What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

জীবনের মানে খুঁজে বেড়ানোই জীবনের মানে (1 Viewer)

WhisperBD

Expert Member
Joined
Jul 24, 2024
Threads
67
Messages
1,623
Credits
14,077
জীবনের মানে কি? এই প্রশ্নটাই জীবনের সবচেয়ে বড় মানে। অর্থাৎ পেয়ে যাওয়া নয়, জীবনের মানে খুঁজে বেড়ানোই জীবনের মানে।

এখন পর্যন্ত জীবনের মানে কেউ কি খুঁজে পেয়েছে? অনেকেই বলে পেয়েছে। আসলে পায়নি। যে বলে পেয়েছে সে তখনই মরে গেছে। আর মরে গিয়ে জীবনের মানে খুঁজে পেয়ে কি লাভ? কারণ মানুষ ততোদিন পর্যন্তই বেঁচে থাকার মানে খুঁজে পায় যতদিন পর্যন্ত সে এটা পায়নি। পেয়ে গেলেই জীবন তার কাছে অর্থহীন হয়ে পড়ে। তখন তার বেঁচে থাকায় আগ্রহ থাকে না। জীবন্মৃত কিংবা আত্মহনের পথ বেছে নেয়।

এই যে আমরা সিসিফাসের মিথের কথা বলি, কি তার মানে? মানে হলো সিসিফাস কখনো তার পাথরখণ্ডটি শীর্ষে স্থাপন করতে পারবে না। যতবার সে উপরে রাখবে, ততোবার সেটা নীচে গড়িয়ে পড়বে। সবাই জানে মিথের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি শিক্ষার দিকে ইঙ্গিত করা। জীবনের মানে হচ্ছে পাথরখণ্ডটিকে বারবার শীর্ষে তোলার চেষ্টা করে যাওয়া। সিসিফাস যদি সফল হতো, তাহলে এটা মিথ হতো না, একটা খুব নিম্নমানের গল্প হতো। জীবনের মানে হচ্ছে জীবনের মানে খুঁজে বেড়ানো এবং না পাওয়া। না পাওয়ার সংগ্রামটাই জীবনের মানে।

একজন আস্তিক যখন ইহজগতে কোনো সুখ পায় না, তখন সে জগতের সমস্ত দুঃখ থেকে রিলিফ পাওয়ার জন্য পরকাল সৃষ্টি করে, বেহেশত নরকের ধারণা তৈরি করে এবং এর উপর বিশ্বাস করে। সে কিন্তু জানে না সত্যি পরকাল বলে কিছু আছে কি না। এই বিশ্বাস করাটাই তার বেঁচে থাকা এবং যাবতীয় কষ্ট যাতনা সহ্য করার শক্তি যোগায়। আবার একজন নাস্তিক বলে পরকাল বলে কিছু নেই। ঈশ্বর বলে কারও কোনো অস্তিত্ব নেই। এই না থাকার মধ্য দিয়ে সে ইহজগতেই যা কিছু তা ভোগ করে যেতে চায়। মৃত্যুতেই সব শেষ বলে মনে করে। এই যে মৃত্যুতেই সব শেষ, এই বোধ তাকে তার সব ক্রিয়ার যাতনা থেকে মুক্তি দেয়। আস্তিকতা এবং নাস্তিকতা প্রকৃতপ্রস্তাবে একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।

ধরুন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো কতগুলো চেতনাকে সামনে নিয়ে। তার একটা হলো সাম্য। এখন মানুষ এটা ধারণ এবং বিশ্বাস করেছিলো। কেন? কারণ তারা শোষণ নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিলো। চেতনা কি বাস্তবায়ন হয়েছে? হয়নি। আর হয়নি বলেই মানুষ এখনো তার পেছনে ছুটছে। যদি বাস্তবায়ন হয়ে যেতো, মানুষ তার সংগ্রাম হারিয়ে ফেলতো এবং জীবনটা তার কাছে পানসে হয়ে যেতো। পৃথিবীতে সমাজতন্ত্র কায়েম হয়েছিলো, কিন্তু টেকেনি। কারণ কি? কারণ ছাঁচে ঢালা কোনো ব্যবস্থায় মানুষ কোনো আনন্দ পায় না। যেখানে অনিশ্চয়তা নেই, সেখানে বেঁচে থাকার আনন্দ নেই। এই যে চীনে এক দেশ দুই অর্থনীতি, তার মানেই হচ্ছে পথ খুলে রাখা যার ভেতর দিয়ে মানুষ তার স্বপ্নের পেছনে ছুটবে।

আমার মাঝে মাঝে মনে হয় শেখ মুজিব নিজে মৃত্যুবরণ করতে চেয়েছিলেন। কারণ তার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়ে গেছিলো। এর পরের স্বপ্নের জন্য তিনি ব্যর্থ হচ্ছিলেন। তিনি মৃত্যুবরণ করতে চাচ্ছিলেন তার পক্ষে আমার যুক্তি হলো তাকে হত্যা করা হতে পারে এমন অসংখ্য ষড়যন্ত্রের কথা তাকে বলা হয়েছিলো, তিনি আমলে নেননি। কেন নেননি? কারণ তিনি মরতে চাইছিলেন। একদিকে তার বড় স্বপ্নের বাস্তবায়ন, অন্যদিকে স্বপ্ন অপূর্ণের ব্যর্থতা বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুতে অমর হতে চেয়েছিলেন। তিনি আত্মঘাতী হয়েছিলেন।

যারা বলে জীবনের মানে নেই কিংবা আছে, তারা ভুল বলে। জীবন এক অনিশ্চিত পথ চলা। কোনো কিছুতে স্থির বিশ্বস্ত হয়ে পড়া মানেই এক ধরণের মনোবিকলন। বরং জীবনের মানে খুঁজে চলাই মানসিক সুস্থতার লক্ষণ। প্রেম যে ভেঙে পড়ে, তার কারণই হচ্ছে প্রেম হওয়ার আগে সে যা পাবে বলে মনে করেছিলো, তা পায় না। হতাশ হয়। এই হতাশ হাওয়াটাই জীবনের শ্রেষ্ঠ মানে। সে আবার বারবার প্রেমে পড়ে। প্রেম ভেঙে গেলে যারা হা-হুতাশ করে, তারা বিকারগ্রস্ত, মৃত। পক্ষান্তরে বিয়ে হলো একটি কবরস্থান।

আমরা এখন যে পৃথিবীতে বাস করছি তা অর্ধমৃত। প্রায় মানুষ মৃত, খুব অল্প মানুষ জীবিত। মৃত মানুষেরা এখানে কথা বলে, দম দেয়া পুতুলের মত হাঁটে, বসে, ঘুমায়, কাজে যায়।

(তথ্যসূত্র: বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগৃহিত, সংকলিত ও পরিমার্জিত)

আপনার মূল্যবান সময়ের জন্য ধন্যবাদ। আশাকরি ফোরামের সাথে থাকবেন এবং একে অন্যকে উৎসাহ যোগাবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top