What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

গুরা গুরা... (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,618
Messages
122,285
Credits
313,977
DVD
Whiskey
SanDisk Sansa
SanDisk Sansa
Computer
Glasses sunglasses
গুরা গুরা...

দীপুদের স্কুলে ভর্তি হবার আগে অপু বেশ কিছুদিন সিলেটে বসবাস করে আসছিলো। সেখানে মাহী নামে তার এক বন্ধু ছিলো। হঠাতই সেদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে অপুর সাথে মাহীর দেখা হয়ে গেলো। দুই বন্ধুর দীর্ঘ বিরতির পর দেখা হওয়াতে অনেক সূখ দুঃখের কথা হলো রাস্তা চলতে চলতে। মাহীর বাবার চাকুরী সূত্রে মাহীরা ঢাকাতে অস্থায়ীভাবে এসেছে। বছর দুয়েক পরে আবার তারা সিলেটে চলে যাবে। মাহী কোন স্কুলে ভর্তি হয়েছে জানতে চাইলে মাহী জানায় এখনো সে ভর্তি হতে পারেনি, তবে একটা স্কুলে নাকি কথা-বার্তা প্রায় কমপ্লিট। এরপর সে যে স্কুলের নাম বললো সেটা অপুদের স্কুলের নাম। সব কিছু জানার পর অপু খুব খুশী হলো এটা জেনে যে তারা আবারো একসাথে এক স্কুলে পড়তে পারবে। তখন থেকেই মনে মনে চিন্তা করে রেখেছে সে মাহীকে কিভাবে তাদের মানে দীপু ছোটম, পাখিদের গ্রুপে পরিচয় করিয়ে দিবে। কিন্তু সেই সাথে একটা ভাবনা তাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। মাহী তো আঞ্চলিক ভাষা ছাড়া শুদ্ধ বাংলায় তেমন একটা কথা বলতে পারে না। শুদ্ধ বাংলার চর্চ্চা তার মাঝে একেবারে নেই বললেই চলে। বন্ধুদের সাথে না হয় সে দোভাষী হিসাবে চালিয়ে নিতে পারবে কিন্তু স্যারেদের সাথে কি করে মাহী কথা বলবে ? বিশেষ করে বাংলা স্যারের সাথে ? !!
যা হউক দুদিনের মাঝেই মাহী দীপুদের স্কুলে ভর্তি হয়ে গেলো। প্রথম দিনেই বাংলা স্যারের সাথে পরিচয় হবার পর মাহীকে খুব সাধারন এক দুইটা প্রশ্ন করে স্যার ছেড়ে দিলেন। অপু যেনো হাপ ছেড়ে বাঁচলো। মনে মনে হেসে বললো, যাক বাংলা স্যারের হাত থেকে আপাতত মাহী বেঁচে গেছে। পরের ক্লাস ইংরেজী। স্যার ঢুকতেই সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে মাহী স্যারের সাথে পরিচিত হয়ে নিলো।
স্যারও ছেলেটির আদব লেহাজে কিছুটা সন্তুষ্ট হয়ে চেয়ারে বসে মাহীকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করলেন,
স্যারঃ বলোতো বাবা, Horse মানে কি ?
মাহীঃ স্যার, গুরা...
মাহীর জবাবে স্যার কিছুটা থতমত খেয়ে প্রশ্ন করলেন,
স্যারঃ তবে Turn মানে কি ?
মাহীঃ স্যার, গুরা...
এবার স্যার বেশ কিছুটা বিরক্ত হয়ে বেশ কিছুটা রাগের সাথেই বললেন,
স্যারঃ ও... আচ্ছা। Turn মানে যদি গুরা হয়, তবে Powder মানে কি ?
মাহীঃ স্যার, গুরা...
এবার স্যার পুরা খেপে গিয়ে বললেন,
স্যারঃ এই, তুমি কি বলছো ? সব কিছুই কি গুরা নাকি ?
মাহীঃ না, স্যার ! একটা লাফাইন্না গুরা, একটা মুরাইন্না গুরা আর শেষেরটা স্যার গুরা গুরা...
 
বাক্য বিন্যাস

দীপুদের গ্রুপে বাংলা ব্যকরণে সব থেকে পাকা (বলা ভালো অতিশয় পাকা ) ছেলে হলো পাখি ! এই বিষয়ে সে এতোই পাকা যে ইতিমধ্যেই নিজস্ব একটা অভিধান রচনায় সে মনোনিবেশ করার ঘোষনা দিয়ে ফেলেছে। বন্ধুরা সবাই এই ব্যাপারে তাকে উৎসাহ দিতে কার্পন্য করেনি। ঘোষনা শোনার সাথে সাথেই সব বন্ধুরা তাকে অভিধান রচনার কাজে ঝাপিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়ে তাকে ব্যাপাক উৎসাহ দিচ্ছে। ছোটম আর অপু তো পারে না যেনো দিন কতকের মাঝেই পাখির কাছ থেকে অভিধান চেয়ে বসে...
দীপু সবার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে উৎসাহ দিয়ে গেলেও পাখির একটা পরীক্ষা নিবে বলে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো। কিন্তু পরীক্ষাটা নেয়া যায় কি করে বুঝতে পারছিলো না। এমতাবস্থায় জানে দোস্ত মনি আর যুবীর সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলো ইংরেজী স্যারের ক্লাসে পাখির একটা পরীক্ষা নিতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। সেদিন টিফিনের ফাঁকে দীপু, মনি আর যুবী মিলে পাখিকে ধরলো। তাদের মাঝে বেশ কিছুক্ষণ কথোপকথনের পর সিদ্ধান্ত হলো যা হবে আগামীকাল ইংরেজী স্যারের ক্লাসেই হবে...
পরদিন ইংরেজী ক্লাস চলছে। যথারীতি স্যার ছাত্রদেরকে গ্রামারের বিভিন্ন প্রশ্ন করে যাচ্ছেন আর ছাত্ররা তার সঠিক জবাব দিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্যার পাখির দিকে তাকিয়ে বললেন,
স্যারঃ পাখি, আমি যা জিজ্ঞেস করবো তার ভালো মতো উত্তর দিবে। এবার বলো, Verb কি ?
পাখিঃ Verb বলতে আসলে বাইসাইকেলের টায়ারের যে ভাল্ভ থাকে তাকে Verb বলা হয়।
স্যারঃ এটা কি বললে তুমি ?
পাখিঃ একটা সম্পূর্ণ বাক্য, স্যার।
স্যারঃ তুমি কি পাগল ?
পাখিঃ এটা একটা প্রশ্ন, স্যার।
স্যারঃ বেয়াদবি করবে না।
পাখিঃ এটা একটা উপদেশ, স্যার।
স্যারঃ থামো ! থামাও এসব কথাবার্তা !!
পাখিঃ এটা একটা আদেশ, স্যার।
স্যারঃ তুমি একটা অসভ্য ছেলে।
পাখিঃ এটা একটা মন্তব্য, স্যার।
স্যারঃ ক্লাস থেকে বের হয়ে যাও !
পাখিঃ এটা একটা নির্দেশ, স্যার।
স্যারঃ ও আল্লাহ ! এটা কি রকম ছেলে !!
পাখিঃ এটা বিস্ময়। স্যার !
স্যারঃ আয়, আল্লাহ ! এই ছেলেকে রহম করো, আল্লাহ !
পাখিঃ এটা প্রার্থনা, স্যার...
 
অপু ও সর্বনাম

সেদিন অপুর নামে পাড়ার কিছু ছেলে এসে নালিশ জানিয়ে গেছে তার বাবার কাছে। বাবা ব্যাপারটার কোনো তদন্ত ছাড়াই অপুকে শাস্তি দিয়ে দিয়েছেন। অপু কিছু বলতে চেয়েও পারেনি। তাতে শাস্তির পরিমান বেড়ে যাচ্ছে দেখে চুপ করে শাস্তি গ্রহণ করে নেয়াই শ্রেয় মনে করেছে। ঘটনার পর থেকেই অপুর খুব মন খারাপ। আর এই কারনে আজ স্কুলে আসতেও কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেছে। ক্লাস শুরুর আগে কারো সাথে কথা বলার সুযোগ ছিলো না। দেরী করে স্কুলে আসার কারনে সরাসরি ক্লাসে বসে যেতে হয়েছিলো। কিন্তু ঘটনাটা দীপু সহ অন্যান্য বন্ধুদেরকে না জানাতে পারায় মনে মনে কিছুটা হতাশ। ক্লাস শেষ হলেই তাদেরকে ব্যাপারটা জানাতে হবে। কিভাবে ঘটনাটা তাদেরকে জানাবে ক্লাসে বসে অপু সেটাই ভাবতেছিলো। বাংলা ব্যাকরণ ক্লাস চলছিলো তখন। অপুকে বেশ অন্যমনস্ক দেখে স্যার অপুর দিকে আঙ্গুল নির্দেশ করে জিজ্ঞাসা করলেন,
স্যারঃ এই, তুমি সর্বনাম পদের দুইটি উদহারণ দাও তো ?
স্যারের আঙ্গুলের দিকে তাকিয়ে অপু বেশ থতমতো খেয়ে গেলো। দাঁড়িয়ে স্যারকে প্রশ্ন করলো,
অপুঃ কে ? আমি ?
স্যারঃ খুব ভালো, হয়েছে। এবার তুমি বসো...
 

Users who are viewing this thread

Back
Top