What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঘুরে এলাম হ্যারি পটারের জাদুর রাজ্য (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,653
Messages
117,045
Credits
1,241,450
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
NXzmLpI.jpg


হ্যারি পটার, রন উইসলি, হারমাওনি আর আমার বেড়ে ওঠাটা একসঙ্গেই। আমরা প্রতিবেশী বহুকাল। যখন হ্যারি পটার সিরিজ পড়তে আর দেখতে শুরু করলাম, তখন থেকেই। হ্যারি ও তার বন্ধুরা বড় হতে লাগল হগওয়ার্টস নামের জাদুর দুনিয়ায়। আর আমি সেই নগরীতে প্রবেশ করতে চাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টায় হাঁসফাঁস করতে লাগলাম। তাই জাদুর দুনিয়ায় প্রবেশপথে বসেই আমাকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করে থাকতে হলো। এভাবেই কৈশোর থেকে তারুণ্যের দিকে পা বাড়ালাম। কিন্তু হগওয়ার্টসের প্রতি ভালোবাসা বা মুগ্ধতা কমল না একবিন্দুও। তাই যখন বেশ দীর্ঘ সময়ের জন্য বিলেতে এলাম, তখন মনের চাওয়াটাও পূরণ হলো।

E8AHi8U.jpg


স্টুডিওর ভেতরে

হ্যারি পটারভক্ত মাত্রই জেনে থাকবেন, এই অসামান্য সিরিজের স্রষ্টা জে কে রাওলিং যুক্তরাজ্যের প্রেক্ষাপটেই তাঁর গল্প ফেঁদেছিলেন। লন্ডন, এডিনবরা, অক্সফোর্ডসহ অসংখ্য জায়গার অনুপ্রেরণা ছিল রাওলিংয়ের লেখায়। বইগুলো সিনেমার রুপালি পর্দায় আসতে শুরু করলে আমরাও সেই কল্পলোকের ঝলক দেখতে পাই। তবে এই জায়গাগুলোর নেপথ্যে ছিল লন্ডনের লিভসডেনে অবস্থিত ওয়ার্নার ব্রাদার্স স্টুডিওর একটি অংশ, যা এখন ‘ওয়ার্নার ব্রাদার্স স্টুডিও ট্যুর লন্ডন—দ্য মেকিং অব হ্যারি পটার’ নামে পরিচিত। ১৯৯৫ সালে লিভসডেন ফিল্ম স্টুডিওতে রূপান্তরিত হওয়ার আগ পর্যন্ত জায়গাটি উড়োজাহাজ নির্মাণের কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০১২ সালের মার্চ মাসে এই স্টুডিওটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ১০ বছর ধরে এখানে হ্যারি পটার সিরিজের ছবিগুলোর দৃশ্যধারণের কাজ চলেছে। সিরিজের বেশ কিছু আইকনিক সেট, প্রপস এবং কস্টিউম স্টুডিওতে এখন প্রদর্শিত হচ্ছে।

EiONLMn.jpg


ডায়াগন অ্যালির সেট

ইংল্যান্ডে আসার পরই ভেবে রেখেছিলাম একটু গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে আসব স্টুডিওটি। কিন্তু বাদ সাধল কোভিড! দুর্ভাগ্যক্রমে ইংল্যান্ডে আসার মাস কয়েকের মধ্যেই পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়ল মহামারি। তার পরের ইতিহাস সবারই জানা। গৃহবন্দী জীবন শুরু। একের পর এক লকডাউনে আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তায় কেটে গেল প্রায় দেড় বছর। অবশেষে টিকা চলে আসায় যুক্তরাজ্য এই গ্রীষ্মে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লকডাউন তুলে দিল। আর আমিও সবার আগে ছুট লাগালাম হ্যারি পটারের নির্মাণকৌশল দেখতে।

ইংল্যান্ডে এখন কোনো জায়গা ঘুরে দেখার জন্য আগে অনলাইনে টিকিট নিশ্চিত করতে হয়। আমরাও তাই করলাম। আমি, আমার স্ত্রী আর চার বছরের কন্যাকে নিয়ে রওনা হলাম। যাওয়ার আগে স্ত্রীকে বললাম স্টুডিওতে ঢোকার পর আমি তোমার আর তোমার মেয়েকে চিনি না, বাপু! আমার স্ত্রী খুব ভালো করেই জানে হ্যারি পটার সিরিজের পাঁড় ভক্ত আমি, তাই আমার এমন কথায় অবাক বা বিরক্ত হলো না!

বাসস্থান কভেন্ট্রি থেকে ট্রেনে রওনা দিলাম। ৪৫ মিনিটের মতো রেলযাত্রা। স্টেশনে নেমে উবার নিলাম। মিনিট পনেরোর মধ্যেই পৌঁছে গেলাম লিভসডেনে আমাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। মূল স্টুডিওতে প্রবেশের আগে সেরে নিতে হলো ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড সার্ভিসের (এইচএস) ট্রাক অ্যান্ড ট্রেসের আওতায় কোভিড বিষয়ক আনুষ্ঠানিকতা। বিকেল চারটায় আমাদের শিডিউল বুক করা ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেশ লম্বা লাইন ধরতে হলো ভেতরে প্রবেশের জন্য। উত্তেজনায় তখন আমার বুক রীতিমতো ধুক–ধুক করছে।

K0xlGxx.jpg


প্রাইভেট ড্রাইভের সেই বাড়িটা

শুরুতেই একজন গাইড আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন। সেই সঙ্গে জায়ান্ট স্ক্রিনে এলেন উইজলি পরিবারের জনপ্রিয় যমজ দুই ভাই ফ্রেড আর জর্জ। হগওয়ার্টসের দেয়ালে চলমান আর পরিবর্তনশীল ছবিগুলোর কথা মনে আছে তো সবার? তেমনই এক আয়োজনে নাটকীয় অভ্যর্থনা পেলাম আমরা। তারপর গিয়ে বসলাম সিনেমা হলের মতো একটা জায়গায়। পর্দায় চলে এল হ্যারি-রন-হারমাওনি। রেকর্ডেড ভিডিওতে এই ত্রয়ী আমাদের জানিয়ে দিলেন স্টুডিও ঘুরে দেখার নিয়মকানুন। এর পরই পর্দা সরে গেল আর ‘আলোহোমোরা’ জাদুমন্ত্রের ভোজবাজির মতোই দরজা খুলে গেল হগওয়ার্টস স্কুল অব উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ডির। বুঝে ওঠার আগেই খেয়াল করলাম দাঁড়িয়ে আছি দ্য গ্রেট হলে। কিছুক্ষণের জন্য বিহ্বল হয়ে গেলাম। সংবিৎ ফিরে পেতেই ক্যামেরায় সব ধারণ করতে শুরু করে দিলাম। খেয়াল করলাম স্ত্রী আমার কথা রেখেছে। মেয়েকে নিয়ে সে আমার থেকে আলাদা হয়ে গেছে।

ap1Wq1u.jpg


হগওয়ার্টস ক্যাসেলের খুদে সংস্করণ

এখানে বলা রাখা ভালো, পুরো জায়গায়ই সহায়তার জন্য রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক আর গাইড। তা ছাড়া প্রবেশমুখেই ডিজিটাল এবং ছাপানো গাইডবুক নিয়ে কিনে নেওয়া যায়। আমি ছাপা একটা গাইডবুক স্যুভেনির হিসেবে কিনে নিলেও তখনই সেটা পড়ে দেখার পেছনে সময় নষ্ট করলাম না। এমনকি কোনো স্বেচ্ছাসেবকের কাছ থেকেও তথ্য জানার চেষ্টা করলাম না। আমি বরং ভেসে যাওয়ার চেষ্টা করলাম আমার কৈশোরের নস্টালজিয়ায়।

স্টুডিও প্রদর্শনীর বিভিন্ন সময় হগওয়ার্টসের হাউসগুলোকে নিয়ে আলাদা আয়োজন করা হয়। সেদিন যেমন গ্রেট হল সেজেছিল হাউস স্লিদারিনের সবুজ রঙে। স্লিদারিন কার হাউস ছিল সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না!

NNoKcVd.jpg


কাপবোর্ড আন্ডার দ্য স্টেয়ার্স

কাপবোর্ড আন্ডার দ্য স্টেয়ার্সে হ্যারির রুম, প্রফেসর স্নেইপের পশন ক্লাস, গ্রিংগটস ব্যাংক, হ্যাগ্রিডের কুঁড়েঘর, প্রফেসর ডাম্বালডোরের অফিস, চেম্বার অব সিক্রেটের প্রবেশদ্বার, দ্য গ্রিফিন স্টেয়ারওয়েল, ট্রাইউইজার্ড কাপ, কুইডিচ ব্রুমস্টিক, দ্য শর্টিং হ্যাট, মনস্টার বুক, টম রিডলের ডায়েরি, ভোল্ডেমর্টের হরোক্রাক্স, গড্রিক গ্রিফিন্ডরের তলোয়ার, মিসেস উইজলির রান্নাঘর ইত্যাদি একটার পর একটা সেট আর প্রপ ঘুরে দেখছি আর মুগ্ধ থেকে মুগ্ধ হচ্ছি সিনেমা নামে আশ্চর্য এক ম্যাজিকের প্রতি! অবশ্য আরও গোড়ায় গিয়ে ভাবলে এ সবই তো আসলে বিজ্ঞানের জাদু।

সিনেমার জন্য ব্যবহৃত কস্টিউমের এক বিশাল সম্ভার পাওয়া যাবে এই প্রদর্শনীতে। ডিজাইনারেরা যে কতটা যত্ন নিয়ে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বিষয় মাথায় রেখে নকশা করেছেন তা অচিন্তনীয়!

E6gQAgG.jpg


হগওয়ার্টস ব্রিজও দেখতে পাওয়া গেল

ঘুরতে ঘুরতে এক জায়গায় চোখ আটকে গেল ভিড় দেখে। কাছে গিয়ে জানতে পারলাম ব্রুমস্টিক বা জাদুর ঝাড়ু নিয়ে নাকি আমরাও ম্যাজিক দেখাতে পারব। তাই আমিও লাইনে দাঁড়িয়ে গেলাম। ব্রুমস্টিকের দিকে হাত বাড়িয়ে ‘আপ’ বলতেই একি কাণ্ড! মাটি থেকে ঠিক ঠিক আমার হাতে চলে এল। আবার ‘ডাউন’ বলতেই মাটিতে নেমে গেল। খুব মজা পেলাম। এই অংশে এসে স্বেচ্ছায় মেলায় হারিয়ে যাওয়া পরিবারকে খুঁজে পেলাম। অবাক হয়ে লক্ষ করলাম আমার পুঁচকে মেয়েটা এখানে এসে বিমল আনন্দ পাচ্ছে। অথচ সে এখনো জানেই না হ্যারি পটার কী বিষয়! ওকে নিয়ে আবার ব্রুমস্টিকের কেরামতি করে এলাম। আমার মতো সে খুবই মজা পেল।

8vKqKuq.jpg


ব্রুমস্টিকের কেরামতি

এরপর ঢুকলাম গা ছমছম করা ফরবিডেন ফরেস্টে। দেখা মিলল বাকবিক নামের হিপ্পোগ্রিফ আর দানব আকৃতির মাকড়সা এরাগগের। শব্দ আর আলো-আঁধারির খেলায় চমৎকার একটা আবহ পেলাম এখানে। হ্যারি পটার সিরিজে ফরবিডেন ফরেস্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনার সাক্ষী। প্রথম দিকে বাকিংহামশায়ারের ব্ল্যাক পার্ক নামের একটি জঙ্গলে ফরবিডেন ফরেস্ট অংশের চিত্রধারণের কাজগুলো হয়। কিন্তু আসল জঙ্গলে নানা কারণে শুটিংয়ে সমস্যা হওয়ায় পরে লিভসডেনে এই সেটটি বানিয়ে কাজ শেষ করা হয়।

আমরা একটু জিরিয়ে নেওয়ার জন্য স্টুডিওর ভেতরের ক্যাফেতে বসলাম। কিছু হালকা খাবার কিনলাম আর নিলাম হ্যারি পটার সিরিজের বিখ্যাত বাটারবিয়ার। নাম বিয়ার হলেও এটা কিন্তু কোনো উত্তেজক পানীয় নয়। অ্যালকোহলমুক্ত সুস্বাদু কোমল পানীয়। ক্যাফেতে বসেই দেখা মিলল মুক্ত জায়গায় হ্যারি পটারের কয়েকটি আইকনিক সেটের। সবার আগে চোখে পড়ল সারেতে প্রাইভেট ড্রাইভের সেই বাড়িটা যেখানে হ্যারি তার খালার পরিবারের সঙ্গে থাকত। চলচ্চিত্রটিতে অনেকবার এই বাড়িটি দেখা গেছে। প্রথম পর্বে হগওয়ার্টস থেকে হ্যারির অ্যাডমিশন লেটার পাওয়ার সেই বিখ্যাত দৃশ্যের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার! চিঠিতে চিঠিতে ছেয়ে গিয়েছিল হ্যারিদের বসার ঘর। প্রাইভেট ড্রাইভের চিঠিতে ছেয়ে থাকা সেই রুমটিরও দেখা মিলবে এখানে। আবার দ্বিতীয় পর্বে উড়ন্ত গাড়ি নিয়ে হ্যারির ঘরের জানালা ভেঙে উইজলি ব্রাদার্সদের উদ্ধার অভিযানের স্মৃতিচিহ্ন দর্শনার্থীদের জন্য রাখা আছে। প্রাইভেট ড্রাইভের বাড়ির পাশেই পার্ক করে রাখা আছে নাইট বাস। আরেক পাশে হ্যাগ্রিডের উড়ন্ত মোটরসাইকেল। হগওয়ার্টস ব্রিজের একটা ভার্সন এখানে দেখতে পাওয়া গেল। এই ব্রিজকে সিরিজজুড়ে নানা আঙ্গিকে আমরা দেখতে পাই। মূলত এই ব্রিজের এতটুকুই শুধু শুটিংয়ের জন্য বানানো, বাকিটা ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের কারসাজি। হঠাৎ দেখি আমার কন্যা ব্রিজটার এমাথা–ওমাথা দৌড়ে বেড়াচ্ছে। তাকে ধরার জন্য আমাকেও ব্রিজটাতে কয়েক চক্কর ঘুরে আসতে হলো।

K0mt1E6.jpg


হগওয়ার্টস এক্সপ্রেসের সামনে লেখক

সিনেমায় ভয়ংকরসদৃশ ড্রাগনকে মুখ দিয়ে আগুনের হলকা ছুটিয়ে তার শিকারের দিকে ধাওয়া করতে অনেকবারই দেখেছি। হ্যারি পটারের চতুর্থ কিস্তি গবলেট অব ফায়ারে ট্রাইউইজার্ড টুর্নামেন্টে হ্যারি ও তার প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও দেখা যায় ড্রাগনের কাছ থেকে স্বর্ণের ডিম ছিনিয়ে আনার জন্য লড়াইয়ে নামতে। ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের কল্যাণে এসব ব্যাপার দেখানো এখন ডালভাত। কিন্তু বাস্তবেও এমন ড্রাগনের তাড়া খেলে কেমন লাগবে! এমনই এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই মেকিং অব হ্যারি পটার দেখতে গিয়ে। এখানে পুরো একটি সেট রয়েছে যেখানে ড্রাগন আগুনের হলকা ছুটিয়ে দর্শকদের দিকে তেড়ে আসে আর তার আশপাশের সবকিছু আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়। এতটাই বাস্তব মনে হচ্ছিল যে, আমরা উপস্থিত সবাই আতঙ্কে চেঁচিয়ে উঠে পিছপা হলাম।

ppsIIdA.jpg


প্রাইভেট ড্রাইভের বাড়ির পাশেই পার্ক করে রাখা আছে এই নাইট বাস

হ্যারি পটারভক্তদের বিখ্যাত ডায়াগন অ্যালির কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। হগওয়ার্টসের শিক্ষার্থীরা তাদের বইপত্তর, ম্যাজিক ওয়ান্ড, ব্রুমস্টিকসহ প্রয়োজনীয় সব জিনিস এখানকার দোকানপাট থেকেই কেনাকাটা করত। উইজলি ব্রাদার্স (ফ্রেড আর জর্জ) পরে এখানেই তাদের জনপ্রিয় দোকান উইজলিস উইজার্ড হুইজেস খুলে বসে। এই দুই ভাইয়ের মস্তিষ্কপ্রসূত মজার মজার সব জিনিস এখানে পাওয়া যেত। ধারণা করা হয়ে থাকে, জে কে রাওলিং স্কটল্যান্ডের এডিনবরার ভিক্টোরিয়া স্ট্রিট থেকে ডায়াগন অ্যালির অনুপ্রেরণা নেন যা পরবর্তী সিনেমায় আমরা দেখতে পাই। এই স্টুডিওতে ডায়াগন অ্যালির সেট তৈরি করা আছে। আছে উইজলি ব্রাদার্সের দোকানটাও। দারুণ মজার অভিজ্ঞতা হলো এই ডায়াগন অ্যালির সেটটা ঘুরে। সৌভাগ্যবশত এডিনবরার সেই রাস্তাটাও এর আগেই দেখে আসার সুযোগ হয়েছিল।

চোখ ধাঁধানো ছিল হগওয়ার্টস ক্যাসেলের খুদে সংস্করণ। ছবিতে এই ক্যাসেলের বিভিন্ন শট নেওয়ার জন্য এই খুদে সংস্করণ ব্যবহার করা হয়েছে। এই ক্যাসেলের ডিটেইলিং এত অসাধারণ তা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। আর্ট আর সেট ডিরেকশনে নিয়োজিত দলটি যে কাজ দেখিয়েছে তা অনবদ্য বললেও কম বলা হবে। নানা রকম আলোয় অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল হগওয়ার্টসকে। রেপ্লিকা দেখে এই বুড়ো বয়সে হগওয়ার্টসে অ্যাডমিশন নেওয়ার পুরোনো বাসনাটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল।

M0m0ufX.jpg


প্রফেসর ডাম্বালডোরের অফিস

স্টুডিওটি ঘুরে হ্যারি পটার সিনেমার নেপথ্যের দারুণ সব তথ্যও জানা যায়। প্রফেসর ডাম্বালডোরের কক্ষে যে বইগুলো দেখা যায় তা ছিল মূলত চামড়ায় মোড়ানো অসংখ্য ব্রিটিশ ফোনবুক। এই সিরিজের ছবিগুলোর জন্য তিন হাজারেরও বেশি ম্যাজিক ওয়ান্ড বানানো হয়েছিল। প্রপ আর কস্টিউম ডিপার্টমেন্ট মিলে পাঁচটা বড়সড় ওয়্যারহাউস মালামাল দিয়ে বোঝাই করে ফেলেছিল।

হ্যারি পটার সিরিজের অন্যতম চমকপ্রদ জায়গা হলো প্ল্যাটফর্ম নাইন অ্যান্ড কোয়ার্টার থ্রি আর হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস। এই স্টুডিওতে হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস ট্রেন আর প্ল্যাটফর্ম দুটোর সন্ধানই পাওয়া গেল। সবচেয়ে বেশি ভিড়ও এই সেটটিকে ঘিরে। মজার ব্যাপার স্টুডিওতে ট্রেনের অংশের শুটিংয়ের স্বাদ নেওয়ার বন্দোবস্ত আছে। আরও আছে ব্রুমস্টিকে চড়ে হগওয়ার্টসে উড়ে বেড়ানোর সুযোগ। কেউ চাইলে ক্যামেরার কারসাজিতে কয়েক মিনিটের এই শুটিং সেরে ভিডিওটি কিনে নিয়ে যেতে পারবেন। হগওয়ার্টসের ওপর এক চক্কর ঘুরে আসার বাসনায় লাইনে দাঁড়িয়ে দেখি বাচ্চাদের ভিড়ে আমিই একমাত্র বুড়ো। লজ্জায় শুটিং বাদ দিয়ে কেটে পড়লাম।

সব শেষে আমরা ঢুকে পড়ি মার্চেন্ডাইজ স্টোর আর সুভ্যেনির শপগুলোতে। স্টুডিওতে এ ধরনের বেশ অনেকগুলো দোকান আছে। কোনো কিছু না কিনে শুধু ঘুরে দেখতেও অনেক সময় লেগে যায়। জিনিসপত্রের দামও প্রচুর। কিন্তু হ্যারিপটারভক্তদের এসবে ভ্রুক্ষেপ নেই। দেদার বিক্রি হচ্ছে সব। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে পুরো স্টুডিওটি ঘুরে দেখলেও ঘোর কাটে না আমার। এদিকে আমার কন্যাও জায়গাটা খুব পছন্দ করে ফেলেছে। কন্যাকে নিয়ে আবার আসব এই আশা নিয়েই জাদুনগরী থেকে ফেরত এলাম। আর মনে মনে ধন্যবাদ দিলাম এই অনবদ্য আধুনিক রূপকথার জননী জে কে রাওলিংকে। কী এক আশ্চর্য ক্ষমতায় তিনি আমার মতো বিশ্বের অজস্র কিশোর-কিশোরীকে জাদু করেছেন, যারা কৈশোরকে অতিক্রম করা সত্ত্বেও আজও তীব্রভাবে মোহাবিষ্ট সেই জাদুর কাঠির ছোঁয়ায়, মজে আছে হ্যারি পটারে!

[FA]pen[/FA] লেখক: কাউসার রুশো
 
ছবিসহ পড়ে খুব ভালো লাগল | সকল পটার ফ্যানের তরফ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ |
 
সেই ছোটবেলার হ্যারি পটারের কথা মনে পড়ে গেল খুব সুন্দর হয়েছে
 

Users who are viewing this thread

Back
Top