অদৃশ্য সাজের সৌন্দর্যই আলাদা। হালকা থেকে প্রায় বোঝাই যাবে না, এমনভাবে করতে হবে মেকআপ। ভারতীয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের বিয়ের পর এই সাজ আরও বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তবে ঈদের মেকআপ বলে কথা, একটু জমকালো ভাব না হলে কি চলে! হালকা বেজ ব্যবহার করেই করা হবে মেকআপের জমকালো উপস্থাপন।
সাজের কোনো একটা অংশকে হালকা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন রূপ বিশেষজ্ঞরা। চোখে আইশ্যাডো, কাজল আর মাসকারার কারসাজি থাকলে ঠোঁটের রং থাকুক হালকা। একইভাবে আবার ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিকের ব্যবহার থাকলে চোখের সাজ হালকা রাখুন। এতে করে সাজেও চলে আসবে ছিমছাম ভাব।
‘সারা বছরের ফ্যাশন ধারাগুলোর অনেক কিছুই পাশ্চাত্যের ফ্যাশন প্রদর্শনী থেকে আসে। কিন্তু সেগুলোর অবিকল অনুসরণ অনেক সময়ই আমাদের দেশীয় পোশাকের সঙ্গে বেমানান। সেই ধারাগুলোকেই পরিমার্জন করে ঈদের সাজে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি,’ জানালেন পারসোনার পরিচালক নুজহাত খান।
হালকা মেকআপ বলতে অনেকেই মনে করেন সাজে কোনো রং থাকবে না। বিষয়টি কিন্তু তা নয়। আসলে মেকআপে চড়া ভাব প্রকাশ পাবে না। আইশ্যাডো, লিপস্টিকে যে রংই ব্যবহার করুন না কেন, সেটা ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে। কয়েক দিন আগেও যেমন গাঢ় করে ভুরু আঁকা হতো। এখন ভুরু আঁকার সময় ভুরুর খালি জায়গাগুলো ভরা থাকলেই হবে। আঁকাটা খুব স্পষ্ট করে বোঝানো হবে না।
যাঁদের ত্বকে কোনো ঝামেলা নেই, তাঁরা বিবি ক্রিম ব্যবহার করেই মেকআপের বেস করতে পারেন। মেকআপে যত কম স্তর আনা যায়, এই গরমে ততই ভালো বলে মনে করেন নুজহাত খান। প্রাইমার ব্যবহার করার সময়ই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। লিকুইড ফাউন্ডেশনে চার-পাঁচ ফোঁটা ব্যবহার না করে দুই ফোঁটা ব্যবহার করে দেখুন। অর্থাৎ যতটুকু সম্ভব মেকআপের মূল বেসটাকে হালকা রাখুন। ত্বকের যেসব অংশে সমস্যা আছে, শুধু সেই স্থানগুলোর ওপর প্রয়োজনীয় মেকআপ ব্যবহার করতে পারেন।
লিপস্টিকে এখনো নব্বইয়ের দশকের রংগুলোই আছে। গোলাপি, লাল, কোরাল, ন্যুড চলছে।
তরুণীদের মধ্যে রঙিন কাজলের ব্যবহার এখন বেশ জনপ্রিয়। গ্লিটারের ব্যবহার এ বছর থাকবে। তবে একটু বুঝেসুঝে গ্লসি লিপস্টিকের ধারা অনুসরণ করুন। না হলে আমাদের দেশের আবহাওয়ায় কিছুটা অস্বস্তি বোধ করতে পারেন।
এই সাজের অন্যতম দিক চোখের টানা নকশা। সোনালি রঙের আইশ্যাডো দিয়ে করা হয়েছে এটি। নিচে সাদা রঙের কাজল ব্যবহারে চোখ বড় দেখাচ্ছে। ওপরে হালকা বেগুনি রঙের আইশ্যাডোরও ব্যবহার করা হয়েছে। হালকা গোলাপি সিল্কের কামিজের সঙ্গে গলায় ভারী চোকার পরানো হয়েছে। কানেও দুল আছে। চুল নিচের অংশ কোঁকড়ানো। দুপুরের জন্য মানানসই সাজ।
লাল কুর্তার সঙ্গে পালাজ্জো। পোশাকের সঙ্গে লিপস্টিকের রংটি মেলানো হয়েছে। গলার মালাটি মাথার ওপরে আটকে দেওয়া। কানে মিলিয়ে দুল। এই সাজটি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বেশ মানানসই।
এখানেও প্রাধান্য পেয়েছে চোখের সাজ। আইশ্যাডোর ব্যবহার খুব একটা নেই। কালো কাজল অল্প টেনে পরা হয়েছে। চুল উঁচু চূড়া করে বাঁধা। চুল বড় থাকলে নিচের অংশ বেণি করে পেঁচিয়ে নিতে পারেন। নয়তো আলগা বেণি খোঁপার ওপর আঁটসাঁট করে আটকে দিন। উজ্জ্বল সোনালি রঙের সিল্কের টপের সঙ্গে কালো স্কার্ট। কানে আধুনিক নকশার বড় দুল।
শাড়ির রংটিই ঘুরেফিরে আনা হয়েছে চোখ ও ঠোঁটে। রাতের জন্য আদর্শ সাজ। চুল আয়রন বা ব্লো–ড্রাই করে সোজা করা। মিলিয়ে পাথরের গয়না। শাড়ির আঁচল গলায় পেঁচিয়ে পরা হয়েছে। চোখের নিচে সবুজ, ওপরে বেগুনি রঙের আইশ্যাডোর ব্যবহার নজর কাড়বে। যাঁরা একটু আধুনিক শাড়ির নকশায় সাজতে চান, তাঁদের জন্য এই প্যান্ট ধাঁচের শাড়ি মানানসই।
রাতের সাজে কিছুটা রঙের ব্যবহার থাকতেই পারে। নীল রঙের শাড়ির ওপরে সূক্ষ্ম হাতের কাজ। গলা, কান ও হাতে মুক্তা। চোখের সাজে নীল আর সাোনালি রঙের আইশ্যাডো, ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক। চুল টুইস্ট করে টেনে পেছনে নিয়ে খোঁপা করা হয়েছে।
[FA]pen[/FA] লেখক: রয়া মুনতাসীর, ঢাকা