What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ইসলামে সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য (1 Viewer)

A6BV8fu.jpg


সফর মাস হলো ইসলামি হিজরি চান্দ্রবর্ষের দ্বিতীয় মাস। এই মাস মহররম মাসের জোড়া মাস। জাহিলি যুগে মহররম ও সফর এই দুই মাসের নাম ছিল ‘আস সফরুল আউয়াল’ ও ‘আস সফরুস সানি’, অর্থাৎ ‘প্রথম সফর’ ও ‘দ্বিতীয় সফর’। বছরের প্রথম মাস তথা ‘আস সফরুল আউয়াল’, যা বর্তমানে ‘মুহাররামুল হারাম’। এ মাসে যুদ্ধবিগ্রহ তখনো নিষিদ্ধ ছিল; কিন্তু আরবের লোকেরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাদের সুবিধামতো অনৈতিকভাবে এ মাস দুটি আগে-পরে নিয়ে যেত। তাই পরবর্তী সময়ে তাদের এ অপকৌশল নিরসনের জন্য প্রথম মাসের নামকরণ করা হয় মহররম (নিষিদ্ধ); সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় মাসের বিশেষণ ‘আস সানি’ বা ‘দ্বিতীয়’ শব্দটিও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। ফলে এ দুই মাসের নাম পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান ‘মহররম’ ও ‘সফর’ রূপ লাভ করে। এ দুই মাস মিলে একই ঋতু; সুতরাং এ সফর মাস মহররম মাসের সমান গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে।

সময় আল্লাহ তাআলার নিকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অতঃপর বিশ্বাস, সৎকর্ম, সদুপদেশ ও ধৈর্য সাফল্যের নিয়ামক। এ হলো সফলতা-ব্যর্থতার মূল কারণ। কোনো সময়কে অমঙ্গলরূপে চিত্রিত করা হয়নি; বরং সময়কে সফলতার সিঁড়ি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে

‘সিফর’ মূল ধাতু থেকে উদ্ভূত হলে ‘সফর’ মানে হবে শূন্য, রিক্ত। আর ‘সাফর’ ক্রিয়া মূল থেকে উৎপন্ন হলে অর্থ হবে হলুদ, হলদেটে, তামাটে, বিবর্ণ, ফ্যাকাশে, পাণ্ডুবর্ণ, ফিকে, ঔজ্জ্বল্যবিহীন, দীপ্তিহীন, রক্তশূন্য ইত্যাদি। তখন আরবরা সৌরবর্ষ হিসাব করত; চান্দ্রমাস গণনা করলেও ঋতু ঠিক রাখার জন্য প্রতি তিন বছর অন্তর বর্ধিত এক মাস যোগ করে ১৩ মাসে বছর ধরে সৌরবর্ষের সঙ্গে সমন্বয় করত। সুতরাং মাসগুলো মোটামুটিভাবে ঋতুতে স্থিত থাকত। ঋতু ও ফল–ফসলের সঙ্গে আমাদের জীবনের সব ক্রিয়াকর্ম পরিচালিত হয়।

আরব দেশে সে সময় সফর মাসে খরা হতো এবং খাদ্যসংকট, আকাল দেখা দিত। মাঠঘাট শুকিয়ে চৌচির, বিবর্ণ ও তামাটে হয়ে যেত। ক্ষুধার্ত মানুষের চেহারা রক্তশূন্য ও ফ্যাকাশে হতো। তাই তারা বলত ‘আস সাফারুল মুসাফফার’, অর্থাৎ ‘বিবর্ণ সফর মাস’। আরবের জাহিলরা এই মাসকে দুঃখ-কষ্টের মাস মনে করে চাঁদ দেখা থেকেও বিরত থাকত এবং দ্রুত মাস শেষ হওয়ার অপেক্ষা করত। (লিসানুল আরব, ইবনু মানজুর র.)।

ইসলামি বিশ্বাসমতে, কল্যাণ-অকল্যাণ সময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং তা নির্ভর করে বিশ্বাস ও কর্মের ওপর। তাই মহানবী (সা.) এ মাসের নামের নেতিবাচক বিশেষণ পরিবর্তন করে সুন্দর ইতিবাচক বিশেষণ যুক্ত করে নামকরণ করলেন ‘আস সাফারুল মুজাফফার’, অর্থাৎ ‘সাফল্যের সফর মাস’। ইতিবাচক চিন্তা ও সৃজনশীল কর্মকাল দ্বারা এই বিবর্ণ সফরকে সুবর্ণ করে তোলাই এর অন্তর্নিহিত দর্শন। শুভচিন্তা, সুধারণা, মঙ্গলাকাঙ্ক্ষা ও সৃজনশীল উদ্দীপনা সাধারণ জিনিসকেও অসাধারণ করে তোলে; শূন্যতাকে পূর্ণতায় পরিণত করে।

মানুষের জীবন সময়ের সমষ্টি। কর্মগুণে প্রতিটি দিন ও মাস ফজিলতপূর্ণ হয়ে ওঠে। অতএব, আল্লাহ তাআলার রহমত ও বরকত পেতে এ মাসেও বেশি বেশি আমল করতে হবে। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতসমূহ যথাযথভাবে আদায় করার পাশাপাশি নফল ইবাদতে মশগুল হতে হবে। মহান আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘মহাকালের শপথ, মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্যের উপদেশ দেয়।’ (সুরা-১০৩ আসর, আয়াত: ১-৩)।

সময় আল্লাহ তাআলার নিকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অতঃপর বিশ্বাস, সৎকর্ম, সদুপদেশ ও ধৈর্য সাফল্যের নিয়ামক। এ হলো সফলতা-ব্যর্থতার মূল কারণ। কোনো সময়কে অমঙ্গলরূপে চিত্রিত করা হয়নি; বরং সময়কে সফলতার সিঁড়ি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। উম্মে সালমা (রা.) বলেন, ‘একদা রাতে নবীজি (সা.) জাগ্রত হয়ে বললেন, সুবহানাল্লাহ! এ চমৎকার সুন্দর রাত! এতে কতই না বিপদ আপতিত হয়; আর এতে কতই না রহমতের ধনভান্ডার খুলে দেওয়া হয়।’ (বুখারি, প্রথম খণ্ড, হাদিস নম্বর ১১৬)। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা সময়কে মন্দ বোলো না, কারণ আমিই সময়।’ (হাদিসে কুদসি)। ‘কোনো অশুভ-অযাত্রা নেই, কোনো ভূত-প্রেত বা অতৃপ্ত আত্মার অশুভ ক্ষমতা নেই এবং সফর মাসের অশুভ কিছুর কোনো অস্তিত্ব নেই।’ (বুখারি, পঞ্চম খণ্ড, হাদিস: ২১৫১, ২১৬১, ২১৭১ ও ২১৭৭)।

● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
 
তথ্য গুলা পড়ে ভাল লাগলো কেননা আমাদের মাঝে কত ভুল ধারণা থাকে সেগুলা ইসলাম শুধরে দেয়। সুবহানাল্লাহ
 
অনেক সুন্দর। তথ্যগুলো ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
 
আল্লাহ তাআলা আপনাকে উত্তম পুরস্কার দান করুক।
 
অনেক ভালো জিনিস জানলাম পরের টা দেন তাড়াতাড়ি
 

Users who are viewing this thread

Back
Top