What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other গান, বিক্ষোভ, বিপ্লবের বব ডিলান (1 Viewer)

বিশ্বের অসংখ্য সংগীতশিল্পী ও মানবতাবাদীর প্রেরণার উৎস শিল্পী বব ডিলান। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, গায়ক, সংগীত পরিচালক, চিত্রশিল্পী ও লেখক। শিল্পের এসব শাখার চর্চার মাধ্যমে বছরের পর বছর তিনি ফুটিয়েছেন মানবতাবাদ আর যুদ্ধবিরোধী চেতনার ফুল। ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর মাধ্যমে পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিসংগ্রামে। আজ ২৪ মে নোবেলজয়ী বব ডিলানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী।।

1lxHVci.jpg


সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন শিল্পী বব ডিলান! ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারে তাঁর নাম আসার পর বিশ্ববাসী চমকে ওঠে। মার্কিন গীতিকার ও সংগীতশিল্পী বব ডিলানের আগে কোনো গায়ক বা গীতিকারকে সাহিত্যে নোবেল দেওয়া হয়নি। একবার কেবল দার্শনিক হিসেবে দেওয়া হয় বার্ট্রান্ড রাসেলকে, ১৯৫০ সালে।
যে মানুষকে বিশ্ববাসী চেনে গায়ক হিসেবে, তাঁর সাহিত্যে নোবেল জয়ের ঘোষণায় যে সবাই বিস্মিত হবেন, সেটা বুঝেছিলেন আয়োজকেরাও। স্টকহোমে পুরস্কার ঘোষণার সময় সুইডিশ একাডেমির স্থায়ী সচিব সারা ড্যানিয়ুস বলেছিলেন, ‘ডিলানকে বেছে নেওয়া বিস্ময়কর মনে হতে পারে বটে। তবে পেছনে ফিরে তাকালে আপনারা হোমার (গ্রিক কবি) ও সাপফোকেও দেখতে পাবেন। তাঁরা যেসব কাব্য রচনা করেছিলেন, সেসব লেখা হয়েছিল কেবল শোনার ও পরিবেশন করার জন্য, মাঝেমধ্যে যন্ত্রানুষঙ্গে। বব ডিলানও তো সেটাই করেন। তাঁকে পড়াও যায়।

662Fm1r.jpg


বব ডিলান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

১৯৪১ সালের এই দিনে তিনি এসেছিলেন, পৃথিবী তাঁকে পেয়েছে। বব ডিলান নামে পরিচিত হলেও তাঁর প্রকৃত নাম ছিল রবার্ট আলেন জিমারম্যান। সংগীতজগতে প্রবেশের পর নিজের নাম বদলে ফেলেন তিনি।

’ দ্য গার্ডিয়ান লিখেছিল, এর আগে বহুবার নোবেলের মনোনয়নের তালিকায় নাম এলেও সাহিত্যের সবচেয়ে সম্মানজনক এ পুরস্কারের ঘোষণায় ডিলানের নাম ‘বিস্ময়’ হয়েই এসেছে।

আজ ২৪ মে বব ডিলানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪১ সালের এই দিনে তিনি এসেছিলেন, পৃথিবী তাঁকে পেয়েছে। বব ডিলান নামে পরিচিত হলেও তাঁর প্রকৃত নাম ছিল রবার্ট আলেন জিমারম্যান। সংগীতজগতে প্রবেশের পর নিজের নাম বদলে ফেলেন তিনি।

bcBIXCx.jpg


বব ডিলান

বব ডিলান বিশ্বসংগীত ও সংস্কৃতিজগতের এক মহাবিস্ময়। সংগীতকে আশ্রয় করে তিনি খুঁজেছেন মানবতার পথ, গেয়েছেন সাম্যের জয়গান। আমেরিকা থেকে ভিয়েতনাম, পৃথিবীর যে প্রান্তে অন্যায় দেখেছেন, বারবার ফুঁসে উঠেছেন বব। তিনি বলেছেন, ‘আমার বন্দুক নেই, কিন্তু কলম আছে।’
লেখা হয়তো বাহুল্য, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারও তাঁকে খুব একটা তুষ্ট করতে পারেনি। কারণটাও জানা। প্রাপ্তিতে নয়, প্রতিবাদই যেন মানুষটির সব আনন্দের উৎস। আশিতেও তিনি বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সেই তরুণ সময়ের মতোই জ্বলে উঠেছিলেন। প্রকাশ করেছেন নতুন গানের অ্যালবাম—‘রাফ অ্যান্ড রাউডি ওয়েস’। গত বছর হিপহপ শিল্পী জর্জ ফ্লয়েড হত্যা ভীষণভাবে নাড়া দেয় ববকে। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আট বছর পর অ্যালবাম নিয়ে ফিরেছিলেন ডিলান। যে অ্যালবামে প্রায় ১৭ মিনিটের ‘মার্ডার মোস্ট ফাউল’ গানে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যার ঘটনার স্মৃতি রোমন্থন করেন ডিলান। এর আগে ২০১২ সালে ‘টেম্পেস্ট’ ছিল তাঁর শেষ অ্যালবাম।

জন্মদিনে তাঁকে আবার নতুন করে জানি আজ। সংগীতজগতে বব ডিলানের প্রবেশ মাত্র ১০ বছর বয়সে। আত্মজীবনীতে বব ডিলান লিখেছেন, তাঁর দাদা-দাদি জিগম্যান ও আনা জিমারম্যান ১৯০৫ সালে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের কারণে বর্তমান ইউক্রেন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। আর নানা-নানি বেন ও ফ্লোরেন্স স্টোন লিথুয়ানিয়া থেকে ১৯০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান।

lKoKFu9.jpg


১৯৭১ সালে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজনে জর্জ হ্যারিসন ও বব ডিলান

ডিলান কৈশোর থেকেই কবিতা লেখা, পিয়ানো ও গিটার বাজানোয় সিদ্ধহস্ত। এলভিস প্রিসলি, জেরি লি লুইস এবং লিটল রিচার্ডরা ছিলেন তাঁর প্রেরণা। শোনা যায়, হাইস্কুলে পড়ার সময় তো বব ডিলানের জীবনের লক্ষ্যই ছিল লিটল রিচার্ডের দলে যোগ দেওয়া। তরুণ ডিলান ১৯৫৯ সালে ভর্তি হন মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ সময় তাঁকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে লোকজ এবং রকসংগীতের নামজাদা শিল্পী হ্যাঙ্ক উইলিয়ামস, রবার্ট জনসন ও উডি গাথরি। ক্লাসে কম, ক্যাম্পাসের কফি হাউসেই বেশি দেখা যেত তাঁকে। ঠিক এ সময়ই তিনি ‘বব ডিলান’ নাম নেন। অনেকের ধারণা, কবি ডিলান টমাসের নাম থেকে তিনি নিজের নতুন নামটা পছন্দ করেছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ না করেই ১৯৬০ সালে বব ডিলান সংগীতের ক্ষুধা নিয়ে নিউইয়র্কে পাড়ি জমান। সেখানকার কলাম্বিয়া রেকর্ডস প্রকাশ করে তাঁর অ্যালবাম ‘দ্য ফ্রিহুইলিং বব ডিলান’। এই অ্যালবাম বেশ সাড়া ফেলে। এ সময় বব ডিলানের গানে গানে উঠে আসতে থাকে মার্কিন ইতিহাস। উঠে আসে যুদ্ধ, বর্ণবাদ এবং নানা সামাজিক অসংগতির কথাও। বব ডিলান খ্যাতি পেয়ে যান নিজ প্রজন্মের মুখপাত্র হিসেবে। হাতে গিটার আর গলায় ঝোলানো হারমোনিকা যেন ছিল ডিলানের ট্রেডমার্ক।

saZrRh8.jpg


বব ডিলান

সে সময় যাঁদের গান আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনে প্রেরণা জুগিয়েছে, তাঁদের মধ্যে বব ডিলান একজন। ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্টিন লুথার কিংয়ের বক্তৃতার সময় ডিলান ছিলেন পিট সিগার, জোয়ান বায়েজদের সঙ্গে মিছিলের সামনের সারিতে। গানে গানে দাসপ্রথার গল্প বলে বরাবরই নাগরিক অধিকার রক্ষায় তৎপর ছিলেন। প্রবল সমাজসচেতন ডিলান আমেরিকার ভিয়েতনাম যুদ্ধের সমালোচনা করে গান বাঁধেন। তাঁর সাড়া জাগানো গান ‘ব্লোয়িং ইন দ্য উইন্ড’-এর মধ্য দিয়ে প্রতিবাদী সংগীতের প্রতীক হয়ে ওঠেন তিনি।

আমেরিকা থেকে ভিয়েতনাম, পৃথিবীর যে প্রান্তে অন্যায় দেখেছেন, বারবার ফুঁসে উঠেছেন বব। তিনি বলেছেন, ‘আমার বন্দুক নেই, কিন্তু কলম আছে।’

YOo8zQn.jpg


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তহবিল সংগ্রহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মেডিসন স্কয়ারে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে জর্জ হ্যারিসন, বব ডিলান ও লিওন রাসেল, ১ আগস্ট ১৯৭১। ছবি: সংগৃহীত

গানে গানে অনেক আগেই আমাদের দেশে এসেছিলেন ডিলান। তবে বাংলাদেশের অনেক মানুষই তাঁকে চেনেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের জন্য অবদানের কারণে। যুদ্ধের সময় ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের আয়োজিত ঐতিহাসিক কনসার্ট ফর বাংলাদেশ-এ গান করেছিলেন তিনি। ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন তিনি। গেয়েছিলেন ছয়টি গান, ‘মি. ট্যাম্বুরিনম্যান’ থেকে শুরু করে তাঁর লেখা ও সুরারোপিত ৫০ লাইনের বিখ্যাত গান ‘আ হার্ড রেইন ইজ গোননা ফল’। সেদিন বব ডিলানের সঙ্গে গিটার বাজিয়েছিলেন জর্জ হ্যারিসন।

এ দেশে বা দুই বাংলায় পরোক্ষভাবেও এসেছিলেন বব ডিলান। কবীর সুমনের কণ্ঠে ডিলানের অনূদিত ‘কতটা পথ পেরোলে তবে পথিক বলা যায়’ গানটি দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল। এটি সেই ‘ব্লোয়িং ইন দ্য উইন্ড’ থেকে নেওয়া। বব ডিলানের ‘মি. ট্যাম্বুরিন ম্যান’ গানটিরও বাংলা অনুবাদ করে গেয়েছিলেন কবীর সুমন, ‘ও গানওয়ালা’ নামে।

qETuSYS.jpg


কবীর সুমন, সংগৃহীত

কেবল সুমন নন, অঞ্জন দত্তের গানেও উঠে এসেছে তাঁর কথা। অঞ্জনের জনপ্রিয় গান ‘পুরোনো গিটার’-এর সেই লাইন, ‘জন লেননের সোচ্চার ভালোবাসা, বব ডিলানের অভিমান।’ কবীর সুমন ও অঞ্জন দত্ত বিভিন্ন সময়ে ডিলানের ঋণ স্বীকার করেছেন।
সংগীতের বিভিন্ন ধারায় বব ডিলানের অনবদ্য সব রচনার মধ্য দিয়ে বব ডিলান হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তিসম। লোকসংগীত থেকে ব্লুজ, রক, পপ, জ্যাজ এমনকি একালে র‌্যাপ সংগীতাঙ্গনেও রয়েছে তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি। আবার যখন প্রতিবাদের দরকার পড়েছে, তিনি কলম ধরেছেন হাতে, গিটার কোলে মাইক্রোফোনের সামনে দৃঢ়কণ্ঠে গেয়েছেন, ‘হাউ মেনি রোডস মাস্ট আ ম্যান ওয়াক ডাউন...’। কবীর সুমনের ‘বিক্ষোভে বিপ্লবে তোমাকে চাই’ গানের মতোই তাঁকে পাওয়া।

oqPlwn8.jpg


২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারে বব ডিলানের নাম আসার পর বিশ্ববাসী চমকে ওঠে।
 
আমার প্রিয় একজন আর্টিস্ট। tambourine man গানটা এখনো প্রায়ই শুনি মাঝে মাঝে
 
বাংলায় জীবন মুখী গানের শুরুটা এই মানুষটির থেকে অনুপ্রাণিত 🙏
 

Users who are viewing this thread

Back
Top