জিব-বৈচিত্র
অপুর মামা তখন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োলজিতে অধ্যয়ন করতেছিলেন। সমাপনী পরীক্ষার আগেই শিক্ষক হিসাবে ওনার চাকুরী ঠিক হয়ে যায়। প্রাইমারী স্কুলে চাকরী হলেও ওনি তাতে ভিষণ খুশী। ছোট বেলা থেকেই ওনার স্বপ্ন ছিলো ওনি পেশা হিসাবে শিক্ষকতা করবেন। সেই স্বপ্ন পূরন হতে যাচ্ছে বলে ওনি আনন্দে আত্নহারা। তাই শিক্ষক হিসাবে প্রথম দিন স্কুলে যাবার সময় প্রিয় ভাগ্নেকে সাথে নিয়ে গেলেন। অপু তখন স্কুলে পড়লেও প্রাইমারী পাশ দিয়েছে সে বেশ ক'বছর আগেই। তাছাড়া অপু এখন আর মফস্বলের ছাত্র না, সে এখন ঢাকাতে পড়া-শোনা করে। দীপু যুবরাজদের সাথে। মামা প্রস্তাব দেয়াতে অপু আর কোনো আপত্তি না করে বরং খুশী মনে মামার সাথে মফস্বলের প্রাইমারী স্কুলে গেলো। মামা ক্লাসে ঢুকতেই অপু বারান্দায় দাঁড়িয়ে মামাকে দেখতে লাগলো।
প্রথম দিনের প্রথম ক্লাসে যেতেই নতুন টিচার পেয়ে পিচ্চি ছাত্ররা অপুর মামাকে সমানে মুখ ভেংচাতে লাগলো।
পিচ্চিদের একেজনের জিহ্বা একেক রকমের। আর তাদের সেই জিহ্বা প্রদর্শনও বেশ বৈচিত্রময়। একজন সামনের দিকে জিহ্বা বের করেছে তো আরেকজন পাশ দিয়ে বের করেছে। আবার কেউ জিহ্বা গোল করে প্রদর্শন করেছে তো কেউ আবার জিহ্বা উলটো করে বের করে রেখেছে। অপুর মামা এতো এতো জিহ্বা দেখে একেবারে চুপ মেরে গেছেন। খুব মনোযোগ দিয়ে পিচ্ছিদের সেই জিহবার দিকে তাকিয়ে আছেন।
মামার এই অবস্থা দেখে অপু কিছুটা হতবম্ভ হয়ে গেলো। সে ক্লাসে ঢুকে মামাকে জিজ্ঞেস করলো, "মামা, তুমি এমন করে কি দেখছো ?"
মামা বেশ গম্ভীরভাবে অস্ফুটে বললেন...
"জিব-বৈচিত্র..."