*কথা শেষ হয়ে গেলে সম্পর্ক ফুরিয়ে যায়*
এমনটাই ভেবে আসে মানুষ । সারাজীবনে কতবার আমাদের কত মানুষের সাথে সম্পর্ক হয় । তারপর ধীরে ধীরে আগ্রহের অভিমুখ পাল্টে যায় , জীবনের গুরুত্ব বদলে যায় , কথা কমে আসে , সম্পর্ক হারিয়ে যায়।
একইরকম ঘটনা ঘটে রক্তের সম্পর্কের মানুষের সাথেও । একদিন যে যত কাছে থাকে , ধীরে ধীরে সে তত দূরেই চলে যায় । কথা কমে যায় , সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছায় ।
ছেলেবেলায় স্কুলে যে বন্ধুকে ছেড়ে একমুহূর্ত থাকতে পারতাম না , কতক্ষণে স্কুলে গিয়ে মনের সব কথা কলকল করে বলবো বলে অপেক্ষা করতাম এখন সে শুধুমাত্রই ভার্চুয়াল বন্ধু । বদলে যায় , গুরুত্বের অভিমুখ বদলে যায় , কথা কমে যায় , সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায় ।
যে ঠাকুমার সাথে ঘন্টাখানেক বকবক না করলে রাতে ঘুম হত না সেই ঠাকুমা যখন মারা গেলেন সয়ে গেল তো । সয়ে গেল একা বিছানায় শোওয়া ।
গল্প না শুনেই ঘুমিয়ে পড়া । তেমন করে কই মনে পড়েনা তো আর ঠাকুমা, কাকু, জেঠু, পিসি, দাদা,দিদা, পিসেমশাই.....কে ।
কথা নেই, মনে পড়াও নেই, মানুষগুলো কেমন ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে জীবন থেকে।
অফিস থেকে ফিরে সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকলেই মেয়ে হাসিমুখে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরতো। গড়গড় করে বলতো সারাদিনে কি কি হয়েছে । তার কষ্ট, আনন্দ, অভিমান, দুঃখ, রাগ, সব না জানানো অবধি শান্তি নেই । এখন সে মনের কথা মনেই রাখতে শিখে গেছে । বয়সোচিত গাম্ভীর্য এসেছে । এটাই জীবন, কথা ফুরিয়ে যায়, কথা শেষ হয়ে যায়। পাখি বাসা ছেড়ে উড়তে শেখে।
মনে পড়ে কত মানুষের উপর অভিমান করে কথা বলিনি। কত মানুষকে অন্যায়ের শাস্তি দিতে কথা বন্ধ করেছি। আবার কত মানুষ তীব্র অভিমানে আমার সাথে কথা বলেনি। কেউবা রাগ করে কথা বলে না। কেউবা অন্য কোনো কারণে।
যাদের এককালে খুব আপন মনে হত এখন তাদের সাথে সেভাবেই কথা বলতে গেলে কেমন বোকা বোকা লাগে। দিন বদলে গেছে, সময় বদলে গেছে। জীবনের অভিমুখ বদলে গেছে। কথা ফুরিয়ে গেছে। সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। আমরা একাই পৃথিবীতে এসেছি আর ধীরে ধীরে বয়সের সঙ্গে আবার একা থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি।
কতকষ্টে একটা মানুষ, একটা সুসম্পর্ক অর্জন করি আমরা। কথা না বলে আমরা মানুষের সম্পর্ক হারিয়ে ফেলি।
শুধুমাত্র নিয়মিত কথার অভাবে তা শেষ হয়ে যায়। মানুষের সম্পর্ক খরচ হয়ে যায় অকারণে।
কত ছোট জীবন। কত মূল্যহীন আমাদের রোজকার চাওয়া - পাওয়া - দুঃখ -রাগ -রোষ- ক্ষোভ- মান- অভিমান - অভিযোগ।
একটা মানুষ নেই হয়ে গেলে কদিন তাকে মনে রাখে মানুষ ? সাধারণ মানুষ বাতাসের মতন। বাতাস উষ্ণ হয়ে উপরে উঠে গেলে পার্শ্ববর্তী বাতাস ছুটে এসে শূন্যস্থান পূর্ণ করে যেমন। কেউ মরে গেলে আত্মীয় পরিজন কাছের মানুষ তেমনই নিজেদের প্রয়োজনে তাকে বাদ দিয়ে দেয় ধীরে ধীরে।
মরে যাওয়ার আগে তাই আর কাউকে বাদ দিতে ইচ্ছে করে না।
কথা বা সম্পর্ক ফুরোতে ইচ্ছে করে না।
মনে হয় কথা থাকুক। এই মায়ার পৃথিবীতে সম্পর্ক থাকুক। মানুষটা জমা থাকুক জীবনের হিসেব খাতায় । দুহাজার কুড়ি ও একুশ আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে। হয়তো আরো নেবে।তাই আর কোনো সম্পর্ক হারাতে ইচ্ছে করেনা ।
মনে হয় সবাই থাকুক, কথায় থাকুক, মনে থাকুক, হৃদয়ের কাছাকাছি থাকুক |
--------------------------
(খুঁজে পাওয়া)
এমনটাই ভেবে আসে মানুষ । সারাজীবনে কতবার আমাদের কত মানুষের সাথে সম্পর্ক হয় । তারপর ধীরে ধীরে আগ্রহের অভিমুখ পাল্টে যায় , জীবনের গুরুত্ব বদলে যায় , কথা কমে আসে , সম্পর্ক হারিয়ে যায়।
একইরকম ঘটনা ঘটে রক্তের সম্পর্কের মানুষের সাথেও । একদিন যে যত কাছে থাকে , ধীরে ধীরে সে তত দূরেই চলে যায় । কথা কমে যায় , সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছায় ।
ছেলেবেলায় স্কুলে যে বন্ধুকে ছেড়ে একমুহূর্ত থাকতে পারতাম না , কতক্ষণে স্কুলে গিয়ে মনের সব কথা কলকল করে বলবো বলে অপেক্ষা করতাম এখন সে শুধুমাত্রই ভার্চুয়াল বন্ধু । বদলে যায় , গুরুত্বের অভিমুখ বদলে যায় , কথা কমে যায় , সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায় ।
যে ঠাকুমার সাথে ঘন্টাখানেক বকবক না করলে রাতে ঘুম হত না সেই ঠাকুমা যখন মারা গেলেন সয়ে গেল তো । সয়ে গেল একা বিছানায় শোওয়া ।
গল্প না শুনেই ঘুমিয়ে পড়া । তেমন করে কই মনে পড়েনা তো আর ঠাকুমা, কাকু, জেঠু, পিসি, দাদা,দিদা, পিসেমশাই.....কে ।
কথা নেই, মনে পড়াও নেই, মানুষগুলো কেমন ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে জীবন থেকে।
অফিস থেকে ফিরে সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকলেই মেয়ে হাসিমুখে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরতো। গড়গড় করে বলতো সারাদিনে কি কি হয়েছে । তার কষ্ট, আনন্দ, অভিমান, দুঃখ, রাগ, সব না জানানো অবধি শান্তি নেই । এখন সে মনের কথা মনেই রাখতে শিখে গেছে । বয়সোচিত গাম্ভীর্য এসেছে । এটাই জীবন, কথা ফুরিয়ে যায়, কথা শেষ হয়ে যায়। পাখি বাসা ছেড়ে উড়তে শেখে।
মনে পড়ে কত মানুষের উপর অভিমান করে কথা বলিনি। কত মানুষকে অন্যায়ের শাস্তি দিতে কথা বন্ধ করেছি। আবার কত মানুষ তীব্র অভিমানে আমার সাথে কথা বলেনি। কেউবা রাগ করে কথা বলে না। কেউবা অন্য কোনো কারণে।
যাদের এককালে খুব আপন মনে হত এখন তাদের সাথে সেভাবেই কথা বলতে গেলে কেমন বোকা বোকা লাগে। দিন বদলে গেছে, সময় বদলে গেছে। জীবনের অভিমুখ বদলে গেছে। কথা ফুরিয়ে গেছে। সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। আমরা একাই পৃথিবীতে এসেছি আর ধীরে ধীরে বয়সের সঙ্গে আবার একা থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি।
কতকষ্টে একটা মানুষ, একটা সুসম্পর্ক অর্জন করি আমরা। কথা না বলে আমরা মানুষের সম্পর্ক হারিয়ে ফেলি।
শুধুমাত্র নিয়মিত কথার অভাবে তা শেষ হয়ে যায়। মানুষের সম্পর্ক খরচ হয়ে যায় অকারণে।
কত ছোট জীবন। কত মূল্যহীন আমাদের রোজকার চাওয়া - পাওয়া - দুঃখ -রাগ -রোষ- ক্ষোভ- মান- অভিমান - অভিযোগ।
একটা মানুষ নেই হয়ে গেলে কদিন তাকে মনে রাখে মানুষ ? সাধারণ মানুষ বাতাসের মতন। বাতাস উষ্ণ হয়ে উপরে উঠে গেলে পার্শ্ববর্তী বাতাস ছুটে এসে শূন্যস্থান পূর্ণ করে যেমন। কেউ মরে গেলে আত্মীয় পরিজন কাছের মানুষ তেমনই নিজেদের প্রয়োজনে তাকে বাদ দিয়ে দেয় ধীরে ধীরে।
মরে যাওয়ার আগে তাই আর কাউকে বাদ দিতে ইচ্ছে করে না।
কথা বা সম্পর্ক ফুরোতে ইচ্ছে করে না।
মনে হয় কথা থাকুক। এই মায়ার পৃথিবীতে সম্পর্ক থাকুক। মানুষটা জমা থাকুক জীবনের হিসেব খাতায় । দুহাজার কুড়ি ও একুশ আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে। হয়তো আরো নেবে।তাই আর কোনো সম্পর্ক হারাতে ইচ্ছে করেনা ।
মনে হয় সবাই থাকুক, কথায় থাকুক, মনে থাকুক, হৃদয়ের কাছাকাছি থাকুক |
--------------------------
(খুঁজে পাওয়া)