নির্দিষ্ট সময় পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা মুছে যাওয়ার সুবিধা নতুন নয়। বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ সিগন্যালে সুবিধাটি ২০১৬ সাল থেকেই আছে। আর হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হয়েছে গত বছরের নভেম্বরে।
পুরোনো সুবিধাটি ইদানীং নতুন করে জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ আছে। সাধারণ কারণটি হলো, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা সিগন্যালে আমরা এখন যে পরিমাণ বার্তা পাঠাই, তাতে অনেক ডেটার আদান–প্রদান হয়। ছবি-ভিডিও বেশি শেয়ার করায় স্মার্টফোনের স্টোরেজ বেশি খরচ হচ্ছে। বার্তা নির্দিষ্ট সময় পর মুছে যাওয়ার সুবিধা ‘ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ’ চালু থাকলে সে চাপ থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলতে পারে।
আরেকটি ব্যাপার হলো, সিগন্যাল ও হোয়াটসঅ্যাপে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন আছে। এতে আদান–প্রদানের সময় বার্তার বিষয়বস্তু অন্য কেউ জানতে পারে না। তবে প্রেরক কিংবা প্রাপকের মুঠোফোন চুরি গেলে, কিংবা অন্য কোনোভাবে অন্য কারও হাতে গেলে বার্তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ সচল থাকলে নিরাপত্তা বলয় অন্তত একটা বাড়ল।
কীভাবে কাজ করে ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ
হোয়াটসঅ্যাপের চেয়ে সিগন্যাল এই ক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে আছে বলা যেতে পারে। সিগন্যালে বার্তা মুছে যাওয়ার জন্য এক সেকেন্ড থেকে শুরু করে চার সপ্তাহর মধ্যে যেকোনো সময় ঠিক করে দেওয়া যায়। সে সময় শুরু হয় বার্তাটি প্রাপক দেখার পর থেকে। আবার বার্তা পাঠানোর পরও সময় পরিবর্তন করার সুযোগ আছে।
হোয়াটসঅ্যাপের লোগো
হোয়াটসঅ্যাপের ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ সে তুলনায় নতুন। তাই অপশন কিছুটা সীমিত। ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ সাত দিন পর মুছে যায়। এই সময়ে পরিবর্তন আনার সুবিধা নেই হোয়াটসঅ্যাপে। তবে ভবিষ্যতে এ নিয়ে আরও সুবিধা যুক্ত হবে বলে আশা করা যেতেই পারে।
হোয়াটসঅ্যাপে ওয়ান-টু-ওয়ান চ্যাটে প্রেরক বা প্রাপকের যে কেউ ভ্যানিশিং মেসেজ চালু করতে পারেন। গ্রুপ মেসেজেও যে কেউ সুবিধাটি চালু করতে পারেন। তবে অ্যাডমিন চাইলে সে সুবিধা চালুর অপশন কেবল অ্যাডমিনের জন্য বরাদ্দ রাখতে পারে।
হোয়াটসঅ্যাপে সুবিধাটি চালু থাকলে সাত দিন পর প্রাপক দেখুক বা না দেখুক, তা মুছে যাবে। অর্থাৎ প্রাপক বার্তা না খুললেও তা মুছে যাবে।
কখন ব্যবহার করবেন ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ
সিগন্যালের লোগো
নজরদারির আশঙ্কা থাকলে এ ধরনের বার্তা পাঠানো ভালো। বিশেষ করে যাঁরা বার্তাগুলো গোপন রাখতে চান। তবে সব ক্ষেত্রে ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ আদর্শ অপশন না-ও হতে পারে। যেমন কাজের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করলে হয়তো শেয়ার করা বার্তা সংরক্ষণ করা জরুরি হতে পারে, রেকর্ড রাখতে হতে পারে।
আরেকটা ব্যাপার এখানে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি বিশ্বাস করেন, এমন মানুষের সঙ্গেই ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ ব্যবহার করা উচিত। কারণ, চাইলে মেসেজ সংরক্ষণের আরও উপায় আছে। কেউ ছবি তুলে রাখতে পারে, আবার স্ক্রিনশট নিতে পারে।
হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালে যেভাবে সুবিধাটি চালু করবেন
হোয়াটসঅ্যাপে যে চ্যাট বা গ্রুপে সুবিধাটি ব্যবহারের করতে চান, সেখানে ঢুকে ওপরের দিকে নাম লেখা অংশে ট্যাপ করুন। এরপর ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ অংশে ট্যাপ করে ‘অন’ করে দিন।
সিগন্যালে কন্টাক্ট বা গ্রুপ নামে ট্যাপ করে একটা সময় ঠিক করে দিন। ওই সময়ের পর বার্তা নিজে থেকে মুছে যাবে। এরপর ছোট একটি টাইমার আইকনে দেখাবে আপনি কত সময় ঠিক করে দিয়েছেন।
* সূত্র: ওয়্যার্ড সাময়িকী