অভিনেতা সাদেক বাচ্চু মারা গেছেন। সোমবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনার উপসর্গ থাকায় চিকিৎসকদের পরামর্শে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গত শুক্রবার পরীক্ষার ফল হাতে পেয়েছেন তাঁরা। এতে দেখা যায় সাদেক বাচ্চু কোভিড-১৯ পজিটিভ।
কোভিড পজিটিভ হওয়ার পর আইসিইউ সাপোর্ট সহজভাবে নিশ্চিত করার জন্য পারিবারিক সিদ্ধান্তে অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিগত দুই দিন কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া হয়। সুস্থ করার জন্য চিকিৎসকেরা নানাভাবে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সবচেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে যান না-ফেরার দেশে।
জীবনে শেষ বছরগুলোয় অভিনয়ে অনিয়মিত ছিলেন সাদেক বাচ্চু। তাঁকে নতুন নাটক বা চলচ্চিত্রে কম দেখা যেত। এর আগে পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমায় ছিল তাঁর পদচারণ। নব্বইয়ের দশকে পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবিতে অভিনয় করে পরিচিতি পান তিনি। রেডিও বা টেলিভিশনের আগে তিনি অভিনয় শুরু করেন মঞ্চে। তাঁর নাট্যদলের নাম মতিঝিল থিয়েটার। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি দলটির সভাপতি ছিলেন। চলতি বছর বইমেলার মুক্তমঞ্চে নাটক নিয়ে ওঠে তাঁদের দলটি।
মহিলা সমিতির মঞ্চে এক নাটকে সাদেক বাচ্চুর অভিনয় দেখে তাঁকে বিটিভিতে ডেকে নেন প্রযোজক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। ১৯৭৪ সালে বিটিভিতে তিনি অভিনয় করেন ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকে। তাঁর অভিনীত নাটকের সংখ্যা হাজারের বেশি। প্রথম অভিনীত সিনেমা শহীদুল আমিন পরিচালিত ‘রামের সুমতি’।
বহুমাত্রিক এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবননদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখী’ প্রভৃতি।
সূত্র: প্রথম আলো