কৌশিকির পিছু পিছু আসবার পর কৌশিকি বারান্দায় ওকে বসতে বলে ভেতরে চলে গেল।নীচতলায় বড় বারান্দায় মেয়েটি বসে আছে ঋতম মায়ের সাথে ছাদে গিয়ে খাওয়ার টেবিলে বসে পড়লো।কৌশিকি খাবার বেড়ে ঋতমকে দেওয়ার পর নীচে খাবারের থালা মুস্কানকে এনে দিল।মুস্কান লাজুক ও লোভাতুর অবস্থায় খাবারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।কোনটা আগে খাবে ঠিক করতে পারছে না।তার শিশুসরল অভিবাপ্তিতে কৌশিকি মুগ্ধ হয়ে দেখছিল।বড় দয়া হচ্ছিল মেয়েটির প্রতি।
ঋতমের ডাকে সম্বিৎ পেয়ে কৌশিকি সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেল।যখন নীচে এলো দেখলো মেয়েটি নেই।খাবারের থালাটাও নিয়ে চলে গেছে।
 
খুরশেদ ফ্লাই ওভারের তলায় পানাভর্তি খালের জলে স্নান সেরে এসে ছেঁড়া লুঙ্গিটা পরে নিল।পুঁটলি থেকে এক এক করে পয়সা গুন ছিল।একটা পুরোনো একটাকার অচল পয়সা কেউ দিয়েছে।মুখ দিয়ে 'বেহেনচোদ' অশ্লীল শব্দ বেরিয়ে এলো।প্রায় এক বছর ধরে ভিক্ষা করছে সে।কত লোকের নির্দয় ব্যবহার দেখেছে।মাঝে মাঝে তার মনে হয় কষিয়ে লাথি চালিয়ে দিতে।তার বাঁ পা'টা যখন ছিল তখন তাকে এরকম ভিক্ষা করতে হত না।বিহার থেকে যখন কলকাতায় এসেছিল বয়স কত হবে তার।এই ২৩-২৪।তার তাগড়াই চেহারা দেখে রাজেশ সাউ তাকে কুলির কাজটা পাইয়ে দিয়েছিল।শিয়ালদা স্টেশনে কুলির কাজ করবার সময় তাকে সব কুলিরা সমীহ করত।পেশীবহুল ৬'ফুট লম্বা, তামাটে রঙের গায়ে কত জোর ছিল তার।বিহার গিয়ে বিয়ে করেছিল জোবেদাকে।জোবেদার তখন বয়স ষোলো।কুলিগিরি করে তার আর জোবেদা সংসার চলে যেত।রেললাইনের ধারে ঝুপড়িতে তার সংসার ছিল।প্রায় দশ বছর পরেও তাদের কোনো বাচ্চা না হওয়ায় লোকে জোবেদাকে 'বাঁজ' বলত।তাতে কোনো দুঃখ ছিল না খুরশেদের।খুরশেদের শরীরী চাহিদা বেশি ছিল।জোবেদা কখন তাকে ফেরায়নি।সবসময় তৃপ্ত রাখতো তাকে।এরকমই এক গরমে কাজ সেরে ফিরছিল খুরশেদ রেলবস্তির ধারে জটলা দেখে খুরশেদ এগিয়ে গেল।দেখলো রাস্তার ধারে জোবেদার দেহ পড়ে আছে।বস্তির লোকেরা ডাক্তার নিয়ে আসতে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলো।জোবেদার নাকি কঠিন রোগ ছিল,একথা বিশ্বাস করতে পারেনি খুরশেদ।
খুরশেদের জীবন বদলে যেতে শুরু করলো সেদিন থেকে।বিড়ি ছাড়া যে খুরশেদের আর কোনো নেশা ছিল না।সেও শুড়িখানা যাওয়া শুরু করলো।রাতে টলতে টলতে বাড়ী ফিরত সে।তার বিরাট চেহারার জন্য সকলে তাকে ভয় পেত।শুড়িখানায় পেত মঞ্জু আসমা,মংলা,তপতি এদের।এদের মধ্যে মঞ্জুর কাছেই খুরশেদ বেশি যেত।খুরশেদের পাশবিক কাম তৃপ্ত করতে পারতো মঞ্জু।সারাদিনের রোজগার ঢেলে দিত মঞ্জুর কাছে।মদ গিলে বাড়ী ফিরবার সময়ই দেখা হত ফয়জলের সাথে।ফয়জলই একদিন খুরশেদকে আবার বিয়ের প্রস্তাব দেয়।ফয়জলকে ছোট ভাইর মত দেখেছে খুরশেদ।তার প্রস্তাব ফেলতে পারেনি।আনোয়ারা কে যেদিন দেখেছিল সে,সেদিন অবাক হয়ে গেছিল খুরশেদ।রোগাটে শ্যামলা চেহারার আনোয়ারা ফয়জলের বিহারের গাঁ থেকে এসেছে।খুরশেদ ফয়জলকে বলেছিল, 'ইস উমর কি লেড়কি অর ম্যায়!'
খুরশেদের বয়স তখন চল্লিশ আর আনোয়ারা আঠারো।নিকার প্রথম রাতে আনোয়ারা ঘোমটা টেনে বসেছিল।খুরশেদ কোনো বাক্যালাপ ছাড়াই আসতে আসতে আনোয়ারার গা থেকে এক একটা পোশাক খুলে নিয়েছিল।বুকের কাছে চোখ পড়তেই দেখলো পেয়ারার মত দুটো স্তন।ধাতব হাতে মুচড়ে ধরেছিল খুরশেদ।এক ঝটকায় নীচের অংশ উন্মুক্ত করে যোনিতে হাত ঘষতে থাকলো।শ্যামলা ময়লাটে গায়ের রং আনোয়ারার বুকের কাছটা তুলনামূলক উজ্জ্বল ছিল।আনোয়ারা টের পাচ্ছিল একটা নরপশু তার উপর চেপে রয়েছে।মুখ বুজে উপভোগ করবার চেষ্টা করছিল সে।বেশি সময় নেইনি খুরশেদ নিজের লৌহদণ্ডের মত দীর্ঘ কালো লিঙ্গটা গেঁথে দিল যোনিতে।সতীচ্ছদা ভেদ করে উথিত হল লিঙ্গ খানা।প্রথমদিনের যন্ত্রনা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি তার।ধীরে ধীরে শিখে গেছিল কি করে এই পুরুষকে সুখী করতে হয়।নতুন বউ পেয়ে খুরশেদ বাড়ী ফিরত তাড়াতাড়ি।এসেই ঝাঁপিয়ে পড়তো আনোয়ারার উপর।খুরশেদের ছিল একধিক বিকৃত কামনা।আনোয়ারা বাধা দিত না।চলত উদোম যৌনক্রিয়া।ঝুপড়ির মধ্যে বয়ে যেত কামানলের তীব্র ঝড়।আনোয়ারা গর্ভবতী হবার পর খুরশেদ যে আনন্দ পেয়েছিল তা সে জীবনে পায়নি।অষ্টাদশী আনোয়ারার পেটটা ফুলে উঠছিল ধীরে ধীরে।গর্ভাবস্থায়ও আনোয়ারা খুরশেদের যৌনখিদেকে অতৃপ্ত রাখেনি।মুন্নির জন্ম হবার পর খুরশেদ তার ভালো নাম রেখেছিল মুস্কান।আসতে আসতে মুস্কান বড় হচ্ছিল খুরশেদের জীবনে সুখের আলোক বইছিল ধীরে ধীরে।খুরশেদ মনে করত জোবেদাই তাকে এসব দিচ্ছে।যা সে নিজে দিতে পারেনি।মুস্কান যখন হাঁটতে শিখেছে,আনোয়ারা আবার গর্ভবতী হল।খুরশেদ চেয়েছিল তাদের একাধিক বাচ্চা।বস্তিতে পুরুষ মহলে একধিক বাচ্চা থাকা যেন গৌরবের।তাতে পুরুষের যৌন ক্ষমতার প্রমান হয়।আনোয়ারা প্রথমটা রাজি ছিল না।তবে আনোয়ারা জানতো খুরশেদের রাগের কথা।মুখের অশ্লীল শব্দে ঝড় তুলতো খুরশেদ।খুরশেদ সেদিন কাজে গেছিল,পেটের ব্যথা ওঠায় ফয়জল ও তার বউ সালমা অন্তঃসত্বা আনোয়ারা কে হাঁসপাতালে ভর্তি করলো।খুরশেদ খবর পেয়ে হাঁসপাতালের বাইরে পায়চারি করছিল।
কিছুক্ষণ পর আনোয়ারা বিবি নাম টা শুনে,খুরশেদ এগিয়ে গেল।
'হাঁ সাব বলিয়ে,ম্যায় হু উসকা পতি'
ডাক্তার যা জানালো,তা শুনে খুরশেদের পড়ে যাবার উপক্রম।আনোয়ারা এবং বাচ্চা দুজনেই মৃত। ফয়জল ধরে ফেলল খুরশেদকে। ভারী দীর্ঘ চেহারার খুরশেদকে সামলাতে পারছিল না ফয়জল।বলল 'খুরশেদ ভাই শান্ ত হুইয়ে'
খুরশেদ মুন্নিকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে গেল সেখান থেকে।

ফয়জলের বিবি সালমাই মুন্নির দেখাশোনা করত।খুরশেদ কাজ থেকে ফিরে মেয়েকে কোলে তুলে নিত।এভাবেই চলছিল খুরশেদের জীবন।খুরশেদ তার জীবনের কামলালসা কে বর্জন করেছিল মুন্নির মুখের দিকে তাকিয়ে।খুরশেদ নাম সহি করতে জানে ও অক্ষর চেনে তাও হিন্দিতে।ফয়জলের বউ সালমা ফোর পর্যন্ত পড়েছে বাংলায়।ছোট্ট মুন্নিকে অ আ শেখাতে লাগলো।
বৃষ্টির দিনে রেল লাইনের পাশে জল জমে থাকতো।শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছিল খুরশেদের,কাজে যেতে মন ছিল না সেদিন।মুন্নি ফয়জলের বাড়ীতে তার মেয়ের সাথে খেলছে।বৃষ্টিটা কমতেই খুরশেদ বিড়ি ধরিয়ে রেল লাইন পার হচ্ছিল।তারপর..আর মনে নেই তার যখন জ্ঞান ফিরলো বাঁ পা টা নেই।ব্যান্ডেজ বাঁধা।কিছু দিন ফয়জল ও তার বিবি খুরশেদের দেখাশোনা করত।ফয়জলও খুরশেদের মত কুলি।ধীরে ধীরে খুরশেদ সুস্থ হয়ে উঠতে ফয়জল তার গরীবের সংসারে আর দায়ভার নিতে রাজি হয়নি।ঝুপড়ি ত্যাগ করে মুন্নিকে নিয়ে ভিক্ষে করতে বেরিয়ে এসেছিল খুরশেদ।সারাদিনে এইভাবেই চলে খুরশেদের। রেলকতৃপক্ষ তার ঝুপড়িটাও ভেঙে দিয়েছে।বলতে বলতে খুরশেদের বয়সও প্রায় ৪৫-৪৬।জীবনের অনেক ঝড় দেখেছে সে।তবু দমেনি সে।দীর্ঘ চেহারার পাথরের মত খুরশেদ চলে এসেছে বস্তি থেকে দূরে। এই নির্জন ফ্লাইওভারের তলায় পলিথিন ও কাগজের পেটি দিয়ে সে থাকবার জায়গা বানিয়েছে।তার একমাত্র সম্বল এখন মুন্নি।খুরশেদ এখনও স্বপ্ন দেখে মুন্নি একদিন বড় হবে,লেখাপড়া করবে।বড়লোকদের দেখলে রাগ-হিংসা হয় খুরশেদের।
'আব্বা! আব্বা!' ডাকে সম্বিৎ ফিরে পেল খুরশেদ।দেখলো মুন্নির হাতে থালা ভর্তি কিছু একটা...

মুন্নির হাতে থালা দেখে,খুরশেদ বিড়ির ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলল
'থালি মে ক্যায়া হ্যায় মুন্নি?কাঁহা সে লে আয়া?'
মুন্নির চোখে মুখে আনন্দে ছাপ,'আব্বা ও জো ঘর হ্যায় না,উহিসে দিয়া হ্যায় এক অওরত'
খুরশেদ দূর থেকে বাড়িটার দিকে তাকিয়ে ধমক দিয়ে বলল,'তু ইতনা দূর কিউ গ্যায়াথা,তুঝে ক্যাহি নেহি জানেকো বোলাথা না না?'
মুন্নি ভয় পেয়ে সিঁটিয়ে যেতে খুরশেদ হাঁসি মুখে এগিয়ে এলো।
'চল বিটিয়া ক্যায়া লায়া হ্যায় দেখু তো'
খাবার দেখে লোভ সংবরন না করতে পারলেও খুরশেদ বুঝতে পারলো একটি বাচ্চার জন্য দেওয়া খাবারে তার আর হবে না।
সে মুন্নিকে খেয়ে নিতে বলতে মুন্নি চেঁটেপুটে খেতে থাকলো।
খুরশেদ দূরে একটা সস্তার হোটেল আছে সেদিকে রওনা দিল,সামান্য পয়সা দিলে তারা খাবার দেয় ভালোই।খুচরো কয়েনগুলো নিয়ে ভাঙানোর বিনিময় বাপ-বেটিতে পেট ভরে যায় দু-বেলা।
*******
 
[HIDE]সন্ধ্যে হয়ে আসতে দেখে কৌশিকি ছাদে মেলা কাপড় গুলো তুলতে উঠে দেখছিল মুক্ত আকাশের নীচে হাইওয়ে পর্যন্ত সবুজ পানা ক্ষেতের মত হয়ে আছে।ছেলেবেলায় কৌশিকির মামারবাড়ীতে পুজোর সময় গেলে এরকমই ধানক্ষেত দেখতে পেত।এই কচুরিপানার জমিও যেন তার স্মৃতি রোমন্থন করে তুলছে।বৃহত্তর কলকাতা শহরে এরকম নির্জনতা বেশ কম জায়গায়।আকাশ উড়ো মেঘ একপাশে কালো হয়ে রয়েছে।মেইনগেটের শব্দ পেয়ে কৌশিকি দেখলো গেটের ওপাশে দাঁড়িয়ে মুস্কান।কৌশিকি শাড়ীগুলো তুলে নীচে নেমে এসে মুস্কানকে দেখে বলল,'কোথায় চলে গেলি তখন?'
মুস্কান বলল,'আব্বা কে পাস,একসাথ খানে কে লিয়ে'
কৌশিকি অবাক হয়ে গেল ঐটুকু মেয়ের অমন আচরণে।গেট খুলে ভেতরে ডাকলো তাকে।কি যেন মনে হল কৌশিকির,মুস্কানকে নিয়ে গিয়ে মিষ্টি ও ফল খেতে দিল এত বড় ঘর মুস্কান প্রথমবার হাঁ করে দেখছিল।ঘুম থেকে উঠে ঋতম মুস্কানকে দেখতে পেয়ে ভীষন আনন্দিত।দুজনে খেলতে শুরু করে দিতে,কৌশিকি বলল 'এখন নয় মুস্কান তোর আব্বা খুঁজবে তোকে তুই চলে যা।কাল দুপুরে আসিস'
পরদিন কৌশিকির কলেজ ছিল না।কলেজ না থাকলেও কৌশিকির সকালে ওঠা অভ্যেস।এই অভ্যেসটা পুরোনো।সকালে রবীন্দ্র সংগীত গাওয়া তার অভ্যেস ছিল।এখন আর সেসব চর্চা হয় না।মাঝখানে ক্লাসিক্যাল শিখেছিল তাও আর এখন বন্ধ্।সুদীপ্ত অনেকবারই বলেছিল নতুন করে শুরু করতে। আর হয়ে ওঠেনি।
দুপুরে মুস্কান আর ঋতমের খেলাধুলায় ঘরটা যেন একটা প্রাণ পাচ্ছিল।নির্জনতা প্রিয় কৌশিকির কাছে বাচ্চা দুটির খেলাধুলায় বাড়ীময় অস্থিরতা বেশ ভালোই লাগছিল।
মানদা মুস্কানকে দেখে একটু বিরক্ত হয়েই বলল,'বৌদি অমন উটকো কাউকে ঘরে ঢুকতে দাওনি গো'
'কেন তোর কি ক্ষতে করছে ও'কৌশিকি হেসেই বলল।
পরের মাস থেকে মানদা আর আসবে না।ওর বর টোটন ব্যারাকপুরে কারখানায় কাজ করে।ওদের বাড়ী বর্ধমানে,ওখানে চলে যাবে ওরা।তাই মানদা একটু বেশিই নজর দিচ্ছিল,এ সংসারে পুরোন কাজের লোক সে।ঋতমের জন্ম দেখেছে।কৌশিকিও জানে মানদা চলে গেলে তার বড় কষ্টই হবে।কৌশিকি রান্না বান্না সব কিছুই নিজে করতে পারে,তবে কৌশিকি কলেজ চলে গেলে ঋতমের দেখাশোনা করার জন্য একজন বিশ্বস্ত লোক রাখা দরকার।
****[/HIDE]
[HIDE]
[/HIDE]
 
[HIDE]গত একসপ্তাহ ধরে দুপুরে মুস্কান এখানেই খায়।মানদাকে বলে রেখেছে কৌশিকি।ছুটির দিনগুলোতে কৌশিকি উপভোগ করে ঋতম আর মুস্কানের খেলা।
কৌশিকি বসেছিল বাগানে বই নিয়ে।ঋতম আর মুস্কান খেলতে খেলতে হঠাৎ কৌশিকি শুনতে পেল মুস্কান এ-বি-সি-ডি করে ডাকছে।কৌশিকি অবাক হয়ে মুস্কানকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করলো, 'তোকে কে শিখিয়েছে এসব?'
মুস্কান বলল, 'সালমা চাচী নে'
'কে সালমা চাচী?'
'যব বস্তি মে থে তব সালমা চাচীনে শিখায়া'
কৌশিকি আর কিছু কথা না বাড়িয়ে বলল, 'তুই পড়বি?'
'আব্বা ক্যাহেগি তো'
কৌশিকি বলল 'কাল তোর আব্বা কে নিয়ে আসিস'।

মুস্কান রাতে ফ্লাইওভারের তলায় শুয়ে শুয়ে গল্প করছিল তার আব্বার সাথে।মুস্কান তাই আব্বাকে বলল 'আব্বা ঋতম কি মা মুঝে পড়ানা চাহেতে হ্যায়'
খুরশেদ চাইতো মুস্কান একদিন লেখাপড়া করে বড় হোক।তার মত অক্ষর সহি জ্ঞান মাত্র নয়।

অনেকক্ষণ ধরেই ফোনটা বাজছিল।কৌশিকি রান্নাঘরে থাকায় ফোনটা ধরতে পারে নি।রান্নাঘর থেকে এসে ফোন ঘোরাতেই সুদীপ্ত ওপাশ থেকে বলল, 'রান্না হয়ে গেছে?'
ঘাম মুছতে মুছতে কৌশিকি বলল,'এই তো হল'
'ঋতম কোথায়?'
'ওই টিভিতে কার্টুন দেখছে,অফিস থেকে ফিরলে কখন?'
'এখনো ফিরিনি, রাস্তায়।তা সেই বাচ্চা মেয়েটির খবর কি?'
'জানো ঐ মেয়েটি মাত্র তিন বছর বয়স।এখনো ওর পুরো জীবন পড়ে আছে।ওকে আমি পড়াতে চাই।'
'তবে ভালই তো।তবে ওর বাবার অনুমতি নিও'

কৌশিকি কে যেকোনো ব্যাপারে এনকারেজ করে সুদীপ্ত।সুদীপ্ত জানে কৌশিকি স্বাধীনচেতা একজন বুদ্ধিমতি মেয়ে।তাই কৌশিকির যেকোনো কাজেই সে আস্থা রাখে।
*****[/HIDE]
 
[HIDE]সকালে হঠাৎ করে মানদা কামাই করলো।কৌশিকি টোটনের ফোনে ফোন করতে মানদা জানালো সে সন্ধ্যেয় আসবে এখন তার ঘরে তার ননদ এসেছে।
সকালে স্নানের পর কৌশিকি গোলাপি একটা সুতির শাড়ি পরে নিল,সঙ্গে একটা সাদা ব্লাউজ। ঋতমকে স্কুল বাস থেকে নিয়ে এসে বাড়ীর দিকে এগোতেই ঋতম চেঁচিয়ে উঠলো মুস্কান বলে।
কৌশিকি দেখলো গেটের সামনে মুস্কান ও তার আব্বা দাঁড়িয়ে আছে।

গেটের কাছে মুস্কানের সাথে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিই খুরশেদ কৌশিকি চিনতে ভুল করলো না।দীর্ঘকায় চেহারা খুরশেদের পরনে একটা ময়লা ছেঁড়া লুঙ্গি।খালি গা।তামাটে বর্ণের পেশীবহুল দৈত্যাকার শরীর।গলায় ঝুলছে একটা ময়লা কালো ঘুমসিতে বাঁধা কয়েকটা মাদুলি।গাল ভর্তি দীর্ঘদিন না কাটা উস্কোখুস্ক ময়লা দাড়ি।মাথা ভর্তি ধূসর চুল।কুৎসিত মুখে অজস্র ব্রণর দাগ।লুঙ্গির আড়ালে যে বাঁ পা টা নেই তা আর কৌশিকির অজানা নয়।হাতে ধরা শক্ত মোটা লাঠি।কৌশিকি ভেতরে আসতে বলে এগিয়ে গিয়ে গেটটা খুলে দিল।
খুরশেদের নজর পড়লো কৌশিকির দিকে অমন ফর্সা অভিজাত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মহিলার সাথে আগে সে কথা বলেনি।কৌশিকির কোমল ফর্সা শরীরের সাথে গোলাপি শাড়ি যেন মিশে গেছে।গহনা বলতে ফর্সা ঘামে ভেজা গলায় চিকচিক করছে সরু সোনার চেনটি।পরনের সাদা ব্লাউজ।দীর্ঘদিন ধরে কামবাসনায় অভুক্ত খুরশেদের নজর এক ঝটকায় দেখে নিচ্ছিল কৌশিকিকে।আঁচলে ঢাকা বুক দেখে বুকের উচ্চতা নির্নয় করা সম্ভব নয়।কমনীয় ফর্সা মুখে একটা মিষ্টি হাঁসি তাকে যেন আরো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন করে তুলেছে।
কৌশিকি খুরশেদ কে বসতে বলতে খুরশেদ বাগানের সিমেন্টের চাতালে বসে পড়লো।
কৌশিকি বলল,'আপনার মেয়েটি কিন্তু ভীষণ মিষ্টি'
'ভাবিজি মা মরাহুয়া বেটি আছে হামার,আল্লার দয়ায় ভালো আছে'
'আপনার মেয়েটিকে আমি পড়াতে চাই,আপনি রাজি তো'
'ভাবি আমি গরীব আদমি,কাঁহাসে খরচা উঠাবো'
'আরে না না,আপনাকে চিন্তা করতে হবে না,আমিই ওর দায়ভার নেব,ও এখানেই থাকবে'
শুনে যেন খুরশেদের আনন্দ ধরে না।'ঠিক হ্যায় ভাবি আপনি যা বলবেন ওহি হবে'
'তাহলে আজ থেকে ও এখানে থাক?'
'ঠিক হ্যায় ভাবি,লেকিন আমি ওর সাথে দেখা করতে আসবো'
'ঠিক আছে,নিশ্চয়ই।আপনার মেয়ে এখানে ভালো থাকবে।'

মুন্নিকে ছেড়ে আসতে মন সাধ দিচ্ছিল না খুরশেদের।ওর একমাত্র সম্বলই তো মুন্নি।তবু মুন্নির ভালোর কথা ভেবে নিশ্চিন্তই হল।

********[/HIDE]
[HIDE]
[/HIDE]
 
[HIDE]
কৌশিকি মুন্নিকে স্নানঘরে নিয়ে গিয়ে সাওয়ার তলে দাঁড় করাতে মুন্নির আনন্দ ধরে না।কৌশিকির ভালো লাগছিল একটা সহজ সরল নিষ্পাপ বাচ্চা মেয়ের আনন্দ দেখে।স্নানের পর ঋতমেরই একটা গেঞ্জি পড়তে দিল কৌশিকি।গেঞ্জিটা ওকে বড় হয়ে গেছিল তবুও নতুন পোশাক মেয়ে মুস্কানের মুখে হাসি।সঙ্গী পেয়ে ঋতমেরও বেশ মজা হচ্ছিল আজ সে কতই খেলবে।সন্ধ্যেবেলা কৌশিকি মুন্নিকে পড়াতে গিয়ে অবাক হল মেয়েটি ঝট করে সব শিখে যাচ্ছে।তবুও ভালো স্কুলে দিতে হলে আগে তাকে প্রিপিয়ার করে নিতে হবে।

রাতে খুরশেদের ঘুম আসছিল না।প্রতিদিন মেয়ের সাথে গল্প করতে করতে ঘুমায়।বারবার প্রশ্ন আসছিল মনে,মুন্নি ভালো থাকবে তো।পরক্ষনেই ভাবছিল,কৌশিকির মত মানুষের কাছে নিশ্চই ভালো থাকবে।কৌশিকির কথা মনে আসতেই তার চোখের সামনে ভাসতে শুরু করলো সুন্দরী কৌশিকির অপরূপ রূপ।ফর্সা গ্রীবাদেশ,মুখের মিষ্টি নরম সৌন্দর্য।খুরশেদের কামবাসনা জাগ্রত হচ্ছিল।লুঙ্গির মধ্যে পুরুষ অঙ্গটা কঠিন হয়ে উঠছিল।বড়লোক বাড়ীর শিক্ষিতা সুন্দরী ফর্সা কৌশিকির কথা ভেবে তার শরীরে যেন চুঁয়ে চুঁয়ে ঘাম বের হচ্ছিল।খুরশেদের মত উগ্রকামী পুরুষ প্রায় এক বছরের মত কোন যৌন সঙ্গম করেনি।নিজেকে রোখার ক্ষমতা ছিল না তার।লুঙ্গির তলায় হাতটা চলে গিয়ে মুঠিয়ে ধরলো লিঙ্গটা।মুখের সামনে তীব্র হচ্ছিল গোলাপি শাড়ি সাদা ব্লাউজ পরিহিত কৌশিকি।লিঙ্গটা ধরে সজোরে হাতটা ওঠা নামা করতে থাকলো সে।একজন অভিজাত শিক্ষিতা নারীকে কল্পনা করে সে হস্তমৈথুন করছে ফ্লাইওভারের তলে থাকা ন্যাংড়া ভিখারি খুরশেদ।দীর্ঘক্ষণ পর হাত গড়িয়ে নেমে এলো বীর্যস্রোত।নিস্তেজ হয়ে পড়লো তার শরীর।
সকালে ঘুম ভাঙতেই খুরশেদের আগের রাতের কথা মনে পড়তেই মুখে হাসির রেখা এলো আপন মনেই।আজ তার আর ভিক্ষা চাওয়ায় মন নেই।সকাল বেলা পড়ে থাকা একখান বাসী পাউরুটি জল দিয়ে খেয়ে বিড়ি ধরালো সে।বেলা বাড়তেই রোদ বেরোচ্ছে।

********[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top