What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য পাঁচটি ভয়াবহ মহামারি যেভাবে বিদায় নিয়েছিল (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,653
Messages
117,045
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
C5CYSvR.png


সময়ের সাথে সাথে মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায়, তবুও প্রকৃতির সাথে অনেক সময়ই কুলিয়ে উঠা সম্ভব হয় না। তবে মানুষের প্রতি প্রকৃতির বিভিন্ন বিরূপ আচরণের পেছনে পরোক্ষভাবে মানুষেরই হাত রয়েছে কি না সেটা নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্কের অবকাশ রয়েছে।

সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। কিন্তু সম্পদের অসম বণ্টনের কারণে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পুষ্টির অভাবে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের প্রকোপ মানব সভ্যতায় সর্বদাই বিরাজমান। আজ আপনাদের এমন পাঁচটি রোগের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো যে রোগগুলো নিজের সাধারণ গণ্ডি ডিঙিয়ে অনেকটা অসাধারণভাবেই মহামারীর আকার ধারণ করেছিল। কিন্তু এইসব মহামারীগুলোর পরিসমাপ্তি হয়েছিল কীভাবে?

জাস্টিনিয়ান প্লেগ—প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল যে রোগ!

“ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস” নামক ছোট একটি ব্যাকটেরিয়া প্রায় তিনবারের মতো মৃত্যুর হোলি খেলা নিয়ে আবির্ভাব হয়েছিল পৃথিবীতে। এই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগটিকে আমরা সবাই প্লেগ নামেই চিনে থাকি। তথ্য অনুযায়ী প্রথমবার যখন এই প্লেগ রোগটি দেখা যায়, সেই সময়টিকে চিহ্নিত করার জন্য এই মহামারীকে জাস্টিনিয়ান প্লেগ নামে নামকরণ করা হয়েছিল।

৫৪১ খ্রিস্টাব্দে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপলে প্রথমবারের মত এই রোগটির প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। ধারণা করা হয় সুদূর মিশর থেকে কোন জাহাজের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে এই রোগটি বাইজেন্টাইন সম্রাজ্যে এসে দেখা দেয়। কেননা ঠিক সেই সময়টিতেই জাস্টিন সম্রাটকে মিশর থেকে উপঢৌকন স্বরূপ অনেক শস্য পাঠানো হয়েছিল। আর সেই শস্যের মধ্যে থাকা ইঁদুরের মাধ্যমেই প্লেগ নামক মহামারীটির আগমন ঘটে।

প্লেগ মহামারীটি কনস্ট্যান্টিনোপলকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল, এমনকি এর প্রকোপ থেকে বাঁচতে পারেন নি সেখানকার রাজা জাস্টিনও। তবে এই রোগটি সেখানেই থেমে থাকেনি বরং ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকাসহ আরবেও দাবানলের মতে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ধারণা করা হয় তৎকালীন সময়ে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের মত মানুষ এই রোগটিতে মৃত্যু বরণ করেন।

দেপল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক থমাস মকায়াইটিস বলেছেন, “অসুস্থ লোকদের সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা ব্যতীত এই রোগটির বিরুদ্ধে কীভাবে লড়াই করা যায় সে সম্পর্কে তৎকালীন জনগণের সত্যিকারের কোন ধারণা ছিল না।” এ সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, কীভাবে এই রোগটি শেষ হয়েছিল সেটা আদৌ জানা সম্ভব হয়নি। তবে ধারণা করা হয় যাদের এই রোগটি আক্রমণ করেনি, তাদের শরীরে হয়ত এই রোগটির রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল।

ব্ল্যাক ডেথ–কোয়ারেন্টিন যুগের সূচনা

প্রথমবার আক্রমণ করার পর দ্বিতীয়বার পুনরায় আক্রমণ করার জন্য প্লেগ সময় নিয়েছিল প্রায় ৮০০ বছর। ভয়ানক মৃত্যু ক্ষুধা নিয়ে দ্বিতীয়বার যখন ব্ল্যাক ডেথ নামক প্লেগের আগমন, তখন ধারণা করা হয় এই মহামারীর করতলে প্রায় দশ কোটি মানুষকে জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছিল।

যদিও তখন পর্যন্ত মানুষের ধারণা ছিল না এই রোগ থেকে বৈজ্ঞানিকভাবে কীভাবে বেঁচে থাকা যায়, তবুও তৎকালীন সময়ে মানুষ অন্তত এটুকু ধারণা করতে পেরেছিল যে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা যাবে না। আর তাই বিভিন্ন বন্ধর নগরীতে তখন আগত নাবিকদের ততক্ষণ পর্যন্ত আলাদা করে রাখা হত যতক্ষণ পর্যন্ত না এটা বুঝা যেত তারা প্লেগে আক্রান্ত নয়!

প্রাথমিক অবস্থায় নাবিকদের নিজস্ব জাহাজে ত্রিশ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিন করে রাখা হত। দেপল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক থমাস মকায়াইটিস এ সম্পর্কে বলেন, “আলাদা করে রাখার এই আইনের নাম ছিল ট্রেন্টিনো, পরবর্তীতে এই আলাদা থাকার সময়টাকে কোয়ারান্টিনো বলা হত। আর এভাবেই বর্তমানে বহুল পরিচিত কোয়ারেন্টিন শব্দের উৎপত্তি”। ১৩৫৩ সাল পর্যন্ত ব্ল্যাক ডেথ তার ক্রূর তাণ্ডব লীলা চালিয়ে সেবারের মত রণভঙ্গ দিলেও ইতিহাস থেকে একদমই মুছে যায় নি এই মহামারী।

দ্য গ্রেট প্লেগ অফ লন্ডন

ব্ল্যাক ডেথ অন্যান্য এলাকা থেকে চলে গেলেও লন্ডন দীর্ঘদিনের জন্যই প্লেগের প্রাদুর্ভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ১৩৪৮ সাল থেকে ১৬৬৫ সাল পর্যন্ত এই তিনশ বছরের মধ্যে প্রতি পনের বিশ বছর পরপরই মোট চল্লিশ বারের মতো এই রোগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। এরমধ্যে যতবারই প্লেগ দেখা গিয়েছিল ঠিক ততবারই ব্রিটিশ সম্রাজ্যকে তার রাজধানীতে মৃত্যুর উৎসব অসহায় চোখে দেখতে হয়েছিল। প্রতিবারই লন্ডন শহরের তৎকালীন জনসংখ্যার প্রায় বিশ ভাগের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এই মহামারীর প্রাদুর্ভাবে।

১৫০০ সালের দিকে ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম অসুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা করে রাখার ব্যাপারে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। যে সকল বাড়িতে প্লেগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছিল সেগুলোর সামনে একটি বিশেষ রঙের লাঠি পুতে রাখা হত, যাতে মানুষ সহজেই বুঝতে পারে। এছাড়া যাদের পরিবারের কেউ প্লেগ রোগে আক্রান্ত, তারা বাসার বাইরে কোথায় বের হলে, সাদা রঙের একটি পতাকা বহন করতে হত সাথে করে। যাতে সবাই তার থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করতে পারে।

১৬৬৫ সালের দিকে লন্ডনে সর্বশেষ এবং সবচাইতে ভয়ানক আকার ধারণ করে প্লেগ আঘাত হেনেছিল এবং তৎকালীন সময়ে মাত্র সাত মাসের মধ্যে প্রায় এক লক্ষ লন্ডন অধিবাসী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন। সব ধরনের জনসমাগম এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছিল এবং এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জোরপূর্বক হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হত। আক্রান্ত ব্যক্তিদের দরজায় লাল রঙের ক্রুশ এঁকে লিখে দেয়া হত, “ঈশ্বর! আমাদের প্রতি একটি সদয় হন”।

অসুস্থদের জোর করে ঘরে আটক করে রাখা এবং মৃত ব্যক্তিদের একসাথে গণকবর দিয়ে দেয়ার আয়োজন অনেকটা নিষ্ঠুর শোনালেও হয়ত এই নিষ্ঠুর পন্থা অবলম্বন করার মাধ্যমেই লন্ডন থেকে এই ভয়াবহ মৃত্যু দূতকে বিতাড়িত করা সম্ভব হয়েছিল।

স্মলপক্স বা বসন্ত রোগের প্রকোপ

গুটি কয়েক শতাব্দী ধরে ইউরোপ, এশিয়া ও আরবে বসন্ত নামক রোগটি মহামারী হিসেবে প্রকট হয়েছিল এবং সংক্রমিত ব্যক্তিদের প্রতি দশজনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল এই রোগে। আর যারা বেঁচে থাকতেন তাদের শরীরে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হত বসন্ত রোগের ক্ষতচিহ্ন। পনেরশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মেক্সিকোতে এই রোগটি প্রবল আকার ধারণ করে এবং দুই বছরে প্রায় আশি লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। আধুনিককালের মেক্সিকো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদিবাসীদের মধ্যে স্মল পক্স রোগের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায় ছিল না বললেই চলে।

এই সম্পর্কে ইতিহাসের প্রফেসর মকাইটিস বলেন, আমেরিকাতে তখন ঠিক কি হয়েছিল, সেটার সাথে অন্য কোন সময়ের মহামারীর প্রাদুর্ভাবের তুলনা করা ঠিক হবে না। কেননা তৎকালীন সময়ে আমেরিকান আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রায় নব্বই থেকে পঁচানব্বই শতাংশ মানুষ মুছে গিয়েছিল কালের গর্ভে। এছাড়া এটা বলা হয়ে থাকে যে, এই রোগের প্রকোপ দেখা যাওয়ার পূর্বে মেক্সিকোর জনসংখ্যা ছিল প্রায় এক কোটি দশ লক্ষ, আর দুই বছর পর সেখানের জনসংখ্যা মাত্র দশ লাখের মধ্যে নেমে দাঁড়ায়।

কয়েক শতাব্দী পরে মহামারী আকার ধারণ করা এই রোগটি একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মাধ্যমে শেষ হয়েছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে, এডওয়ার্ড জেনার নামে একজন ব্রিটিশ ডাক্তার আবিষ্কার করেছিলেন যে, কাউ-পক্স নামক একটি অল্প ক্ষতিকর ভাইরাস ভ্যাকসিন হিসেবে গ্রহণ করলে শরীরে বসন্ত বা স্মলপক্সের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।

তবে স্মল পক্সের প্রকোপ বন্ধ হতে আরো প্রায় দুইশ বছর সময় নিয়েছিল এবং ১৯৮০ সালের দিকে অবশেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা দেয় এই রোগটিকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া সম্ভব হয়েছে।

কলেরা

উনিশ শতকের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত লাখো মানুষের মৃত্যুর মাধ্যমে ইংল্যান্ডকে জর্জরিত করে রেখেছিল কলেরা নামক এই রোগটি। তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তত্বে বলা হচ্ছিল যে এই রোগটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। তবে জন স্নো নামে এক ব্রিটিশ ডাক্তার সন্দেহ করেছিলেন যে লন্ডনের পানীয় জলের মাধ্যমেই এই রোগটি সর্বসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।

তৎকালীন সময়ে এই জন স্নো যেন কিছুটা শার্লক হোমসের মতোই আবির্ভূত হয়েছিলেন, তবে তিনি ছিলেন বৈজ্ঞানিক শার্লক! হাসপাতালের রেকর্ডগুলি অনুসন্ধান এবং মারাত্মক প্রাদুর্ভাবের সঠিক অবস্থান ও কারণ ট্র্যাক করার জন্য বিভিন্ন মর্গের রিপোর্টগুলো নিয়ে তিনি তদন্ত শুরু করেছিলেন।

তিনি দশ দিনের মধ্যে কলেরায় মৃত্যুর একটি ভৌগলিক চার্ট তৈরি করেছিলেন। সেই চার্টে এক চমকপ্রদ তথ্য ভেসে আসে। সেই চার্টের মাধ্যমে জানা যায় যে, তৎকালীন সময়ে জনপ্রিয় একটি শহর ব্রড স্ট্রিটের পানির পাম্পকে কেন্দ্র করে প্রায় পাঁচশটির মত ছোট ছোট জায়গায় কলেরা সংক্রমণ হয়েছে।

জন স্নো এই সম্পর্কে লিখেছিলেন যে, “কলেরার এই বিপর্যয়ের এবং ব্যাপ্তির সাথে কিছুটা পরিচিত হতেই আমি সন্দেহ করি যে ব্রড স্ট্রিটের পানির পাম্পের সাথে এই রোগের কোন একটি সম্পর্ক রয়েছে।”

বেশ কিছুদিনের প্রচেষ্টার মধ্যেই জন স্নো ব্রড স্ট্রিটের স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এই পানির পাম্পটিকে সরিয়ে ফেলেছিলেন এবং প্রায় জাদুর ভেল্কির মতোই সেখানে কলেরা রোগটি হুট করেই থেমে যায়। হ্যাঁ! জন স্নো এর এই অনুসন্ধানটি রাতারাতি কলেরা রোগটিকে ধ্বংস করে ফেলতে পারেনি ঠিকই, তবে মানুষ বুঝতে পেরেছিল যে এই রোগটি পানি বাহিত রোগ। ফলাফল স্বরূপ বিভিন্ন শহরে ধীরে ধীরে স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং স্যানিটেশন উন্নত করা শুরু হয়েছিল।

বর্তমান সময়ে যদিও উন্নত দেশগুলো কলেরা রোগটিকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এখনো পর্যন্ত পর্যাপ্ত চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে প্রায়শই কলেরা রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top