এমনিতেই জমকালো, ভারী সাজপোশাক পছন্দ নয় অভিনেত্রী শবনম বুবলীর। ঈদের দিনের সাজেও থাকে সে ধারা। সাদা, লেবুর মতো হালকা রঙের পোশাক আর কম প্রসাধন—ঈদের তিন বেলা বুবলী থাকবেন স্নিগ্ধ ও সতেজ।
সুন্দর ও সতেজ থাকতে নিজেকে ভেতর থেকে ভালো রাখাটা জরুরি। এর বিকল্প নেই বলে মনে করেন অভিনেত্রী শবনম বুবলী। এ জন্য খাবারদাবারের দিকে থাকে তাঁর বিশেষ খেয়াল। মৌসুমি ফলমূল ও সালাদ তাঁর প্রথম পছন্দের খাবার। ঈদের দিনে কেমন হবে বুবলীর সাজপোশাক, এই নিয়ে যখন কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে, তখন তিনি বলছিলেন শুধু ঈদের দিনই নয়, প্রতিটি দিনই যাতে সুন্দর ও সতেজ দেখায়, এ জন্য নিজেকে মানসিকভাবে ভালো রাখাটাও খুব দরকার বলে মনে করেন তিনি।
সুন্দর ও সতেজ থাকতে ভেতর থেকে ভালো রাখাটা জরুরি
‘শুধু ব্যস্ততার কারণে নয়, কেন জানি না বাহ্যিক রূপচর্চার প্রতি খুব একটা আগ্রহ নেই আমার। তবে কাজের প্রয়োজনে নিয়মিত ভারী মেকআপ তো নিতেই হয়। এ জন্য শুধু ত্বকের যতটুকু যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু নিই। আলাদা করে রূপচর্চায় সময় নষ্ট না করে ওই সময়টা আমার কাছে ঘুমাতেই ভালো লাগে। তা ছাড়া ওই যে আগেই বলেছি, খাবারের ব্যাপারে আমি বেশ সচেতন। আমার কাছে বাইরে ত্বক ও চুলের যত্নে সময় দেওয়ার চেয়ে কোন খাবার খেলে ত্বক ও চুল সুন্দর থাকবে, এই বিষয়ে মনোযোগ দিতেই বেশি ভালো লাগে’ বললেন বুবলী। এ ছাড়া নিয়মিত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করেন। ত্বক ও চুল সতেজ দেখাতে পানি পানের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
নিজেকে শারীরিকভাবে ফিট রাখতে বুবলী নিয়মিত যোগব্যায়াম করেন। কাজের ব্যস্ততায় জিমে না যেতে পারলেও নিয়ম মেনে প্রতিদিন ৪৫ মিনিট যোগব্যায়াম করেন তিনি। এ ছাড়া গান শুনতে ও সিনেমা দেখতে বড্ড ভালোবাসেন। ‘এতে মন প্রফুল্ল থাকে। আর মন ভালো থাকলে তার একটা প্রভাব চেহারায় পড়তে বাধ্য’ বলছিলেন বুবলী।
নিয়মিত ব্যায়াম করেন বুবলী
ঈদের দিন সাজপোশাকে বাহুল্য এড়িয়ে চলেন, এবারও চলবেন। ভালোবাসেন সাধারণ সাজে সাজতে। স্বাভাবিক সাজেই কীভাবে নিজেকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলবেন, এই দিকটির দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়ে থাকেন। বুবলী বলছিলেন ঈদের দিনে বেলায় বেলায় তাঁর সাজের গল্পের কথা।
সকালে সতেজতায়
সকালের সতেজ সাজে
ঈদের দিন সকালে হালকা সাজপোশাকেই দেখা যাবে তাঁকে। মাকে রান্নাঘরের কাজে সাহায্য করবেন, যে কারণে বুবলী এই সময়ে কুর্তা বা পাঞ্জাবির মতো পোশাক পরতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে রংটা হতে হবে হালকা। সাদা, লেবু, হালকা গোলাপি এই ধরনের রঙের প্রতি বুবলীর রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সকালের দিকে চুল একটু উঁচু করেই বাঁধবেন, যাতে কাজে কোনো বিঘ্ন না ঘটে। কোনো ধরনের প্রসাধন ব্যবহার করবেন না এই সময়। গয়না পছন্দ করলেও বুবলী মনে করেন গয়না তাঁকে খুব একটা মানায় না। যে কারণে প্রয়োজন না হলে ভারী গয়না পরেন না। ‘তবে নাকফুল আমার বিশেষ পছন্দ। তাই ঈদের সকালে নাকে থাকবে নাকফুল। হতে পারে সেটি হীরার বা সুন্দর কোনো নকশার নাকফুল পরতে পারি’ বলছিলেন বুবলী।
দুপুরেও স্নিগ্ধ
দুপুরে পরবেন সালোয়ার কামিজ
সকালের মতো দুপুরেও বুবলীর সাজে স্নিগ্ধতার আভা থাকলেও চোখে থাকবে প্রসাধনীর ছোঁয়া। চোখে কাজল আর মাসকারা পরবেন এই সময়। ঈদের দুপুরে সালোয়ার–কামিজ পরবেন। উপাদান কী হবে, তা নির্ভর করবে বাড়িতে ঈদের দিনের আয়োজনের ওপর। সাধারণত সুতির কামিজেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য তিনি। তবে বাড়িতে অতিথি এলে মসলিন বা সিল্কের কামিজ বেছে নেন। জুতা নিয়েও বুবলীর আছে বিশেষ পছন্দ। সাধারণত শুটিংয়ের সময় হাই হিল পরলেও বুবলী এমনিতে পছন্দ করেন ফ্ল্যাট বা হালকা হিল জুতা। সকালের দিকে নাগরা পরবেন আর দুপুরের কামিজের সঙ্গে মিলিয়ে পরবেন একটু উঁচু হিল জুতা। এই সময়টা চুল থাকবে খোলা।
বিকেলের সাজে ভিন্নতা
ঈদের দিন বিকেলের সময়টুকু বুবলী কাটান বোনদের সঙ্গে। আড্ডা–হইহুল্লোড়ে পার হয়ে যায় সময়টুকু। এই সময়টা বোহিমিয়ান বা একটু ফাংকি লুকে নিজেকে সাজাতে ভালোবাসেন তিনি। সাজ নিয়ে চলে কিছুটা নিরীক্ষাও। ‘নিজেকে একটু ভিন্নভাবে দেখতে কার না ভালো লাগে। তাই চুলগুলো এই সময় টুইস্ট করে নিতে পারি। ইচ্ছা হলে মাথায় জড়িতে নিতে পারি একটা স্কার্ফ।’ বুবলী আরও জানালেন সে সময় অফ শোল্ডার বা ক্রপ টপের সঙ্গে ধুতি সালোয়ার বা পালাজ্জো পরবেন।
বিকালের সাজে থাকবে বোহিমিয়ান লুক
সান্ধ্য সাজে আভিজাত্য
রাতের সাজে বেছে নিবেন ভারী গয়না
ঈদের দিন শাড়ি না পরলে কেন জানি ঈদ ঈদ বলে মনে হয় না বুবলীর। তাই ঈদের সন্ধ্যা ও রাতে শাড়ি পরতে ভুল হয় না তাঁর। এখানেও সেই একই কথা, খুব বেশি জমকালো নয়, হালকা নকশার হালকা রঙের শাড়ি। শাড়ি মসলিন, সিল্ক, কাতান বা শিফন জর্জেটও হতে পারে। এই সময়ে চুলটা একটু কার্ল করে খোঁপা বাঁধবেন। কানে থাকবে ভারী গয়না। আরেকটি কথা, যে বেলা যেভাবেই সাজুন না কেন, বুবলী হাতঘড়ি পরতে কিন্তু ভুল করেন না কখনোই। কারণ জানালেন, এটাই নাকি তাঁর ‘সিগনেচার স্টাইল।’