What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি ! (1 Viewer)

SoundTrack

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
530
Messages
13,427
Credits
283,140
Recipe pizza
Loudspeaker
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি ! পর্ব ১ by Suranjon

(এই গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক, বাস্তবের সঙ্গে মিল থাকলেও সেটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। আরো একটি বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত, এই গল্পের প্রথম কয়েকটি পর্বে যৌনতার পরিমাণ বিশেষ থাকবে না। )

মূল গল্প টা শুরু হয়েছিল আজ থেকে ১০ বছর আগে। তখন এই গল্পের মুখ্য চরিত্র সুপ্রিয়া মালাকার একজন সাধারণ মধ্য বিত্ত গৃহ বধূ ছিলেন। বর্তমানে যার বয়স ৪১। যখনকার কথা বলছি উনি সাধারণ গৃহবধূ ছিলেন। স্কুল শিক্ষক স্বামী অরুণ কুমার মালাকার আর ছেলে রাহুল কে নিয়ে তার দিব্যি একটা সুন্দর সুখী ছোট সংসার ছিল। আমি রাহুল এই গল্পের কথক, বর্তমানে জীব বিদ্যা নিয়ে মাস্টার্স করছি, আজ আমার মায়ের জীবনের নাটকীয় টান টান রোমাঞ্চকর কাহিনী আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি।

আমার মায়ের খুব অল্প মাত্র ১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। আর বিয়ের ২ বছর পর আমি হই। আমাদের ৩ জনের সংসার খুব সুখের ছিল। মা একজন সাধারণ গৃহবধূ ছিল, আর বাবা একজন হাই স্কুল টিচার। বাবা আর মায়ের মধ্যে খুব ভালোবাসা ছিল। তাদের একমাত্র ছেলে হোয়ায় আমাকে খুব আদর দিয়ে যত্নে মানুষ করেছিল। মা খুব লাজুক ঘরোয়া টাইপ বউ ছিল। বাড়ির চৌহদ্দির বাইরে বেশি মেলামেশা , প্রয়োজন ছাড়া একটার বেশি দুটো কথা কোনদিন সে বলত না। মার স্বভাব আচার ব্যাবহার খুব ই সুশীল আর ভদ্র ছিল। সে খুব বেশি সাজগোজ করা পছন্দ করতো না।

জন্মের পর থেকে আমি আমার মা কে সাধারণ সুতির আট পৌড়ে শাড়ী পড়তেই দেখে এসেছি। যদিও মা কে দেখতে অপরুপ সুন্দরী ছিল।তবুও মা র সেই বিষয় নিয়ে কোনো অহংকার ছিল না। নিজের পোশাক আশাক নিয়ে সে সচেতন ছিল। শাড়ী যাতে স্লীপ না করে কাধের উপর সেফটি পিন দিয়ে পড়তো। আমার মা কে আমি আমার বন্ধুদের মা দের মত আর প্রতিবেশী আণ্টি দের মত কোনোদিন শাড়ী ছাড়া অন্য পোশাক মানে সালওয়ার কামিজ, নাইটি ইত্যাদি পড়তে দেখি নি। একটা সময় পর আমার বাবা মা কে শাড়ী ছেড়ে অন্য ড্রেস পড়তে উৎসাহ দিত, নিজে পছন্দ করে কিনে এনে দিত কিন্তু মা লাজুক প্রকৃতির হাওয়ায় সেসব পোশাক তার আলমারিতে জমিয়ে রেখে দিত, পড়তে পারত না।

মা অপরুপ রুপসি হওয়ায় মার কাছে একাধিক বার অভিনেত্রী হবার পর প্রপোজাল এসেছে। বাবার এক বন্ধু ছিল ফিল্ম লাইনের সঙ্গে যুক্ত সে অনেকবার আমাদের বাড়িতে এসে মা কে অনুরোধ করেছে, বাবাও কনভিন্স ছিল। কিন্তু মা হেসে তাদের প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছে। মা নিজের দায়িত্ব আর কাজ বলতে বুঝত ঘর সংসার সামলানো, আমাদের খেয়াল রাখা। আমাদের তিন জনের জীবন খুব সুখে কাটছিল, এমন সময় আজ থেকে বছর দশেক আগে একটা ঘটনা আমাদের জীবন কে একেবারে পাল্টে দিয়ে রেখে দিল। যার ফলে আমার মা আস্তে আস্তে আমাদের থেকে দূরে সরে গেলো সেই গল্প তাই বলবো আজ।

আমার মা সুন্দর হাওয়ার পাশাপাশি খুব রক্ষণশীল প্রকৃতির ছিল। সেই সময় তার বডি স্টেট ছিল 34-28-32, নিজের হাতে সব গেরস্থালির কাজ করবার ফলে মা তার ফিগার টা দারুন ভাবে ধরে রেখেছিল। ফর্সা তক তকে গায়ের রং, হাসলে মুখে একটা লালচে আভা ছড়িয়ে পরতো। আমি একটা নামী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়তাম। সেখানে আমার বন্ধুদের মারা আণ্টি রা সব চুড়িদার টপস ট্রাউজার পরে ওদের স্কুলে ছাড়তে আসতো। তারা খুব আধুনিক চাল চলন এ বিশ্বাসী ছিল।

কিন্তু আমার মাই ছিল একমাত্র ব্যতিক্রম যে কেবল মাত্র রক্ষণশীল নারীর মতন গুছিয়ে শাড়ী আর ফুল স্লিভ ব্লাউস পরে আমার স্কুলে আসতো। আমার বন্ধুর মায়েরা এই জন্য মা কে আড়ালে ব্যাক ডেটেড বলে ব্যঙ্গ করতো.. বাবার কলিগের স্ত্রীরাও শাড়ী ছেড়ে অন্যান্য আধুনিক ড্রেস পড়তো। তাই ওদের দেখাদেখি বাবাও মাঝে মধ্যে মায়ের জন্য আধুনিক স্লিভলেস চুড়িদার আর লেগিংস নাইটি কিনে আনত। কিন্তু মা কে সেগুলো কোনোদিন পড়াতে পারত না। বাবা মনে মনে মা কে বউ হিসাবে পেয়ে ভীষণ গর্ব অনুভব করতো।.

এভাবে আমাদের দিন সুখে কাটছিল, আমি নামী স্কুলে ভর্তি হোয়ায় সংসার খরচ অনেক রাই বেড়ে গেছিলো। মাঝে মাঝেই আমার স্কুল ফিস বাড়ত। তার ফলে আমাদের সংসারে মাসের শেষের দিকে একটু টানাটানি থাকতো। এটা নিয়ে বাবা মাঝে মধ্যে দুঃখ প্রকাশ করত। মা বাড়িতে বসেই সেলাই এর কাজ করে বাবা কে হেল্প করতো। মার সেলাই এর হাত ছিল দুর্দান্ত। পাড়ার মাসী আর কাকিমা রা মার কাছ থেকে ব্লাউজ চুড়িদার এসব বানাতো। এভাবে আমাদের দিন চলছিল। এমন সময় ঘটে সেই ঘটনা টা যা আমাদের জীবনের গতি প্রকৃতি পাল্টে দেয়।

এই সময় আমাদের বাড়ির ঠিক পাশের ফ্ল্যাটে একজন আধুনিকা ব্যাক্তিত্ব ময়ী ভদ্রমহিলা ভাড়া আসে। ওনার নাম ছিল মিসেস রুচিকা সিনহা। আমরা প্রথমে জানতাম না উনি ঠিক কি কাজ করতেন। বাড়ির বাইরে অধিকাংশ সময় কাটাতেন। ওনার একটা প্রাইভেট কার ও ছিল। প্রতিদিন বেশ রাত করে পার্টি ক্লাব সমস্ত সেরে ফিরতেন। মাঝে মধ্যে ওনার নিজস্ব ফ্ল্যাট থেকেও পার্টি মিউজিক এর আওয়াজ ভেসে আসতো। একদিন মার সেলাইয়ের সুনাম শুনে একটা দামি ট্রান্সপারেন্ট শাড়ী র সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজ বানাতে এলেন। মা রূচিকা আন্টির ফিরিস্তি শুনে বললেন, ” দিদি, আপনি যা বলছেন সেরকম ব্লাউজ আমি বানাতে পারবো না। কোনোদিন বানাই নি। তাছাড়া এরকম ব্লাউজ পড়ার থেকে কিছু না পরলেই হয়, তাহলে আপনি যা যা দেখাতে চাইছেন আরো পরিষ্কার দেখাতে পারবেন।”

রুচিকা আণ্টি মার কথা শুনে হেসে উঠলো। সে বলল তুমি খুব ইনোসেন্ট সুপ্রিয়া, বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে তোমার আন্দাজ নেই, ওখানে রেসে টিকে থাকতে গেলে তোমাকে সব কিছু করতে হবে বুঝলে, আস্তে আস্তে তুমিও আমার মত এসব কিছু শিখে যাবে হি হি হি….”।

জানিনা কিভাবে এরপরেও মার সঙ্গে ঐ পাশের ফ্ল্যাটের রুচিকা আন্টির দিব্যি ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। উনি ঘন ঘন আমাদের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। মার মতন রক্ষণশীল সরল স্বভাবের মহিলাও তার সঙ্গ পেয়ে রুচিকা আন্টির মন পছন্দ সব পিঠ খোলা হাত কাটা মিনি লেংথ ডীপ কাট লো কাট সব ব্লাউজ বানাতে শুরু করে, এমন কি বিকিনির সঙ্গে কাপড়ের লেস জুড়ে দিয়ে তাকে ব্লাউজের শেপ দেওয়ার কাজ ও শুরু করে। রুচিকা আণ্টি সব অর্ডার আর মেটেরিয়াল জোগাড় করে দিত।

এই ধরনের আধুনিক পোশাক তৈরি শুরু করবার সাথে মার রোজগার ডাবল হয়ে যায়। মা কে কয়েক টা দামী শাড়ী ও রুচিকা আণ্টি গিফট করেছিল। মার বানানো এমন ই এক ব্লাউজ নিয়ে রুচিকা সিনহা একদিন সকাল সকাল মার কাছে এসে হাজির হয়। আর এসেই ব্লাউজ টা মায়ের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে, এটা কি বানিয়েছ? ফিটিংস ই হচ্ছে না। তোমার ও হবে না। পরে দেখ।” মা ব্লাউজ টা হাতে নিয়ে বলল, এরকম তো হওয়ার কথা নয় দিদি। ভালো করে দেখেই তো বানালাম। রুচিকা আণ্টি রিপ্লাই দিয়ে বললো, ” চলো তোমার রুমে, একবার পরে দেখাও। তবে বুঝবো” এই বলে মা কে হাত ধরে টেনে পাশের রুমের ভেতর নিয়ে গেলো।

মা রূচিকা সিনহার সামনেই চেঞ্জ করে নিজের সাধারণ ব্লাউজ টা পাল্টে আন্টির আনা ঐ লো কাট ব্লাউজ টা পড়ল। বাড়ির ভেতর থাকা টে অন্তর্বাস পড়া ছিল না। খালি গায়ের উপরে ঐ ব্লাউজ টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের অপরুপ সুন্দর ব্রেস্ট আর বুকের স্তনের উপরের অংশ সহ বিভাজিকা সামনে চলে আসলো। আণ্টি কে পরে দেখিয়ে বললো দেখেছেন দিদি, ঠিক থাক ই হয়েছে, আপনি বললে আমি আরেকটু লুজ করে দেবো।” রুচিকা আণ্টি মায়ের কাধে হাত বুলিয়ে বলল,” ওয়াও কি সুন্দর লাগছে, তুমি সব কিছু ঢেকে রাখো কেন বলো তো। না সুপ্রিয়া এটা আর আমার জন্য ঠিক করিয়ে লাভ নেই। এটা তোমায় দারুন মানাচ্ছে। তাই এটা তুমি রেখে দাও। আমার দেওয়া শাড়ী গুলোর সঙ্গে এটা দারুন ম্যাচ করবে। উহু না না, আমি কোনো কথা শুনবো না। এটা তোমাকে পড়তেই হবে।” মা বাধ্য হয়ে রুচিকা আণ্টি র অনুরোধ মেনে নিল। আমি হতবাক হয়ে দেখলাম আমার বাবা বেশ কয়েক বছর ধরে কাছে থেকে যেটা করতে পারে নি রুচিকা আণ্টি এসে খুব সহজেই সেটা করে দিয়ে বেরিয়ে গেলো। মা রুচিকা সিনহার কথা মেনে এরপর থেকেই ঘরে আর বাইরে শাড়ির সঙ্গে স্লিভলেস ব্লাউজ পড়া ধরলো।

শুধু তাই নয় তার সঙ্গে ম্যাচিং আধুনিক দামী রঙিন ইনার ওয়ার কিনে ব্যাবহার করা শুরু করলো। মার ড্রেস কোড এ এই ছোট পরিবর্তন টা করবার সাথে সাথে মার সৌন্দর্য যেনো আরো বেড়ে গেছিলো। আগে পাড়ায় ছেলে ছোকরা রা যারা মা কে সন্মানের চোখে দেখত তারাই সেই একই মা কে লোলুপ দৃষ্টিতে মাপতে শুরু করলো। তাদের চোখ মার বুক পেট আর পিঠের উপর ঘোরা ফেরা করতে আরম্ভ করলো। মা প্রথম প্রথম এসব জিনিস নিরন্তর দেখে শুনে ভীষন অস্বস্তি বোধ করতো।

কিন্তু রুচিকা আন্টির কথা টে এসে এসব পুরুষ দের নজর ইগনোর করা আরম্ভ করেছিল। নিজের রূপের সঠিক ভাবে এক্সপোজ করার মধ্যে যে কি নিদারুণ বিপদ লুকিয়ে ছিল সেটা তখন আমার মায়ের কোনো ধারণা ছিল না। পাশের ফ্ল্যাটের রুচিকা আন্টির সঙ্গে আমার মায়ের খুব ভালো বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক হয়ে যায়। ওরা অল্প দিনের মধ্যে সম্ভোধন টা আপনি থেকে তুমিতে নামিয়ে আনে। রুচিকা আণ্টি একাই থাকতেন। আমরা জেনেছিলাম, ওনার হাসব্যান্ড ফিল্ম প্রোডাকশনের সঙ্গে যুক্ত। সেই মুহূর্তে উনি মুম্বাই টে একটা টেলি সিরিজ প্রোডাকশন এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এছাড়াও তিনি প্রফেশনাল মডেলিং ফটোগ্রাফার হিসেবেও বেশ নাম করেছিলেন। মার স্লিভলেস ব্লাউজ পড়া আরম্ভ করার কিছু সপ্তাহ পরে রুচিকা আন্টির হাসব্যান্ড মুম্বাই থেকে ফিরলে, ওদের বাড়িতে একটা প্রাইভেট ডিনার পার্টি আয়োজন করা হয়। রুচিকা আণ্টি নিজে এসে আমার বাবা কে আর আমার মা কে ঐ ডিনার পার্টি টে ইনভাইট করে যান। মা আর বাবাও খোলা মনে ওদের নিমন্ত্রণ স্বীকার করে। ওদের ফ্ল্যাটে গিয়ে রুচিকা সিনহার হাসব্যান্ড এর সঙ্গে প্রথম বার আমাদের আলাপ হয়।

উনি বেশ মিশুকে আর আমুদে মানুষ ছিলেন। অল্প সময়ের ভেতর মা কে বৌদি আর বাবা কে দাদা বলে একেবারে আপনজন এর রাডারে নিজেকে নিয়ে আসেন। উনি একজন সফল মডেলিং ফটোগ্রাফার ছিলেন।।সেই আঙ্গিক থেকে আমার মায়ের রূপের উনি খোলাখুলি প্রশংসা করেন , উনি এটা ও জোর গলায় বলে দেন যে। মা যদি চায় সে খুব অল্প সময়ে একজন সফল মডেল অ্যাকট্রেস হিসাবে প্রচুর নাম আর পয়সা করতে পারবে। তখনো আমরা কেউ ব্যাপার টা শেরিয়াস লি নেই নি। মা লজ্জায় হেসে ব্যাপার টা বলা মাত্র উড়িয়েই দিয়েছিল।
 
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ২

ডিনার পার্টির পর একসপ্তাহ ও কাটলো না। রুচিকা আন্টির হাসব্যান্ড ভদ্রলোক তার স্ত্রী কে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এমন একটা লোভনীয় প্রস্তাব দেয়। যেটা টে তখন না করে দিলে আমার আজ মনে হয় আমাদের পরিবার টা এইভাবে ছার খার হয়ে যেত না। রুচিকা আন্টির হাসব্যান্ড আমার বাবাকে বললেন, দাদা যদি কিছু মনে না করেন আপনাদের ফ্যামিলি ইনকাম মাসে কত হয় বলতে পারেন। বাবা সেটার উত্তর দিতে ঐ আঙ্কল আবার বললো, ” বুঝতেই পারছি, কি কষ্ট করে আপনাদের চালাতে হচ্ছে, আচ্ছা আপনাদের এই পুরনো বাড়ি ছেড়ে আমাদের মত একটা ঝা চক চকে নতুন ফ্ল্যাটে উঠে আসতে মন চায় না। শুনেছেন বোধ হয় ঐ ফ্ল্যাট টা গেলো সপ্তাহে আমরা কিনে নিয়েছি।”

বাবা: হ্যা ইচ্ছা তো করে ,কিন্তু টাকা কোথায় পাবো। প্রভিডেন্ট ফান্ডের কটা টাকা সম্বল।।টেও সুপ্রিয়া সেলাই করে চালিয়ে নিচ্ছে বলে কিছুটা বাঁচোয়া। এখন বাবু বড়ো হচ্ছে। আর আমাদের এই একতলা বাড়িতে ঘর ও কম।” আঙ্কল: আপনি চাইলে আমাদের আবাসনে নতুন ফ্ল্যাট মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বুক করতে পারেন। তার জন্য বৌদি যে আই মিন আপনার মিসেস কে কাজ করতে হবে। আপনাদের কোনো অভাব থাকবে না। গাড়ি বাড়ি ব্যাংকে টাকা সব হবে।”
বাবা: সুপ্রিয়া কি কাজ করবে? O তো পড়াশোনা খুব বেশি দূর করে নি। জব পেলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
আঙ্কল: এটা একটা বিশেষ ধরনের জব। এখানে কাজের নির্দিষ্ট কোনো ১০ টা পাঁচ টা r সময়ের হিসেব নেই।
বাবা,: কি কাজ শুনি না।

আঙ্কল : দাদা যদি কিছু মনে না করেন আমি বৌদি কে নিয়ে একটা মডেলিং ফোটো শুট করতে চাই। ওনার মত ফ্রেশ ঘরোয়া একটা সুন্দর মুখ একটা অ্যাড ক্যামপেইনে লাগবে। যেটা আমি কিছুতেই পারছি না। বৌদি এই প্রোজেক্ট টায় অটোমেটিক চয়েজ মাত্র ১-২ ঘণ্টার কাজ। প্লিজ না করবেন না। ফটো শুট টা আমাদের ফ্ল্যাটেই হবে। দুটো পারফেক্ট শটের জন্য প্রোজেক্ট টা আছে। আমি চাই বৌদি কে এখানে একটা চান্স দিতে তারপর বৌদি যদি কমফোর্ট ফিল করে সে ক্যারি অন করবে আর না করলে আই প্রমিজ আর কোনোদিন এই বিষয়ে আপনাদের কে বিরক্ত করবো না।” বাবা এসব কথা শুনে অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকালো। মা মাথা নাড়ছিল। সেটা দেখে রুচিকা আণ্টি মায়ের কাছে এসে বললো, ” তুমি ভয় পাচ্ছো কেন, একবার ট্রাই করতে দোষ কি? তুমি সেলাই করে যে টাকা টা মাস গেলে সংসারে দাও তার ১০ গুন টাকা তুমি ঐ দু ঘণ্টা ক্যামেরার সামনে দাড়িয়ে রোজগার করতে পারবে। এমন সুযোগ আর পাবে? নেহাত হাতে একদম সময় নেই বলে নতুন মডেল না খুঁজে তোমার কাছে ছুটে এসেছি না হলে এই কাজ টা করতে যেকোনো মডেল মুখিয়ে থাকতো।” মা রুচিকা আন্টির কথা শুনে চুপ করে ছিল। আঙ্কল বাবা কে বোঝাতে লাগলো,” মার মতন ঘরোয়া সুন্দর ফ্রেশ একটা মুখ তার অ্যাড ক্যাম্পেইন এ কত ভালো ভাবে মানিয়ে যাবে। এই প্রজেক্টে মার দুটো ছবি মুম্বাই থেকে প্রকাশিত একটা প্রথম সারির ফ্যাশন এবং ওম্যান ম্যাগাজিন এ অ্যাড পিকচার হিসাবে publish hobe। সব থেকে বড় কথা এই শুটিং এর জন্য কোনো স্টুডিও তে যেতে হবে না। আঙ্কল দের ফ্ল্যাটেই ফোটো শুট করবার সব রকম ব্যাবস্থা ছিল।

আমার মা বাবার একটা অদ্ভুত ভালো গুন ছিল কেউ বিপদে পড়ে তাদের দুয়ারে সাহায্য চাইতে এলে কাউকে ফেরাতে পারতো না। এই ক্ষেত্রে ও সেটাই হলো। বাবা আঙ্কল কে জিজ্ঞেস করেছিল, সুপ্রিয়া র জায়গা টে সত্যি কি আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না? আঙ্কল রিপ্লাই দিল, ” বিশ্বাস করুন দাদা, আমার এই কাজ টা এখন শুধু মাত্র বৌদি উদ্ধার করতে পারবে। এই কন্টেন্ট টায় মডেল হিসাবে দারুন মানাবে। প্লিজ আমাকে না করবেন না দাদা। বিশ্বাস করুন এক মাস ধরে খুঁজে বৌদির মতন একটা ফ্রেশ সুন্দর ঘরোয়া মুখ খুঁজে পাচ্ছি না। আর মুম্বাই এর অফিস থেকে জানিয়ে দিয়েছে আর তিন দিনের মধ্যে এই ফোটো গুলো না তুলে পাঠালে, ঐ লেডিস ওয়ার প্রস্তুত কারক সংস্থা র সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। কোম্পানির অনেক টাকা লোকসান হয়ে যাবে। সময়ে অ্যাসাইনমেন্ট শেষ না করলে আমার নামে বাজে রিপোর্ট যাবে। আমি আর কোনো বড়ো কাজ পাব না। আমি পথে বসে যাবো। এই বলে আঙ্কেল ড্রামা করতে করতে বাবার পায়ের কাছে বসে গেল। মা বাবা যত বলতে লাগলো, -“আরে করছেন কী করছেন কী” ততই আঙ্কল দের কাকুতি মিনতি বেড়ে যাচ্ছিল। শেষে বাবা ওদের আনা মার মডেলিং করবার প্রপোজাল এ রাজি হলো।

আমার মা বাবার ডিসিশনে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ” এটা তুমি কি বলছো? আমি আর মডেলিং অসম্ভব।” বাবা বললো, ” দেখো সুপ্রিয়া ওনারা আমাদের প্রতিবেশী। বিপদে পরে সাহায্য চাইছেন। আমাদের পাশে দাড়ানো উচিত। তুমি যদি পারো তাহলে ওদের অবশ্যই এই কাজ টা করে সাহায্য কর।” মা ও কনভিন্স হলো একবার চেষ্টা করতে। রুচিকা আন্টিরা আমাদের পরের দিন ই সকাল ৯ টা নাগাদ ওদের ফ্ল্যাটে ইনভাইট করলেন। ছবি গুলো জমা দেওয়ার ডেডলাইন সামনে থাকায় ওরা আর সময় নষ্ট করলো না। সেদিন বসেই ঠিক হলো সকাল নটার মধ্যে ওদের ফ্ল্যাটে গিয়ে ফোটো শুট এর কাজ টা সেরে আমরা রুচিকা আণ্টি দের সাথে একেবারে লাঞ্চ করে বাড়ি ফিরবো। কথা মত আমরা রেডী হয়ে নেক্ট দিন সকাল ৯ টার মধ্যে ব্রেক ফাস্ট সেরে রুচিকা আণ্টি দের ফ্ল্যাটে এসে উঠলাম। সেই ফ্ল্যাটে আমরা ছাড়াও আরো ৫ জন উপস্থিত ছিল।

তারা ছিল আংকেল রুচিকা আণ্টি , একজন মেক আপ আর্টিস, একজন হেঁয়ার ড্রেসার, আর একজন লাইট মেন। আমরা ওদের ফ্ল্যাটে আসতেই রুচিকা সিনহা মা কে নিয়ে একটা আলাদা রুমে নিয়ে গেল। সেখা নে , মেক আপ আর্টিস্ট, হেঁয়ার ড্রেসার আর আণ্টি এই তিনজনে মিলে একঘন্টা ধরে মা কে ঐ ফোটো শুটের জন্য রেডী করলো। মার দুটো ডিফারেন্ট লুকে ফোটো তোলা হবে স্থির হয়েছিল। সবার আগে মা কে একটা পেপারে সাইন করালো, বাবা যখন জিজ্ঞেস করলো এটা আবার কেনো। তখন ওরা বলেছিল, এটা জাস্ট একটা ফর্মালিটি, মা যে সেচ্ছায় এই কাজ টা করছে, আর এই ফটো গুলো র কপিরাইট কেবল মাত্র ওদের কোম্পানির সেটা বুঝানোর জন্য কাজ শুরুর আগে এতে একটা সাইন করতে হবে। মা বাবা ওদের কথা বিশ্বাস করে ভালো করে কি লেখা আছে না দেখেই সাইন করে দিল। লাল পাড়ের সাদা শাড়ী ডিজাইন করা লাল সিল্কের হাফ স্লিভ ব্লাউজ তার সঙ্গে মানানসই হালকা গয়না পড়া লুকে ছবি তোলা স্টার্ট হলো। ঐ লুক টায় মা কে বেশ সুন্দর আর পবিত্র লাগছিলো। প্রথম প্রথম মার ভীষন অস্বস্তি হলো। তবুও হাসি মুখে আংকেল এর কথা মত একটার পর একটা পোজ দিয়ে যাচ্ছিল। প্রথমবার মডেলিং ফোটো শুট করলেও আমার ধারণায় মা বেশ ভালো কাজ করছিল।

ফটো তুলতে তুলতে মায়ের প্রাথমিক জড় তা কাটতেই আংকেল মা কে দিয়ে সেক্সী পোজ দেওয়ার নির্দেশ দিতে শুরু করলো। কুড়ি মিনিট ছবি তোলার পর আংকেল ফটোশুটের এঙ্গেল পরিবর্তন করলো। এতক্ষন মার দাড়ানো অবস্থায় ফোটো তোলা হচ্ছিলো। এইবার ফ্রেমের মাঝে একটা সুদৃশ্র কাঠের সোফা নিয়ে আসা হলো। ঐ সোফার উপর মা কে অর্ধেক বসানো অর্ধেক শোওয়া অবস্থায় সেট করে ফের ফোটো শুট আরম্ভ হলো। মার চুল হাওয়ায় উড়ছে এটা দেখানোর জন্য আংকেল একটা স্ট্যান্ড ফ্যান চালিয়ে দিলেন। ফ্যান অন করার পর দেখা গেলো, এটে শুধু মার চুল উড়ছে তাই না তার সাথে সাথে শাড়ির আঁচল ও বুকের উপর উড়ে সরে যাচ্ছে। আর মার ব্লাউজ টা তার বুকের উন্নত ভিভাজীকা সমেত ক্যামেরার লেন্সে র সামনে উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপার টা দেখে মা তো অস্বস্তি টে পড়েছিল সাথে আমার বাবাও লজ্জায় আর অপমানে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিয়েছিল। রু চিকা আণ্টি দের অবশ্য এই সবে কোনো হোল দোল ছিল না। ১০ মিনিট এই ভাবে চলবার পর আমার মা প্রথমবার ফোটো শুট চলা কালীন অবজেকশন করলো।

আংকেল সেটা ম্যানেজ করে ফোটো শুট চালু রাখলো। এইভাবে প্রথম খেপ এ একঘন্টা শুট করার পর আংকেল একটা ব্রেক নিলেন। ব্রেক চলাকালীন মা কে আবারো পাশের ঘরে গিয়ে চেঞ্জ করে আসতে হলো। এইবার অন্য লুকে অন্য ড্রেস পরা অবস্থায় ফোটো নেওয়া হবে এইরকম প্ল্যান ছিল। পরবর্তী বারের ড্রেস কোড ছিল একটা ব্রাইডাল লুকের শাড়ি ম্যাচিং স্লিভলেস ব্লাউজ। ওটা পড়ার পর মাকে নব বধূদের মতন সুন্দর লাগছিল। সোফার একপাশে একটা বালিশ নিয়ে আসা হলো। তাতে এক হাত সাপোর্টে রেখে প্রথমে বসে তারপর আধ শোওয়া অবস্থায় পোজ দিয়ে মার ফোটো নেওয়া শুরু হলো। আঙ্কল মায়ের বুক এর স্তন আর ভিভাজীকা স্পষ্ট ফুটে তুলবার জন্য কি একটা জেল স্প্রে করে নেওয়ালেন। এটে বুকের মেক আপ আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠলো।

কুড়ি মিনিট ব্রেক এর পর যখন আবার ক্যামেরা অন হলো প্রথমে ফ্রন্ট সাইড এ ফোটো তুলবার পর, আংকেল মা কে শাড়ি টা সামান্য সরিয়ে পিঠ ক্যামেরার লেন্সের সামনের দিকে পোজ দিতে বললো। মা অবজেকশন জানালো, এভাবে পোজ দিতে অসুবিধা ছিল। শাড়ির আঁচল তাও অনেক টা ছোট ছিল, বুক ঢাকতে গেলে কাধ বেরিয়ে আসছিল। ব্লাউজ টা র সেপ এর দিকে সবার চোখ গেলে মার অবজেকশন এর কারণ পরিষ্কার হলো। ব্লাউজ টা র পিছন পিঠের অংশ টা মাত্র এক ইঞ্চির ও কম এক ফালি একটা সরু কাপড় দিয়ে কভার ছিল। যেটা থাকা না থাকা দুই ই সমান ছিল। মা পেশাদার মডেল ছিল না । সবার সামনে নিজের পিঠ উন্মুক্ত দেখাতে ইতস্তত বোধ করছিলো। তার সংস্কার মূল্যবোধ তাকে এটা করতে বাধা দিচ্ছিল। আঙ্কল ছবি তুল বার জন্য একেবারে অনড় ছিলেন। মার মুখ লজ্জায় আর অসংকোচে লাল হয়ে গেছে দেখে বাবা আর থাকতে না পেরে আংকেল কে বলল প্লিজ মিস্টার সিনহা সুপ্রিয়া এসব ভাবে ছবি তুলতে অভ্যস্ত নয়। এইবার ওকে ছেড়ে দিন, অনেক ক্ষন ধরে ও আপনার কথা শুনে কাজ করেছে।”

আংকেল স্মার্টলি সাবজেক্ট টি সামলালো, সে বাবা কে বললো, ” আপনি একদম ভাববেন না মিস্টার মালাকার, প্রথম প্রথম বিগিনার লেভেলে এসব প্রবলেম হয়, কাজ টা পারফেক্ট না হলে, স্পন্সর কোম্পানি রা এত পরিশ্রমের কোনো দাম দেবে না। বৌদি কে তো এসব বিষয়ে মানিয়ে নিতে হবে। আপনি ভাববেন না। আর দশ মিনিট করেই ছেড়ে দেবো। ফোটো শুট আবারো শুরু হলো, কিন্তু মা কিছুতেই আমাদের সকলের সামনে ঐ ওপেন back পোজ দিতে পারলেন না। শেষে আংকেল আমার বাবা কে বললেন, প্লিজ দাদা কিছু মাইন্ড করবেন না। আপনি একটু বাবু কে নিয়ে পাশের রুমে যাবেন। রুচিকা তুমি সবাই কে নিয়ে একটু পাশের রুমে যাও, শুধু আমি আর লাইট মান রতন দা এখানে থাকবো। একচুয়ালী আপনারা সবাই আছেন বলে সুপ্রিয়া বৌদি সহজ হতে পারছে না। আপনারা একটু আমাদের স্পেস ছেড়ে দিলে আমরা তাড়াতাড়ি ফটোশুট টা শেষ করে নেবো। বাবা শান্তিপ্রিয় মানুষ হাওয়ায় অশান্তি এড়াতে আংকেল এর এই প্রস্তাবে না করলো না । আর মাও রূচিকা আণ্টি দের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবার ভয়ে মুখ বুজে আংকেল এর সাথে কাজ টা শেষ করবার দিকে মনোযোগ দিল। আমাদের সবাই পাশের ঘরে আসার পর, আংকেল খুব দক্ষতার সঙ্গে মায়ের কাছ থেকে একটার পর একটা পারফেক্ট শট তার ক্যামেরার সাহায্যে তুলে নিলেন। আঙ্কল বলেছিল দশ মিনিট লাগবে, আসলে লেগে গেলো ৩০ মিনিটের ও বেশি। শুট কমপ্লিট হওয়ার পর আংকেল এর ডাক শুনে আমরা যখন ফটোশুটের জায়গায় এলাম। মা উত্তেজনায় আর পরিশ্রমে পুরো ঘেমে গিয়েছে। মার চোখ মুখ দেখে আমি আন্দাজ করতে পেরেছিলাম আংকেল এর কাজ টা মার মোটেই সুখকর হয় নি। মডেলিং কাজের অভ্যাস না থাকায় প্রতি মুহূর্তে তাকে নিজের মূল্য বোধ আর সংস্কার এর সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে।

(চলবে…)
 
গৃহবধু যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ৩

মায়ের ফটো শুট শেষ হতে হতে সেদিন বেলা ২ টো বেজে গেছিলো। আঙ্কল খুব সন্তুষ্ট হয়েছিলেন মার কাজে। মা ওনাকে বিশেষ অভিযোগ করবার জায়গা দেয় নি। । ফোটো শুট শেষ হবার পর রূচিকা আণ্টি লাঞ্চ এর ব্যাবস্থা করলেন। ফটো শুট এর কিছু বিষয়ে নিয়ে খুশি না হওয়ায় মা আপসেট হয়ে গেছিলো। লাঞ্চ এ বিশেষ কিছু খেলো না। যাই হোক বিকেল বেলা ওদের বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় সিনহা আংকেল মার হাতে একটা সাদা এনভেলাপ ধরিয়ে দিলেন। ওর ভেতরে কুড়ি হাজার টাকা অঙ্কের একটা চেক ছিল। ওটা ছিল মায়ের মডেলিং ফটো শুটের পারিশ্রমিক। মা আর বাবা দুজনেই এই কাজের জন্য পারিশ্রমিক নিতে অস্বীকার করেছিল। কিন্তু মিস্টার সিনহা কিছুতেই তার মার চেক টা ফেরত নিলেন না। এক বেলা কাজের পারিশ্রমিক এত টাকা হতে পারে এটা দেখে মা তো বটেই বাবারও চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেছিলো। আংকেল বলেছিল এত কিছুই না। মা যদি চায় এর থেকে অনেক গুন টাকা সে তার সৌন্দর্য কে ক্যামেরার সামনে ব্যাবহার করে কামাতে পারে।

এই ফটো শুটের পর মায়ের খাতির দারি রুচিকা আন্টির কাছে অনেক গুণ বেড়ে গেলো। মা ভেতর ভেতর এই মডেলিং এর ব্যাপার টা নিয়ে অনুতাপ ছিল দ্বিধা ছিল। রুচিকা আণ্টি প্রতিদিন এসে মা কে সমানে মডেলিং টা কন্টিনিউ করবার জন্য উৎসাহ দিচ্ছিল। রুচিকা আণ্টি বলেছিল,” শরীর দেখানো আধুনিক ড্রেস পড়লে তোমাকে অসাধারণ দেখতে লাগে সুপ্রিয়া। তোমার সৌন্দর্য্য অব্যবহৃত হয়ে পড়েছিল লেটস ইউস ইট। এটাতে সবার ফায়দা।” মা জবাব দিয়েছিল, ” যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে আর এসব করবো না। আমার লজ্জা লাগে।” আণ্টি দের বাড়িতে ফটো শুট টা হয়ে যাবার পর, মার মডেল হিসাবে গ্রহণযোগ্যতা বারে। মার কাছে আরো মডেলিং করার অফার আসলো কিন্তু মা মডেলিং ব্যাপারটি আর কন্টিনিউ করতে চাইল না। আন্টিরা কথা দিয়েছিল যে মা ইন্টারেস্টেড না থাকলে ওরা আর তাকে বার বার মডেলিং এর কথা বলে বিরক্ত করবে না শুটের দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই মিস্টার সিনহা তার মা কে মডেলিং এর বিষয়ে বিরক্ত না করার কথা ভাঙলেন। মা কে আরো একটা ফটোশুটের জন্য ডাকা হলো।

মা প্রথমে রাজি ছিল না। শেষে ওরা আগের বারের মত বাবা কে এসে ধরলো। বাবা ভালোমানুষ সহজেই রুচিকা আন্টিদের ভালো মিষ্টি মিষ্টি কথায় গলে গিয়ে মা কে ফের আর একবার প্রতিবেশীদের সাহায্য করতে মডেলিং করতে রাজি করিয়ে ফেললো। মা বাবার কথায় মান্যতা দিয়ে মিস্টার সিনহার সঙ্গে গিয়ে ফোটো শুটে অংশগ্রহণ করলো। এবারের ফোটো শুট টা ওরা উইক ডে টে ফেলেছিল। তার ফলে অফিস থাকায় বাবা আর স্কুল থাকতে আমি কেউই এইবার মার সঙ্গে যেতে পারলাম না। তার উপর এইবার স্টুডিও টে নিয়ে গিয়ে ফটো তোলার ব্যাপার ছিল। শেষ অবধি বাবা আর আমাকে ছাড়াই মা কে বেরোতে হলো। ওদের গাড়িটা সার্ভিসিং এ দেওয়া ছিল।

আংকেল আর রুচিকা আন্টি নির্দিষ্ট দিনে সকাল সকাল একটা ট্যাক্সি ডেকে মা কে সঙ্গে নিয়ে বেরোলো। যদিও মাত্র কয়েক ঘণ্টার কাজ সেরে বাড়ি ফেরবার কথা ছিল। তবুও মার কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সারাদিন লেগে গেলো। সকালে বেরিয়ে সন্ধ্যে বেলা মডেলিং কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পর মার মুখের অবস্থা দেখে বুঝেছিলাম, এই ২ য় ফটোশুট প্রথম তার থেকেও অনেক বেশি কঠিন আর পরিশ্রম সাধ্য ছিল। মা যে উৎসাহ নিয়ে রওনা দিয়েছিল। সেই উৎসাহের ছি টে ফোটা তার মধ্যে অবশিষ্ঠ ছিল না। সে বাড়ি ফিরে চুপ চাপ হয়ে গেছিল, পরে জেনেছিলাম, এটাতে মা কে শাড়ি ছাড়াও একটা মডার্ন ড্রেস পড়ে ক্যামেরার সামনে পোজ দিতে হয়েছিল, মা ব্যাপার টা তে রাজি ছিল না। কিন্তু রুচিকা আণ্টি রা কোনো রকমে তাকে মানিয়ে প্রথম দিন করা ঐ এগ্রিমেন্ট পেপারে তার করা সাইনে র জোরে এই কাজ টা উদ্ধার করে নেয়। এর জন্যও মা মোটা পারিশ্রমিক পেয়েছিল, পচিশ হাজার টাকার একটা চেক ভাঙিয়ে যা ক্যাস পায় সেটা দিয়ে রুচিকা আণ্টি দুদিনের মধ্যে মা কে তার প্রিয় একটা অভিজাত বড় দোকানে নিয়ে গিয়ে দামী কসমেটিক সেট আর কয়েকটা রাতের পোশাক কিনে দেয়।

আন্টির কথায় মা ওগুলো ব্যাবহার করতে শুরু করতে বাধ্য হয়। মায়ের শরীরী ভাষায় তাড়াতাড়ি একটা সূক্ষ পরিবর্তন আসে। তারপর কয়েক দিন বাদেই আংকেল রা আবারো আমাদের বাড়িতে বিনা আমন্ত্রণে হাজির হলো। আংকেল এবার খালি হাতে আসলো না, সাথে করে দুই বড়ো প্যাকেট মিষ্টি আর একটা মুম্বই থেকে পাবলিশ ফ্যাশন ম্যাগাজিন নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসলেন। আর পকেট থেকে একটা অফিসিয়াল মেইল লেটার বার করে আমার বাবার হাতে ধরিয়ে বলল, “দাদা একটা দারুন গুড নিউজ আছে, সুপ্রিয়া বৌদি একেবারে কিস্তি মাত করে দিয়েছে, আমি আমার কোম্পানির সিইও র থেকে একটা ভালো প্রপোজাল নিয়ে এসেছি, এই হলো সেই প্রপোজাল লেটার।

এখানে যা লেখা আছে, টা শুনলে আপনি জাস্ট খুশিতে পাগল হয়ে যাবেন। আমিও বিশ্বাস করি নি প্রথমে। একটা বড়ো টেলিভিশন প্রোডাকশন হাউজ অনেক দিন ধরে একটা নতুন মেগা সিরিয়াল বানাবে বলে প্লান করছে। এই ম্যাগাজিনে পাবলিশ হওয়া একটা নতুন মডেল এর পিকচার দেখে তাদের খুব পছন্দ হয়েছে। তাদের এই মডেল টা কে সেকেন্ড লিড ফিমেল রোল এ কাস্টিং করতে চাইছে। সেই মডেল আর কেউ না সুপ্রিয়া বৌদি। ডিল ফাইনাল করার জন্য খুব তাড়াতাড়ি সুপ্রিয়া কে ওরা মুম্বাই টে এক্সপেক্ট করছে।

আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুপ্রিয়া বৌদি কে রাজি করিয়ে মুম্বাই টে নিয়ে আসতে একসপ্তাহের মধ্যে। এটা খুব বড়ো একটা হিন্দি মেগা সিরিয়াল। অনেক নামী ছোটপর্দার তারকা আর্টিস্ট রা এতে কাজ করেছে , ছয় মাস একটা প্রাইম স্লট জুড়ে একটা নেশনাল টেলিভিশন চ্যানেলে এই সিরিয়াল টা সমপ্রচার হবে। মুম্বই এর এই কাজ টা ফাইনাল হলে না সুপ্রিয়া বৌদি কে আর দেখতে হবে না অ্যাকট্রেস মডেল হিসাবে সে রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে যাবে। কি আপনার মাথায় কিছু ঢুকছে না তাই তো? আসুন খুলে বলা যাক, বৌদির মডেলিং পিকচার্স গুলো যে ম্যাগাজিনে পাবলিশ হয়েছে, সেটা খুব বড় একটা ফ্যাশন ম্যাগাজিন। অনেক বড়ো বড়ো ফিল্ম ডিরেক্টর আর প্রোডিউসার ফ্যাশন ডিজাইনার রা ঐ ম্যাগাজিন টা নিয়মিত ফলো করে।

এই নতুন হিন্দি ধারাবাহিক টিভি সিরিজের ডিরেক্টর আর প্রোডিউসার এর সুপ্রিয়া বৌদির ছবি দারুন পছন্দ হয়েছে। তারা ওকে সামনাসামনি দেখতে টেস্ট করতে মুম্বই ডেকেছে। এই যাওয়ার আর ওখানে গিয়ে ৩-৪ দিন থেকে ফাইনাল অডিশন দেওয়া সব খরচ ঐ প্রোডাকশন কোম্পানি দেবে। আসলে সুপ্রিয়া বৌদির ছবি ওদের ভীষণ ভালো লেগেছে। পিক চার দেখে সুপ্রিয়া কে ওরা এক প্রকার সিলেক্ট করে নিয়েছে। বাকি টা ফাইনাল করতে মুম্বই গিয়ে মিটিং করতে হবে। এটা দারুন একটা অফার। এক বছরের জন্য প্রাথমিক ভাবে মোট ৩৫ লাখ টাকা দেবে, তার সাথে একটা ভালো এরিয়া টে ২ bhk ফ্ল্যাট আর ২৪*৭ গাড়ি র ফেসিলিটি।”

এই বলে মুম্বই থেকে পাবলিশ হয়ে আসা ম্যাগাজিন টা সিনহা আংকেল মা আর বাবার সামনে এগিয়ে দেয়। ঐ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ছবি দুটো দেখে আমার মা ভীষন লজ্জা পেয়ে গেছিলো, কপালে লাল টিপ ওলা শুধু ব্লাউজ পরা বুকের ক্লিভেজ এক্সপোজ করা এনলার্জ ফটো ম্যাগাজিনের পুরো একটা পেজ জুড়ে ছাপা হয়েছিল, তাতে পেটের নাভির অংশ ও আংশিক ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই প্রথম ছবিটা ক্লোজ আপ এঙ্গেল এ ছবি প্রিন্ট হয়েছিল। আর ২ য় ছবিটা ছিল আরো হট আর সাহসী। আংকেল আমাদের কে পাশের রুমে পাঠিয়ে দিয়ে মার পিঠ ক্যামেরার সামনে খোলা উন্মুক্ত রেখে যে ফটো নিয়েছিল সেটা ছাপা হয়েছিল। তাতে মায়ের খোলা পিঠ আর লম্বা সুন্দর চুল খুব স্পষ্ট আকর্ষণীয় ভাবে ফুটে উঠেছিল।

বাবাও ফোটো গুলো দেখে চুপ চাপ হয়ে গেলো। বাবা অনেকক্ষন চুপ করে থাকার পর বললো, এসব কি ছবি তুলেছেন, এটে তো সুপ্রিয়ার পরনে কাপড় কোথায়। এরকম ছবি….আংকেল বাবার কথা মাঝ পথে থামিয়ে হাসতে হাসতে বললো, ” আপনিও না পারেন মশাই। এসব ছবি তুলতে হয়, কারণ এগুলোই মডার্ন ডে ফ্যাশন কে সঠিক ভাবে তুলে ধরে। আজকাল অ্যাকট্রেস দের দেখেন না। সুপ্রিয়া বউদি কম কিসের।” বাবা ম্যাগাজিন টা বন্ধ করে, সিনহা আংকেল কে বলে, “আমরা খুব সাধারণ মানুষ মিস্টার সিনহা। এত গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড এর স্বপ্ন দেখা, তার পিছনে ধাওয়া করে ছুটে যাওয়া, আমাদের সাধে না।পার্ট টাইম মডেলিং এক জিনিস আর টেলিভিশন আর ফিল্মে অ্যাক্টিং করা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।

সুপ্রিয়া যে ধরনের শান্ত নিরীহ টাইপের মেয়ে, ও পারবে না। ,” বাবার কথা শুনে সিনহা আংকেল বললেন, ” আপনি মিছি মিছি ভয় পাচ্ছেন দাদা। মডেলিং আর অ্যাক্টিং দুটোই শো বিজনেস। সুপ্রিয়া বৌদির মধ্যে বড়ো হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এত বড়ো সুযোগ এটা সবার ভাগ্যে জোটে না। মুম্বাই থেকে ডাক এসেছে। হিন্দি মেগা টিভি সিরিজে মুখ্য নারী চরিত্রে কাজ করতে চলেছে আপনার স্ত্রী। এটা কম কিসের বলুন? কোটি টাকার লটারি হাতে পেয়ে ছেড়ে দেবেন । মুম্বাইতে গেলে সুপ্রিয়া বউদি কে আর ফিরে তাকাতে হবে না। ভালো না লাগলেও, বা কাজে সমস্যা দেখা দিলে চুক্তি বাতিল করে দেবে, আর ৬ মাসের মধ্যে সিরিয়াল তার মূল ২০০ পর্বর শুটিং শেষ হয়ে যাবে। তখন চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসবে, আমি জানি ওখানে গিয়ে যে কন্ট্রাক্ট পেপার সাইন করতে হবে তাতে এক্সিট ক্লজ থাকছেই। আমার এডভাইস থাকবে সুপ্রিয়া বউদি মুম্বাই যাক, ফাইনাল কাস্টিং টেস্ট পাস করুক। তার পর চুক্তি সাইন করে কাজ আরম্ভ করল। তারপর ভালো না লাগল ৬ মাস পর বাড়িতে ফিরে আসবে। প্লিজ আপনি এত বড়ো সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। পরে আফসোস এর সীমা থাকবে না।”মা আমাদের ছেড়ে মুম্বাই যেতে একেবারেই টিভি তে কাজ করতে যেতে রাজী ছিল না। সে প্রথমেই মুখের উপর না করে দিয়েছিল। বাবার ও এত বড়ো প্রোডাকশন হাউসের সঙ্গে কাজে এতদিন একটানা বাইরে থাকার বিষয়ে মত ছিল না।

মা বাবার নিষেধ সত্ত্বেও রুচিকা আণ্টি রা মা কে এই প্রস্তাবে রাজি করার ব্যাপারে হাল ছাড়লো না। বার বার আমাদের বাড়িতে এসে আমার মা কে বোঝাতে লাগলো, এরকম সুযোগ বার বার আসবে না। তোমার বয়স আছে, রূপ আছে, যৌবন আছে । চলে যাও মুম্বাই , দেখে নাও দুনিয়া ঘুরে , তোমার সংসারের বাইরেও একটা বিরাট দুনিয়া আছে সুপ্রিয়া । তাতে তোমার মতন সুন্দরী দের যে ভীষণ রকম কদর আছে। এই ভাবে নির্বোধের মত বোকামি করো না। শেষ বয়েসে এসে এর জন্য আক্ষেপ করে মরবে।” সিনহা আংকেল ও প্রতিদিন এসে মা কে বলতে লাগলো, ” এটা তুমি কি করছো বউদি তুমি রাজী না হলে আমি যে আমার অফিসের সিইও র কাছে ছোট হয়ে যাবো। আমার ইনক্রিমেন্ট আটকে যাবে। তোমার উচ্চাশা নেই বলে কি তোমাদের জীবনে ভালো কিছুর প্রত্যাশা ও নেই। চলো না মুম্বই। অ্যাক্টিং স্কিল, ক্যামেরার সামনে কথা বলা, হাটা চলা কায়দা কানুন সব কিছু শিখে যাবে।”

শেষ পর্যন্ত সিনহা আংকেল দের প্রেসারে পরে, বাবা মার মুম্বই এর সম্ভাবনা নিয়ে শেরিয়াসলি ভাবতে থাকে। ফাইনাল সিদ্ধান্ত জানানোর আগে বাবা ওদের কাছে দুদিন ভাবার জন্য সময় চায়। তারপর সিনহা আংকেল কে ডেকে বাবা জানতে চায়, সত্যি করে বলো, সুপ্রিয়া যদি মুম্বাই যায় তার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা। আর সুপ্রিয়ার মত শান্ত নিরীহ প্রকৃতির নারীর মুম্বাইয়ে অন্য পরিবেশে গিয়ে থাকতে কাজ করতে কোনো প্রবলেম হবে কিনা। আমি শুনেছি ওখানকার গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড এর লাইফ স্টাইল এখনকার মত নয়। তাছাড়া ও কোনোদিন বাইরে কোথাও গিয়ে থাকে নি, বুঝতেই পারছেন।

আংকেল বাবার হাত ধরে স্বান্তনা দেওয়ার স্বরে বললো, “দাদা এত ভাববেন না। শুধু কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকলে মুম্বই শহরে মানিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হবে না। কত গ্রাম ছোট শহর থেকে এসে অনামী সব মেয়েরা এসে ওখানে স্টার বনে গেলো। আর সেখানে সুপ্রিয়া বউদি পারবে না কেনো। তাছাড়া আমি তো প্রোডাকশন এর টিমের সাথেই থাকবো। বৌদির কোনো অসুবিধা হবে না। ওরা চট জলদি বৌদিকে কাজ শিখিয়ে ক্যামেরার সামনে নামিয়ে দেবে। আপনার স্ত্রী মুম্বই টে সম্পূর্ণ সেফ জোন এ থাকবে।

ভালো করে ভেবে চিন্তে বাবা মা কে কাছে ডেকে বলল, “দেখো সুপ্রিয়া যা বুঝছি এটা সত্যি খুব বড়ো সুযোগ। আমি খোজ নিয়ে দেখেছি যে প্রোডাকশন হাউস তোমাকে অফার করছে সেটা খুব বড়ো একটা নাম। ওখানে যারা কাজ করবে তাদের নাম হবে, তোমার মধ্যে সম্ভাবনা আছে। এছাড়া নিজের স্ত্রী বলে বলছি না। তুমি তো জানো তুমি কতটা অপরুপ সুন্দরী। এসময় আমি যদি তোমাকে স্বার্থপর এর মত আটকে রাখি সেটা অন্যায় হবে। তুমি মুম্বাই যাও। কাজ শেখ সফল হও। আমি এদিক টা সামলে নেবো। বাবা মা কে অগাধ ভরসা করতো ভালো বাসত। তাই মা কে বড়ো হবার সম্ভাবনা টা হাত থেকে যেতে দিল না। মা আমাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শেষ মেষ ভাগ্য অন্বেষণে রাজি হলো, ৩৫ লাখ টাকা আমাদের মতন সাধারণ পরিবারের কাছে অনেক বড়ো আমাউন্ট ছিল। আমি জানি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া মার পক্ষে কত টা কঠিন ছিল। তার অন্যতম কারণ হল মা আমাকে ছেড়ে একদিন ও বাইরে থাকে নি।

ফাইনাল অডিশনে সিলেক্ট হয়ে পাশ করে যাওয়ার পর মা আমাদের ছেড়ে এত মাস বাইরে অন্য শহরে একা একা থাকবে কি করে? এটাই সে ভেবে পাচ্ছিল না। শেষ মেষ মিস্টার অ্যান্ড মিসেস সিনহা আর বাবা এই তিনজন মিলে মা কে মুম্বাই যেতে রাজি করায়। মার মুম্বাই যাওয়া ফাইনাল হওয়ায় রবি সিনহা অর্থাৎ রুচিকা আন্টির হাসব্যান্ড জানালো ৫ দিনের মধ্যে মুম্বাই থেকে মায়ের জন্য ফ্লাইটের টিকিট আর অন্যান্য সব কাগ জ চলে আসবে। মুম্বই যাওয়া ঠিক হতেই রুচিকা আণ্টি মা কে নিয়ে পার্লার এ গিয়ে অনেক খানি সময় কাটিয়ে আসলো। মা কে পার্লার এ নিয়ে গিয়ে মায়ের রূপে আরো মাঞ্জা দিয়ে জেল্লা এমন বাড়িয়ে দিল, মা যখন পার্লার থেকে ফিরলো, আমার বাবাকেই মায়ের পাশে একটু কেমন যেন বেমানান লাগছিল। হাতে খুব অল্প সময় ছিল। আংকেল ওদের হেড অফিসে মার মুম্বাই যাবার বিষয়ে কনফার্মেশন জানাতেই, যথা সময় মুম্বাই থেকে টিকিট আর অন্যান্য কাগজ পত্র চলে আসলো। মার আমাদের সঙ্গে নিজের বাড়ি টে থাকা শেষ কটা দিন মুম্বাই যাওয়ার জোর কদমে প্রস্তুতি টে কাটলো ।
 
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ৪

মা সিনহা আংকেল এর আনা মুম্বাই এর প্রস্তাবে রাজি হবার মাত্র ৫ দিন বাদে ই মার মুম্বাই যাওয়ার তারিখ টা এসে গেলো, নির্দিষ্ট দিনে আমরা চারজনে অর্থাৎ আমি, বাবা, মা আর রবি আংকেল মর্নিং ফ্লাইটে মুম্বাই রওনা দিলাম। বলাই বাহুল্য সেটাই ছিল আমার আর মায়ের প্রথম ফ্লাইটে চড়া। যথারীতি আমার আর মায়ের আনন্দের সীমা ছিল না। বাবার মুখ কী জানি এক অজানা আশঙ্কায় ভার হয়ে ছিল। ফ্লাইটে চড়ে মুম্বাই পৌঁছে, রবি আংকেল আমাদের কে একটা ভালো হোটেলে নিয়ে গিয়ে তুলেছিল।

আমরা মুম্বাই পৌঁছে প্রথম রাত টা ঐ হোটেলেই কাটালাম। হোটেল টা র জানলা দিয়ে সমুদ্র দেখা যাচ্ছিল।

সেই কারণে আমার আর মায়ের খুব পছন্দ হয়েছিল হোটেল টা। সেই রাত টা আমরা বাবা মা আর ছেলে শেষ বারের মতন একসাথে পাশাপাশি শুয়েছিলাম। তার পর আর চেষ্টা করেও মা আমাদের সঙ্গে কখনো একসাথে শুতে পারে নি। যাই হোক, পরের দিন হোটেলে প্রোডাকশন টিমের একটা গাড়ি এলো, রবি সিনহা ওখান থেকে আমাদের কে একটা গেস্ট হাউসে নিয়ে আসা হলো। শহরের কিছুটা বাইরের দিকে হলেও গেস্ট হাউস টা বেশ টিপ টপ সাজানো গোছানো বাংলো গোছের ছিল। এক তলা ঐ গেস্ট হাউজ টা আমাদের তিন চার জনের রাত্রিবাস এর জন্য একেবারে ফরমাস দিয়ে তৈরি। বাইরে একটা বাউন্ডারি দেওয়া ছোট ফুলের বাগান মত ছিল। আমরা ওখানে গিয়ে উঠতেই, আধ ঘন্টার মধ্যে ঐ আসন্ন টিভি মেগা সিরিজের প্রোডাকশন ম্যানেজার মিস্টার আশু মেহতা র সঙ্গে আলাপ হলো। উনি একজন মেক আপ এর লোক কে অ্যারেঞ্জ করে রেখেছিলেন। আমাদের সাথে আলাপ হবার পর, সেই মেক আপ আর্টিস্ট এসে মা কে সাজানো আরম্ভ করলো। মা সাধারণ ভাবেই ফাইনাল অডিশন দিতে যেতে প্রস্তুত ছিল।

কিন্তু মেহতা জি মা কে একটু আলাদা ভাবে সেজে গুজে রেডি করে নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যোগী ছিলেন। তার কথায় এখানে আগে দর্শন ধারি তারপর গুন বিচারি এই ফর্মুলায় কাজ হয়, কাজে ফাইনাল টেস্ট দিতে যাওয়ার আগে সাজ গোজ টা প্রয়োজন। মা কে একটা চুমকি বসানো দামি শাড়ি আর ম্যাচিং লো স্লিভ ব্লাউস দেওয়া হলো পড়বার জন্য। এর সাথে কোমরে একটা রুপোর উপর সোনার জল করা চেইন পরে আসতে মা কে যেন আরো আকর্ষণীয় দেখাচ্ছিল। ওটা পড়ে আসার পর মার লুক তাই দেখা গেলো পুরো চেঞ্জ হয়ে গেলো।

শাড়িটা কোমরের কাছে হালকা ট্রান্সপারেন্ট মেটেরিয়াল দিয়ে প্রস্তুত হওয়ায়, মার সুগভীর নাভি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। মা সেটা আঁচল দিয়ে সমানে ঢাকবার চেষ্টা করছিল। মা পাশের ঘর থেকে চেঞ্জ করে আসার পর, আমাদের সামনেই তার ফেসিয়াল মেক আপ নেওয়া হয়েছিল। মেক আপ আর্টিস্ট যে ভদ্র লোক এসেছিলেন, তিনি ছিলেন খুব অভিজ্ঞ, নিপুণ হাতে মা কে সাজাচ্ছিলেন। যত সময় যাচ্ছিল, মার রূপ যেনো আরো ফুটে বেরাচ্ছিল। সেই সময় আমার সব থেকে অবাক যেটা লাগল টা হলো, মার মাথার খোপা এবং চুল সেট করার সময় মায়ের সিথি থেকে তার বিবাহিত জীবনের নিশান সিদুর টা কেনো জানি না চুল দিয়ে কভার করে ফেলা হলো।

আর তারপর শাখা পলা মানে বিবাহিত হিন্দু নারীর আরো যেসব প্রধান ফিচার গুলো থাকে সেগুলো মার ড্রেস এন্ড স্টাইল এর এর সঙ্গে যাচ্ছে না বলে খুলে রাখতে হলো। মা শাখা পলা খুলবার সময় ভীষণ অসস্তি বোধ করছিল, বার বার বাবার দিকে তাকাচ্ছিলো। কিন্তু ওদের বাবা ব্যাপার সেপার দেখে চুপ করে গেছিল, শেষে ওদের আবদার মেনে মা সম্পূর্ণ অবিবাহিত দের মতন সেজে রেডি হল। প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে, সাজা গোজা কমপ্লিট হবার পর গেস্ট হাউস থেকে ডাইরেক্ট প্রোডাকশন হাউস এর অফিসে গেলো।

ওখানে গিয়ে রিপোর্ট করার পর, আধ ঘন্টার মধ্যে মার একটা স্ক্রীন টেস্ট নেওয়া হলো ক্যামেরার সামনে। মা কে কাগজ দেখে দুই চার লাইন সংলাপ বলতে হল। তার মধ্যে একটা লাইন ছিল, ” মে আপকী অনে ওয়ালে বাচ্ছে কি মা বন্নে ওয়ালি হ্ন।” মা ঐ স্ক্রিন টেস্ট সসন্মানে পাস করে গেলো। এই প্রোডাকশন হাউস এর অফিসে মা রবি আংকেল এর সঙ্গে একাই গেছিলো।আমি আর বাবা গেস্ট হাউস এর মধ্যে ওরা ফিরে আসার সাথে একটা গুড নিউজ পাবার অপেক্ষায় থেকে গেছিলাম। আমি আজও বিশ্বাস করি, সেদিন মা কে বাবার রবি আংকেল এর সাথে একা ছাড়া উচিত হয় নি। ঐ অফিসে গিয়ে ওদের বিরাট সব কায়দা কানুন দেখে মা কিছুটা ঘাবরে গেছিলো।

স্ক্রিন টেস্ট এর পর আরো একঘন্টা সময় ধরে, মার ভয়েস টেস্ট নেওয়া হলো। লুক টেস্ট নেওয়া হলো। সব কিছুতেই মা সসম্মানে পাস করলো। তারপর ঐ প্রোডাকশন হাউজ এর সিইও নিজে তাকে আর রবি আংকেল কে নিজের বিরাট অফিস কেবিনে ডেকে মা কে জব অফার দিল। সেই সময় মা একটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিল। রবি আংকেল এর সৌজন্যে ওদের সিইও র সামনে কিছুটা চাপে পড়ে যায়। ওরা তক্ষুনি সাইন করতে বার বার অনুরোধ করে। মা শেষে ওদের প্রস্তাবে হ্যা বলে ঐ প্রোডাকশন হাউজ এর দেওয়া কন্ট্রাক পেপার ভালো করে না দেখে ওদের মুখের কথা বিশ্বাস করে ওদের দেওয়া টার্ম কন্ট্রাক্ট পেপারে সাইন করে দেয়।

তারপর সিইও মা কেএই মোমেন্ট টা এনজয় করার জন্য নিজের হাতে রেড ওয়াইন সার্ভ করে ড্রিঙ্কস অফার করে। মা যেহেতু হার্ড ড্রিঙ্ক করে না, তাই ভালো ভাবে ভদ্র ব্যাবহার দেখিয়ে ড্রিঙ্ক এর প্রপোজাল এড়ায়। রবি আংকেলের অবশ্য মদে অরুচি ছিল না। সে মার সামনেই কোম্পানির সিইও র সঙ্গে ওয়াইন নেয়। মার জন্য সিইও সফট ড্রিঙ্ক আনিয়ে নেয়। তারপর ওরা যখন গুড নিউজ নিয়ে গেস্ট হাউস এ ফিরলো, বাবা কন্ট্রাক্ট পেপার টা আংকেল এর কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে ভালো করে পড়েছিল।

তখন ই জানা গিয়েছিল, কন্ট্রাক্ট পেপারে দুটো বেশ আপত্তিকর টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন ছিল। ১. মা কে প্রোডাকশন এর অনুমতি ছাড়া মুম্বাই ছাড়া যাবে না। ২. ৬ মাসের আগে কারোর কাছে প্রকাশ করা যাবে না যে সে বিবাহিত, এবং তার একটি বড়ো বাচ্চা আছে। বাবা ওটা ভালো করে পড়ার পর মা কে চুক্তির শর্ত গুলো বুঝিয়ে বলতে মার মুখের থেকে উৎসাহ আর আনন্দের রেশ মিলিয়ে যায়। সে এই শর্ত গুলো নিয়ে ভাবতে শুরু করে। আরো একবার অফিসে গিয়ে চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেবে এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় আসে। তখনও বেরিয়ে আসতে পারতো, কারণ তখন ও কন্ট্রাক এর ফাইনাল টার্ম শিটে মা সই করে নি কিন্তু রবি আংকেল আমার মা আর বাবা কে আটকায়।

তরিঘরি ফাইনাল টার্ম শিট সাইন করার জন্য প্রভাব খাটায়। শেষ মেষ মা আর বাবা আঙ্কেল এর কথা মেনে নেয়। তারপর মা আর কোনোকিছু না ভেবে পরের দিন আরো একবার ঐ প্রোডাকশন হাউসের অফিসে গিয়ে সেই সিইও আর তার ল ইয়ার এর সামনে কোম্পানির দেওয়া চুক্তি র ফাইনাল টার্ম শিট এ বিনা বাক্য ব্যয়ে সই করে দিল। তার পরের দিন ই মার হাতে কোম্পানির তরফে তার ফ্ল্যাটের চাবি চলে আসলো। তবে মায়ের সেই নতুন ফ্ল্যাট আর প্রোডাকশন এর তরফ থেকে দেওয়া গাড়ি দেখার আর চড়ার সৌভাগ্য আমাদের হলো না।

গেস্ট হাউসে আরো একটা রাত কাটিয়ে আমরা মা কে চোখের জলে বিদায় জানিয়ে, তাকে রবি আংকেলের দায়িত্বে রেখে আমরা রিটার্ন ফ্লাইটে চেপে বাড়ি ফিরে এলাম। বাবা র আরো কিছু দিন থাকার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু প্রোডাকশন দুদিন পরে র ফ্লাইট এর আমাদের নিজেদের শহরে ফেরার রিটার্ন টিকেট কেটেছিল। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে বাবা মা কে রবি আংকেল এর জিম্মায় রেখে চলে ফিরে আসতে বাধ্য হলো। রবি সিনহা কিছুদিনের মধ্যে মা কে একটা মোবাইল ফোন জোগাড় করে দিয়েছিল।

আমরা যাওয়ার আগে মার সঙ্গে কথা হয়েছিল অন্তত ফোন এ মা আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে। গেস্ট হাউস থেকে বেরিয়ে আসবার সময় মা বাবা আর আমি তিনজনের চোখেই জল চলে এসেছিল। আমি ছোট থাকায় বেশি কাদছিলাম। আমরা মুম্বাই ছাড়ার আগে একটা বিষয়ে নিচ্ছিত ছিলাম, মা এই যে কন্ট্রাক্ট সাইন করলো, তারপর থেকে নিজের ব্যাক্তি স্বাধীনতা এক প্রকার পুরো পুরি ঐ নামী প্রোডাকশন হাউস এর হাতে তুলে দিয়েছিল । অর্থাৎ তাকে এবার থেকে আমাদের দেখা করতে হলেও ঐ কোম্পানির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আমাদের চলে আসার পরের দিন খবর পেলাম, মার জন্য একটা পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করা হলো। একজন ৩৪ বছরের প্রফেশনাল কোয়ালিফাইড ওম্যান মিস নিশা মার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে দায়িত্ব নিল। তার উপর মায়ের গ্রুমিং এর ভার দেওয়া হয়েছিল।আমরা মুম্বাই ফিরে আসার এক সপ্তাহ পর মা আট লাখ টাকা অ্যাডভান্স পেলো। সেই টাকার পুরোটা মা রবি সিনহা আর নিশার সহায়তায় বাবার একাউন্টে ট্রান্সফার করলো।

তারপর দেখতে দেখতে মা কে মুম্বাইতে রেখে ফিরে আসবার পর দেখতে দেখতে এক মাস কেটে গেল। মা কে ছাড়া থাকতে আমাদের বাপ ছেলের সত্যি খুব অসুবিধা হচ্ছিলো, তবুও আমরা মানিয়ে নিচ্ছিলাম। মা ও প্রথম দিকে নিয়মিত ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখছিল। আমরা জানতে পারছিলাম ঐ নামী প্রোডাকশন হাউস আমার মা কে কিভাবে খুব দ্রুত ঘষে মেজে ঐ টিভি সিরিজের কাজের জন্য তৈরি করে নিচ্ছে। প্রতিদিন মা কি নতুন জিনিস শিখছে। আমার মা খুব পরিশ্রমী আর বুদ্ধিমতী হোওয়ায় সে অন্যদের তুলনায় নাকি বেশ চট পট সব কিছু শিখে নিচ্ছিল।আর অল্প দিনের মধ্যে মা তার সুন্দর মিষ্টি সরল ব্যাবহার দিয়ে সবাইকে সন্তুষ্ট করেছিল। সবাই মায়ের শেখার ইচ্ছে আর এফর্ট দেখে যাপর্নাই খুশি ছিল। আরো এক মাস পূর্ণ হতে না হতেই ঐ টিভি মেগা সিরিয়াল তার শুটিং শুরু হয়ে গেছিলো।

আরো কিছু দিনের পর সিরিয়াল তার প্রমো বা ট্রেলার টিভি চ্যানেল টায় সম্প্রচার হওয়া শুরু করলো। ২ মিনিটের ট্রেলারে মা কেও ওরা ৩০ সেকেন্ড দেখিয়েছে। এর মানে স্পষ্ট যথেষ্ট গুরুত্যপূর্ণ একটা চরিত্র তে মা কাস্ট হয়েছে। টিভি তে দেখে আমার আস মিট তো না তার অভাব টা আমাদের বাড়ির প্রত্যেক টা মুহূর্তে অনুভব হতো। আমি বাবা কে বার বার জিজ্ঞেস করতাম, মা কবে আমাদের কাছে ফিরবে? বাবা সেই এক উত্তর দিত, ” তোমার মা এখন তার কাজ নিয়ে খুব ব্যাস্ত বাবু। সময় পেলে ছুটি নিয়ে নিচ্ছয় বাড়ি আসবে। তোমার এখন তার কাজ নিয়ে খুব ব্যস্ত বাবু। এই টিভি সিরিয়াল এর কাজ যেরকম গতিতে এগোচ্ছে তাতে তোমার মায়ের সেলিব্রিটি হওয়া প্রায় সময়ের অপেক্ষা। বাবা এটাও জানিয়েছিল, প্রতিদিন ওখানে ৭-৮ ঘণ্টা স্টুডিও তে কাজ হয়।” আর মা কে ফোনে জিজ্ঞ্যেস করলে মা হেসে সেই এক জবাব দিত , আর কটা দিন ব্যাস, তারপর কাজ থেকে ফুরসৎ পেলে, প্রোডাকশন হাউজ এর কাছ থেকে ছুটি নিয়ে অবশ্যই বাড়ি ফিরব, আর তোমাদের নিয়ে কোথাও একটা বেড়িয়ে আসবো।”

মা কাজের জন্য মুম্বাই তে আটকে থাকলেও দিনে একবার অন্তত সময় বার করে আমাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতো। প্রথম প্রথম দিনে কল করলেও ধীরে ধীরে মা র ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় একটু রাতের দিকেই বাবা কে ফোন করতো। আমি সকালে স্কুল থাকায় তাড়াতাড়ি খেয়ে ডেয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় অধিকাংশ সময় মার সঙ্গে আমার কথাই হতো না।

আমার মা সফল অভিনেত্রী মডেল হতে -মুম্বাই যাবার ঠিক আড়াই মাস পর, হটাৎ একদিন আমাদের কে বহু প্রতীক্ষিত গুড নিউজ দেয়। যে একটা মডেলিং কমার্শিয়াল ইভেন্ট এর কাজ নিয়ে চারদিনের সফরে মা শহরে ফিরছে। কাজ নিয়ে শহরে আসলেও এইবার মা আমাদের বাড়িতে ফিরবে। কটা দিন আমাদের সঙ্গে কাটাবে। এই খবর শুনে বাবা আমি দুজনেই ভীষণ খুশি ছিলাম। মা ফোনে এটাও জানিয়েছিল, ” আমাকে বিমানবন্দরে রিসিভ করতে আসবার কোনো দরকার নেই। আমি যথা সময় ল্যান্ড করে প্রথমে একটা হোটেলে গিয়ে উঠব। সেখানে এক বিখ্যাত বহুজাতিক সংস্থার প্রতিনিধির সাথে মিটিং সেরে, আমি নিজেই গাড়ি নিয়ে বাড়িতে চলে আসবো।”
 
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ৫

যথারীতি মায়ের ঘরে ফেরবার ডেট চলে এলো। ঐ দিন আমি মা আড়াই মাস পর প্রথম বাড়িতে ফিরছে বলে আমি সেদিন স্কুল গেলাম না। বাবাও অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিল। নির্দিষ্ট দিনে দুপুর ২ টো বেজে পনেরো মিনিট নাগাদ একটা কালো রঙের স্কারপিও গাড়ি এসে আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় এসে থামলো। গাড়ির শব্দ পেয়েই বাবা দৌড়ে গিয়ে বাড়ির সদর দরজা খুলে দিল। তারপর গাড়ি থেকে যিনি নামলেন তাকে দেখে পাড়া পড়শী রা তো বটেই আমাদের ও চোখ কপালে উঠে গেলো। এই হট অবতারে আধুনিক ড্রেস পড়া অবস্থায় মা কে কোনোদিন আমাদের বাড়িতে দেখতে পারবো এটা স্বপ্নেও কল্পনা করা যায় নি। মা একটা আল্ট্রা ফ্যাশন এর কুর্তা আর তার সাথে স্কিন ফিট লেগিংস আর পায়ে হাই হিল শু পরে গাড়ি থেকে নেমে আমাদের বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলো।

মার চোখে দামী সানগ্লাস আর চুলটা স্ট্রেট খোলা মাথা আর কাধের পিছনে খোলা ছিল। চুল টা আগের তুলনায় মা অনেক টা ছোট করে ফেলেছে মনে হলো। হালকা লিপস্টিক আর মুখে সামান্য গ্লসি মেক আপ করায় মা কে ভীষণ গ্ল্যামারাস লাগছিল। মুম্বাই তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে শাড়ি ছাড়া অন্যান্য আধুনিক সব ড্রেস পড়াতে মা ইতিমধ্যে যে বেশ ভালো অভস্ত হয়ে গিয়েছে সেটা র উধাহরন চোখের সামনে দেখে অদ্ভুত ফিলিং হলো। মা অনেক দিন বাদে আমাদের দেখে নিজের আবেগ চেপে রাখতে পারলো না।

ঘরের ভেতর তার লাগেজ নিয়ে ঢুকতেই আমাদের কে জড়িয়ে ধরলো। মা আবেগে আমাকে জড়িয়ে আদর করার সময় আমার মায়ের একটা বিশেষ পরিবির্তন নজরে আসল। এই কমাসেই ম্যাজিক এর মত মায়ের গায়ের সেই পুরনো মিষ্টি গন্ধ টা হারিয়ে গেছে। তার জায়গায় দামী বিদেশি ব্র্যান্ডেড পারফিউম এর গন্ধ আমার নাকে আসলো। মা আমাদের জন্য মুম্বাই থেকে অনেক গিফট এনেছিল। ঘরে এসে বসবার পর, ওগুলো আমাদের বের করে দিল। অনেকদিন পর সামনাসামনি দেখে মা আমাকে অনেকক্ষন ধরে জড়িয়ে আদর করলো আর একটা দামী বড়ো চকোলেটের বাক্স দিল।

ফ্লাইট করে এসে একটা থ্রি স্টার হোটেলে একটা কমার্শিয়াল অ্যাড সংক্রান্ত মিটিং আর লাঞ্চ সেরে বাড়িতে এসে মা ক্লান্ত ছিল। যদিও অনেকদিন পর কাছে পেয়ে আমার মা কে একদম ছাড়তে ইচ্ছে করছিল না তবুও বাবা মা কে ফ্রেশ হয়ে জিরিয়ে নেওয়ার জন্য আমাকে কিছুটা জোর করেই মার কাছ থেকে নিয়ে গেলো। আধ ঘন্টা পর ফ্রেশ হয়ে ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে মুম্বাই থেকে আনা তার সিল্কের হাউসকোট পড়ে বের হলো। বাবা মা কে দেখে বললো, ” আড়ি ব্যাস মুম্বাই এর জল পেতে পড়তে না পড়তেই আমার সাদা সিধে বউ তো মডার্ন হয়ে উঠেছে দেখছি।”

মা বাবার কাছে এসে বললো,” কেনো, আমাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে মুম্বাই তে পাঠানোর সময় এসব ভাবতে পারো নি। কি তাই তো, এইবার বলো নিজের পুরনো বউএর নতুন রূপ কেমন লাগছে। পছন্দ হচ্ছে? বাবা হেসে বললো, খুব পছন্দ হচ্ছে। আমার আজ তোমাকে দেখে আনন্দ হচ্ছে। মা বললো, শোনো আজকে বাড়ির রান্নার লোক কে বারণ করে দাও, আজ আমরা ফাইভ স্টার রেস্টুরেন্টে ডিনার সারব। বাবা বললো, ” এসবের কি দরকার সুপ্রিয়া ? শুধু শুধু এত গুলো টাকা খরচা করবে।” মা বললো,” এই থামো তো একদিন তোমাদের এই সুখ দিতে পারি না। তাহলে এসব আমি কিসের জন্য করছি। বাবা আর আপত্তি করলো না।

রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ঐ কালো ব্ল্যাক স্কোরপিও গাড়িতে করে বেড়ানো হলো। মা সেদিন ডিনারের জন্য একটা শিফনের এর দামী শাড়ী, আর একটা স্লিভলেস পিঠখোলা ব্লাউজ পরে মোহ ময়ী রূপে সেজে আমাদের সঙ্গে বেরিয়েছিল। মার সামনে আমাদের একটু বেমানান ই লাগছিলো। রেস্তোরা তে উইকএন্ড হওয়ায় বেশ ভিড় ছিল। আমাদের প্লেটের অর্ধেক খাবার ও কমপ্লিট হয় নি। তার মধ্যে বেশ কয়েকজন মা কে চিনে ফেললো। তারা ঘিরে ধরতেই ছবি তুলতে যাবে এমন সময় ” no photograph please।” বলে চেচিয়ে উঠে মা আমাদের উদ্দেশে বললো, তোমরা উঠে পরো প্লিজ, এখানে আর এক মুহুর্ত থাকলে আমার সঙ্গে সঙ্গে তোমাদের ছবিও উঠবে, তারপর তোমাদের পরিচয় নিয়ে জল্পনা শুরু হবে। এই ভাবে তোমাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক সামনে চলে আসলে, কন্ট্যাক্ট এর টার্মস লঙ্ঘন করা হবে। আর সেটা অমান্য করলে, তুমি তো জানোই, ওরা আমাকে আইনি নোটিশ পাঠাবে, আমার প্রোডাকশন হাউস এর এই মেগা সিরিজের কাজ তাও বন্ধ হয়ে যাবে । মার কথা শুনে আমরা আর সময় নষ্ট করলাম না। আমরা তরি ঘড়ি রেস্তোঁরা ছেড়ে বেরিয়ে গাড়ি করে বাড়ি ফিরে আসলাম। ১১ টা নাগাদ বাড়ি ফিরে এসে বাবা ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু মা রাতের প্রসাধন সেরে একটা নাইট সুট পরে অনেক রাত অবধি জেগে ড্রইং রুমে বসে তার মুম্বাইয়ের নতুন বন্ধু দের সঙ্গে হেসে হেসে ফোন এ গল্প করলো। আমার যে মা বেশি রাত করা আর বাড়িতে শোওয়ার আগে মডার্ন নাইট সুট পড়া একেবারে পছন্দ করতো না। তাকে অনায়াসে এটা করতে দেখে প্রথম প্রথম বেশ অবাকই হয়েছিলাম।

পর দিন মায়ের ছুটি ছিল। আমরা তিনজনে মিলে ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে একটা আউটিং এর প্লান করছিলাম। কিন্তু আমাদের বেড়ানোর ঠিক পাঁচ মিনিট আগে মার ফোন এ একটা কল আসে। মা করুন মুখ করে আমাদের জানায়, সরি প্লান ক্যান্সেল। মুম্বাই থেকে এক্ষুনি জানালো। আমাদের মেগা টিভি সিরিয়াল তার প্রমোশন এর জন্য একটা মিউজিক টিভি চ্যানেলের প্রোগ্রামে আমাকে আজ দুই ঘণ্টার মধ্যে উপস্থিত হতে হবে। প্লিজ মন খারাপ কর না। বিকেলে ফিরে প্লান করছি, মুম্বাই ফিরে যাওয়ার আগে আমার হাতে এখনও দুই দিন পড়ে আছে।”এরপর আমাদের চোখের সামনে, টিভি চ্যানেলের এক লোক এসে মা কে গাড়িতে করে নিয়ে গেলো।

টিভি চ্যানেলের ফ্যাশন অ্যান্ড বিনোদন রিলাটেড একটা অনুষ্ঠানে ইন্টারভিউ দেওয়ার পর, প্রোডাকশন হাউস এর তরফ থেকে একটা ক্লাবে একটা কর্পোরেট ইভেন্টে উপস্থিত হোয়ার নির্দেশ ছিল। সেটা সেরে সন্ধ্যে সাড়ে ছ টা বাড়ি ফেরার পর মা সবে আমাদের সঙ্গে বসেছে এমন সময় বাড়িতে অপ্রত্যাশিত ভাবে আমাদের প্রতিবেশী রুচিকা আন্টির আগমন ঘটে। সে তার এক বড় ক্লায়েন্ট এর বিশাল জাক জমক পূর্ণ বিবাহ বার্ষিকী পার্টিতে মা কে স্পেশাল গেস্ট হিসাবে যাওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট করতে শুরু করে। এই পার্টি টা অ্যাটেন্ড করতে নাকি মা কে রূচিকা আন্টির ক্লায়েন্ট ভালো অ্যাপিয়ারেন্স মানি ও দেবে। আমি আর বাবা ভেবেছিলাম মা এই প্রস্তাব নাকচ করে দেবে।

কিন্তু টাকার গন্ধ পেয়ে মা কিছুতেই ঐ পার্টির ইনভিটেশন এড়াতে পারলো না। রুচিকা আন্টি কে পার্টির ব্যাপারে হ্যা বলে দিলো। তারপর পার্টি যাওয়ার জন্য সেজে গুজে সুন্দর রূপে রেডী হয়ে মা আমাদের কে বললো, “এই শোনো আমার না ফিরতে আজ রাত হতে পারে, যা বুঝছি, আজ ওরা আমাকে সহজে ছাড়বে না। তাই তোমরা আমার জন্য রাত জেগে অপেক্ষা কর না। সময় মতো খেয়ে নিও প্লিজ, আলো নিভিয়ে শুয়ে ও পর।” মা ঠিক ই আন্দাজ করেছিল। পার্টি সেরে ফিরতে মার বেশ রাত হয়ে গেছিলো। অবশ্য এরকম রাত করে পার্টি সেরে ফেরার অভিজ্ঞতা মায়ের জীবনে প্রথম ছিল না। মুম্বাই তে গিয়ে ২ য় সপ্তাহের মধ্যে মার এইসব পার্টি তে যাওয়ার এক্সপেরিয়েন্স শুরু হয়। রুচিকা আণ্টি দের পাল্লায় পরে সেদিন রাতে পার্টি তে গিয়ে মা সামান্য ড্রিংক করতে বাধ্য হয়েছিল। মুম্বাই টে এটা সপ্তাহ শেষের পার্টির পর স্বাভাবিক চিত্র হলেও, মা কে সামনাসামনি মদ খেয়ে টলতে টলতে বাড়ি ফিরতে আমি সেই প্রথম বার দেখেছিলাম।

পরের দিন ও মা আমাদের সঙ্গে বেরোতে পারলো না। তার আরও একটা কর্পোরেট ইভেন্ট এসে গেছিলো। একটা প্রোগ্রামে মা কে পাঁচ ছয় ঘণ্টা ধরে হোস্ট করতে হয়েছিল, সেটা করে বাড়ি ফিরে মা খুব ই ক্লান্ত ছিল তার ফলে আর বেরোনো গেল না। তারপরের দিন সকাল হতেই রুচিকা আন্টি এসে মা কে পাকারাও করে তার সাথে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। সারাদিন ওর সাথে ক্লাব স্যালন বন্ধুদের বাড়ি, পাব ঘুরে মা যখন ড্রাংক অবস্থায় বাড়ি ফিরলো তখন সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত নেমে গেছে। মার আমাদের সাথে বাড়িতে কাটানোর শেষ দিনেও, ওর বেশ কয়েক টা প্রোগ্রাম ছিল। এছাড়া রুচিকা আণ্টি মা কে তার বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গেছিলো। সেখান থেকে রাত করে যখন বাড়ি ফিরলো। তখনো আমরা মার জন্য ডিনার না খেয়ে অনেকক্ষন জেগে অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু মা সেদিনও বাইরে ডিনার খেয়ে ফিরেছিল। তার সাথে হালকা ড্রিংক ও করেছিল।

এই কারণে অকারণে বাবার সঙ্গে মায়ের হালকা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো, মা এক্সকিউজ দিয়েছিল “রুচিকা দি সায়নী রা আমার কথা একদম শুনলো না। ওদের আবদার রাখতেই একটু খেতে হলো। তুমি কিছু মাইন্ড করো না। চলো কাল তো চলেই যাচ্ছি। যাবার আগে তোমার সব অভিমান বিছানায় ভাঙিয়ে দিয়ে যাচ্ছি, আজ রাতে যা খুশি করতে পারো আমাকে নিয়ে, আমি বাধা দেব না। চলো আমরা শুয়ে পরি, সকালে উঠতে হবে।।” এই বলে হাউস কোট টা খুলে, স্লিভলেস নাইট সুট পড়া অবস্থায় বাবাকে জড়িয়ে ধরতে, বাবার সব অভিমান গলে জল হয়ে গেছিলো। মা এরপর বাবার ঠোট টা নিজের ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরে চুষতে শুরু করে দেয়।

বাবা কিছু বলবার চেষ্টা করতেই মা তার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে তার শার্ট এর বাটন খুলতে খুলতে বাবাকে বেডরুমের ভেতর নিয়ে যায়। সেদিন মা বাবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে শুয়েছিল। বাবা আমার জন্য একটু সংকোচ বোধ করছিলো, কিন্তু মা ছিলো সেই রাতে নির্ভয়। মাই সাহস দেখিয়ে এগিয়ে এসেছিল। বাবাও মার মতন হট নারীর আবেদনে সারা দিয়েছিল। ওরা যা করেছিল, যদিও দরজা বন্ধ করে ছিল, কিন্তু মা আর বাবা সেই রাতে যে ভাবে কামের জ্বালায় তপ্ত হয়ে উঠেছিল, মাঝ রাত অবধি তাদের যৌণ সঙ্গমের মিলিত আওয়াজ আমি পাশের ঘর থেকে পরিষ্কার শুনতে পেয়েছিলাম। মা আর বাবার সেই বহু প্রতীক্ষিত যৌন মিলনের চরম মুহূর্ত যখন উপস্থিত ছিল, সেই সময় মা জোরে জোরে বাবাকে উদ্দ্যেশে এটাও বলেছিল, প্লিজ বাইরে ফেলবে আমার এখন পেরিয়ডস চলছে বুঝলে….। কোনো প্রব্লেম চাই না।”

বাবা সেই রাতে মার অনুরোধ রেখেছিল। আর মাও খুশি হয়ে তাকে সারা রাত ধরে বিছানায় তৃপ্তি দিয়েছিল। মুম্বাই গিয়ে মাত্র দুই কি আড়াই মাস কাটানোর ফলে মার কথা বার্তা হাঁটা চলা অভ্যাস কেমন যেন পাল্টে গেছিলো। আগের সেই সংসারী ছাপ টা মার আচরণে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তিন দিন এই ভাবে আমাদের সঙ্গে কাটিয়ে মা ফের তার কাজের জায়গা মুম্বাই ফিরে গেলো। আগে মা দিনে এক থেকে দুই বার ফোন করতো কিন্তু যত দিন যাচ্ছিল মার ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেতে পেতে তার ফোন আশাও অনিয়মিত হয়ে গেলো।

পাঁচ মাস পূর্ণ হতে চললো একদিন বাবা ফোনে বললো, সুপ্রিয়া সব কিছু ঠিক আছে তো? তোমার গলা এরকম শোনাচ্ছে, মা তার সমস্যা লুকিয়ে গেলো। আর বোলো না। কাজের চাপ প্রতিদিন দুটো করে এপিসোডের শুটিং হচ্ছে। তার উপর টিভি চ্যানেলে ইভেন্ট লেগেই আছে। তার উপর যেকোনো একটা ছুতো তে আজকে এই খানে পার্টি কাল ওখানে পার্টি , খুব স্ট্রেস পড়ছে। এই স্টুডিও থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে এখন একজায়গায় যাচ্ছি। আজকেও পার্টি আছে।” তার কিছু দিন পর, মা বাবা কে ফোন করে বললো, সিরিয়াল তার প্রথম সিজনের শুটিং শেষ হয়েছে। ২ য় সিজন শুরু হবার আগে হাতে বেশ কিছু দিন সময় আছে। অনেক কথা জমে আছে। এরা আমাকে ছাড়তে চাইছে না।

দ্বিগুণ টাকা তে কন্ট্রাক্ট রিনিউ করতে চাইছে। আবার আমার কাছে অন্য একটা ভালো অফার ও এসেছে। নতুন একটা প্রোডাকশন হাউস অনেক টাকা ইনভেস্ট করে নতুন একটা বিনোদন চ্যানেল লঞ্চ করছে। তার একটা প্রাইম স্লট মেগা সিরিয়াল এ আমাকে মেইন ফেমাল লিড অফার করছে। আমি বুঝতে পারছি না কি করবো? আমার বর্তমান চরিত্র টা রীতিমত জনপ্রিয়। আর অন্যদিকে লিড রোল এ অভিনয় করবার সুযোগ। আমাকে খুব তাড়াতাড়ি ফিউচার নিয়ে একটা ডিসিশন নিতে হবে। আমি বাড়ি ফিরছি। এইবার অনেক দিন থাকবো। অন্তত প্লান তাই আছে।” মা যেদিন ২ য় বার মুম্বাই থেকে বাড়ি ফিরলো, সে দিন টা আমার স্পষ্ট মনে আছে।

মর্নিং ফ্লাইটে এসেও, মা একটা হোটেলে কি একটা প্রোগ্রামে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিল।হোটেল থেকে বেরিয়ে সেই স্করপিও গাড়ি করে দুপুর ২ টো নাগাদ মা বাড়ী ঢুকলো, একটা পরিবর্তিত শরীরী ভাষা আর সম্পূর্ণ অচেনা লুক সাজ পোশাক নিয়ে। সেসময় মায়ের পরনে ছিল, জিন্স আর ডিজাইনার অফ শোল্ডার টপ। বাবা সেসময় বন্ধুর বাড়ি নিমন্তন্ন খেতে বাড়িতে ছিল না। মা এসে আমাকে একটা লম্বা হাগ দিয়ে সেরকম কোনো কথা না বলে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। মা শুধু বলেছিল সরি রাহুল আজকে তোকে সময় দিতে পারছি না। আজ রাতে আমার এক বন্ধুর বার্থডে পার্টি আছে। লেট নাইট পার্টি। আমাকে রাত জাগতে হবে। এখন একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছি।

বাবা ফেরার আগেই মা রাত আট টা নাগাদ একটা ছোট স্কার্ট আর স্লিভলেস পার্টি ওয়ার টপ পরে গ্ল্যামারাস মেকআপ করে বেরিয়ে গেলো। মার সাজ পোশাক আর হাব ভাব দেখে আমার চোখ হা হয়ে গেছিলো। আমি যে মা কে ডাব ডাব করে তাকিয়ে দেখছি সেটা মায়ের ও চোখ এড়ালো না। বেরোনোর আগে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, ” হা করে তখন থেকে কি দেখছিস আমাকে, দেখছিস তো তোর মা আর আগের ঘরের সহজ সরল বউটি নেই। সেলিব্রিটি হয়ে গেছে, ফ্যান রা ,স্পন্সর, প্রোডিউসার রা তোর মাকে এই অবতারে দেখতেই বেশি পছন্দ করে। এই সব ড্রেস পরে পার্টি গেলেই পেমেন্ট টা সময় মত পাই। কি বুঝলি…..” এমন সময় বাবার ফোন এলো, বাবা মা কে ফোন করে জানালো বন্ধু কিছুতেই আজকে বাড়ি যাওয়ার জন্য ছাড়ছে না। তুমি প্লিস আজকের রাত টা রাহুল কে একটু ম্যানেজ করে নাও না। এমনিতে অসুবিধে বিশেষ নেই, আটটা অবধি যমুনা দি থাকবে, তারপর সময় টা দেখতে হবে। আর একান্ত বেরোলে বাড়ির দরজা লক করে বেরিও। তুমি এটা জানো, তাও বলছি বেডসাইড টেবিলের ড্রয়ারে বাড়ির চাবি রাখা আছে। লক করে দেবে। আমি সকালে চলে আসবো।
 
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ৬

বাবা যখন আমার মা কে আমাকে মাত্র একটা রাতের জন্য একটু দেখে রাখবার কথা বলে ফোন টা রাখলো আমি মায়ের মুখের দিকে লক্ষ্য করে দেখছিলাম। মা সাধারণত বাবার কোনো কথায় বিরক্তি প্রকাশ করতো না। কিন্তু সেবার মার বাবার ফোনটার পর অদ্ভুত রিএকশন দেখলাম। ফোন টা কেটে দিয়ে বললো, ” উনি বন্ধুর সঙ্গে ফুর্তি করবেন আর আমার পার্টি যাওয়া ক্যান্সেল হয়ে গেলো। হাজার টা কৈফিয়ত দিতে হবে, আমার সাফল্যে ঈর্ষাকাতর ব্যাক্তি তো কম নেই, তারা আমার কান ভাঙানি দিলে আমার সাথে ওনার রিলেশন তাই খারাপ হয়ে যাবে…., কোনো মানে হয়, উফফ ভালো লাগছে না। তোর বাবার বন্ধু তাই আগে হলো…”। আমি এর আগে কোনো দিন মা কে এই ভাবে বাবার উপর মেজাজ খারাপ করে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখি নি।

মা বাইরে যাওয়ার জন্য ছট পট করছে দেখে আমি মা কে বললাম তুমি আমার জন্য ভেবো না। বেরিয়ে যাও, কোনো প্রয়োজন পড়লে ফোন তো থাকলো। তুমি যমুনা মাসি বেরিয়ে যাওয়ার পর আমাকে নিচ্ছিন্ত ভাবে বাড়িতে লক করে বেরিয়ে যেতে পারো। এর আগেও আমি এক আধ দিন একা থেকেছি। কিচ্ছু হবে না।” আমি ভেবেছিলাম মা রাজী হবে না। আমার চেয়ে যে ঐ কোন কো প্রোডিউসার এর বার্থ দে উপলক্ষে একটা অভিজাত ক্লাবে রাখা লেট নাইট পার্টি যে তার কাছে ইম্পর্ট্যান্ট হয়ে যাবে সেটা ধারণা করতে পারি নি। মা নির্দ্বিধায় এক অচেনা অজানা ড্রাইভারের ভরসায় রেখে আমাকে রেখে অন্য ফোন করে অন্য গাড়ি ডেকে দিব্যি সাড়ে আটটা নাগাদ পার্টি অ্যাটেন্ড করতে বেরিয়ে গেলো।

আমি রাতে একাই খাবার খেয়ে দেয়ে যথা সময় ঘুমিয়ে পড়লাম। প্রায় রাত দুটো নাগাদ বাড়ির গেটের বাইরে একটা হল্লা আর জোরে গেটের কোয়াপশিল খুলবার আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে গেলো। ড্রাইভার ভাইয়া কে ডাকলাম কোনো সাড়া পেলাম না। একা একা উঠে দেখতেও সাহস হলো না। আড়াইতে নাগাদ আবার একটা শব্দ পেলাম। এবার চেনা শব্দ, মায়ের গলার আওয়াজ। সে কাউকে ফোন এ বলেছিল, নয়া বালা অফার আচ্ছা হে, পুরানা সে ১০ লাখ জায়দা , ঠিক হে ডিল ফাইনাল কর দিজিয়ে, হুম মুম্বাই আকে সাইনিং মিটা দুঙ্গী।”

মার গলা শুনে আমি দেখি মা একটা ফিনফিনে নাইট ড্রেস পরে ঘুমানোর তোর জোর করছে। মায়ের দুধ গুলো নাইট সুইটের নিচ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। না চাইলেও চোখ মায়ের বুকের কাছে চলে গেলো। এমনি সময় টাইট ইনার পড়ায় বোঝা যায় না। শেষ ক মাসে দুধের সাইজ বেশ ভালো মতন বেড়ে গেছে বোঝা গেলো। কিভাবে মায়ের ব্রেস্ট এত তাড়াতাড়ি বড়ো হয়ে গেলো, সেটা কিছুতেই আমার মাথায় আসলো না। আমি এসে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কখন ফিরলে, বাইরে কারা যেনো এসেছিল আওয়াজ পেলাম। তুমি তাদের চেনো?

মা বিরক্তির সুরে বললো, আহ রাহুল, তুই আবার এত রাতে জেগে আছিস কেনো? পাঁচ মিনিট হলো ফিরেছি। বড্ড টায়ার্ড।” আমি আবার জিজ্গেস করলাম ” বাইরে ঐ আওয়াজ গুলো কিসের ছিল।”

মা কড়া সুরে জবাব দিল ওরা আমার বন্ধু ছিল, পার্টির পর আমায় ছাড়তে এসেছিল। আমি আরো কিছু জিজ্ঞেস করবো বলে যেই মায়ের বিছানা র পাশে গিয়ে বসেছি। মা সাথে সাথে বিরক্তির সুরে বলল, প্লিস রাহুল আমায় এখন বিরক্ত করিস না। যা এখান থেকে। আমায় একা থাকতে দে। এখন আমি ঘুমের ওষুধ খাবো আর পরে পরে ঘুমাবো। এখন যা অভ্যাস হয়েছে ঘুমের ওষুধ না খেলে ঘুম হয় না বুঝলি। প্লিজ এখন আমাকে ঘুমোতে দে। কাল কথা বলবো।”এই কথা গুলো বলার সময় আমি মায়ের একদম সামনে ছিলাম, তাই মার মুখ থেকে একটা বাজে ঝাঁঝালো গন্ধ পেলাম। পরে জেনেছিলাম ওটা মদের গন্ধ ছিল। সেই রাতের পর আমার মনে বিন্দু মাত্র সংশয় ছিল না আমার মা অ্যাকট্রেস মডেল হয়ে অন্য পরিবেশে অন্য শহরে চলে গিয়ে নিজেকে একেবারে পাল্টে ফেলেছে। পরের দিন সকালে বাবা ফোন করে জানিয়েছিল ওর বন্ধুর বাড়ির এদিক টায় গাড়ির গোলমাল চলছে তাই বাবার ফিরতে ফিরতে রাত হবে।

আমি ফোন টা ধরেছিলাম। মা তখন ঘুমাচ্ছিল। প্রায় বেলা ১১ টা নাগাদ উঠে বিছানায় বসে বেড টি খেয়ে , নিজের ফোন নিয়ে ফের ব্যাস্ত হয়ে পড়ল। সেদিন রান্নার মাসীর শরীর খারাপ হাওয়ায় আসে নি । ১২.৩০ নাগাদ স্নান সেরে একটা শর্টস আর টপস পরে আমার ঘরে এসে বললো, রাহুল একটা কথা ছিল, কাল আমি অনেক রাত করে পার্টি থেকে মদ খেয়ে টলতে টলতে বাড়ি ফিরেছি। এটা বাবাকে বলিস না। তোর বাবা তার আগের রূপ তাকেই ভালোবাসে সে এখন হটাৎ করে আমার আসল বর্তমান রূপ দেখে ভীষণ কষ্ট পাবে। আর একটা কথা আমি মুম্বাই গিয়ে ওখানকার জীবনযাত্রায় এমন ভাবে দ্রুত এডপ্ট করে নিয়েছি। নানা ব্যাবসায়িক ইকুয়েশনে , নতুন সম্পর্কে , টার্মস এন্ড কন্ট্রাক্ট এর মার প্যাঁচে এমন বিশ্রী ভাবে জড়িয়ে পড়েছি, আমার পক্ষে মুম্বাই ছেড়ে তোদের কাছে এসে আগের মতন একসাথে থাকা একেবারে ইম্পসিবল। আমি সব কিছু ছেড়ে বেরোতে চাইলেও আর পারবো না কারণ আমাকে কেন্দ্র করে লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট হয়েছে কাজেই আমাকে ছাড়বে না। আর সত্যি বলছি, আমার তাতে কোনো আক্ষেপ নেই। তোদের জন্য খারাপ লাগে ঠিক ই কিন্তু আমি যা যা পেয়েছি সেটা খুব কম সাধারণ নারীর জীবনে জোটে। তুই জানলে অবাক হবি তোর যে মা একটা সময় এই অ্যাক্টিং মডেলিং এর লাইনে কোনোদিন আসতেই চায় নি, সে এখন চুটিয়ে এই লাইফ স্টাইল টা উপভোগ করছে। এইবার মুম্বাই থেকে আসবার আগে তিনটে শর্ট ফিল্ম সাইন করে এসেছি, সেটা তো এমনি এমনি আসে নি। যেটার মধ্যে একটা ছবি আবার জাতীয় পুরস্কার জয়ী চিত্রপরিচালক এর সাথে। ওটা রিলিজ হবার পর আমার কেরিয়ার গ্রাফ কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে যাবে ভাবতে পারিস। তার উপর আমার নতুন মেগা সিরিয়াল তেও লিড ফিমেল রোল করা ফাইনাল হয়ে আছে সেটা তো তোরা জানিস ই। এছাড়া আমি অলরেডী দুটো বড়ো কমার্শিয়াল করেছি। তার একটা তুই টিভিতে স্রম্পচার হতে দেখেছিস। তুই জানলে অবাক হয়ে যাবি যে তোর মার হাতে এরকম আরো পাঁচটা কমার্শিয়াল অ্যাড ফিল্ম আছে। যার শুটিং সব সামনের মাসের মধ্যেই শেষ করতে হবে। আবার কাল রাতে খবর এলো, আরো একটা স্মল বাজেট ফিচার ফিল্ম কনফার্ম হয়েছে। এছাড়া প্রচুর মডেলিং এর কাজ আছেই । সামনে পুরো পাকেড শিডিউল। আমি ব্যাস্ত হয়ে পড়বো। রেগুলার তোদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবো না। কিন্তু যা রোজগার করবো জানবি সব ই তোদের জন্য। তোর বাবা আমার এই ভাবে মুম্বাই এ প্রায় সেটেল করে যাওয়ার খবর জানলে দুঃখ পাবে। তুই অন্তত আমাকে সাপোর্ট করিস।”

বাবা ফিরলে মা বাবাকে ও আস্তে আস্তে সব কিছু জানালো। বাবা বন্ধুর অনুষ্ঠান থেকে ফিরে মা কে দেখে খুব ফ্রেশ আনন্দের মুডে ছিল, মার serious কথা গুলো শুনে গম্ভীর মুখ করে একেবারে চুপ করে গেলো। তারপর এটাও মা খোলাখুলি জানালো এখন মুম্বাই এর সবাই জানে মা অবিবাহিত। তাই সে এত ভালো ভাল কাজ পারছে। যেদিন এটা প্রকাশ পাবে সুপ্রিয়া শুধু বিবাহিত তাই না তার একটা বেশ বড়ো ছেলে আছে। স্পন্সর রা মায়ের উপর ইনভেস্ট করতে ইন্টারেস্ট হারাবে তার কেরিয়ার প্রশ্নের মুখে এসে যাবে। এখন অন্তত বছর দেড়েক মা বাবার বিবাহিত সম্পর্ক টা চেপে যেতেই হবে। এটা করতে প্রথম প্রথম খুব গিলটি ফিল হতো কিন্তু এখন নাকি মা বুঝতে পেরেছে যে কিছু বড় পেতে গেলে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়। এটা দীর্ঘ কাল জুড়ে চলবে না।

দেড় বছর পর, বাবা কে মা পুরনো বন্ধু বানিয়ে লোক দেখানো প্রেস মিট ডেকে আর মুম্বাই দের ফিল্মি লাইনের লোকেদের সামনে বিয়ে করে ঠিক সময়ে বাবা কে আর আমাকে মা তার জীবনের মূল স্রোতে যুক্ত করে নেবে। এই মর্মে ফিল্ম ক্যারিয়ার এক্সপার্ট দের থেকে পরামর্শ পেয়েছে। তার অ্যাসিস্ট্যান্ট তার ম্যানাজার যে হাতে ক জন মুম্বাইতে মায়ের বিবাহিত আর বাচ্চা থাকার খবর জানে তারাও এক পরামর্শ দিয়েছে। মা কে বাবা বরাবর ভালোবেসে সন্মান দিয়ে এসেছে তাই মার সিদ্ধান্ত মুখ বুজে নিল। বাবা তখন মা কে আটকালেও, মার পক্ষে বাবার কথা শোনা সম্ভব হত না। কারণ সে চুক্তি তে সই করে এসেছে। তাই তাকে কাজ করতে মুম্বাই ফিরে যেতেই হতো।

এসে আমাদের সঙ্গে ১৫ দিন কাটিয়ে মা আবার মুম্বাই তার কাজের দুনিয়া তে ফিরে গেলো। এই বার মুম্বাই ফিরে যাওয়ার দিন কয়েক এর মধ্যে মা বাবা কে ফোন করে জানালো সে নতুন একটা বড়ো ফ্ল্যাট বুক করছে। প্রোডাকশনের দেওয়া ফ্ল্যাট টা ভীষণ ছোটো, ওখানে কলিগ দের নতুন বন্ধু দের নিমন্ত্রণ করাই যায় না। ঐ নতুন ফ্ল্যাট টা বিশাল। ওর ভেতর নাকি মোট ৫ টা বেডরুম আছে। ব্যালকনি থেকে দূরে সমুদ্র দেখা যায়। এছাড়া ঐ ফ্ল্যাটের মধ্যে সব আধুনিক ব্যাবস্থা, জিম ফেসিলিটি আছে। তার এক কো স্টার বন্ধুর বদান্যতায় আর সুপারিশে এত ভালো জায়গায় এত অল্প সময়ে নতুন ফ্ল্যাট টা কিনতে পারছে। সেই কো স্টার ব্যাক্তি নাকি তার চেনা ব্যাংকে কথা বলে হাউস লোন এপ্রুফ ও করিয়ে দিয়েছে।

প্রোডাকশনের দেওয়া পুরনো ফ্ল্যাট টা খুব ছোট। ওটা সে তার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিশা কে ছেড়ে দেবে। ওখানে জায়গা এতটাই শর্ট বন্ধুদের ডেকে পার্টি এরেঞ্জ করা যায় না। বড়ো মাপের বন্ধুদের ইনভাইট করা যায় না। মুম্বাই টে শুধু কাজ করলেই হয় না তার সাথে বড়ো ব্যাক্তিদের সাথে পার্টির মাধ্যমে যোগাযোগ তাও রাখতে লাগে। তাই আর উন্নতি করার জন্য, খুব তাড়াতাড়ি মা পুরনো প্রোডাকশন এর দেওয়া ফ্ল্যাট ছেড়ে নতুন ফ্ল্যাটে উঠে যাবে। গৃহ প্রবেশের দিন আমাদের ইনভাইট করার খুব ইচ্ছে ছিল।

কিন্তু নির্দিষ্ট একটা কারণে পারছে না। মা এই বিশেষ মুহূর্তে আমাদের যে খুব মিস করবে। আর মা চেষ্টা করছে, খুব তাড়াতাড়ি এক এজেন্ট কে ধরে যাতে আমাদের জন্য ও একটা ভালো ফ্ল্যাটের ব্যাবস্থা করা যায়। কথা এগিয়েছে অনেক তাই। মার খুব ইচ্ছে আমরাও যাতে পুরনো এই বাড়ি ছেড়ে নতুন ঝা চক চকে একটা ফ্ল্যাটে শিফট করে যাই কিন্তু বাবা মায়ের প্রপোজাল অ্যাকসেপ্ট করলো না। সে জানিয়ে দিল সে তার পুরনো বাড়িতে খুশি আছে তার হটাৎ করে বউ এর টাকায় উঠতি বড়োলোক সাজার ইচ্ছে হয় নি। বাবার কথায় মা অসন্তুষ্ট হলো। সে বাবার মুখের উপর শুনিয়ে দিল ঠিক আছে আমার অন্যায় হয়েছে ফ্ল্যাটের কথা বলা, তুমি থাক এই পুরনো বাড়িতে নিজের পুরোনো মূল্যবোধ আর কালচার নিয়ে পরে। আমি বিরক্ত করবো না। সময়ে টাকা তোমার একাউন্টে ঠিক পৌঁছে যাবে। না সেটা তোমার জন্য না, আমাদের ছেলের ভবিষ্যত এর জন্য। ঐ দিন এর পর থেকেই মা ফোন করা, আমাদের খবর নেওয়া অনেক কমিয়ে দিল। আমাদের মধ্যে দূরত্ব টা অনেক বেড়ে গেলো। আস্তে আস্তে আমাদের ছেড়ে নিজের জগৎ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল। রুপোলি পর্দার জগতে নানাবিধ প্রলোভন থাকে, আমার মায়ের মতন সেন্সিবল সরল মূল্যবোধ এ বিশ্বাসী নারী ও সেই সব প্রলোভনে পা দিয়ে ফেললো। কিছুদিনের মধ্যে আমরা খবর পেলাম, মা ড্রাইভিং শিখে নিয়েছে, সোর্স খাটিয়ে তাড়াতাড়ি ড্রাইভিং লাইসেন্স বার করে মাঝেমধ্যে নিজেই ড্রাইভ করে শুটিং এ পৌঁছে যাচ্ছে। মার এই প্রগ্রেসের খবর আমাদের রীতিমত অবাক করে দিয়েছিল।

তারপর দেখতে দেখতে মার মুম্বাই যাওয়ার এক বছর কেটে গেলো। আমার মা এখন টেলিভিশন এর চেনা মুখ। প্রথম কয়েক মাস শুধু মায়ের রূপ আর অভিনয় এর প্রশংসাই কানে আসত। ধীরে ধীরে মা কে নিয়ে আর পাঁচ রকম খবর ও সামনে আসতে শুরু করলো। মা যত উপরে উঠছিল ততই যেন তার অতীতের জীবন থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল। যে আমার খবর না নিয়ে একটা দিন সে থাকতে পারতো না। সেই আমাকেও ভুলে গেছিল। বছর ঘুরতে সেরা আপ কামিং অ্যাকট্রেস হিসাবে একটা প্রথম সারির টেলিভিশন আওয়ার্ড জিততেই, মার ব্র্যান্ড ভ্যালু চর চর করে উপরে উঠে গেলো। নতুন ফ্লাটে শিফট করার পর পরই মার লাইফ স্টাইল আগাগোড়া পাল্টে গেছিলো। মার মতন সংবেদন শীল মূল্যবোধে বিশ্বাস করা একজন নারী ও নিজের মাথা স্থির রাখতে পারলো না। তার মুম্বাই এর কাজের জগতে গড়ে ওঠা নতুন বন্ধুরা মার লাইফের ইম্পর্ট্যান্ট ডিসিশন গুলো নেবার ক্ষেত্রে তাদের ব্যাক্তিগত প্রভাব খাটানো শুরু করলো। কিছুর দিন যেতে না যেতেই, মার সঙ্গে তার সেলিব্রিটি male co star / producar er সম্পর্কের কথা পেজ থ্রি ম্যাগাজিনের হট টপিক এ পরিনত হয়। ঐ পেজ থ্রি জার্নালিস্ট রা মার সঙ্গে ঐ সেলিব্রিটি কো স্টার এর গোপনে এনগেজমেন্ট পর্যন্ত হয়ে গেছে এমন খবর দিয়ে দিয়েছিল। যদিও প্রথম দিকে আমার মা এই সম্পর্ক র কথা প্রকাশ্যে অস্বীকার করে । এমন কি সেই কো স্টার ও এটাকে গোপন রেখে এসেছে। কিন্তু মা কে আর ঐ নামী টেলি অভিনেতা স্টুডিও ছাড়া একাধিক জায়গায় একসাথে সময় কাটাতে দেখে তাদের অফ স্ক্রিন কেমিস্ট্রি বুঝতে অসুবিধা হয় নি। তাদের সম্পর্কের কথা টিনসেল টাউনের চর্চার বিষয় হয়ে যায়। এই খবর আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়। বাবার মন এটা শুনে ভেঙে গেছিল। আমার মা এখন সুপ্রিয়া থেকে তার স্ক্রিন নেম মিস মোহিনী পাঠক এ ট্রান্সফর্ম হয়েছে। পুরনো নাম টা সে নিজে ইউজ করতে লজ্জা পায়। তার আলাদা আইডেন্টিটি হাওয়ায় পুরনো আসল নাম বাদের খাতায় পিছনের সারিতে চলে গেছে। প্রথম সিরিয়ালে আমার মা সজ্জন সরল মিষ্টি স্বভাবের গৃহ বধূর চরিত্রে অভিনয় করলেও ২ য় মেগা সিরিয়াল এ নিজের ঘরোয়া বধূর ইমেজ ভেঙে অনেক তাই বেরিয়ে এসেছে সে। অন স্ক্রিন শাড়ী ব্লাউজ ট্র্যাডিশনাল পোশাক ছাড়াও মডার্ন আউটফিট এও মা এখন সমান স্বাচ্ছন্দ্য। গত এক বছরে তিনটে শর্ট ফিল্ম এও অভিনয় করে ফেলেছে। শর্ট ফিল্ম আর হিন্দি সিরিয়াল মিলিয়ে চারটে সাহসী বেড সিন এ অভিনয় করে ফেলেছে। একাধিক কিসিং সিন ও করে ফেলেছে।

মার জীবনে এসব মৌলিক পরিবর্তন এত দ্রুত এসেছে যে মা নিজেও তাল সামলাতে পারে নি। মা মুম্বাই এ গিয়ে পাঁচ মাস এর মধ্যেই ড্রাইভিং অ্যান্ড সুইমিং শিখে নেয়। মার স্পোকেন ইংলিশ ও অল্প সময়ের মধ্যে দারুন ইমপ্রুভ করে। মা প্রভাব কাটিয়ে তাড়াতাড়ি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বার করে। প্রোডাকশন হাউস এর সব চেয়ে এসেট এ পরিণত হয়েছিল। প্রোডাকশন হাউজ মার কাজে খুশি হয়ে, ঐ অ্যাওয়ার্ড জেতার পর পরই একটা ব্র্যান্ড নিউ কার গিফট করেছিল। মা গাড়ি গিফট পেয়ে খুব খুশি হয়েছিল। আমাদের কে গাড়ি তার সামনে নিজে দাড়িয়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলে পাঠিয়েছিল। তারপর কিছু দিনের মধ্যে মা নিজে ড্রাইভ করে তার শুটিং এ আর বন্ধু দের সঙ্গে পার্টি হাং আউট করতে যাওয়া স্টার্ট করে। একদিন পার্টি থেকে সামান্য মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ফেরার সময় মা কে পুলিশের কাছে হেনস্থা পর্যন্ত হতে হয়। মোটা জরিমানা দিয়ে মা পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে ছিল। মার চরিত্রের এই অভাবনীয় প্রগ্রেস এর খবর আমাদের বাপ ছেলে কে একেবারে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। মা নিজের মুখেই একদিন কথায় কথায় স্বীকার করে নেয় যে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু আর প্রোডাকশন হাউজ বিজনেস প্রফিট ঠিক রাখতে মাকে এমন সব কাজ করতে হয়েছে যেগুলো করার কথা স্বপ্নেও কোনোদিন মা ভাবতে পর্যন্ত পারতো না, যার অনেকগুলো প্রকাশ্যে বলা পর্যন্ত যায় না। অ্যাক্টিং এর পাশাপাশি নিয়মিত মডেলিং ফটোশুট তো ছিল। মার লুক আর ড্রেস নিয়ে রীতিমত এক্সপেরিমেন্ট চলছিল। মা পুরো পুরি হিরোইন মেটেরিয়াল ছিল। সেটা যত দিন যাচ্ছিল প্রমাণ করে দিচ্ছিল।
 
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ৭

মার লাইফের ২ য় মেগা টিভি সিরিয়াল এর শুটিং শুরু হবার পর কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে, আরো একটা চমকপ্রদ খবর আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়, একটি দেশি সুইম ওয়ের আর সেক্সী নাইট ড্রেস প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে মায়ের বিরাট অর্থের চুক্তি হয়। বাবাকে বিন্দু বিসর্গ না জানিয়ে মা এটাতে সম্মতি জানিয়ে চুক্তিপত্রে সই করে। কোম্পানির সিইও ছিল মার প্রোডাকশন হাউজ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এর বন্ধু।

মার এই ডিল এর পিছনে যত না আর্থিক দাবি ছিল তার চেয়ে প্রভাবশালী এমডি সিইও স্থানীয় বিজনেস টাইকুন দের নেক নজরে আসা ছিল। তাদের কে খুশি করে তাড়াতাড়ি উপরে ওঠাই ছিল মায়ের এই ডিল সাইন করবার প্রধান উদ্দেশ্য। তার কো স্টার বন্ধুর উপদেশে মা এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ঐ ব্র্যান্ড মা কে তাদের প্রোডাক্টের প্রমোশনের প্রধান মুখ হিসাবে ঘোষণা করে। প্রায় সব প্রথম সারির ফ্যাশন ম্যাগাজিনে মার ফটো ছাপা হয় ঐ ব্র্যান্ডের কভারে। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয় আগামী দুই বছর ঐ সংস্থা বাজারে যতগুলি বিজ্ঞাপন আনবে মা তাতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে সেলেব মডেল হিসাবে পারফর্ম করবে।

এই চুক্তি সই করার কিছুদিনের মধ্যেই মা কে ধাতস্ত হবার কোনো সময় না দিয়ে স্পেশাল হাউস ওয়াইফ নাইট ড্রেস এডিশনের প্রমোশন এ বোল্ড ফটোশুট করতে হয়। সেটা শেষ করতে না করতেই ঐ সেম সংস্থার বানানো সুইম স্যুট পরেও বোল্ড ফটোশুট এ অংশগ্রহণ করতে হয়। এই ফটো সুট দুটো করার পরেই মার অবতার এ নতুন নতুন রং যুক্ত হয়। ঘরোয়া গৃহবধূ র ড্রেস ছাড়াও সে যে সাহসী মডার্ন আউটফিট এও স্বচ্ছন্দ সেটা প্রমাণিত হয়। মার কাছে মডেলিং আর কমার্শিয়াল এর অফারের পর অফার আসতে থাকে। মার বাজার দর এক লাফে অনেক টা বেড়ে যায়।

মার পারিশ্রমিক ও এতটাই বেড়ে যায় যে মা কিছু সপ্তাহ একটা বিজি মডেলিং অ্যান্ড অ্যাক্টিং শিডিউল মেনে পরিশ্রম করার পর, ব্যাস্ত জীবন থেকে রিলিফ পেতে নিজের খরচায় তার নতুন মুম্বাই এর রুপোলি জগতের বন্ধুদের সঙ্গে প্রথমবার দেশের বাইরে ছুটি কাটাতে যায়। মার হলিডে ডেস্টিনেশন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটা বিখ্যাত সমুদ্রসৈকত শহর ছিল। সেটা ১০ দিনের টুর ছিল।

সেই ছুটি কাটানোর সময়, তার এক বন্ধুর প্রোফাইল থেকে মায়ের কিছু সেক্সী সুইমস্যুট পরে এক প্রভাবশালী ধনী ব্যাচেলর পুরুষের সঙ্গে সুইমিং পুলে একান্তে সময় কাটানোর কিছু মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। ঐ ছবি বাবার চোখেও পরে, তার মানষিক কষ্টের কারণ হয়ে ওঠে। মা ওটা নিয়ে বাবাকে কোনো সাফাই দেয় নি , আরো ভালো করে বললে, ঐ কো স্টার এর সঙ্গে নতুন গড়ে ওঠা সম্পর্ক টা নিয়ে বাবাকে সাফাই দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করে নি। এইবার আসা যাক মার অ্যাক্টিং কেরিয়ার ঠিক কি ভাবে অগ্রসর হচ্ছিল সেই ব্যাপারে, প্রথম মেগা টিভি সিরিজ টায় মা একজন ঘরোয়া সংবেদনশীল, সরল সৎ ভাবমূর্তির সেকেন্ড ফিমেল লিড চরিত্রে অভিনয় করলেও, ২ য় মেগা সিরিজ টায় মা আগের সিরিজের সাফল্যের ভিত্তি টে প্রধান ফিমেল লিড চরিত্র পেয়ে যায়।

এই নতুন চরিত্রে অভিনয় করে বলাই বাহুল্য মা আরো বেশি ফ্রেম আর জনপ্রিয়তা পায়। তার করা এই নতুন মেগা টিভি সিরিজের টিআরপি টা বেশ অল্প সময়ের ব্যবধানেই সর্বোচ্চ পজিশন এ পৌঁছে যায়। প্রোডাকশন হাউস এই ২য় সিরিজের গল্পে নতুন মোড় আনতে গিয়ে মায়ের চরিত্র তার একটা ডবল রোল আমদানি করে। যেটা প্রথম সরল ট্র্যাডিশনাল গৃহবধূ চরিট্রের থেকে একেবারে আলাদা ছিল। ওটা একটা সফল মডেল/অ্যাকট্রেস এর চরিত্র ছিল। ওখানে দেখানো হয়েছিল যে ঐ চরিত্রের নারী টি টাকার জন্য সে পুরুষদের সংসার আর পুরোনো

বিবাহিত সম্পর্ক পর্যন্ত ভাঙতে পারে। সে অর্থে এটাই ছিল মায়ের ক্যারিয়ারে প্রথম নেগেটিভ রোল। যদিও খুব চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল কিন্তু পর্দায় ওটা সম্প্রচার হতে দেখা গেলো, ঐ নেগেটিভ রোল তাও আমার মা বেশ সাফল্যে র সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছে। ঐ নতুন লুকে মা কে মানিয়েছিল বেশ। ওখানে মার Dress code hairstyle সব মডার্ন ওমান দের মতন স্টাইলিশ ভাবে সাজানো হয়েছিল। এই ডবল রোল আসবার পর মার কাজের প্রেসার ও প্রায় ডবল হয়ে যায়। কিন্তু টাকার জন্য আর ফ্রেমের জন্য মা সব কিছু মুখ বুজে মেনে নেয়।

আমার মায়ের প্রাথমিক ভাবে ৬ মাস পর মুম্বাই ছেড়ে ফের নিজের ঘরে ফিরে আসবার কথা ছিল। সিনহা আঙ্কেল মা কে মুম্বই নিয়ে যাওয়ার আগে অন্তত সেটাই আমার বাবাকে বুঝিয়েছিল। মা ও এই বিষয়ে তখন সহমত পোষণ করেছিল। সেই মা মুম্বাই এ গিয়ে থাকার পর অন্তরে বাহিরে এতটাই পাল্টে গেছিল যে আমার বাবা কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে নিজে নিজেই তার মুম্বাইয়ে গজিয়ে ওঠা নতুন প্রভাবশালী বন্ধুদের কথায় এসে নিজের কন্ট্রাক্ট এক্টেনশন করিয়ে নতুন কন্টাক্ট সাইন করার মতন গুরুত্ব পূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল।

এই চুক্তি নবিকরণের সাথে সাথে মার প্রায় পাকাপাকি ভাবে মুম্বাই তে সেটেল হবার সমস্ত ব্যাবস্থা পাকা হয়ে গেছিল। এই ডিসিশন এর পিছনে টাকার অঙ্ক আর ফ্রেম একটা বড়ো ভূমিকা নিয়েছিল। নতুন কন্ট্রাক্ট তার প্রধান শর্ত ছিল, মা কে শুধুমাত্র ঐ বিশেষ প্রোডাকশন হাউসের হয়েই আগামী এক বছরের জন্য অভিনয় আর মডেলিং করতেই হবে।

শুধু তাই নয় যেকোনো কন্টেন্ট এ ওরা আমার মা কে দিয়ে পারফর্ম করিয়ে নিতে পারবে। কন্টেন্ট এর বিষয় বস্তুর ব্যাপারে মার মতামতের বা ইচ্ছে অনিচ্ছার কোনো গুরুত্ব থাকবে না। এছাড়া ২ য় মেগা ধারাবাহিক এর পর ওদের পরের মেগা ধারাবাহিকেও মা মেইন ফিমেল লিড রোল করবার জন্য প্রি কন্ট্রাক্ট সাইন করতে হবে। এছাড়া দুটো হিন্দি ওয়েৰ সিরিজে অভিনয়, একটা মাঝারি বাজেটের হিন্দি ফিল্ম এ ছোটো একটা হেরোইনের দিদির রোল ও কনফার্ম হয়েছে, সব কিছু ঠিক থাক থাকলে এই চলতি বছরেই, মা একটি স্বল্প বাজেট ফিল্মে আইটেম ডান্সার রূপেও আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। এই প্রোজেক্ট এর জন্যই কন্ট্রাক্ট এক্সটেনশন করার সাথে সাথেই মা কে স্পেশাল বলিয়ুড ড্যান্স ক্লাস এ যোগ দিতে হয়েছে একজন নামী ড্যান্স কোরিওগ্রাফারের তত্ত্বাবধানে।

মার মুম্বাই তে থাকবার ৭ মাসের মাথায় এমন একটা রুমৌর টিনসেল টাউনের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে যায় যেটা শুনে আমার বাবার মাথা আরো হেট হয়ে যায়। মা প্রকাশ্যে নাকি এক নামী হ্যান্ডসম লিড টেলিভিশন অ্যাক্টর/ প্রোডিউসার এর সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কথা প্রেসের সামনে প্রায় স্বীকার করে নিয়েছে। এই সম্পর্ক টা প্রথমে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু আর প্রচার ঠিক রাখতে লোক দেখানো ভাবে করা হলেও আস্তে আস্তে মা এই সম্পর্কের বিষয়ে সিরিয়াস হয়ে পড়ে। ঐ লিড অ্যাক্টর/প্রোডিউসার মার রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে একসাথে লিভ ইন করবার প্রপোজাল পর্যন্ত দিয়েছে বলে একটা পেজ থ্রি ম্যাগাজিন খবর প্রকাশ করে। মা এই খবর তার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায়।

কিন্তু ঐ অ্যাক্টর ইঙ্গিত পূর্ণ মন্তব্য করে তাদের সম্পর্কের বিষয় টা প্রায় স্বীকার করে নেয়। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় মা ঐ অ্যাক্টর/ প্রোডিউসার এর প্রপোজাল মেনে নিতে বাধ্য হবে, পাকাপাকি ভাবে মুম্বাই তে সেটেল হবে। কারণ ওতো বড়ো পার্সোনালিটি কে বারণ করবার সাহস আর ইচ্ছে কোনোটাই মায়ের ছিল না। এই খবর টা পেয়ে আমার বাবা মানসিক ভাবে ভেঙে পরে।

প্রথম দিকে মা মিথ্যে কথা বলে সম্পর্কের বিষয় টা বাবার কাছ থেকে লোকাতে চেয়েছিল, কিন্তু তাদের একসঙ্গে পার্টি উইকএন্ড ট্রিপ হাং আউট করবার পার্সোনাল পিকচার্স সোশাল মিডিয়া আর প্রিন্ট মিডিয়ার বের হওয়ার পর মা ব্যাপার টা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়। পরে জনাগেছিল, মা কে তাড়াতাড়ি এই সম্পর্কের বিষয়ে সিরিয়াস করবার জন্য তার সঙ্গী ঐ বড়ো মাপের অ্যাক্টর/প্রোডিউসার ঐ সব পার্সোনাল ইমেজ মিডিয়া তে লিক করেছিল।

ঐ সময় পাবলিশ করা ফটো গুলোর মধ্যে মায়ের ঐ ব্যাক্তির সঙ্গে সুইমিং পুলে সুইম সুইট পরে এঞ্জোয় করার মতন সাহসী পিকচার্স ও ছিল। প্রসঙ্গত বলে রাখি মা মুম্বাই এ গিয়ে মাস খানেক এর মধ্যে একটি অভিজাত ক্লাবে স্পেশাল সুইমিং ক্লাস এ যোগ দিয়ে তাড়াতাড়ি বেশ ভালো সাঁতার শিখে গেছিলো। সেই ক্লাবের প্রিমিয়াম মেম্বার হওয়ায় মা এই সুযোগ টা পেয়েছিল। তার বডি ফিটনেস বজায় রাখার একটা দারুন মাধ্যম ছিল।

মুম্বাই যাবার সাত মাস বাদে মা তৃতীয় বারের জন্য আরো একবার নিজের শহর কলকাতাতে ফিরেছিল। কিন্তু এই বার বাড়িতে আমাদের সঙ্গে না কাটিয়ে ঐ অ্যাক্টর/প্রোডিউসার এর কথায় পাঁচ দিন একটা নতুন ফাইভ স্টার হোটেলে থাকলো। মার এই আচরণের কোনো সদুত্তর আমার কাছে ছিল না। শহরে এসে ও একটিবারের জন্য বাড়িতে না আসায় বাবা খুব কষ্ট পেয়েছিল। যেসব কাজ নিয়ে মা শহরে এসেছিল সেগুলো অ্যাটেন্ড করতে বাড়িতে না থেকে ফাইভ স্টার হোটেলে থাকা টাই তার কাছে বেস্ট অপশন ছিল।

মা তৃতীয় বারের জন্য আমাদের শহরে আসলেও বাড়ি না ফিরে একটানা পাঁচ দিন তার ঐ সেলিব্রিটি বয় ফ্রেন্ড আর পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট মিস নিশার সঙ্গে ফাইভ স্টার হোটেলে নির্দ্ধিধায় কাটিয়ে দিল। সেই সময় মা এই শহরে নানা কাজ নিয়ে এসেছিল তাই এর মাঝে মাত্র দুদিন কয়েক ঘণ্টা সময় মা আমাদের জন্য বরাদ্দ করে রাখতে পেরেছিল।

প্রথম দিন মায়ের এসিস্ট্যান্ট এর কল পেয়ে যখন বাবার সঙ্গে বিকেল বেলা ফাইভ স্টার হোটেল রুমে পৌঁছলাম। বাবা একাই মার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলো কিন্তু আমি জেদ ধরায় আমাকেও নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। যাই হোক নির্দিষ্ট রুমের সামনে গিয়ে ২-৩ বার নক্ করায় মার পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট নিশা আণ্টি দরজা খুলে আমাদের কে আপ্যায়ন করে ভেতরে এনে বসালো। নিশা আণ্টি সেই সময় একটা স্টাইলিশ হট অফ শোল্ডার ড্রেস পড়েছিল। তাকে দেখতে খুব সুন্দরী লাগছিলো।

নিশা আণ্টি আমাদের বসিয়েই বাবাকে জিজ্ঞেস করলো বলুন কি নেবেন? সামথিং কোল্ড অর সামথিং হট? বাবা চায়ের কথা বললো। ঐ ফাইভ স্টার সুইটের ভেতর মোট দুটো পাশাপাশি রুম ছিল। সঙ্গে অ্যাটাচ একটা বসবার ঘর যেখানে আমরা এসে বসেছিলাম। রুমের এলাহী ফার্নিচার আর সাজ সরঞ্জাম দেখে আমার সাথে বাবারও চোখ ধাঁধিয়ে গেছিলো। ঐ রুমের এক কর্নারে একটা রেফ্রিজারেটর ও রাখা ছিল। দুটো বেডরুমের মাঝে একটা ডাইনিং প্যাসেজ ও ছিল। আমরা যেখানে বসেছিলাম, দেখলাম সামনের বেডরুমের দরজা টা ভেজানো আছে।

আমরা ওদিকে তাকাতেই নিশা আণ্টি বললো, ভেতরে মিটিং চলছে। মিটিং শেষ হলেই মা ওখান থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের সঙ্গে মিট করবে। কুড়ি মিনিট বসে থাকবার পর একজন হ্যান্ডসম পুরুষ ঐ রুমের ভেতর থেকে নিজের শার্ট আর সুটের বোতাম ঠিক করতে করতে বেরিয়ে আসলো। আমাদের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে সোজা সুইটের প্রধান দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে গেলো। তাকে ঐ রুমের ভেতর থেকে বেরোতে দেখে বাবার মুখ টা খুব করুন হয়ে গেলো। সে অজানা এক কারণে লজ্জায় মুখ নিচে নামিয়ে নিল।

আরো পাচ মিনিট পর, নিশা আণ্টি উঠে গিয়ে ঐ রুমের দরজায় দুই এক বার নক করলে একটা মডার্ন স্লিভলেস নাইট সুটের উপর একটা শর্ট হাউস কোট পরে মা বাইরে এসে আমাদের সামনে এসে উপস্থিত হল। প্রথম বার মা কে দেখে ভীষণ রকম অচেনা আর অন্য রকম লাগছিল। পুরনো লুকের সঙ্গে কোনো মিল খোঁজার চেষ্টা করিনি। মায়ের মুখের পুরনো সেই স্বতস্ফূর্ত হাসি আর সেই সারল্য ভাব টা চেষ্টা করেও খুঁজে পেলাম না। মা এসে আমার পাশেই বসেছিল। সব থেকে আশ্চর্য্য লাগলো, মায়ের গায়ের যে পুরোনো মিষ্টি একটা গন্ধ ছিল সেটাও খুঁজে পেলাম না।

বিদেশি ব্র্যান্ডেড দামী পারফিউমের গন্ধ তে সেটাও হারিয়ে গেছিলো। আগের বার যখন দেখেছিলাম মার শরীরে কোনো ট্যাটু ছিল না। এইবার কাধের স্ক্রিনের উপর করানো সুন্দর স্টাইলিশ ডিজাইনার ট্যাটু টা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিলো। কয়েক মুহূর্ত পর আমার নজর গেলো পাশের রুমের দরজা র দিকে। ওটা তখন হাট করে খোলা ছিল, আশ্চর্য্য হয়ে দেখলাম ভেতরে একজন মুখ চেনা টিভি সেলেব/প্রোডিউসার। বসে আছেন। লোকটার বেশ সুপুরুষ চেহারা, টিভিতে যত না ফর্সা লাগে তার থেকেও অনেক গুণ বেশি ফর্সা।

সেই সময় অবাক লাগলো দেখে লোক টা সম্পূর্ণ টপলেস অবস্থায় শুধুমাত্র একটা শর্টস পরে বসে ঐ রুমে বসে বসে ড্রিঙ্কস করছিল। মদের গন্ধ বসবার ঘর অবধি আসছিল। যার ফলে আমার বাবা বিশেষ ভাবে অস্বস্তি বোধ করছিল। বসবার ঘরে কারা এসেছে, কি কথা হচ্ছে এই সব ব্যাপারে উনি সম্পূর্ণ নিলিপ্ত ছিলেন। এত দিন বাদে আমাদের সঙ্গে দেখা হলেও আগের বারের মতন কোনো আবেগের বহির্প্রকাশ আমরা মায়ের কাছে দেখলাম না। বরং চ আমাদের মধ্যে কথা শুরু হতেই, প্রথম বার মায়ের মুখ থেকে সরাসরি মদের গন্ধ পেলাম।

সে কথায় কথায় আমাদের সামনে প্রকাশ করেই ফেলল আমরা বড়ো ভুল সময়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চলে এসেছি। একটা লম্বা বিজনেস ডিল সংক্রান্ত মিটিং শেষ করে সবে মাত্র ওর বন্ধু দের সঙ্গে বসে হার্ড ড্রিঙ্কস হাং আউট করছিল। সেই সময় আমরা চলে আসায় ওদের আসরের কিছুটা তাল কেটে গেছে। বাবা অবাক হয়ে অবিশ্বাসের সুরে মা কে আমার সামনেই জিজ্ঞেস করলো, “তুমিও আজকাল ড্রিঙ্কস করছো সুপ্রিয়া?”

মা ভাবলেসহীন গলায় উত্তর দিয়েছিল, সো হোয়াট? আমার ড্রিঙ্ক করা টা কে আবার ইস্যু করো না। এটা আমাদের প্রফেশনে খুব নরমাল বিষয়। শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া, জামা কাপড় পাল্টানোর মত নরমাল। আমি এখন যে লেভেলে আছি, সেখানে সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে গেলে পার্টি ইভেন্টস এটেন্ড করতেই হবে আর পার্টি মানেই অ্যালকোহল…. আমরা সত্যি ভুল সময় মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চলে এসেছিলাম।

আমি ও বেশ বুঝতে পারছিলাম যে মা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে বা সময় কাটাতে মোটেই স্বচ্ছন্দ বোধ করছে না। কিছু একটা লোকানোর চেষ্টা করছে যেটা আমরা বুঝতে পারছি না। বাবা মা কে অন্যমনস্ক দেখে প্রশ্ন করেই ফেলল। তুমি কি ডিস্টার্বড? মা তখন কথায় কথায় তো স্বীকার করে নিল আমরা আসার দশ মিনিট আগে থেকেই যখন মিটিং প্রায় শেষের পথে, মা ঐ হ্যান্ডসম সেলিব্রিটি অ্যাক্টর টির সাথে বসে ড্রিঙ্কস সহযোগে গল্পঃ করা আরম্ভ করেছিল।

মা বলাতে তার পি এ নিশা স্পেশাল দার্জিলিং টি এনে খাওয়ালো। তারপর মা নিশা আন্টির সাহায্যে আমাদের জন্য মুম্বাই থেকে আনা দামী সুন্দর সব গিফট গুলো একে একে তার লাগেজ থেকে বার করে দিল। গিফটের মধ্যে ছিল বাবার জন্য দামী ব্র্যান্ডেড রিস্ট ওয়াচ, সুট, ইমপোর্টেড শেভিং কিটস আর আমার জন্য দামী ফাউটেন পেন, টিনটিন এর কমপ্লিট কমিকস সেট, ব্র্যান্ডেড টি শার্টস, মুভি সিডিস।

বাবা জিজ্ঞেস করলো, এগুলো এভাবে এখানে দিচ্ছ কেন? তুমি বাড়ি আসবে না? মা করুন সুরে বলল,” আই অ্যাম সরি, এবারে একদম প্যাকেড শিডিউল। মনে হয় না বাড়ি যেতে পারবো। মন খারাপ করো না প্লিজ।” তারপর মা আমাদের আরো একটা সারপ্রাইজ দিয়েছিল। আমাদের কে না জানিয়েই মুম্বাই থেকেই আমাদের জন্য মা নতুন একটা তিন বেডরুম ওলা ফ্ল্যাট বুক করেছিল। ঐ ফ্ল্যাট যে আবাসনে তৈরি হচ্ছে সেখানে নাকি সুইমিং পুল , মাল টি জিম, ক্লাব এবং পার্ক সহ সব রকম আধুনিক জীবনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। যে কর্পোরেট বিল্ডার্স গ্রপ এই বড়ো আধুনিক আবাসন টা তৈরি করছে তাদের সঙ্গে মায়ের নাকি একটা বানিজ্যিক চুক্তি হয়েছে।

মা ওদের সংস্থার হয়ে কমার্শিয়াল অ্যাড এ কাজ করবে এবং বিনিময়ে দুটি ফ্ল্যাট অর্ধেক দামে পাবে একটা মুম্বাই তে আর অন্যটা আমাদের শহরে। নতুন নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটের সব পেপারস মা বাবার হাতে ট্রান্সফার করে, বললো, ” দেখো, আমি মুম্বাই তে আলিশান বাড়ি তে থাকবো আর তোমরা এখানে পুরোনো বাড়িতেই কষ্ট করে থাকবে এটা আমার আর সহ্য হবে না। তাই আমি চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তোমরা এই ফ্ল্যাটে শিফট করে যাও।

আমার সঙ্গে যা কথা হয়েছে, ওরা বলেছে এক মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট সাজিয়ে গুছিয়ে রেডি করে দেবে। আর এই বিল্ডার্স সংস্থার এখানের যে ম্যানেজার আছে তার নম্বর টা নিশার কাছে আছে। তুমি ওটা আজকেই ওর কাছ থেকে নিয়ে নেবে, এই ফ্ল্যাটে শিফট করে যাওয়ার পর আমিও তোমাদের সাথে মাঝে মাঝে এসে থাকতে পারবো, যখন সুযোগ আসবে।” বাবা মার দেওয়া পেপার গুলোয় চোখ বোলাতে বোলাতে বলল, ” তুমি তো বেশ বিষয় আশয় নিয়ে মাথা ঘামাতে শিখে গেছো। তুমি যা বলছো শুনতে ভালই লাগছে, কিন্তু কত গুলো প্রশ্ন আছে।”

মা অবাক হয়ে বললো, কি প্রশ্ন আছে বলো। বাবা বললো, নতুন ফ্ল্যাটে উঠে আসলে আমাদের পুরোনো বাড়ি তার কি হবে।” মা অম্লান ভাবে উত্তর দিল,” ওটা বিক্রি করে দেবে। পুরোনো বাড়ি মেইনটেইন করার থেকে নতুন ফ্ল্যাটে ইনভেস্ট করা ভালো।” বাবা মার মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,” তুমি কত সহজে বাড়ি বিক্রি করার কথা টা বলে দিলে, তুমি সত্যি পাল্টে গেছ। আচ্ছা অর্ধেক দামে না হয় ফ্ল্যাট গুলো পাবে, বাকি ৬০ লাখ টাকা কোথা থেকে যোগাড় করবে। আমার কাছে তো ফ্ল্যাট কেনার মতো সভিংস নেই, আমার ধারণা যেভাবে হাই সোসাইটি লাইফ মেইনটেইন করছো, যে হারে দুহাতে টাকা খরচ করছো তোমার কাছেও ওতো টাকা নেই।”

এই কথা শুনে মা চুপ করে গেল। আমি দেখলাম তার মুখ থেকে হাসি মিলিয়ে একটা কঠিন রুক্ষ অসন্তুষ্ট ভাব ফুটে উঠেছে। আমার মা কে কোনোদিন এই রকম ভাবে দেখি নি। পরিস্থিতি সঙ্গীন দেখে মার পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট প্রসঙ্গে ঢুকে ইন্টা র ফেয়ার করলো। মিস নিশা আমার বাবাকে বললো মিস্টার মালাকার, আপনাদের হাই ক্লাস লাইফ স্টাইল মেইতেইন করতে টাকা কোনো ফ্যাক্টর হবে না। উয়োর ওয়াইফ ইস এ স্টার নও। দিন রাত পরিশ্রম করে এই জায়গা টা উনি আছিইভ করেছেন।

সম্প্রতি ৬ টা ব্র্যান্ডের সাথে দুই বছরের কন্ট্রাক্ট সাইন করেছে আপনার স্ত্রী। আজকেও একটা বড়ো সাইনিং হবে। বড় প্রোডাকশন হাউজ এর সঙ্গে এক বছরের চুক্তি আছে। তাই বলছি মানি কোনো ইস্যু হবে না। . এবার থেকে প্রতি মাসের ১ ম সপ্তাহের ভেতর একটা বড়ো আমাউন্ট আপনার ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে মিস্টার মালাকার। এছাড়া ইনকাম ট্যাক্স এর হাত থেকে বাঁচতে মোহিনীর ( মায়ের স্ক্রিন নেম) বেশ কিছু পেমেন্ট এবার থেকে আপনার নামে ট্রান্সফার হবে।

এখন থেকে আপনি যদি জব ছেড়ে দেন তাহলেও রাজার হালে বাঁচবেন। আর ছেলেকে বিদেশে পড়তে পাঠাতে পারবেন। আপনাদের ভবিষ্যত মোহিনী ম্যাডাম একেবারে ওয়েল্ সিকিউরড করে তুলেছেন। আপনি ভাবুন মিস্টার মালাকার। এরকম সুযোগ এরকম হার্ডওয়র্কিং পার্টনার ভাগ্যবান মানুষে পায়। আপনি লাকি মোহিনী ম্যাম এত কিছু করছেন আপনারা না চাইতেই।
 
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ৮

বাবা মন দিয়ে নিশা আন্টির কথা শুনলো, মায়ের পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কথা শুনতে শুনতে বাবা মার দিকে নজর রাখছিল। মা বাবার চোখের দিকে তাকাতে পারছিল না। কোন এক অজানা কারণে অপরাধ বোধে ভুগছিল। নিশা আন্টির মা আর আমাদের ফিউচার সম্পর্কে অনেক ভালো ভালো কথা বললেন, নিশা দেশাইয়ের কথা শেষ হতেই বাবা চুপ করে থেকে বেশ খানিক ক্ষন সময় ভেবে মা কে সরাসরি প্রশ্ন টা করেই ফেললো, ” সুপ্রিয়া আমাকে তুমি সত্যি করে বলো, এই এত টাকা সব তোমার অ্যাক্টিং মডেলিং করে সোজাপথে রোজগার করা নাকি এর জন্য তোমাকে শর্টকাট অবলম্বন করে কিছু অন্ধকার কাজের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করতে হচ্ছে কিম্বা হবে? আমি কখনোই সমর্থন করবো না তুমি কোনো অসৎ মানুষ দের পাল্লায় পরে অসাধু উপায়ে অতিরিক্ত কালো টাকার মালকিন হয়ে তাড়াতাড়ি উপরে ওঠো। জানি তোমাকে এখন ব্যাবসায়িক উপদেশ দেওয়ার লোকের অভাব নেই। তবুও আমার কথা গুলো একটু ভেবে দেখো সুপ্রিয়া। তোমাকে এভাবে টাকা রোজগার করতে দেখলে আমার কষ্ট হবে। ”

মা চুপ করে মাথা নিচু করে টেবিলের উপর তাকিয়ে রইলো। নিশা আণ্টি বললো দেখুন মিস্টার মালাকার বড়ো কিছু এচিভ করতে গেলে ছোট খাটো অনেক সেন্টিমেন্ট আর বিশ্বাস কে স্যাক্রিফাইস করতে হবে। এটাই জগতের নিয়ম একবার টপ এ পৌঁছে গেলে কেউ ভাববে না মোহিনী ম্যাম কি ভাবে ওখানে পৌঁছেছে। আমাদের হাতে সময় খুব অল্প। কম্পিটিশন মার্কেট, তাই সুযোগ পেলে তার সৎবাবহার করে এগিয়ে যাওয়াই উচিত পন্থা। আপনি অযথা চিন্তা করছেন।

আমি যথা সম্ভব ম্যাডামের পরিছন্ন সতী সাবিত্রী ওলা ক্লিন ইমেজ বজায় রাখার চেষ্টা করবো। অসৎ উপায় অবলম্বন করলেও তার জন্য সঠিক আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবে। কত খরচ করবেন করুন না। টাকা উড়িয়ে শেষ করতে পারবেন না মোহিনী ম্যাম এত রোজগার করবে।” বাবা এরপর আর কোনো কথা বলতে পারলো না। শুধু শুনে গেলো, মা ও চুপ চাপ হয়ে গেছিলো। শেষে বাবা মা কে তারমত করে লাইফ টা কাটাতে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিল। বাবার থেকে মৌখিক সমর্থন পেয়ে মার মুখেও হাসি ফুটলো।

আমাদের সঙ্গে বসে এক দেড় ঘণ্টা কাটানোর পর সবে আমরা আগের মত সহজ স্বাভাবিক হচ্ছি। মায়ের মুখে তার মুম্বাই এর কাজের জগতের নানা ইন্টারেস্টিং গল্পঃ শুনছিলাম এমন সময় পাশের রুম থেকে মার ডাক পড়লো। মা কে জরুরি কাজের জন্য অনিচ্ছা স্বত্বেও উঠে আবার পাশের রুমে ঐ হ্যান্ডসম সেলেব অ্যাক্টর/ প্রোডিউসার এর কাছে চলে যেতে হলো। নিশা আণ্টি আমাদের তারপর বুঝিয়ে দিল আমাদের আজকের মায়ের সঙ্গে মিটিং এর সময় শেষ। আবার মা ফ্রী হলে নিশা আণ্টি আমাদের কল করে ডেকে নেবে।

পরের দিন আবার আমরা নিশা আন্টির কাছে কল পেয়ে মার সঙ্গে দেখা করতে ঐ হোটেল রুমে এলাম। সেদিন ভালো রকম গল্পঃ গুজব হলো। আমরা একসাথে বসে মার সঙ্গে লাঞ্চ করেছিলাম। তারপর মার থেকে বিদায় নিয়ে ঐ ফাইভ স্টার হোটেল রুম থেকে বেরিয়ে আসবার সময়, মা কে আরো একবার বাড়ি ফিরবার জন্য রিকোয়েস্ট করলো। কয়েক ঘণ্টা সময় বার করে মা যেনো একটিবারের জন্য বাড়ি আসে।

মা বললো, ” আমি বুঝতে পারছি তোমাদের কত টা খারাপ লাগছে। আই অ্যাম ভেরি ভেরি সরি …. তোমাদের ও এখন বুঝতে হবে আমার লাইফ টা এখন আর শুধু মাত্র আমার কন্ট্রোলে নেই। আমার স্পন্সর রা প্রোডাকশন হাউজ আমাকে এমনি এমনি এত টাকা পেমেন্ট করছে না। বিনিময়ে রীতিমত কাজ টা আদায় করে নিচ্ছে। আর এই কাজের দিন রাত স্পেসিফিক কোনো টাইম নেই। একটা অ্যাড কমার্শিয়াল এর শুটিং আছে তার রিহার্সাল এ আমাকে এখন ব্যস্ত থাকতে হবে।”

বাবা বললো, ” রাত জাগার সাইন তোমার চোখে মুখে ভালো রকম ফুটে উঠেছে সুপ্রিয়া। এই ভাবে দিন রাত এক করে ছুটলে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে অসুস্থ হয়ে পড়বে।”

মা: “কি করবো বলো? বুঝতেই পারছো কি ব্যাস্ত শিডিউল নিয়ে চলতে হচ্ছে। তুমি চিন্তা কর না। অ্যাকট্রেস মডেল দের কেরিয়ার এমনিতেই শর্ট হয়। তার মধ্যে আমাকে ভালো রকম গুছিয়ে নিতে হবে। সময়ের বড্ড দাম। এখন থেকে আমাকে ভবিষ্যত এর কথা ভাবতে হচ্ছে। চিরকাল তো বয়স থাকবে না, কাজেই পরিশ্রম ছাড়া বিকল্প নেই। ”

বাবা: কয়েক ঘন্টার জন্য ম্যানেজ করেও আসা যায় না। কতদিন তুমি বাড়ির রান্না খাও নি বলতো?

মা: আমার ও ভীষণ ইচ্ছে করছে এখন তোমাদের সঙ্গে যেতে কিন্তু আমি নিরূপায়। পর পর সব আসাইনমেন্ট আছে। হোটেল ছেড়ে আমার নড়বার জো নেই। তাও দেখছি কোনো ফাঁক আছে কিনা নিশা টেল মি কোনো টাইম ফ্রি আছে।
নিশা আণ্টি মাথা নেড়ে বললো।

নো ম্যাডাম টাইম বার করা ইম্পসিবল, আরো দুটো কোম্পানির রিপ্রেজেন্ট এর সঙ্গে মিটিং ফিক্সড আছে। অরবিন্দ স্যার এর সঙ্গে কমের্সিয়াল অ্যাড এর রিহার্সাল , অ্যাড শুটের জন্য ড্রেস ট্রায়াল আছে, অ্যাড এর প্রমো শুত আছে, একটা tabloyed ম্যাগাজিনের জন্য স্পেশাল ফিচার ফটোশুট আছে, একটা কর্পোরেট পার্টি ও আছে। পুরো প্যাকেড শিডিউল। মা করুন মুখে আমাদের দিকে অসহায় ভাবে তাকালো। তারপর আমাদের হাগ করে বিদায় দিল।

আমাকে হাগ করার সময় মায়ের বুকের উপরে একটা টাটকা কাটা দাগ সম্ভবত নখের আঁচড় এর ফলে তৈরি সেটা আমার নজরে পড়েছিল। যদিও ব্যাপার টা আমি আর আমার বাবা সেভাবে গুরুত্ব দিলাম না। আবার পরের দিন আমরা সেম টাইম এ এসে মার সঙ্গে দেখা করে যাবো এই কথা বলে আমরা সেদিনের মত হোটেল থেকে বেরিয়ে এলাম। আমি দেখলাম বাবা সেদিন মার সঙ্গে দেখা করে ফিরে আসার পর ভীষণ রকম চুপ চাপ হয়ে গেলো। আমরা ২ য় দিন ফাইভ স্টার হোটেল থেকে মার সঙ্গে দেখা করে ফিরে আসার পরের দিন সকালে একটা ঘটনা ঘটে।

আমাদের প্রতিবেশী রুচিকা আণ্টি মার সঙ্গে গিয়ে দেখা করে। তাদের মধ্যে কি কথা হলো আমি জানতে পারি নি। পরের দিন খবর পেলাম যে মা রুচিকা আণ্টি কে তার সঙ্গে মুম্বাই নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে রাজি হয়ে গেছে। রুচিকা আণ্টি মার সঙ্গে এক অ্যাপার্টমেন্টে থাকবে, নিশা আণ্টি র মত মার কাজে সাহায্য করবে ম্যানেজার হিসাবে নামের।

সেই দিন ছিল মার শহরে থাকবার শেষ দিন, মার ঐ টেলিভিশন সেলেব পার্টনার বন্ধু অরবিন্দ একটা প্রাইভেট পার্টি আরেঞ্জ করেছিল হোটেলেই, সেখানে আমরা বাপ ছেলে ইনভাইটতেড হই। যদিও আমারও ইনভাইটেশন ছিল, কিন্তু বাবা হোটেলে পার্টি অ্যাটেন্ড করতে একাই গেলো। আমাকে নিয়ে গেলে মায়ের আসল নতুন চেহারা টা ভালো করে দেখতে পারতাম।

ঐ দিন সন্ধ্যেবেলা বাবা একাই মার হনোরে রাখা পার্টি টায় মার ডাকে গেছিলো। ওটা একটা স্পেশাল প্রাইভেট পার্টি ছিল। ঐ ফাইভ স্টার হোটেল সুইট তার ভেতর সুন্দর ভাবে এরেনজ করা হয়েছিল। অরবিন্দ আর আমার মা খুব বেশি কাউকে ইনভাইট করে নি। বাবা কে নিয়ে ৬-৭ জন উপস্থিত ছিল।. যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল মিস্টার সুরেশ দাদলানি। উনি ছিলেন মার আপকামিং শর্ট ফিল্ম ওয়েব সিরিজ এর পরিচালক। যদিও মিস্টার অরবিন্দ বাবার আসল পরিচয় জানতো। তবুও তাকে মিস্টার দাদলানির কাছে মার হাসব্যান্ড বলে পরিচয় পর্যন্ত করালো না। উল্টে সিক্রেট টার্ম প্রটোকল মেনে বাবা কে পুরোনো বন্ধু হিসাবে আলাপ করিয়ে দেওয়া হলো।

বাবা পরে জেনেছিল, মা বিবাহিত জানলে এই কাজ টা সে পাবে না অন্য একজন পাবে। আমার বাবা সহজ সরল স্বভাবের মানুষ, তার মনে ওতো প্যাচ ছিল না। মা ও যখন অম্লান বদনে তাকে মিস্টার দাদলানির সামনে তাকে স্বামী হিসাবে পাত্তা দিচ্ছিল না, বরং চ এক প্রকার না চিনতে পারার অ্যাক্টিং করছিল সেটা বাবা সহজ ভাবে নিতে পারলো না।তার উপর পেশা গত কারণেই মা কে বাবার সামনেই সুরেশ দাদলানি র সঙ্গে একটু আলাদা ভাবে হেসে কথা বলা, তার গায়ে গা লাগিয়ে খাতির করা, ওয়েশ রুমে গিয়ে দাদলানির সামনে কাপড়ের স্ট্রিপ টা একটু লুজ করে বুকের ক্লিভেজ এক্সপোজ করা দেখতে দেখতে বাবা নিজের মনের হতাশা ঢাকতে প্রথমবার মদ খেতে শুরু করে।

নিশা আণ্টি আর অরবিন্দ বাবা কে মদ খেতে উৎসাহিত করে। মাতাল হয়ে বাবা একটু সিন ক্রিয়েট করে ফেলে, গান গেয়ে আসর মাতিয়ে দেয়। আর অন্যদিকে মা বাবা কে ছেড়ে শহরে কাটানো শেষ সন্ধ্যা টুকুও মিস্টার অরবিন্দ অ্যান্ড তার বন্ধু পরিচালক সুরেশ দাদলানীর সঙ্গে পার্টি করতে ব্যাস্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে নিশা আণ্টি বাবার নজর রাখতে শুরু করে। মা বাবার চোখের সামনে ওদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছিল, যেটা বাবার মনে যন্ত্রণার আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছিল।

নিশা আণ্টি বাবা কে পার্টিতে মার দিক থেকে সরিয়ে আনে, শেষে বাবা ডিনার না করেই মাতাল অবস্থায় বাড়ি ফিরেছিল। মার পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট নিশা আণ্টি একটু রাত করে বাবা কে আমাদের বাড়ি টে ছাড়তে আসে। বাইরে গাড়ি আর দরজা খোলার শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙে গেছিল। আমি বাইরে এসে বাবার অবস্থা দেখে অবাক হয়ে যাই। যে বাবা কে কোনো দিন মদ খাওয়া তো দূর অস্ত মদের নাম পর্যন্ত করতে দেখি নি, তাকে মদের নেশায় সোজা করে হাটতে পর্যন্ত না পারতে দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল। কতটা কষ্ট ভুলতে বাবা সেদিন মাতাল হয়েছিল সেটা আজ আমি ভালো করে বুঝতে পারি।

বাবা সেদিনই টের পেয়ে গেছিল, মা আমাদের থেকে হারিয়ে গেছে। তার জীবনের লক্ষ্য আর সঙ্গী সাথী পাল্টে গেছে, যেটা আমাদের সঙ্গে আর মিল খাচ্ছে না। মা আমাদের জীবনের সাথে সেটা মেলানোর চেষ্টা পর্যন্ত করছে না। নিশা আণ্টি সেই রাতে বাবাকে বেডরুম অবধি ছাড়তে এসেছিল। তার পর আমার মায়ের ছেড়ে যাওয়া রুমে বাবার সাথে এক বিছানায় শুলো।

বাবার তখন ভালো মন্দ বোঝার কোন হ্যূষ ছিল না। নিশা আন্টির জামা কাপড় খুলে দরজা টা কোনরকমে ভেজিয়ে বাকি রাত টুকু নিশা আণ্টি কে বিছানায় আদর করতে লাগলো। নিশা আন্টিও ভালো করে মদ খেয়েই ছিল, নেশার ফলে নিশা আন্টিও বাবা কে সেইরাতে পুরো পুরি উজাড় করে দিয়েছিল। তাকে মাকে হারানোর দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলতে সাহায্য করেছিল। কেও সেদিন রাতে।

সেই রাতে আমি বাবা কে নিজের হাতে নিশা আন্টি র ব্রার হুক খুলতে দেখেছিলাম। বাবা কেও সেদিন মার মতন বড্ড অচেনা লাগছিল। সেই রাত টা নিশা আণ্টি বাবার সঙ্গে কাটিয়ে পর দিন সকালেই মার পার্টির হাং ওভার কাটার আগেই হোটেলে ফিরে গেছিলো। ঐ দিন ই সন্ধ্যেবেলা মা মুম্বই ফিরে গেছিল। যাওয়ার আগে একবার কল করেছিল, কিন্তু অরবিন্দ আর সুরেশ দাদলানীর তাড়া থাকায় আমাদের সঙ্গে আর দেখা করতে পারলো না।

নিশা আন্টির কাছে আমরা খবর পেয়েছিলাম মুম্বই ফেরার দু দিন পর মার ঐ নতুন ওয়েব সিরিজের প্রথম প্রমোশনাল পার্টি ছিল। যেখানে মার নাম প্রোডাকশন হাউজ এর তরফে এনৌনস করা হয়। সেই সাথে নিশা আণ্টি এটাও বাবা কে ইঙ্গিত দিয়েছিল, যে এই কাজ টা মা সোজা পথে পায় নি কিসের বিনিময়ে পেয়েচে সেটা আন্দাজ করে বাবার মন আরো যন্ত্রণায় ভোরে যায় আর তারপর থেকেই মা কে জোর করে মুম্বই পাঠানোর জন্য আফসোস করতে থাকে।

কদিন বাদে খবরের কাগজের শনিবারের সিনেমার পাতায় মার ঐ নতুন প্রজেক্টের কিছু সেন্সুয়াল ফটো ছাপা হয়। ওতে মা একেবারে অন্য অবতারে মডার্ন লুকে আত্মপ্রকাশ করে। মা যে একেবারে পাল্টে গেছে এটাই ছিল সবথেকে ভালো উধাহরন। মা আমাদের সঙ্গে থাকলে ঐ ওয়েব সিরিজের প্রমোশনের জন্য ওরকম সাহসী ফটোশুট করার কথা কখনও কল্পনা করতে পারতো না। একটা মদ প্রস্তুতকারক সংস্থার বিজ্ঞাপনেও মা অংশ নিয়েছিল। ঐ কমার্শিয়াল ফটো পাবলিশ হওয়ার পর থেকেই বাবার চরিত্রেও কিছু পরিবর্তন দেখতে পারলাম।

বাবা কথা বার্তা বলা কমিয়ে দিল। আর নিজের হতাশা ঢাকতে নিয়মিত মদ খাওয়া, দেরি করে বাড়ি ফেরা, আর কিছু বাজারি বেশ্যা দের সঙ্গে সময় কাটানো আর তাদের পিছনে পয়সা ওরানো শুরু করলো। বাবার চরিত্র টে এই বিরাট পরিবর্তন দেখে আমি শঙ্কিত হয়ে পরলাম। মার সঙ্গে নিজে নিজে যোগাযোগ করবার চেষ্টা করলাম কিন্তু মা এতটাই তার কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিল তার নাগাল পেলাম না। তিন চার বার চেষ্টা করার পর, মার নম্বরে লাইন লাগলো, কিন্তু মা না ধরে অরবিন্দ আঙ্কেল ফোন ধরলো। আমি একটু রাতের দিকেই কল করেছিলাম। ওতো রাতে মায়ের অ্যাপার্টমেন্টে অরবিন্দ আঙ্কেল কি করছিল বুঝতে পারছিলাম না। হ্যালো মা তোমার সাথে কিছু কথা বলার আছে।

অরবিন্দ আঙ্কেল ডাইরেক্ট মুখের উপর বলে দিল,” তুমার মা অভি মেরে সাথ বিজি আছে। বাদ মে ফোন করনা।” ফোন এর লাইন কেটে দেওয়ার আগে আমি ফোনের মধ্যে স্পষ্ট মায়ের গলা পেলাম। মা একটু দ্রুত শ্বাস নিতে নিতে বলছিল, কৌন কল কিয়া হে অরবিন্দ? মুঝে দো…” অরবিন্দ আঙ্কল স্পষ্ট মিথ্যে বলে দিল, কই ইম্পর্ট্যান্ট কল নেহি।”

মা করুন সুরে বলল,” তাজ্জব কী বাত হে বহুতদিন ঘর সে কই কল নেহি অায়া। মুঝে ইটনা জলদি ও লোগ ভুল গয়া” অরবিন্দ আঙ্কল বললেন, আব চারো ওসব বাতে ক্যা প্রমিজ কিয়া থা ইয়া দ হে। মুঝে অভি ও চিজ চাইহে। মা বললো, ওহ অরবিন্দ কাল ই তহ কিয়া না, ফিরসে আজ, ছাড়ো মুঝে। অরবিন্দ আঙ্কল একটা হাসি হাসলো… তারপর ফোন টা কেটে দিল। এরপর যতবারই আমি কল করলাম এইদার লাইন ব্যাস্ত অর সুইচ অফ বলতো। শেষে আমি মা কে ফোন করাই ছেড়ে দিলাম। মা কে বাবা খুব ভালো বাসত। তাকে এই ভাবে হারিয়ে ফেলার পর, সে চাকরি ছেড়ে, সুদে টাকা খাটানোর ব্যাবসা আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বহেমিয়ান জীবন যাপন শুরু করেছিল। মায়ের দৌলতেই আমাদের সে সময় টাকার কোনো অভাব ছিল না। বাবা আমার দেখা শোনা র জন্য ভালো লোক অ্যাপয়েন্ট করেছিলেন।

প্রসঙ্গত আগেই বলেছি, মা তৃতীয় বার আমাদের শহরে এসে কাটানোর পর সাথে করে রুচিকা আণ্টি কেও মুম্বাই নিয়ে গেছিল। পরে জেনেছিলাম, সিনহা আঙ্কেল এর সঙ্গে তার নাকি ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছিলো। তাই সে সময় মা কে আকরে ধরে বাঁচা ছাড়া রুচিকা আন্টির কাছে অন্য কোন উপায় খোলা ছিল না। মা নিজের খরচায় নিজের কাছে রুচিকা আণ্টি কে রেখে দেওয়ার ডিসিশন নিয়েছিল।

মা হয়তো ভেবেছিল, রুচিকা আণ্টি থাকলে মার অ্যাপার্টমেন্টে নিঃসঙ্গতা দূর হবে। তার সাথে গল্পঃ করে কোয়ালিটি টাইম কাটিয়ে তার ব্যস্ত মডেল অ্যাক্ট্রেস জীবনের স্ট্রেস রিলিফ হবে, কিন্তু মা ভুল ছিল। এটে মার লাভ তো হলই না উল্টে রুচিকা আণ্টি মুম্বাই আসার পর মা আর দ্রুত নৈতিক অধঃপতনের দিকে এগিয়ে গেল। প্রথম দিকে কলে মা অনেক কথা সেয়ার করলেও পরের দিকে তার মুম্বই এর সেলেব জীবনের বাজে অন্ধকার দিক গুলো সম্পূর্ণ লুকিয়ে যায়।

প্রোডাকশন হাউস এর সঙ্গে প্রায় ৬ মাসের মেয়াদ শেষ হবার পর মা প্রথমে তার কাজের বাজে অভিজ্ঞতা র নিরিখে কন্ট্রাক্ট একটেনশন করতে চায় নি। বরং চ রিলিস নিয়ে তার পুরনো জীবনে আমাদের কাছে ফিরতে চেয়েছিল, কিন্তু মেগা ধারাবাহিকের দর্শক দের চাহিদায় আর স্পন্সর দের দাবির ভিত্তি টে মা কে রিলিজ দিল না। উল্টে তার উপর এক্সট্রা প্রেসার ক্রিয়েত করে তড়িঘড়ি তৃতীয় বার আমাদের সঙ্গে দেখা করতে শহরে আসবার আগেই, আর দুই বছরের জন্য চুক্তি নবিকরণ করিয়ে নেয়।

এই চুক্তির এক্সটেনশন এর ক্ষেত্রে মিস্টার অরবিন্দ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। ওরা ইচ্ছে করে মা কে এক গাদা অসাইনমেন্ট দিয়ে শহরে পাঠিয়েছিল যাতে মা বেশি সময় আমাদের সঙ্গে কাটাতে না পারে। অরবিন্দ ভেতরে ভেতরে আমাদের কে মার লাইফ থেকে আইনত উপায়ে ছেটে ফেলবার প্রয়াস শুরু করেছিল। নতুন চুক্তি টে ইচ্ছে করে এমন ক্লস রেখেছিল, মা প্রকাশ্যে আমাদের কথা উল্লেখ পর্যন্ত করতে পারবে না। এইভাবে মা কে যেন তেন প্ৰকারেন মুম্বাই শহরে স্থায়ী ভাবে রেখে দেওয়ার প্ল্যান কার্যকর করা হলো।

মা কে মুম্বাই ফিরে গিয়ে, ঐ নতুন ওয়েব সিরিজে দুই তিনটে সেনসেশনাল অ্যাডাল্ট বেড সিন এ অভিনয় করতে হয়। মা প্রথমে এটা করতে চায় নি, কিন্তু টার্ম অ্যান্ড কন্ট্রাক্ট এর মধ্যে ফেসে ঐ সিন গুলো করতে বাধ্য হয়। রুচিকা আণ্টি তাকে একটা পার্টি টে মা কে মদ্যপ অবস্থায় পেয়ে ভালো করে বোঝায় যে, মা এই মুহূর্তে যে মোড়ে দাড়িয়ে আছে, এখন সাহসী দৃশ্যে অভিনয় শুরু করলে মার রোজগার টা ডবল হবে আর সিরিজ টিও জনপ্রিয় হবে।

এই কন্টেন্ট এর পর মা অনেক কাজ পাবে ভবিষ্যতে, এই সিরিজ তার জোরেই। তার একটা ছিল, যত কাপড় খুলবে তত তাড়াতাড়ি উচু টে উঠবে, আর তত মার পায়ের তলার মাটি শক্ত হবে এই সমীকরণ টা মা রুচিকা আণ্টি আসার পর নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে শুরু করে, তার বস্ত্যতা এর ফলে দ্বিগুণ বেড়ে যায়। মা আস্তে আস্তে জীবনের উপর যত টুকু নিয়ন্ত্রণ ছিল সেটাও হারিয়ে ফেলে।

মার অভিনীত টিভি সিরিজ টা একটা জনপ্রিয় সিরিজে পরিণত হয়েছিল। প্রথম ক্ষেত্রে ৬ মাসে শেষ করার কথা থাকলেও ওটা পাবলিক ডিমান্ড এ আরো এক বছর চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সময়ের মধ্যেই মা তাদের মুম্বাই এর নতুন বন্ধু দের অনুরোধে ৩ টে শর্ট ফিল্ম এ ব্যাক টু ব্যাক কাজ করেছিল।। তার মধ্যে ২ তো ফিল্ম রিলিজ হবার পর মার অভিনয় প্রশংসিত হলো।

যদিও ফিল্ম গুলোর সাবজেক্ট ছিল প্রায় একই ধরনের, অনিয়ন্ত্রিত যৌন সম্পর্ক, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স, রিভেঞ্জ। দুটো ফিল্মে মা কে পরিচালক দের আবদার রাখতে বেড সিনে অভিনয় করতে হয়েছিল। কাজ টা যে মার মতন ভালো মধ্যবিত্ত ঘর থেকে উঠে আসা এক নারির পক্ষে খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল এটা আর আলাদা করে বলে দিতে হয় না। মা ঐ শর্ট ফিল্ম গুলোয় একাধিক বেড সিন আর কিসিং সিন থাকায় প্রথমে বেঁকে বসেছিল।

কিন্তু তার পি এ নিশা দেশাই দায়িত্ত্ব নিয়ে মা কে ঐ ফিল্ম গুলোয় কাজ করতে রাজি করেছিল। অবশ্য ঐ সিন গুলোর জন্য প্রোডিউসার রা মা কে আর্থিক দিক থেকে ভালো ভাবেই কম্পেন্সট করেছিল। দুটো শর্ট ফিল্মে কাজ করে মা মোট ৩০ লাখ টাকা রোজগার করে। স্ক্রিন ঘরোয়া সরল গৃহবধূর ইমেজভেঙে মা বেরিয়ে আসছিল।

মুম্বাই আসার ৭ মাস বাদে কলকাতা টে কিছু দিন ঐ ফাইভ স্টার হোটেলে নিজের পি এ আর কো স্টার পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে কাটিয়ে যাওয়ার পর প্রোডাকশন হাউস আমার মার সঙ্গে আবার কন্ট্রাক্ট রেনিউ করে নেয়। মা এইবার তিন বছরের চুক্তি টে সাইন করে। যার ফলে মার মুম্বাই ছেড়ে নিজের শহরে আমাদের কাছে ফেরার রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

মা এই চুক্তি বাড়াতে নাকি প্রথমে রাজি হচ্ছিল না, কিন্তু নিশা অরবিন্দ সহ আরো প্রভাবশালী বন্ধুদের চাপে পড়ে কার্যত আমাদের কিছু না জানিয়েই ঐ চুক্তি টে সই করে দেয়। মা যেদিন মুম্বাই টে প্রোডাকশন হাউস এর এম ডির বাড়িতে চুক্তি টে সই করে সেই রাতে মা নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরতে পারে না। অরবিন্দ অ্যান্ড কোম্পানি মা কে এম ডির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে একটা নাইট ক্লাবে লেট নাইট পার্টি এঞ্জয় করতে নিয়ে যায়। ওখানে পৌঁছে মা আবিষ্কার করে ওটা একটা কোনো সাধারণ পার্টি না। মা ওর বন্ধুদের সাথে জীবনে প্রথমবার একটা rave party উপভোগ করতে চলে এসেছে।
 
গৃহবধূ যখন সেলিব্রিটি! পর্ব ৯

Rave পার্টি র ভেতর পৌঁছানো মাত্র মার ওখান থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হলো। মা কার্যত বাধ্য হলো ঐ পার্টি টে উপস্থিত থেকে শেষ পর্যন্ত উপভোগ করতে, প্রথম দিকে সব কিছু নরমাল থাকলেও, যত রাত পুরনো হচ্ছিল পরিস্থিতিও মার নিয়ন্ত্রণে র বাইরে চলে যাচ্ছিলো। মার নতুন জগতের সব বন্ধু রা ঐ দিন সবাই মিলে মার কন্ট্রাক্ট বাড়ানোর খুশি কে একটা এক্সট্রিম ভাবে সেলিব্রেট করা স্টার্ট করেছিল। Champaign খোলা হয়েছিল। তারপর হুকা হ, স্লিপিং পিল, জিন, টাকিলা দেদার উপদ্রব সামলে মা কিছুতেই সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরতে পারলো না। গোটা রাত বাড়ির বাইরে ঐ নাইট ক্লাবে নৈশ পার্টির উন্মাদনার জোয়ারে ভেসে গিয়ে বন্ধুদের সাথে দেদার ফুর্তি হুল্লোড়বাজি করে কাটালো।

মাই যে ঐ পার্টির আসল আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু ছিল এ কথা আর বলে দিতে হয় না। পার্টি টে উপস্থিত সব পুরুষের চোখ মার দিকেই ঘুরছিল। সবাই মোহিনী পাঠক এর সঙ্গেই মিউজিক এর তালে তালে নাচ করতে চাইছিল। আর মা কেও কম বেশি সবার আবদার রাখতে হচ্ছিল। নাচের সময় তার বন্ধু কলিগ দের হাতের ছোয়া ক্রমাগত নিজের শরীরের সেনসিটিভ স্পট গুলোর উপর পেতে পেতে মা ভেতরে ভেতরে বেশ গরম হয়ে উঠেছিল। একটা সময় পর রাত যখন আরো একটু গভীর হলো, মা নেশায় চুর হয়ে ক্লান্ত ও অবসন্ন শরীর মন নিয়ে একটা কোনে বসে ছিল। তার আর বন্ধুদের সঙ্গ আর পার্টির পরিবেশ ভালো লাগছিল না। সে পার্টি থেকে বেরোনোর জন্য ছট ফট করছিল। কিন্তু তার বন্ধুরা তাকে ছাড়তে রাজি ছিল না।

মা যখন তার মধ্যেও ম্যানেজ করে নাইট ক্লাবের পার্টি র প্লেস থেকে বেরিয়ে আসতে যাচ্ছে ঠিক তখন ই অরবিন্দ এসে আরো সুপ্রিয়া কে একটা স্পেশাল পেগ ড্রিঙ্ক খাইয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে ফেললো। ঐ পেগ টা খাবার পর মা আর কিছুতেই দাড়িয়ে থাকতে পারলো না। টাল সামলাতে না পেরে অরবিন্দ এর গায়ে ঢলে পড়ল। তার পর খুব সহজেই মার মতন এক সুন্দরী অ্যাকট্রেস মডেল কে ধরে টেনে নিয়ে এসে অরবিন্দ একটা প্রাইভেসি সুইট এর ভিতর ঢুকলো। অরবিন্দ এর অন্তরঙ্গ বন্ধু সাম মিরান্ডা ওখানে মায়ের প্রাইভেট কোম্পানি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। সাম মিরান্ডা নামের ঐ প্রভাব শালী ব্যাক্তি অনেক দিন ধরেই মার রূপে মুগ্ধ হয়ে মা কে বিশেষ ভাবে কাছে পেতে চাইছিলেন।

মা কোনো মতে তাকে ঠেকিয়ে রাখছিলেন। কিন্তু সেই রেভ পার্টির রাতে অরবিন্দ সাম মিরান্ডার সাথ দেওয়ায়, মা আর নিজেকে বাঁচাতে পারলো না। হানি ট্র্যাপ এ ফেঁসে গিয়ে, নেশায় বুদ হয়ে বাকি রাত টা নাকি আমার মা কে ঐ প্রাইভেসি সুইট এর ভেতর ওদের দুজনের সেবায় থাকতে হয়েছিল। সেই রাতে বাকি সময় টুকুর জন্য সুপ্রিয়া মালাকার ওরফে মিস মোহিনী পাঠক এর কোনো হ্যুস ছিল না, নেশায় চুর হয়ে অরবিন্দ দের বাধা দেওয়ার নূন্যতম ক্ষমতা সে সময় মার মধ্যে অবশিষ্ঠ ছিল না । অরবিন্দ এবং তার বন্ধু মার সঙ্গে যা ইচ্ছে তাই করে নিতে পেরেছিলেন।

নাইট ক্লাবের উপরের ফ্লোরের ঐ প্রাইভেসি সুইট এর ভেতর অবাধ শারীরিক যৌন মিলন এও যে সেই রাতে মা কে অংশগ্রহণ করতে হয়েছিল এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। সাম মিরান্ডা মার মতন একজন হট অ্যাকট্রেস কে বিছানায় পেয়ে তার বন্ধুর আস্কারায় যথেষ্ট ভাবে ভোগ করে ছেড়েছিল। শুধু অবাধ যৌনাচার করেই ওরা সেই রাতে খান্ত হয় নি তার sathe মার বেশ কিছু একান্ত ব্যাক্তিগত অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও আর ফটো তুলে নিয়েছিল, তাদের প্রাইভেট কালেকশন এর জন্য। এই ভিডিও আর ফটো গুলোর কারণে ভবিষ্যতে মা কে সেই এক ভুল ওদের জন্য বার বার করতে হয়েছিল।

পার্টির পরের দিন সকালে নিশা দেশাই মা কে বার বার কল করে আনসার না পেয়ে যখন মার গাড়ির ড্রাইভার এর সাহায্যে নাইট ক্লাবের প্রাইভেসি সুইটের ভেতর উদ্ধার করতে আসে, মার অবস্থা দেখে নিশা দেশাই এর মতন অভিজ্ঞ প্রফেশনাল মহিলাও শিউরে উঠেছিল। রাতভোর পার্টির হাং ওভার এর সাইন মার শরীরে প্রতি টি রন্ধে ফুটে উঠেছিল। শুধু তাই না, ড্রাগস মদ হুকাহ্ আর যৌনতার নেশায় মেতে উঠার ফলে সকালে বেরোনোর সময় দেখা গেলো সুপ্রিয়া র নিজের পায়ে সোজা হয়ে উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা পর্যন্ত নেই, চলা ফেরা, কাজ করা তো দূর অস্ত।

মা সেদিন প্রথম বারের জন্য শুটিং মিস করেছিল। প্রোডাকশন হাউজ এর জন্য মা কে শো কজ নোটিশ পাঠিয়েছিল। কাজে অনুপস্থিত থাকার উপযুক্ত কারণ না দেখাতে পারলে মা কে প্রচুর টাকার আর্থিক জরিমানা আর কন্ট্রাক্ট বাতিল এর মতন শাস্তি অপেক্ষা করে ছিল। এই কারণে মা বিরাট সমস্যাতে পরে যায়, শ কজ নোটিশ এর আনসার অবশ্য দেয়, কিন্তু সেই উত্তরে ভারপ্রাপ্ত একজিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার রা সন্তুষ্ট হল না। শেষে অবশ্য সেই সাম মিরান্ডা র মতন এক প্রভাবশালীর শরণাপন্ন হতেই হয়। তার এক ফোনে সমস্যা মিটে যায়।

প্রোডাকশন হাউজ মার উপর থেকে যাবতীয় স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। সাম মিরান্ডার উপকারের বদলে মা কেও রিটার্ন ফেভরে ঐ ব্যক্তি কে নিয়মিত ভাবে সন্তুষ্ট করতে হয়। তার পর থেকেই মোহিনী পাঠক(আমার মায়ের স্ক্রিন নেম) অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাম মিরান্ডার ফার্ম হাউসে হওয়া সমস্ত প্রাইভেট পার্টির নিয়মিত গেস্ট বনে যায়। আর ঐ সব পার্টি টে মদ হুকাঃ ড্রাগস সব ধরনের নেশার উপকরণ মজুত থাকত। প্রথম দিকে ঐ সব থেকে দূরে সরে থাকলেও আস্তে আস্তে মা ঐ সব নতুন নতুন নেশায় অ্যাডিক্টেড হওয়া আরম্ভ করলো।

আর মাও দেখলো সুস্থ মস্তিকে যে কাজ করা বিবেকের কাছে আটকায়, নেশার আশ্রয় নিয়ে করলে সেই অনাচার ই অতি সহজে করা যায়। ফলে মা একটু একটু করে এইসব নেশার দিকে অগ্রসর হতে শুরু করলো। আর নেশায় অভ্যস্ত হতে শুরু করলো তত দ্রুত তার চরিত্রের অধঃপতন শুরু হলো।এই সব গল্প আমাদের জানার কথা না। কিন্তু মার স্ক্যান্ডাল এমন ভাবে ছড়িয়ে যায়, যে সে খবর আমাদের কাছেও এসে পৌঁছায়। আমার বাবা তো মার এসব পার্টি আর নেশা র চক্রে নিয়মিত ভাবে যুক্ত থাকবার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেয়েছিল। ব্যাপার টা আরেকটু খুলে বলা যাক।

আসলে যেদিন এসব ঘটনার সূত্রপাত হয়, অর্থাৎ ঐ রেভ পার্টির দিন ছিল আমার বাবার বার্ড দে । হাজার ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও বাবার বার্থ ডে একটা বিশেষ দিন হিসেবে মার মনে ছিল। পার্টি টে আসার পর, যখন মা শুরুতে কিছুটা খালি সময় পেলো, সেইসময় বাবাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করেছিল। অনেক দিন বাদে সরাসরি মার ফোন পেয়ে বাবা খুব খুশি হয়েছিল,যদিও সেই আনন্দের স্থায়ীত্ব বেশি ক্ষণ হয় নি। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ফোন টা যখন এসেছিল, মা ঐ পার্টি টে সবে মাত্র উপস্থিত হয়েছিল, তখনও মা পার্টিতে তার বন্ধুদের সাথে মদ ড্রাগস ইত্যাদি নেশা করা আরম্ভ করে নি।

মা বেশ সুস্থ ভালো ভাবে কথা বলছিল। বাবা এত রাতে মা বাইরে পার্টি করতে এসেছে শুনে একটু অবাক হয়ে গেছিলো। কারণ পরের দিন মার একটা কমার্শিয়াল অ্যাড শুট ছিল, শুটিং এর আগের রাতে পার্টি করা বারণ আছে সেটা বাবা জানতো। মা কে সেই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে মা জবাব দিয়েছিল, চিন্তা নেই বেশিক্ষণ মা এই পার্টি টে থাকবে না।

আসলে এই পার্টি টা এমন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ডেকেছেন। যে কিছুতেই অভয়েড করা গেলো না। মাত্র একমিনিট মত বাবার সঙ্গে কথা হতে না হতেই বাধা আসলো, হটাৎ ই মা কে তার খুব কাছের কেউ এসে পিছন থেকে জাপটে ধরে ছিল। মা মুখ থেকে একটা ভয় যন্ত্রণা, বিস্ময় উত্তেজনা মেশানো আওয়াজ বের করে ফেলেছিল।এই আক্রমণের জন্য মা মোটেই প্রস্তুত ছিল না।

তাই ঐ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যাক্তি মা কে পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতেই মার হাত থেকে তার ফোন টা মাটিতে পড়ে যায়। মাটিতে ফোন টা পড়ে যাওয়ার পরেও, ফোন আর কল দুটোই অন ছিল। তার ফলে মার অজান্তে বাবার কানে এরপর ঘটা কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা আর টুকরো টুকরো কথা চলে আসে।

মা পিছন থেকে ঐ মানুষের ঝাপি খেয়ে বলছিল, ” ক্যা কার রহে এ ইয়ার ছর মুঝে। জব মৌকা মিলে তো শুরু হ জাতে হ তুমলোক। ” জবাবে এক পুরুষ কণ্ঠ বললো, “অভি চলো মেরে সাথ, sd নে মাল লেকার আই হে। টেস্ট করনা হে।” মা এর পর বলে, অভি ছর মুঝে, কই ইন্টারেস্ট নেহি হে উচসব চিজ মে।” কিন্তু ঐ পুরুষ কণ্ঠ হাল ছারলো না। মা কে বললো” ইন্টারেস্ট কিউ নেহি রহেগা একদম করক চিজ হে। খাও গে তহ একদম চাঙ্গা হ জাওগে”

মা জিজ্ঞেস করলো, ফিরছে কই প্রব্লেম তো নেহি হোগা? ঐ পুরুষ কণ্ঠ জবাব দিল, ” নেহি নেহি, বহুত মজা আয়গা, একবার লেকার তহ দেখো।” মা বললো, ” ঠিক হে তুম যাও মে দো মিনিট মে আ রহা হ্ন।” এইটুকু শুনেই বাবা ভগ্নমনরথ হয়ে নিজের থেকেই ফোন টা কেটে দেয়। বাবা গলার আওয়াজ শুনে পারে ঐ ব্যক্তি আর কেউ না মার সেলেব কো স্টার মিস্টার অরবিন্দ স্বয়ং।

ঐ ঘটনার দিন দুয়েক বাদে একটা পেজ থ্রি ট্যাবলয়েড এ মার ঐ পার্টির ড্রাংক পিস লিক হয়ে যায়। তারপর ই মা আর অরবিন্দের অফস্ক্রিন রসায়ন সবার সামনে দিনের আলোর মতন পরিষ্কার হয়ে যায়। ঐ ট্যাবলয়েড এ মার যে পার্টি পিস প্রকাশিত হয়েছিল সেটা দেখে আমার বাবা আরো স্তম্ভিত হয়ে গেছিলো, মনে মনে মা কে ঘৃণা করতে শুরু করে। বাবার তো বিশ্বাস হচ্ছিল না তার স্ত্রী এই নিয়মিত হারে নেশা ভাং করতে পারে। আর আমি নিজে অন্ধকারে ছিলাম।

এখন পুরোটা পরিষ্কার বুঝতে পারলেও, সেই সময় দাড়িয়ে কোনটা মার রিল লাইফ আর কোন টা রিয়ল লাইফ এটা নিয়ে প্রচন্ড কনফিউজ হয়ে পড়েছিলাম। ঐ ট্যাবলয়েড এ প্রকাশিত ছবিতে মা একটা ট্রান্সপারেন্ট জাতীয় একটা বিশেষ ধরনের টপ পড়েছিল যাতে মার কালো রঙের অন্তর্বাস টা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল।

তাছাড়া মার একটা হাতে টাকিলার গ্লাস আর ঠোঁট দুটো কাউকে চুম্বন করতে উদ্দত্ত এমন পোজ দেওয়া অবস্থায় ছবিটা উঠেছিল। বলাই বাহুল্য ঐ ধরনের ছবি কন্ত্রভার্সির ঝড় তুলেছিল। মা কয়েক সপ্তাহ প্রেস এর সামনে মুখ বন্ধ রেখেছিল। বাবা এই বিষয় টা নিয়ে মার সাথে একটা হেস্ত নেস্ত করতে চাইছিল। কিন্তু মা সেসময় আমাদের কল ও রিসিভ করছিল না।

মার ঐ রেভ পার্টি পিকচার লিক হবার সাথে সাথে মার ক্লিন ইমেজ একটা ধাক্কা খায়। মার অ্যাপার্টমেন্ট আর শুটিং স্টুডিওর আসে পাসে পাপ্পারাজি ফটোগ্রাফার দের উৎপাত বেড়ে যায়। সবাই মার ব্যাক্তিগত মুহূর্তের এক্সক্লুসিভ ফটো তুলতে চায়। আমরা জেনেছিলাম, এই সব পাপ্পরাজি দের হাত থেকে বাঁচতে মা কে হাই সিকিউরিটি বডিগার্ড হায়ার করতে হয়।

রেভ পার্টির লিক ইমেজের দুৎসহ স্মৃতি মন থেকে মুছতে না মুছতে আরো দুটো নিউজ আমাদের কে মার বিষয়ে বিশেষ ভাবে উদ্বিঘ্ন করে তোলে। একটা মার প্রথম বার রাত ভোর পার্টি করে শুটিং মিস করা যেটা আগেই উল্লেখ করেছি, আর ২য় খবর টা ছিল আরো চমকে দেওয়ার মতন নিউজ। ঐ রেভ পার্টির ৩-৪ দিন পরেই একটা পেজ থ্রি ম্যাগাজিনে প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় ঐ কো স্টার সেলেব এর সঙ্গে নাকি মার অফ স্ক্রিন chemistry এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে মিস্টার অরবিন্দ নিজের সাত বছরের বিবাহিতা স্ত্রী অঞ্জলী কে ডিভোর্স দিয়ে আমার মা মোহিনীর সঙ্গে লিভ ইন্ করতে চাইছে।

অনেক দিন ধরেই এই লিভ টুগেদার এর প্রপসাল পাওয়ার পরে, মা ও নাকি মনে মনে এই অরবিন্দ এর প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ করে প্রাথমিক ভাবে লিভ ইণ স্টার্ট করার বিষয়ে সম্মতি দিয়ে দিয়েছে। নিশা দেশাই মা কে বোঝানোর চেষ্টা করে মিস্টার অরবিন্দ এর সঙ্গে থাকা আরম্ভ করলে মার কেরিয়ার এ অসুবিধা হবে, কারণ এই মিস্টার অরবিন্দ নিজেই অসাধারণ ট্যালেন্ট আর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও অ্যাক্টিং অ্যান্ড মডেলিং এর ব্যাপারে সব সময় ক্যাসুয়াল অ্যাপ্রোচ দেখিয়ে এসেছে।

সকাল নটা র সময় কল টাইম থাকলে উনি নাকি লেট করে আড়াইটে তিনটের সময় স্টুডিও পৌঁছায়। নেহাত ওনার হাতে খুব প্রভাবশালী বন্ধুরা আছে, টেলিভিশন নেটওয়ার্ক কোম্পানি টে ওর পরিবারের অনেক share কেনা আছে তাই অরবিন্দ কে বাতিল করার কথা ভাবতে পারে না কিন্তু অনেক পরিচালক ই তার উপর মনে মনে ক্ষুব্ধ। এহেন মানুষের সঙ্গে একসাথে থাকতে শুরু করলে মার কাজের জগতের নিয়মনুবর্তিতা, অনুশাসন, সুনাম সব কিছু আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাবে অরবিন্দ এর সঙ্গ দোষে।

নিশা দেশাই পেশাদার হিসাবে মা কে তার কেরিয়ার এর জন্য সঠিক এডভাইস দিয়েছিল কিন্তু মা তার কো স্টার বন্ধু এর কথায় এমন ভাবে মজে গেছিলো নিশা আন্টির এডভাইস সে সময় কানেই তুললো না। নিশা আণ্টি মা কে সঠিক উপদেশ দিলেও অন্যদিকে রুচিকা আণ্টি মা কে সম্পূর্ণ অন্য উপদেশ দিয়েছিল। মিস্টার অরবিন্দ এর সঙ্গে রুচিকা আন্টির কোনো গোপন ডিল হয়েছিল।

তাই সে প্রথম থেকেই অরবিন্দ এর সঙ্গে লিভিং টুগেদার করার জন্য মা কে সমানে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছিল। অরবিন্দ ও মায়ের মতন সুন্দরী সম্ভাবনা ময় আর্টিস্ট কে পাওয়ার জন্য মিথ্যে ভালোবাসার অ্যাক্টিং করে যাচ্ছিল। সেই ভালোবাসা কেই মা শেষ পর্যন্ত সত্যি ভেবে বসলো। জীবনের অন্যতম ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে অরবিন্দ কে যখন খুশি যত দিন ইচ্ছে তার নতুন কেনা অ্যাপার্টমেন্টে এসে থাকার পারমিশন দিয়ে দিল।

অরবিন্দ এই সুযোগের অপেক্ষায় বেশ কয়েক মাস ধরে বসে ছিল। মা পারমিশন দিতেই ও সাথে সাথে লাগেজ গুছিয়ে নিয়ে এসে মার অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে চলে আসলো। এই ভাবে আমাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে মা তার জীবনের অন্যতম এক গুরুত্ব পূর্ণ অধ্যায় শুরু করে দিল। মা এই অরবিন্দ কে চিনতে ভুল করেছিল। এবং পরবর্তী কালে তার জন্য চড়া মূল্য চোকাতে হয়েছিল।

রুচিকা আণ্টি কে মার মুম্বই নিয়ে যাওয়া ছিলো তার লাইফের অন্যতম বড়ো ব্লান্ডার। রুচিকা আণ্টি আমার মা কে মোটেই ভালোবাসতো না। শুধু ছোট বোনের মতন ভালবাসার ভান করতো। সে আসলে মার টাকা ফ্রেম, সম্পত্তি কে পছন্দ করত। লোভে পরে সে মা কে পটিয়ে মুম্বই চলে এসে মার জীবনে জড়িয়ে গেছিলো। রুচিকা আণ্টি আর সিনহা আঙ্কেল এর ছাড়াছাড়ির পর আন্টির মার মতন একজন শক্ত অবলম্বন দরকার ছিল। সে মুম্বই আসার পর থেকেই মোহিনীর স্টারদম রূপ আর যৌবন কে ইউজ করে নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক ব্যালান্স বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছিল।

রুচিকা আণ্টি মুম্বাই এসেই মার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিশা দেশাই এর সঙ্গে ভাব করে নেয়। নিশা দেশাই প্রথমে মার ভালোর জন্য ওদের প্রস্তাবে রাজি না হলেও, কিছু দিন যেতেই টাকার লোভে ঐ চক্রে নাম লেখায়। নিশা আন্টির মতন বিশ্বস্ত পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কে হাত করে নেওয়ায় এরপর মার চরিত্র আর জীবনের মূল্যবোধের সর্বনাশ হোয়া শুধু মাত্র সময়ের অপেক্ষা ছিল। খুব অল্প সময়ে নিশা দেশাই আর রুচিকা আগরওয়াল এর মধ্যে alliance তৈরি হয়ে যায়।

দুজনে মিলে মার স্টার দম সৌন্দর্য্য আর রূপ লাবণ্যকে ইউজ করে মা কে শোষণ করতে শুরু করে। মডেলিং শিডিউল দিন কে দিন আরো বস্তও থেকে ব্যাস্ত তর হয়। মা অনেক বেশি পার্টি লেট নাইট ক্লাব ইভেন্ট আর অভিসারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ওরা দুজনে মিলে প্ল্যান করে মার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে দেওয়ার জন্য তাকে একটু একটু করে ফুল অ্যালকোহলিক ওমান এ পরিণত করে। মদ এর পেয়ালায় ঠোঁট ছুয়ালে ই আমার মা অন্য নারী টে রূপান্তর হয়ে যেত।

আর তার ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ওরা তিনজনে মিলিত ভাবে আমাদের বাবা ও ছেলে কে মার জীবন থেকে পুরপুরি ভাবে সরিয়ে দেওয়ার প্ল্যান কার্যকর করতে শুরু করেছে সেটা আমার মা নেশায় আর স্টার দম এ মজে গিয়ে বুঝতেই পারল না। আর সেটা সফল হতে আরম্ভ করে। মা আস্তে আস্তে যত বেশি মদ পার্টি অভিসার আর বিলাস বহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছিল আমাদের খোজ খবর নেওয়াও কমিয়ে দিচ্ছিল। মিস্টার অরবিন্দ ও মা কে পেতে মরিয়া হয়ে নিশা আর রুচিকা আন্টির সঙ্গে হাত মেলায়, এই ভাবে ৩ জনের মিলিত জোট মার জীবন থেকে ধীরে ধীরে তার পুরনো জীবনের সব সুখ স্মৃতি চিহ্ন এমন কি তার আপন জন দের ও দূরে ঠেলে দেয়।

আমরা মা কে ফোন করলে ওরাই পালা করে ফোন রিসিভ করতো। আমরা কখনোই মার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারতাম না। ওরা বলত মা মিটিং অথবা পার্টি টে busy ache। আসলে মা ছিল ওদের কাছে সোনার ডিম পাড়া হাঁস।

একটা বহুজাতিক ফ্যাশন এন্ড মডেলিং ব্র্যান্ড মা কে বহু দিন ধরেই তাদের কোম্পানির প্রধান বিপণনের মুখ করার জন্য বিশেষ ভাবে উদ্যোগী ছিল। এদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলে মা যে বিভিন্ন গালা ইভেন্ট শো টে ড্যান্স আর মডেলিং পারফরমেন্স করতে হবে তাও আবার ওদের পছন্দের সব স্বল্পবস স্টাইলিশ পোশাক পড়ে একগাদা লাইভ দর্শক দের সামনে। এমন কি হাই ক্লাস মেরেজ ফাংশান এও ড্যান্স শো তে পারফর্ম করতে হবে। তার অ্যাক্টিং ফিল্ডে মনোসংযোগে র অভাব হবে বলে মা ওদের কে না করে আসছিল। রুচিকা আণ্টি ঐ কোম্পানির জিএম এর থেকে ভালো টাকা কমিশন খেয়ে মা কে ঐ কোম্পানির প্রপোজাল মেনে ইভেন্ট এর কাজ ও ধরতে উপদেশ দেয়। রুচিকা আণ্টি মা কে কে এমন ভাবে বোঝায় যে মা সেরিয়াসলি ঐ প্রস্তাব নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top