দাগ, ময়লা, গন্ধ আর তেলচিটচিটে ভাব—রান্নাঘরে এ সব কটি সমস্যাই একসঙ্গে খুঁজে পাওয়া যায়। ছোট হোক বা বড়, রান্নার এই জায়গা বাড়ির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু এখানেই দাগ আর ময়লা বেশি বেশি বাসা বাঁধে। লকডাউন চলাকালে বাইরের কাজ অনেকটাই কমে গেছে। রসুইঘরকে চকচকে আর ঝকঝকে করতে এই বাড়তি সময়কেই কাজে লাগিয়ে ফেলুন।
চুলা
রান্নার সময় তেল, মসলা বা খাবারের দ্রব্য চুলায় পড়া স্বাভাবিক। চুলা পরিষ্কারের জন্য তরল সাবানই প্রথম ভরসা। চুলা হালকা করে না মুছে এর বিভিন্ন অংশ সাবান ও গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এক ঘণ্টা। এবার ফোমের মাজুনি দিয়ে পরিষ্কার করলে অনেক দিনের তেল-ময়লাও পরিষ্কার হবে। কাপড় দিয়ে মুছে বাতাসে রেখে শুকিয়ে নিতে হবে। চুলার চারপাশ পরিষ্কার করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। সাবান–পানি দিয়ে চুলার পাশ ও নিচের অংশ কিছু সময় ভিজিয়ে রাখুন। এতে ময়লা ও তেল নরম হয়। নরম ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে সময় নিয়ে পরিষ্কার করুন। চুল্লির মধ্যকার ছিদ্রগুলো পরিষ্কার করতে আলপিনের সাহায্য নিতে পারেন। এতে ছিদ্রগুলোর মুখ খুলে যাবে, আগুনের তাপ সঠিকভাবে পাওয়া যাবে।
চুলা পরিষ্কার থাকলে রান্নার সময় আগুনের আঁচ পাবেন সঠিকভাবে
সিঙ্ক
খাবার ও কাঁচা সবজির অংশ পাইপে আটকে যায়। গভর্নমেন্ট কলেজ অব হিউম্যান সায়েন্সের (সাবেক গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ) সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসমিয়া জান্নাতের পরামর্শ পাম্পার ব্যবহারের। তবে পাম্পার না থাকলে পানির কল ছেড়ে দুই হাতের তালু দিয়ে পানি নামার মুখে জোরে চাপ দিতে হবে। এতে পাইপ অনেকটাই পরিষ্কার হয়। এ ছাড়া সহজ আরেকটি উপায় হলো সারা রাত পাইপের মুখে বেশি করে হারপিক ঢেলে রাখা। সকালে হালকা গরম পানি দিলে তেল–চর্বি কেটে যায়। সিঙ্কের মধ্যে ও পাশে সাবানের সঙ্গে সামান্য বেকিং সোডা বা ভিনেগার ও লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। অথবা সিঙ্কের জন্য বিশেষ পরিষ্কারকও ব্যবহার করা যায়।
মেঝে, দেয়াল ও জানালা
মেঝে পরিষ্কার করুন জীবানুনাশক দিয়ে
মেঝে ও দেয়াল পরিষ্কারের সাধারণ নিয়ম হলো সাবান ও গরম পানি। রান্নাঘর পরিষ্কারে ভিনেগার ও লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। এতে তেলচিটচিটে ভাব কমবে বলে জানালেন সহকারী অধ্যাপক তাসমিয়া জান্নাত। টুথপেস্ট দাগের ওপর দিয়ে ব্রাশে ঘষে দাগ তুলতে পারেন। হারপিক ও টাইলসে ব্যবহারের জন্য বিশেষ পরিষ্কারক উপকারী। ব্লিচিং পাউডার ও এর তিন গুণ বেশি বেকিং সোডা মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন পরিষ্কারক। দাগে লাগিয়ে ঘষে দাগ তোলা যাবে। তবে অবশ্যই ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত।
হাঁড়ি–পাতিল
রান্নাবিদ সিতারা ফেরদৌস বললেন, হাঁড়ি–পাতিল ও কাচের পাত্র সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করে তবেই তুলে রাখুন। দাগ, তেল ও গন্ধ কমাতে সাবানের সঙ্গে সামান্য ভিনেগার ও লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
বাসন পরিষ্কারের সময় লুকুইড সাবানের সঙ্গে মেশাতে পারেন বাড়তি কিছু
এগজস্ট ফ্যান
প্রথমে একটি বাটিতে দুই টেবিল চামচ ডিটারজেন্ট পাউডার, দুই টেবিল চামচ ভিনেগার, একটি লেবুর রস ও এক কাপ পানি একসঙ্গে মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ঢেলে নিন। এবার ওই স্প্রে দিয়ে ফ্যানের পাখাগুলো স্প্রে করে দুই মিনিট অপেক্ষা করুন। দুই মিনিট পর ঘষে ঘষে পরিষ্কার করুন। এ ছাড়া বিশেষ ফোমজাতীয় পরিষ্কারক ব্যবহারে অল্প সময়ে দীর্ঘদিনের জমা ময়লাও পরিষ্কার হবে।
* রিফাত পারভীন, ঢাকা