maruftamimauthor
Member
ভর দুপুরে বাড়ীর ছাদে বসে চিৎকার করে কান্না করছে রাসেল। তার কান্না দেখলে যে কেউ ভাব্বে হয়ত তার কাছের কেউ মারা গিয়েছে।
......
দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে ছাদে এসে হাটাচলা করা এক প্রকার নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে রিফাতের।
প্রতিদিনের মত আজও সে এসেছে ছাদে সময় কাটানোর জন্য।
ছাদে আসার পর সে শুনতে পায় কেউ কান্না করছে।
কে কান্না করছে দেখার জন্য ছাদের আশেপাশে তাকিয়ে এক কোণায় দেখতে পায় তার বন্ধু রাসেল বসে কান্না করছে।
......
রিফাত এবং রাসেল দুজনে ছোটবেলার বন্ধু। পড়াশোনার জন্য তারা দুজনে এই শহরে একই বাসায় ভাড়া থাকে কিন্তু তাদের পরিবার অন্য শহরে বসবাস করে।
...
রাসেল'কে এভাবে কান্না করতে দেখে রিফাত কিছুটা অবাক হয় কারণ তার বন্ধু এর আগে কখনও এভাবে কান্না করে নাই।
তাই আর দেরী না করে দ্রুত সে রাসেল এর কাছে যায় এবং জিজ্ঞাসা করে " কী হল এভাবে কান্না করছিস কেন?"
হঠাৎ রিফাতের ডাকে রাসেল কিছুটা চমকে উঠে একবার পিছন ফিরে তাকায় কিন্তু কোনো কথা না বলে আবারও কান্না করতে থাকে।
...
রাসেল কোনো উত্তর না দেওয়ায় এবার রিফাত কিছুটা ধমকের সূরেই বলল-
রিফাতঃ- কী হল কিছু না বলে এভাবে কান্না করে যাচ্ছিস কেন?
রাসেলঃ- বন্ধু আমার সব শেষ হয়ে গিয়েছে।
রিফাতঃ- মানে কী হয়েছে? তোর বাড়ীর সবাই ভালো আছেত? গতকাল না কথা বললি সবার সাথে।
রাসেলঃ- না বাড়ীর কারও কিছু হয় নাই।
রিফাতঃ- তাহলে?
রাসেলঃ- স্নেহা!!!
(বলে রাখা ভালো স্নেহা হল রাসেল এর প্রেমিকা। তারা প্রায় একবছর হল প্রেম করছে এবং এই বিষয়ে রিফাত সবকিছুই জানে।)
রিফাতঃ- কী স্নেহার কিছু হয়েছে?
রাসেলঃ- হ্যা।
রিফাতঃ- কী হয়েছে?
রাসেলঃ- বন্ধু আমি এখন কী করব বল?
রিফাতঃ- আরে আমাকে কিছু না বললে আমি বুঝব কীভাবে যে কী হয়েছে?
রাসেলঃ- স্নেহার আজকে বিয়ে।
রিফাতঃ- কী বলিস এসব?
রাসেলঃ- হ্যা রে স্নেহার আজকে বিয়ে।
রিফাতঃ- এ কীভাবে সম্ভব? স্নেহা'কে ত তুই ভালোবাসিস আর সেও তোকে ভালোবাসে তাহলে বিয়ে হচ্ছে কীভাবে?
রাসেলঃ- জানি না ওর মা-বাবা ওকে বিয়ে দিচ্ছে আর সেও বিয়েতে রাজি হয়েছে।
রিফাতঃ- তাহলে সে যে তোকে ভালোবাসত অনেক। তোকে ফোনে না পেলে আমাকে ফোন দিয়ে তোর খবর নিত আর সে কীভাবে পারে তোকে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করতে?
রাসেলঃ- আমি জানি না কিছুই সে আমাকে এ বিষয়ে কিছু বলে নাই। আমি তার বান্ধবীর কাছ থেকে শুনেছি।
রিফাতঃ- আসলে আমি কিছু বুঝতে পারছি না স্নেহা কেন তোকে এভাবে ঠকাবে।
রাসেলঃ- হ্যা আমি এখন কী করব??
রিফাতঃ- থাক ভাই তুই কষ্ট পাস না স্নেহা চলে গিয়েছে ত কী হয়েছে? আরও কত মেয়ে পাবি জীবনে। স্নেহা তোর জন্য ছিল না তাই ওর অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তুই মন খারাপ করিস না।
রাসেলঃ- আমি স্নেহার জন্য মন খারাপ করছি না রে।
রিফাতঃ- তাহলে এভাবে কান্না করছিস কেন?
রাসেলঃ- স্নেহা আমাকে একটিবারও জানালো না যে তার বিয়ে আজকে। একটু দাওয়াতও দিল না।
রিফাতঃ- মানে?
রাসেলঃ- স্নেহার বিয়েতে কত রকমের ভালো খাবার রান্না হবে তুই আর আমি গিয়ে সেগুলো মজা করে খাব কিন্তু সে আমাকে একটিবার দাওয়াতও করল না।
রিফাতঃ- তার মানে তুই স্নেহার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে এজন্য এতক্ষণ কান্না করছিলি না বড়ং কান্না করছিলি তোকে বিয়েতে দাওয়াত দেয় নাই এই কারণে?
রাসেলঃ- হুম তা নয় ত কী? প্রেমিকা একটা গেলে আরও পাব কিন্তু বিয়ের দাওয়াত একটা গেলে আর পাব না। কিন্তু স্নেহা আমাকে একটিবার দাওয়াতও করল না,ভেবেছে আমি বেকার তাই কোনো উপহার দিতে পারব না। ওরে আমি বেকার বলে কী আমার মন নেই? দরকার হলে ধার করে সেই টাকা দিয়ে উপহার নিয়ে যেতাম যদি একটিবার দাওয়াত দিত। কিন্তু সে আমাকে এভাবে ঠকিয়ে দিল।
অতঃপর......
এই ভর দুপুরে এলাকার ফাকা রাস্তা দিয়ে দুজন অল্প বয়সী যুবক দৌড়ে চলেছে।
সামনে একজন দৌড়াচ্ছে এবং তার পিছনে অন্যজন জুতা হাতে নিয়ে দৌড়াচ্ছে।
পিছনের জন জুতা হাতে নিয়ে ঠিক দৌড়াচ্ছে না সামনের জন'কে তাড়া করছে।
......
এতক্ষণে ঠিকই ধরেছেন রাসেলের মুখ থেকে এমন কথা শোনার পর রিফাত আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। তার পায়ের জুতা খুলে নিয়ে এখন রাসেল'কে পুরো এলাকা তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
সমাপ্ত...
(গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। ভূলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,ধন্যবাদ।)
গল্পের নামঃ- অস্থির প্রেমিক
লেখকঃ- মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ (তামিম)
Copyright:- February 07,2022 at 02:50 AM.
Maruf Tamim (Author).
......
দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে ছাদে এসে হাটাচলা করা এক প্রকার নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে রিফাতের।
প্রতিদিনের মত আজও সে এসেছে ছাদে সময় কাটানোর জন্য।
ছাদে আসার পর সে শুনতে পায় কেউ কান্না করছে।
কে কান্না করছে দেখার জন্য ছাদের আশেপাশে তাকিয়ে এক কোণায় দেখতে পায় তার বন্ধু রাসেল বসে কান্না করছে।
......
রিফাত এবং রাসেল দুজনে ছোটবেলার বন্ধু। পড়াশোনার জন্য তারা দুজনে এই শহরে একই বাসায় ভাড়া থাকে কিন্তু তাদের পরিবার অন্য শহরে বসবাস করে।
...
রাসেল'কে এভাবে কান্না করতে দেখে রিফাত কিছুটা অবাক হয় কারণ তার বন্ধু এর আগে কখনও এভাবে কান্না করে নাই।
তাই আর দেরী না করে দ্রুত সে রাসেল এর কাছে যায় এবং জিজ্ঞাসা করে " কী হল এভাবে কান্না করছিস কেন?"
হঠাৎ রিফাতের ডাকে রাসেল কিছুটা চমকে উঠে একবার পিছন ফিরে তাকায় কিন্তু কোনো কথা না বলে আবারও কান্না করতে থাকে।
...
রাসেল কোনো উত্তর না দেওয়ায় এবার রিফাত কিছুটা ধমকের সূরেই বলল-
রিফাতঃ- কী হল কিছু না বলে এভাবে কান্না করে যাচ্ছিস কেন?
রাসেলঃ- বন্ধু আমার সব শেষ হয়ে গিয়েছে।
রিফাতঃ- মানে কী হয়েছে? তোর বাড়ীর সবাই ভালো আছেত? গতকাল না কথা বললি সবার সাথে।
রাসেলঃ- না বাড়ীর কারও কিছু হয় নাই।
রিফাতঃ- তাহলে?
রাসেলঃ- স্নেহা!!!
(বলে রাখা ভালো স্নেহা হল রাসেল এর প্রেমিকা। তারা প্রায় একবছর হল প্রেম করছে এবং এই বিষয়ে রিফাত সবকিছুই জানে।)
রিফাতঃ- কী স্নেহার কিছু হয়েছে?
রাসেলঃ- হ্যা।
রিফাতঃ- কী হয়েছে?
রাসেলঃ- বন্ধু আমি এখন কী করব বল?
রিফাতঃ- আরে আমাকে কিছু না বললে আমি বুঝব কীভাবে যে কী হয়েছে?
রাসেলঃ- স্নেহার আজকে বিয়ে।
রিফাতঃ- কী বলিস এসব?
রাসেলঃ- হ্যা রে স্নেহার আজকে বিয়ে।
রিফাতঃ- এ কীভাবে সম্ভব? স্নেহা'কে ত তুই ভালোবাসিস আর সেও তোকে ভালোবাসে তাহলে বিয়ে হচ্ছে কীভাবে?
রাসেলঃ- জানি না ওর মা-বাবা ওকে বিয়ে দিচ্ছে আর সেও বিয়েতে রাজি হয়েছে।
রিফাতঃ- তাহলে সে যে তোকে ভালোবাসত অনেক। তোকে ফোনে না পেলে আমাকে ফোন দিয়ে তোর খবর নিত আর সে কীভাবে পারে তোকে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করতে?
রাসেলঃ- আমি জানি না কিছুই সে আমাকে এ বিষয়ে কিছু বলে নাই। আমি তার বান্ধবীর কাছ থেকে শুনেছি।
রিফাতঃ- আসলে আমি কিছু বুঝতে পারছি না স্নেহা কেন তোকে এভাবে ঠকাবে।
রাসেলঃ- হ্যা আমি এখন কী করব??
রিফাতঃ- থাক ভাই তুই কষ্ট পাস না স্নেহা চলে গিয়েছে ত কী হয়েছে? আরও কত মেয়ে পাবি জীবনে। স্নেহা তোর জন্য ছিল না তাই ওর অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তুই মন খারাপ করিস না।
রাসেলঃ- আমি স্নেহার জন্য মন খারাপ করছি না রে।
রিফাতঃ- তাহলে এভাবে কান্না করছিস কেন?
রাসেলঃ- স্নেহা আমাকে একটিবারও জানালো না যে তার বিয়ে আজকে। একটু দাওয়াতও দিল না।
রিফাতঃ- মানে?
রাসেলঃ- স্নেহার বিয়েতে কত রকমের ভালো খাবার রান্না হবে তুই আর আমি গিয়ে সেগুলো মজা করে খাব কিন্তু সে আমাকে একটিবার দাওয়াতও করল না।
রিফাতঃ- তার মানে তুই স্নেহার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে এজন্য এতক্ষণ কান্না করছিলি না বড়ং কান্না করছিলি তোকে বিয়েতে দাওয়াত দেয় নাই এই কারণে?
রাসেলঃ- হুম তা নয় ত কী? প্রেমিকা একটা গেলে আরও পাব কিন্তু বিয়ের দাওয়াত একটা গেলে আর পাব না। কিন্তু স্নেহা আমাকে একটিবার দাওয়াতও করল না,ভেবেছে আমি বেকার তাই কোনো উপহার দিতে পারব না। ওরে আমি বেকার বলে কী আমার মন নেই? দরকার হলে ধার করে সেই টাকা দিয়ে উপহার নিয়ে যেতাম যদি একটিবার দাওয়াত দিত। কিন্তু সে আমাকে এভাবে ঠকিয়ে দিল।
অতঃপর......
এই ভর দুপুরে এলাকার ফাকা রাস্তা দিয়ে দুজন অল্প বয়সী যুবক দৌড়ে চলেছে।
সামনে একজন দৌড়াচ্ছে এবং তার পিছনে অন্যজন জুতা হাতে নিয়ে দৌড়াচ্ছে।
পিছনের জন জুতা হাতে নিয়ে ঠিক দৌড়াচ্ছে না সামনের জন'কে তাড়া করছে।
......
এতক্ষণে ঠিকই ধরেছেন রাসেলের মুখ থেকে এমন কথা শোনার পর রিফাত আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। তার পায়ের জুতা খুলে নিয়ে এখন রাসেল'কে পুরো এলাকা তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
সমাপ্ত...
(গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। ভূলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,ধন্যবাদ।)
গল্পের নামঃ- অস্থির প্রেমিক
লেখকঃ- মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ (তামিম)
Copyright:- February 07,2022 at 02:50 AM.
Maruf Tamim (Author).