কেউ মারা যাওয়ার পর তাঁর বাড়ি বা হাসপাতালে যাওয়ার সময় যেমন ঝলমলে উজ্জ্বল কোনো পোশাক পরা ঠিক না, তেমনি দাওয়াতে গেলে বাসার পোশাক পরে চলে যাওয়া যায় না। অনুষ্ঠান বা জায়গা বুঝে পোশাক নির্বাচন করা জরুরি। পোশাক নিয়ে কোনো বিড়ম্বনায় না পড়তে চাইলে এ বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার।
অফিসের পোশাক হওয়া চাই পরিপাটি। মডেল: হান্নান ভাট ও মাশিয়াত
আনুষ্ঠানিক বা অফিশিয়াল পোশাক
শুরুতেই আসি চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার দেওয়ার বিষয়ে। কোনো প্রতিষ্ঠানে আপনি যখন চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন তখন পরিপাটি পোশাকে যেতে হবে। অনেক সময় সৃজনশীল কাজের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্যাজুয়াল পোশাক পরে অফিস করার সুযোগ থাকে। তবে আপনি যখন সেখানে সাক্ষাৎকার দিতে যাবেন তখন আপনার অবশ্যই ফরমাল বা আনুষ্ঠানিক পোশাকে যাওয়া উচিত। ছেলেদের বেলায় হালকা কোনো একরঙা বা চেকশার্ট আর তার সঙ্গে মাপমতো তৈরি করে নেওয়া প্যান্ট আর জুতা হলেই চলবে। ফ্যাশন শোর মতো জমকালো পোশাকে সাক্ষাৎকার দিতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। পরতে হবে রুচিশীল ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই পোশাক। একই সঙ্গে শরীরী ভাষাতেও আপনাকে তরতাজা দেখাতে হবে, হতে হবে প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর। মেয়েদের ক্ষেত্রে ফরমাল পোশাক হতে পারে শাড়ি, থ্রিপিস বা শার্ট–প্যান্ট আর ব্লেজার।
বিয়ে বাড়ির সাজ পোশাক
বিয়েবাড়ির পোশাক
দেশে দেশে বর–কনের পোশাক যেমন ভিন্ন, তেমনি ভিন্ন বিয়েবাড়ির অতিথিদের পোশাকও। আমাদের এই অঞ্চলের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বিয়েবাড়ির পোশাক হওয়া চাই জমকালো। তবে তার সঙ্গে বিয়ের ধরন ও মৌসুম অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পাঞ্জাবি আর শাড়িই ভালো। এদিন কেউ স্যুট পরে বিয়েবাড়িতে গেলে বরং নিজেকে আলাদা মনে হবে। আবার শীতকালের বিয়েতে পাতলা ফিনফিনে হাতাকাটা পোশাক না পরে বরং আরামদায়ক শীতরোধী পোশাক বেছে নেওয়া জরুরি।
মৃত ব্যক্তির বাড়ি ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায়
কেউ মারা গেলে যখন সেখানে উপস্থিত হতে চান অবশ্যই সাদা বা কালো রং বেছে নিন। সাদা–কালো পরা সম্ভব না হলে হালকা কোনো রং বেছে নিন, যা উৎকট দেখাবে না। পুরুষের পোশাক হিসেবে সাদা বা কালো পাঞ্জাবি পরা ভালো। শার্ট পরলেও সেখানে এই রং বেছে নিতে পারেন। নারীরা শাড়ি বা কামিজ যেটাই পরুন উজ্জ্বল রং না পরে সাদা ও কালো পরতে পারেন। এ ছাড়া হালকা পিচ, ধূসর, হালকা বাদামি ইত্যাদি রঙের পোশাক পরতে পারেন।
বেড়াতে গেলে
কোথায় বেড়াতে যাচ্ছেন, সেটার ওপর নির্ভর করে পোশাক বেছে নিন। সমুদ্রে গেলে আরামদায়ক টি–শার্ট, হাফপ্যান্ট, সুইমস্যুট, টপ, ফতুয়া ইত্যাদি পরতে পারেন। আবার পাহাড় বা জঙ্গলে গেলে ট্রাউজার, জগার, মোবাইল প্যান্টের সঙ্গে ফুলহাতা শার্ট, টি–শার্ট পরতে পারেন। সমুদ্রে গেলে আপনি খালি পা বা দুই ফিতার চপ্পল পরতে পারেন। তবে জঙ্গলে পোশাকের সঙ্গে বুট বা স্নিকার পরলে ট্রেকিং করতে সুবিধা হবে। সেখানে খালি পায়ে হাঁটার কথা না ভাবাই ভালো।
আড্ডার পোশাক
বন্ধুদের আড্ডায় বা প্রেমিকার সঙ্গে ডেটে গেলে ক্যাজুয়াল পোশাকে থাকুন। জিনসের প্যান্টের সঙ্গে পরতে পারেন টি–শার্ট বা শার্ট। পায়ে থাকুক মানানসই জুতা। তরুণীরা পরতে পারেন শ্রাগ, কামিজ, টপ আর প্যান্টের মতো পোশাক।
সূত্র: ভোগ (ইতালি), বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমস ও প্রয়াত ফ্যাশন পরামর্শক বীর প্রতীক শাহজামান মজুমদার।