What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

গির্জার শহরে (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,653
Messages
117,045
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
f3XI4AF.jpg


অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে চার দিনের ছুটিতে বেরিয়ে পড়লাম সার্বিয়ার দিকে। গন্তব্য মূলত সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড এবং তৃতীয় বৃহত্তম শহর নিশ।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত যেকোনো দেশের বৈধ ভিসা কিংবা রেসিডেন্ট পারমিট থাকলে কোনো ধরনের ভিসা ছাড়া সার্বিয়া ভ্রমণ করা যায়। সার্বিয়াতে প্রবেশের সময় সেখানকার ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে কেবল পাসপোর্টে একটি অ্যারাইভাল সিল দেওয়া হয়। বিপরীতক্রমে সার্বিয়া থেকে যখন অন্য কোনো দেশে প্রবেশ করা হয়, তখন ইমিগ্রেশন পুলিশ পাসপোর্টে একটি ডিপার্চার সিল দেন। প্রক্রিয়া খুবই সামান্য।

স্থলপথে স্লোভেনিয়া থেকে দুভাবে সার্বিয়া ভ্রমণ করা যায়। প্রথমে স্লোভেনিয়া থেকে ক্রোয়েশিয়া যেতে হয় এবং ক্রোয়েশিয়া থেকে সরাসরি সড়ক পথে সার্বিয়া যাতায়াত করা যায়। অথবা স্লোভেনিয়া থেকে হাঙ্গেরি হয়ে সার্বিয়া। হাঙ্গেরির সঙ্গে সার্বিয়ার প্রত্যক্ষ সীমান্ত সংযোগ রয়েছে।

আমি দ্বিতীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে স্লোভেনিয়া থেকে প্রথমে হাঙ্গেরি যাই এবং হাঙ্গেরি থেকে ব্লা ব্লা কারের মাধ্যমে সার্বিয়া ভ্রমণ করি। উবার কিংবা পাঠাওয়ের মতো ব্লা ব্লা কার একটি জনপ্রিয় কার রাইড শেয়ারিং সার্ভিস। তবে যারা দূরপাল্লার যাত্রী, তারাই মূলত ব্লা ব্লা কারের দ্বারস্থ হয় বেশির ভাগ সময়। ফলে ব্লা ব্লাকে ইত্যাদি ইত্যাদি ভাবার কোনো কারণ নেই অন্তত হাঙ্গেরিতে।

সেগেড থেকে যখন আমরা সার্বিয়ার সীমান্তের দিকে অগ্রসর হই, তখন খানিকটা সময়ের জন্য হতবিহ্বল হয়ে পড়ি। সার্বিয়ার সীমান্ত চেকপোস্টের দিকে তাকাতেই কেমন যেন এক রুগ্‌ণতার ছাপ চোখের সামনে ভেসে উঠল। মনে হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো দেশের সীমানায় প্রবেশ করছি। ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে একটি কম্পিউটার এবং একটি স্ক্যানার ছাড়া আর কিছুই দেখলাম না। আমাদের দেশের বেনাপোল কিংবা তামাবিলের সীমান্ত চেক পয়েন্টও এর থেকে অনেক উন্নত। তবে সার্বিয়া কিংবা হাঙ্গেরি কোনো সীমানায় আমাকে তেমন একটা ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। ইমিগ্রেশন পুলিশ আমার পাসপোর্ট ও রেসিডেন্ট পারমিটের কপি স্ক্যান করে পাসপোর্টের শেষ পৃষ্ঠায় সিল দিয়ে ছেড়ে দেয়।

YoH2v43.jpg


হাঙ্গেরি থেকে সার্বিয়াতে প্রবেশের সময় এমন দৃশ্য দেখা যায়

দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত বলকান উপদ্বীপের একেবারে কেন্দ্রস্থলে সার্বিয়ার অবস্থান। তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ইস্টার্ন থ্রেস থেকে শুরু করে সার্বিয়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের এক সুবিশাল অঞ্চলকে সামগ্রিকভাবে বলকান অঞ্চল হিসেবে অভিহিত করা হয়। তুরস্কের ইস্টার্ন থ্রেস ও সার্বিয়া ছাড়াও বুলগেরিয়া, মেসিডোনিয়া, গ্রিস, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, মন্টেনেগ্রোর, আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও কসোভোসহ হাঙ্গেরি ও রোমানিয়ার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত হয়েছে এ বলকান অঞ্চল। স্থানীয় বলকান পর্বতমালার নাম অনুসারে এ অঞ্চলটিকে ‘বলকান’ নামে অভিহিত করা হয়। যদিও স্থানীয় ভাষায় স্লাভরা এ পর্বতমালাকে ‘স্টারা প্ল্যানিনা’ নামে সম্বোধন করেন।

বলকান অঞ্চলটিকে ইউরোপের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চলগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অনুন্নত অবকাঠামো, দুর্নীতি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অপরিচ্ছন্ন ও জীর্ণশীর্ণ রাস্তাঘাট এ সবকিছু যেন এ অঞ্চলের মানুষের কপালে স্থায়ীভাবে খোদাই করে লিখে রাখা হয়েছে।

হাঙ্গেরি থেকে যখন সার্বিয়াতে প্রবেশ করি, তখন আমার কোনোভাবে বিশ্বাস হচ্ছিল না যে ইউরোপের কোনো দেশে অবস্থান করছি। হাঙ্গেরি ও সার্বিয়ার সীমান্তবর্তী শহর সুবোটিচা, যাকে হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় বলা হয় সাবাদকা। সুবোটিচা থেকে শুরু করে সার্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নোভি সাদ এমনকি রাজধানী বেলগ্রেডের একাংশ পর্যন্ত সার্বিয়ার উত্তর অঞ্চলের এক বিস্তীর্ণ এলাকা, একসময় অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। তাই এ অঞ্চলে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা জাতিগতভাবে হাঙ্গেরিয়ান।
সুবোটিচাকে আমাদের দেশের কোনো প্রত্যন্ত উপজেলা শহরের সঙ্গে তুলনা করলে ভুল হবে না, এর রাস্তাঘাট একেবারে জরাজীর্ণ। গাড়ির গতির সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক কদমে ঝাঁকি অনুভূত হচ্ছিল, রাস্তার দুই ধারের স্থাপনা দেখে মনে হচ্ছিল শহরটি যেন কোনো এক ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে।

KixefWF.jpg


সুবোটিচা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল

সুবোটিচাতে পা রাখতে না রাখতে ছুটে গেলাম স্থানীয় বাস টার্মিনালে। সার্বিয়ায় আসার আগে এক বন্ধুর কাছ থেকে কিছু সার্বিয়ান দিনারের নোট কিনে রেখেছিলাম। সার্বিয়ান দিনারের কাগজের নোটগুলো বেশ সুন্দর। তবে সার্বিয়ার মুদ্রার মান আমাদের দেশের মুদ্রার চেয়ে কম। এক ইউরোর বিপরীতে যেখানে ১১৭ সার্বিয়ান দিনার পাওয়া যায়, সেখানে এক ইউরো সমান বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১০১ টাকা।

একবার বুলগেরিয়া ভ্রমণে গিয়েছিলাম, সেখানে আমার সঙ্গে এক অস্ট্রেলিয়ান পর্যটকের পরিচয় হয়। তাঁর নাম কন্নোর ক্রাউফোর্ড। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী নিশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করা। সুবোটিচা থেকে বাসে চড়ে নিশ পৌঁছাতে প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা সময় লাগে, প্রতিবার ট্রিপের জন্য প্রায় ২ হাজার ২০০ সার্বিয়ান দিনারের মতো বাস ভাড়া গুনতে হয়।

সার্বিয়ায় একটা সুবিধা আছে, প্রায় সব জায়গায় ওয়াইফাই হটস্পট রয়েছে। নিশের সিটি সেন্টারের কাছে সেডমগ ইউলা নামক এক জায়গায় এক রাত থাকার জন্য একটি রুম ভাড়া করেছিলাম। যিনি এ রুমের মালিক ছিলেন অর্থাৎ যাঁর কাছ থেকে এ রুমটি ভাড়া নিয়েছিলাম, তাঁর নাম ছিল মিলান গোলুবোভিচ। মিলান নিশের স্থানীয় অধিবাসী।
মিলান আমাকে আগে থেকেই মেসেজ দিয়ে রেখেছিলেন যে আমাকে রিসিভ করার জন্য তিনি নিশের বাসস্টেশনে অপেক্ষা করবেন। তাই সুবোটিচা থেকে যখন নিশের উদ্দেশ্যে আমাদের বাসটি ছেড়ে গেল, কিছুক্ষণ পরপর মিলান মেসেজের মাধ্যমে আমার সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছিলেন। বাসের ভেতর ফ্রি ওয়াইফাই থাকায় মিলানের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমার তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি।

tcKm6OG.jpg


সুবোটিচা থেকে নিশ যাওয়ার পথে রাস্তার দু ধারে এমন দৃশ্য দেখা যায়

অপেক্ষাকৃতভাবে বলকান উপদ্বীপের দেশগুলো ইউরোপের অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। তারপরও যে কারণে বলকান উপদ্বীপের এ দেশগুলো আমাকে বারবার আকর্ষণ করে তা হলো এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। রাস্তার দুপাশের বলকান পর্বতমালার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য যেকোনো মানুষের চিত্তহরণ করতে বাধ্য। একবার যিনি এ সৌন্দর্যের স্বাদ পেয়েছেন, তিনি বাধ্য হয়ে বারবার এর খোঁজে বলকান উপদ্বীপের কোনো দেশে ফেরত আসতে চাইবেন। এ ধরনের সৌন্দর্য ইউরোপ তো বটেই পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। দেখে মনে হবে, কোনো এক শিল্পী তাঁর সুনিপুণ তুলির আঁচড়ে পুরো বলকান পেনিনসুলাকে সাজিয়েছেন।

পুরো যাত্রাপথে আমি কাছ থেকে বলকান অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্বাদ নেওয়ার চেষ্টা করেছি, যা ছিল সার্বিয়া ভ্রমণের সময় আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
আমাকে রিসিভ করার জন্য মিলান নিশের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা হতেই তিনি আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন। এরপর একসঙ্গে সেগমোড ইউলায় তাঁর বাসার দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। নিশের সেন্ট্রাল বাসস্টেশন থেকে পায়ে হেঁটে সেগমোড ইউলায় পৌঁছাতে ১৫ মিনিটের মতো সময় লাগে। এত লম্বা বাসযাত্রা শেষে স্বাভাবিকভাবে শরীর ভীষণ ক্লান্ত। তাই ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। মিলান আমার জন্য অবশ্য হালকা নাশতার ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন।

পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠতেই দেখি মিলান আমার জন্য সকালের নাশতা নিয়ে অপেক্ষা করছেন। আমার জন্য তিনি বুরেক নিয়ে এসেছিলেন। বলকান দেশগুলোর মানুষের কাছে একটি জনপ্রিয় খাবারের আইটেম হচ্ছে বুরেক। বুরেককে পাই কিংবা আমাদের দেশের জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড আইটেম পেটিসের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। প্রায় সাড়ে চার শ বছর সার্বিয়া পরিচালিত হয়েছে অটোমান শাসকদের দ্বারা। তাই সার্বিয়ার খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে দেশটির সংস্কৃতিতে অটোমান সাম্রাজ্য তথা তুরস্কের প্রভাব লক্ষ করা যায়।

tFgj4eR.jpg


ল্যাটিন এবং সিরিলিক দুই ধরণের বর্ণমালা সার্বিয়ায় ব্যবহৃত হয়, যদিও অফিশিয়াল কাজে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে সিরিলিক বর্ণমালা ব্যবহার করতে হয়

সার্বিয়া, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, বুলগেরিয়া, মেসিডোনিয়া, মন্টেনেগ্রোর এসব দেশের অধিবাসীরা জাতিগতভাবে স্লাভ হলেও পোল্যান্ড, ইউক্রেন, চেক প্রজাতন্ত্র কিংবা রাশিয়ার অধিবাসীদের মতো এরা বাহ্যিকভাবে তেমন উজ্জ্বল ফরসা হয় না। এদের চুলের বর্ণ যে একেবারে গাঢ় সোনালি, তেমনটিও বলা যাবে না। তাই অনেকে এসব দেশের অধিবাসীদের ‘ফেইক স্লাভ’ বলে থাকেন। অনেকে আবার মনে করেন দীর্ঘদিন অটোমান সাম্রাজ্যের শাসনাধীন থাকায় তুরস্কের অধিবাসীদের সঙ্গে এদের জিনগত সংমিশ্রণ ঘটেছে। তাই স্লাভিক জাতিগোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার পরও এসব দেশের বেশির ভাগ মানুষ বর্ণগতভাবে সাদা নয়। যদিও এ দাবির পেছনে যুক্তিযুক্ত কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।

বিভিন্ন ধরনের বুরেক রয়েছে, যেমন চিজ বা পনিরের বুরেক, স্পিনাচ বা পালং শাকের বুরেক, মাংসের কিমার বুরেক ইত্যাদি। বুরেকের জন্য নিশ গোটা বলকান অঞ্চলে বেশ প্রসিদ্ধ এবং বেশির ভাগ সার্বিয়ানের মতে, সমগ্র বলকান অঞ্চলে সবচেয়ে ভালো মানের বুরেক তৈরি হয় নিশে। স্থানীয়ভাবে যাকে ‘নিশ বুরেক’ নামে ডাকা হয়। আমার কাছেও নিশ বুরেক অত্যন্ত সুস্বাদু মনে হয়েছে। সকালের নাশতা শেষ করেই মিলানের সঙ্গে ছুটলাম নিশ শহর ঘুরে দেখার জন্য।

মিলান অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ, তাই তিনি শুরুটা করলেন নিশের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ অর্থোডক্স চার্চ হলি ট্রিনিটি ক্যাথেড্রাল দিয়ে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৮ সাল থেকে শুরু করে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত সার্বিয়ায় সমাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রচলন ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী সময়ে সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মন্টেনেগ্রোর, মেসিডোনিয়া, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা ও আলবেনিয়ার একাংশ সম্মিলিতভাবে যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন গঠন করেছিল। যদিও যুগোস্লাভিয়া ছিল সমাজতান্ত্রিক অবকাঠামোর ওপর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র, তবে দেশটি সব সময়ই সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত থাকার চেষ্টা করেছে।

bXYwJ8Z.jpg


সার্বিয়ান দিনারের নোট

কমিউনিস্ট শাসনাধীন দেশগুলোতে ধর্মীয় অনুশাসনকে বাঁকা চোখে দেখা হতো, তারপরও কেন জানি দেখলাম, দীর্ঘকাল কমিউনিস্ট শাসনের অধীনে থাকার পরও সার্বিয়ার মানুষের মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাসে তেমন একটা ছেদ পড়েনি। বরং দেশটিতে বসবাসরত সিনিয়র সিটিজেনদের তুলনায় তরুণ প্রজন্মের নাগরিকেরা ধর্মের প্রতি অধিক সংবেদনশীল। মিলান একজন প্র্যাকটিসিং অর্থোডক্স খ্রিষ্টান, অপর দিকে তাঁর দাদা একজন কমিউনিস্ট, যিনি কোনো ধর্মে বিশ্বাস করেন না।

সার্বিয়ার বেশির ভাগ মানুষ খ্রিষ্টান ধর্মে বিশ্বাসী। পূর্বাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্য তথা বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের আধিপত্যের কারণে সার্বিয়াতে ক্যাথলিক চার্চের তুলনায় অর্থোডক্স চার্চের বিস্তৃতি ঘটেছে অনেক বেশি। সার্বিয়াতে কয়েক গজ পার হতে না হতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছোট–বড় বিভিন্ন আয়তনের অর্থোডক্স চার্চ। দেশটির রাজনীতিতে অর্থোডক্স চার্চের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি প্রতিবেশী দেশ মন্টেনেগ্রোসহ অর্থোডক্স ভাবাদর্শের দেশগুলোতে সার্বিয়ান অর্থোডক্স চার্চের শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে।

নিশ সার্বিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর, তবে আয়তনে এটি যে খুব বড় কোনো শহর তেমনটি বলা যাবে না। নিশাভা নদীর তীরে অবস্থিত এ শহরটি অটোমান শাসনামলে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত। নিশাভা নদীর নাম অনুসারে শহরটির নাম রাখা হয়েছে নিশ। বাইজেনটাইন সম্রাট প্রথম কনসটানটিন এ শহরটির গোড়াপত্তন করেন। রোমান সাম্রাজ্য বলতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা ইতালির রাজধানী রোমকে বুঝি। অথচ শুনে অবাক হবেন যে রোমান সাম্রাজ্যের ১৮ জন শাসকের জন্ম হয়েছিল সার্বিয়াতে। বিখ্যাত রোমান সম্রাট কনস্টানটিনের জন্ম হয়েছিল এ নিশ শহরে।

পৃথিবীর প্রতিটি শহরের একটি নিজস্ব প্রতীক থাকে। এ প্রতীক দিয়ে শহরটিকে পৃথিবীর অন্যান্য শহর থেকে আলাদা করা হয়। মূলত এ প্রতীকটি মূলত শহরটির প্রতিনিধিত্ব করে। নিশ শহরের প্রতীক হচ্ছে নিশ ফোরট্রেস। একেবারে নিশাভা নদীর পাড় ঘেঁষেই এ ফোরট্রেসটি নির্মাণ করা হয়েছে। অটোমান শাসনামলে নির্মিত এ ফোরট্রেসটি সত্যি অসাধারণ স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন। অনেকে নিশ ফোরট্রেসকে ‘এস্তাম্বোল গেট’ বলে থাকেন।

লেখক: রাকিব হাসান | শিক্ষার্থী, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ফিজিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিকস, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া
 
আচ্ছা, স্লোভানিয়া মানেই কি স্লাভ দেশ🙄!!!
 
ভ্রমণের চমৎকার বর্ণনার জন্য ধন্যবাদ। পড়তে পড়তে ঘুরে দেখা হল।
 
পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। জানা হল, ছবিও দেখা হল । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top