পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন সময় হারানো গেছে কিংবা চুরি গেছে বিভিন্ন দেশ বা সংস্কৃতির অমূল্য বা অদ্ভুত কোনো সম্পদ। ঐতিহাসিক মূল্য বিচারে মহামূল্যবান এসব ধনসম্পদ কোনোটির হয়তো খোঁজ পাওয়া গেছে, কোনোটি হারিয়ে গেছে কালের গহ্বরে। চুরি যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া এমন পাঁচটি বিচিত্র সম্পদ নিয়ে আজকের আয়োজন।
কফিনের পরিণতি
প্রাচীন মিসরের রাজরাজড়াদের মমি রাখার জন্য পাথরের তৈরি বিশেষ ধরনের কফিনকে বলা হয় সারকোফ্যাগাস। ১৮৩০ সালে ইংরেজ সামরিক কর্মকর্তা হাওয়ার্ড ভাইস মিসরের গিজায় যে পিরামিডগুলো আবিষ্কার করেন, তার মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি হলো ফারাও মেনকাউরের পিরামিড। এর ভেতরে প্রাপ্ত সারকোফ্যাগাসটি ছিল সুসজ্জিত ও দৃষ্টিনন্দন। ১৮৩৮ সালে হাওয়ার্ড ভাইস জাহাজে করে এটি ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পথিমধ্যে সারকোফ্যাগাস বহনকারী জাহাজ বিয়াট্রিস সাগরে ডুবে যায়। জাহাজটির খোঁজ আর পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই পাওয়া যায়নি সারকোফ্যাগাসটিও।
সিন্দুক-রহস্য
সহস্র বছর ধরে মানুষের কাছে এক অপার বিস্ময় হয়ে আছে ‘আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট’। একে ঈশ্বরের সিন্দুকও বলা হয়। হিব্রু বাইবেল অনুযায়ী, সৃষ্টিকর্তার বিখ্যাত ১০ আদেশ (দ্য টেন কমান্ডমেন্টস) এতে সযত্নে রাখা আছে। মনে করা হয়, এই সিন্দুক যাঁর বা যাঁদের কাছে থাকবে, তাঁরাই হবেন পৃথিবীর সমস্ত শক্তির মালিক। কিন্তু কোথায় সেই সিন্দুক? তথ্য বলছে, রাজা সলোমন কর্তৃক নির্মিত মন্দিরে রাখা হয়েছিল এটি। কিন্তু খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৭ সালে সম্রাট দ্বিতীয় নেবুচাদনেজারের সেনাবাহিনী মন্দিরটি ধ্বংস করে ফেলে এবং জেরুজালেমের দখল নেয়। এরপর সেই বিখ্যাত সিন্দুকের কী হয়েছে কিংবা কোথায় আছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই ইতিহাসবিদদের কাছে।
শেক্সপিয়ারের হারানো বই
শেক্সপিয়ারের একটি বিখ্যাত কমেডি নাটক লাভস লেবারস লস্ট, যা লেখা হয়েছিল ১৫৯০ সালে। মনে করা হয়, এর সিকুয়েল হিসেবে লাভস লেবারস ওন লিখেছিলেন তিনি। এটি প্রকাশিত হয় ১৫৯৮ সালে এবং ১৬০৩ সাল পর্যন্ত বইটির বিক্রির কথা জানা যায়। কিন্তু এরপর আর এর একটি কপিও পাওয়া যায়নি। বোস্টন ইউনিভার্সিটির ইংরেজির অধ্যাপক উইলিয়াম ক্যারোল লাভস লেবারস লস্ট বইয়ের ভূমিকায় এমন কথাই লিখেছেন।
সিংহাসনের সন্ধান
বহুমূল্য মণিমুক্তা ও স্বর্ণনির্মিত ময়ূর সিংহাসন ভারতের ইতিহাসে তো বটেই, পৃথিবীর ইতিহাসেও এক বিস্ময়কর নিদর্শন। মোগল সম্রাট শাহজাহান নির্মাণ করেন এটি। জগদ্বিখ্যাত কোহিনুর হীরার ব্যবহার এই সিংহাসনের শোভা বৃদ্ধি করেছিল বহুগুণ। ১৭৩৯ সালে পারস্যের নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করেন এবং অন্যান্য মূল্যবান ধনরত্নের সঙ্গে কোহিনুর হীরা ও ময়ূর সিংহাসনটি লুট করে নিয়ে যান। ১৭৪৭ সালে নাদির শাহ আততায়ীর হাতে নিহত হলে হারিয়ে যায় এই সিংহাসন। চুরি হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে নাকি টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে, আসলে কী ঘটেছে ময়ূর সিংহাসনের ভাগ্যে, আজও তা অমীমাংসিত।
রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পদকটি সংরক্ষিত ছিল শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহশালায়। এখান থেকে ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য সামগ্রীর সঙ্গে মহামূল্যবান পদকটিও চুরি হয়ে যায়। এরপর পৃথিবীর বয়স বেড়েছে, গঙ্গায় জল গড়িয়েছে অনেক, পদক খুঁজে পেতে চেষ্টা-তদবির হচ্ছে বিস্তর, কিন্তু এখনো এই নোবেল চুরির কোনো কিনারা করে উঠতে পারা যায়নি।
* কবীর হোসাইন | লাইভসায়েন্স এবং থটকো অবলম্বনে
কফিনের পরিণতি
প্রাচীন মিসরের রাজরাজড়াদের মমি রাখার জন্য পাথরের তৈরি বিশেষ ধরনের কফিনকে বলা হয় সারকোফ্যাগাস। ১৮৩০ সালে ইংরেজ সামরিক কর্মকর্তা হাওয়ার্ড ভাইস মিসরের গিজায় যে পিরামিডগুলো আবিষ্কার করেন, তার মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি হলো ফারাও মেনকাউরের পিরামিড। এর ভেতরে প্রাপ্ত সারকোফ্যাগাসটি ছিল সুসজ্জিত ও দৃষ্টিনন্দন। ১৮৩৮ সালে হাওয়ার্ড ভাইস জাহাজে করে এটি ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পথিমধ্যে সারকোফ্যাগাস বহনকারী জাহাজ বিয়াট্রিস সাগরে ডুবে যায়। জাহাজটির খোঁজ আর পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই পাওয়া যায়নি সারকোফ্যাগাসটিও।
সিন্দুক-রহস্য
সহস্র বছর ধরে মানুষের কাছে এক অপার বিস্ময় হয়ে আছে ‘আর্ক অব দ্য কোভেন্যান্ট’। একে ঈশ্বরের সিন্দুকও বলা হয়। হিব্রু বাইবেল অনুযায়ী, সৃষ্টিকর্তার বিখ্যাত ১০ আদেশ (দ্য টেন কমান্ডমেন্টস) এতে সযত্নে রাখা আছে। মনে করা হয়, এই সিন্দুক যাঁর বা যাঁদের কাছে থাকবে, তাঁরাই হবেন পৃথিবীর সমস্ত শক্তির মালিক। কিন্তু কোথায় সেই সিন্দুক? তথ্য বলছে, রাজা সলোমন কর্তৃক নির্মিত মন্দিরে রাখা হয়েছিল এটি। কিন্তু খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৭ সালে সম্রাট দ্বিতীয় নেবুচাদনেজারের সেনাবাহিনী মন্দিরটি ধ্বংস করে ফেলে এবং জেরুজালেমের দখল নেয়। এরপর সেই বিখ্যাত সিন্দুকের কী হয়েছে কিংবা কোথায় আছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই ইতিহাসবিদদের কাছে।
শেক্সপিয়ারের হারানো বই
শেক্সপিয়ারের একটি বিখ্যাত কমেডি নাটক লাভস লেবারস লস্ট, যা লেখা হয়েছিল ১৫৯০ সালে। মনে করা হয়, এর সিকুয়েল হিসেবে লাভস লেবারস ওন লিখেছিলেন তিনি। এটি প্রকাশিত হয় ১৫৯৮ সালে এবং ১৬০৩ সাল পর্যন্ত বইটির বিক্রির কথা জানা যায়। কিন্তু এরপর আর এর একটি কপিও পাওয়া যায়নি। বোস্টন ইউনিভার্সিটির ইংরেজির অধ্যাপক উইলিয়াম ক্যারোল লাভস লেবারস লস্ট বইয়ের ভূমিকায় এমন কথাই লিখেছেন।
সিংহাসনের সন্ধান
বহুমূল্য মণিমুক্তা ও স্বর্ণনির্মিত ময়ূর সিংহাসন ভারতের ইতিহাসে তো বটেই, পৃথিবীর ইতিহাসেও এক বিস্ময়কর নিদর্শন। মোগল সম্রাট শাহজাহান নির্মাণ করেন এটি। জগদ্বিখ্যাত কোহিনুর হীরার ব্যবহার এই সিংহাসনের শোভা বৃদ্ধি করেছিল বহুগুণ। ১৭৩৯ সালে পারস্যের নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করেন এবং অন্যান্য মূল্যবান ধনরত্নের সঙ্গে কোহিনুর হীরা ও ময়ূর সিংহাসনটি লুট করে নিয়ে যান। ১৭৪৭ সালে নাদির শাহ আততায়ীর হাতে নিহত হলে হারিয়ে যায় এই সিংহাসন। চুরি হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে নাকি টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে, আসলে কী ঘটেছে ময়ূর সিংহাসনের ভাগ্যে, আজও তা অমীমাংসিত।
রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পদকটি সংরক্ষিত ছিল শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহশালায়। এখান থেকে ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য সামগ্রীর সঙ্গে মহামূল্যবান পদকটিও চুরি হয়ে যায়। এরপর পৃথিবীর বয়স বেড়েছে, গঙ্গায় জল গড়িয়েছে অনেক, পদক খুঁজে পেতে চেষ্টা-তদবির হচ্ছে বিস্তর, কিন্তু এখনো এই নোবেল চুরির কোনো কিনারা করে উঠতে পারা যায়নি।
* কবীর হোসাইন | লাইভসায়েন্স এবং থটকো অবলম্বনে