What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Illeism – খুব সাধারণ এক বাচনভঙ্গি হলেও বিশেষ কিছুর নির্দেশক! (1 Viewer)

MOHAKAAL

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
2,268
Messages
15,982
Credits
1,454,279
Thermometer
Billiards
Sandwich
Profile Music
French Fries
yQE2nGu.jpg


"ইমিগ্রেশন কথাটাই কেউ শুনতো না যদি এখানে ট্রাম্প না থাকতো"- কথাটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। নিজেই নিজেকে এভাবে উদ্ধৃত করার প্রবণতাকে সাইকোলজিতে বলা হয় "Illeism" এই অভ্যাসটি যে শুধুমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের রয়েছে তা নয়; এমন অভ্যাস দেখা যায় অনেক মানুষের মধ্যেই। খুব সাধারণ শোনালেও, এই বিষয়টি নিয়ে দুনিয়া জুড়ে কম গবেষণা কিন্তু হয়নি! মূলত এই অভ্যাসটি মানুষের চরিত্রের কিছু বিশেষ দিককে উন্মোচিত করে। "Ille" একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ হচ্ছে "He" বা "সে"। নিজেকে তৃতীয় একটি ব্যক্তির অবস্থানে রেখে কথা বলার অভ্যাসটিকে বেশিরভাগ মানুষই Narcissism তথা আত্ম মুগ্ধতা হিসেবে দেখেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে লেখা অনেক লেখনীতেই এই অভ্যাসটিকে সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখা হয়। এলিজাবেথ ওসোফ নামে এক বিশেষজ্ঞ এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন যে, সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদদের মাঝে "আমি আপনাদেরই একজন" সুলভ আচরণ আশা করে। মানুষ চায় যে একজন রাজনীতিবিদ ক্ষমতার দিক থেকে যতটা উপরেই অবস্থান করুন না কেন, তার কথাবার্তায়, আচরণে ফুটে উঠুক নিজেকে জনগণের প্রজা ভাবার মানসিকতা। কিন্তু, যখন কোন রাজনীতিবিদ এভাবে কথা বলেন তখন তার মাঝে এক ধরণের আত্মম্ভরিতা প্রকাশ পায় যাকে কোন অবস্থাতেই সাধারণ মানুষ স্বাগত জানাতে পারে না।

তবে, ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয় যে শুধুমাত্র রাজনীতিবিদেরাই এমন করেন বা রাজনীতিবিদদের এই আচরণটিকেই সাধারণ মানুষ সহজভাবে নিতে পারেন না। যুগে যুগে বিখ্যাত মানুষদের মধ্যে এমন মানুষের সংখ্যা কিন্তু একেবারে কম নয়। সম্ভবত পৃথিবীজুড়ে বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম Illeist (যে ব্যক্তি নিজেকে নাম পুরুষে বা তৃতীয় পুরুষে উল্লেখ করেন) ছিলেন জুলিয়াস সিজার। তার এই অভ্যাসটিকে পরবর্তীতে অনেকের হাসির খোরাক যোগালেও, বস্তুত এই অভ্যাসটি কিন্তু জুলিয়াস সিজারকে একটি আলাদা পরিচিতি দিয়েছিল। চিত্রশিল্পী সালভাদর ডালীও কিন্তু এমন ছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "সালভাদর ডালী একজন অমর- তার মৃত্যু কখনো হবে না!" পাঠক শুনে অবাক হবেন যে, কিংবদন্তী ফুটবলার পেলেও কিন্তু Illeist হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ২০০৩ সালে গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "পৃথিবীতে এত মানুষ রয়েছেন; কিন্তু সেখানে মাত্র একজন বিটোফেন, একজন ব্যাচ, একজন মাইকেল অ্যাঞ্জেলো ও একজন পেলে রয়েছে!" এভাবে নিজের সম্পর্কে বলাকে বাঁকা চোখে দেখবেন বেশিরভাগ মানুষ; কিন্তু এই সাথে এটাও সত্য যে যারা এভাবে কথা বলেন তারা মানুষ হিসেবেও ব্যতিক্রম।

খেয়াল করে দেখবেন যে ইতোমধ্যে আমরা যে মানুষগুলোর কথা আলোচনা করলাম তারা প্রত্যেকেই কিন্তু তাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসের পরিচয় দিয়েছেন। তবে, বিষয়টিকে আরো বেশি ভিন্ন আঙ্গিকেও দেখা যেতে পারে। ডঃ জর্জ সিমন, তার এক প্রবন্ধে উল্লেখ করেন যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, কোন ব্যক্তি কিছুটা আক্রমণাত্মকভাবে কথা বলার সময় Illeism এর ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে তারা অনেকটা জোড় পূর্বক তাদের নিজেদের ব্যাপারে কোন বিশেষ ধারণা শ্রোতার উপরে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।

VVdtDyP.jpg


জুলিয়াস সিজার, বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম Illeist - Source: Thefamouspeople

Illeism কি সত্যিই মানসিক অসুস্থতা?

একটা সময় পর্যন্ত এটিকে অস্বাভাবিক হিসেবেই ধরা হত। নিজেকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হলেও, তা নিয়ে যখন কেউ রীতিমত সাধনা করেন তখন মেন্টাল ডিসওর্ডার ঘটার কিছু সম্ভাবনা কিন্তু থেকেই যায়। এটিকেই "Third Person Communication Disorder" হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি এমন, যে কেউ নিজের সত্ত্বা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বরং একটু ভিন্নতা আনার জন্য মরিয়া। ১লা নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় শিরোনামে প্রকাশিত "Speaking in the Third Person, Removed from Reality" আর্টিকেলে একটি কেস স্টাডি দেয়া হয়। সেখানে বলা হয় যে, বর্তমান কিশোর বয়সীদের মধ্যে নিজের জীবনকে ইচ্ছাকৃতভাবে অগোছালো করে পরিচালনা করার এক অদ্ভুত প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। একজন রুগীর কথা বলা হয়েছে এখানে যে নিজের অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলছে, "আমার হয়তো রিহ্যাবে যাওয়া প্রয়োজন। আমি খুব শান্ত একজন মানুষ। সে প্রতিদিন জিমে যাচ্ছে; বান্ধবীদের সাথে এখানে ওখানে ঘুরতে যাচ্ছে। সে এমন কিছু করে না যা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে। কিন্তু, তার জীবনটা কোন একটা জ্যামের মধ্যে আটকে আছে। আপনি কি আমাকে হেল্প করতে পারেন?" নিজেকে, "সে" বলে বলার পাশাপাশি যেটি লক্ষণীয় ছিল তা হচ্ছে ছেলেটি নিজের চুলকে ইচ্ছাকৃতভাবে অবিন্যস্ত করে রেখেছে। মনে হচ্ছে নিজের জীবনকে সে নিজের ইচ্ছেতেই ওলটপালট করতে চাইছে। Illeism টি মূলত তার অন্যের চোখে নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করবে তা নিয়ে অতিমাত্রায় চিন্তা করারই বহিঃপ্রকাশ!

তবে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে Illeism কে নতুনভাবে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন যে, বর্তমান সময়ে নতুন করে এই বিষয়টিকে নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার একটি বড় কারণ হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু Illeist কথাবার্তা; বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে ও তার করা টুইটগুলিতে। বিষয়টি বর্তমান সময়ে অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হলেও, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান এর ৯ জন প্রফেসর কর্তৃক পরিচালিত গবেষণায় Illeism বা Self-Talking (আত্মকথন) কে দেখা হচ্ছে নতুন আঙ্গিকে। এই গবেষণা বলছে যে, নিজের সম্পর্কে কথা বলার সময় বক্তার এই অবস্থান পরিবর্তন (অর্থাৎ বক্তা ও শ্রোতার অবস্থা বাদে, তৃতীয় কোন ব্যক্তির অবস্থান থেকে) সামাজিক চাপের মাঝে বক্তার চিন্তাধারা, আচরণকে সঠিক পথে পরিচালিত করায় সহায়ক; এমনকি "Vulnerable Individual" (যারা সাধারণত নিজের অবস্থানে অবিচল থাকতে পারেন না) এর ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারে এটি সহায়ক! এই গবেষকরা মনে করেন যে এ ধরণের কথা বলার অভ্যাস নিজেকে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অনেকখানি সহায়ক। বস্তুত, এই গবেষণা কথা বলার ক্ষেত্রে, "আমি" এর পরিবর্তে নিজের নাম বলে বলার এই অভ্যাসটিকে "Self-Distancing" বা নিজেকে নিজের কাছ থেকে আলাদা করার একটি পদ্ধতি হিসেবে দেখছে যা ব্যক্তির আচরণকে পরিমার্জিত করায় অনেকখানি সহায়ক। তবে, এত বিস্তারিত গবেষণা ছাড়াও, খুব সাধারণভাবেই বলা যায় যে, নিজেকে তৃতীয় একজন ব্যক্তির চোখে দেখা মানুষগুলো মূলত "সমাজের চোখে আমি কেমন" তা নিয়ে খুব বেশি ভাবেন। জনসম্মুখে নিজেকে এভাবে উপস্থাপন করাটি কিন্তু তাদের আত্মবিশ্বাসকেও ফুটিয়ে তোলে!

এ প্রসঙ্গে বলে রাখি যে, ফেসবুকে কিন্তু একটি পেজ রয়েছে Talking in 3rd Person নামে যেখানে এইভাবে কথা বলা মানুষরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন! পাঠক যদি আগ্রহী হন তাহলে ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে ।

সার্বিক বিচারে, অতিরিক্ত কোন কিছুই যেমন খারাপ, তেমনি Illeism এর মাত্রা বেশি হওয়াটাও অস্বাভাবিক। তবে, বিষয়টি ইতিবাচক বা নেতিবাচক যাই হোক না কেন, নিঃসন্দেহে এটি আরো বিস্তর গবেষণার দাবি রাখে। আপাতত এটুকু বলা যায় যে, আমাদের চোখে খুব সাধারণ হলেও বিষয়টি সাধারণ নয়; বরং কোন মানুষের মানসিক অবস্থা বা জীবনযাত্রা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যেতে পারে এই বিশেষ বাচনভঙ্গি থেকে!
 

Users who are viewing this thread

Back
Top