maruftamimauthor
Member
গল্পের নাম: HAPPY HOUNTED NEW YEAR
লেখক: মোঃ আব্দুল্লাহ-হিল-মারুফ তামিম
......
রাত ১১টা ৫৯ মিনিট..
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তামিম। হঠাত কারও পায়ের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তার।
অবাক করার বিষয় এই বাড়িতে তামিম ছাড়া আর কেউ থাকে না। চাকরির সুবাদে অফিস থেকে এই বাড়িটি তাকে উপহার দেওয়া হয়েছে।
বাড়ীটি কিছুটা পুরাতন হয়ে গিয়েছে কিন্তু থাকার জন্য উপযোগী।
তাছাড়া এই বাড়ীটি তামিমের খুব পছন্দ হয়েছে কারণ এই জায়গাটি শহর থেকে একটু বাইরের দিকে তাই জনগণ এবং কোলাহলমুক্ত।
বরারবরের মতো তামিম শান্ত পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে তাই তার এই বাড়ীটি পছন্দ হয়েছে।
আজকে ডিসেম্বর মাসের ৩১তারিখ আর আজকেই তামিম এই বাড়ীতে নতুন এসেছে। আগামীকাল থেকে শুরু হবে নতুন একটি বছর এবং নতুন কাজের চাপ।
সারাদিন ঘর গুছিয়ে রাত্রে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
এখন কারও পায়ের শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায় তাই বিছানা থেকে নেমে ঘরের বাইরে যায় দেখার জন্য কে এতো রাত্রে হাটছে।
ভালোভাবে খেয়াল করে শুনতে পায় এই শব্দটি বাড়ির ছাদ থেকে আসছে।
এতো রাত্রে ছাদে কে আসবে তা ভেবে পাচ্ছে না আবার ভাবছে হয়ত চোর এসেছে। তাই ঘরের দরজা খুলে ছাদের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। ছাদে যেয়ে দেখে ছাদের দরজা লাগানো কিন্তু ভিতর থেকে শব্দটি এখনও পাওয়া যাচ্ছে।
তামিম সাথে করে ছাদের দরজার চাবি নিয়ে এসেছিল তাই সে দ্রুত তালা খুলে ছাদে প্রবেশ করে। ছাদে প্রবেশ করার পর কাউকে দেখতে পেল না। অনেক খোজাখুজির পর কাউকে দেখতে না পেয়ে ছাদ থেকে ফিরে আস্তে যেয়ে টং করে শব্দ হয়।
এই শব্দ শুনে তামিম কেপে উঠে কিন্তু পরে তার মনে হল তার বাড়ীর সামনে একটি বড় দেওয়াল ঘড়ি রয়েছে যেটা প্রতি ঘন্টা অন্তর অন্তর টং করে শব্দ করে জানান দেয় সময়ের।
ঘড়ির শব্দ থেমে যাওয়ার পর সে পা বাড়ায় ঘরে ফিরে আসার জন্য। আর তখনই ছাদের দরজা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়। এটি দেখে তামিম ভয় পায় এবং কয়েক পা পিছিয়ে যায়।
তখন তার মনে হল কোনো কিছুর সাথে তার পিঠ স্পর্শ লেগেছে এবং সে অনুভব করল অনেক ঠান্ডা কিছু।
এমনিতেই শীতের রাত তার উপরে এমন ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ পেলে যে কারও শরীর শিহরিত হবে।
তামিম বিষয়টি দেখার জন্য পিছন ফিরে তাকায় এবং যা দেখে তার জন্য সে কখনও প্রস্তুত ছিল না।
সে দেখতে পায় একটি মেয়ে সাদা কাপড় পরে দাঁড়িয়ে আছে যার লম্বা চুলগুলো সামনের দিকে ছেড়ে দেওয়া এবং চেহারার এক পাশ ঢেকে রাখা।
চেহারার যে বাকী অংশটুকু দেখা যাচ্ছে তা খুবই ভয়ংকর এবং বিদ্ঘুটে।
মেয়েটির এমন রূপ দেখে তামিম ভয়ে দৌড় দেয় কিন্তু ছাদের দরজা যে আগে থেকেই বন্ধ হয়ে আছে। সে অনেক চেষ্টা করছে খোলার জন্য কিন্তু দরজা খুলতে পারছে না।
এদিকে মেয়েটি তার খুব কাছে চলে এসেছে এতোটা কাছে এসেছে যে মেয়েটির শরীরের শীতল তাপ অনুভব করা যাচ্ছে।
তামিম কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটি তার ভয়ংকর রূপ আরও তীব্রভাবে ধারণ করে এবং তার উপর হামলে পড়ে।
পরদিন সকালে...
আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ আসে। তারা এসে দেখে একজন যুবকের লাশ বাড়ীর সামনে যে বড় দেওয়াল ঘড়িটি রয়েছে তার ঘন্টার কাটার সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয় ছেলেটি যে ঘন্টার কাটার সাথে ঝুলে রয়েছে সেটি ১২টার দিকে স্থির হয়ে আছে।
অনেক চেষ্টার পর পুলিশ ছেলেটির লাশ নামাতে সক্ষম হয়। তারা ছেলেটির ঘর খোজাখুজি করার পর অবশেষে জানতে পারে ছেলেটির নাম তামিম।
তামিমের শরীরে খুজে দেখছে তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে। খোজাখুজির এক পর্যায়ে দারোগা সাহেব লক্ষ্য করে তামিমের বুকের উপর কেউ নখের আঁচড় দিয়ে কিছু একটা লিখে রেখে গিয়েছে খুব ছোট করে।
আঁচড়ের জায়গাটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় সেখানে লেখা রয়েছে- "HAPPY HOUNTED NEW YEAR"
থানার দারোগা সাহেব লেখাটি পড়ে বুঝতে পারল তামিমকে হত্যা করা হয়েছে এবং এটি কোনো স্বাভাবিক হত্যা নয়।
তিনি লাশটিকে থানায় নিয়ে যেতে বলে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তখন তার সাথে থাকা কনস্টেবল জিজ্ঞাসা করে-
কনস্টেবল: স্যার ঐ ছেলেটা এভাবে আত্মহত্যা করার কারণ কী?
দারোগা সাহেব: কে বলেছে সে আত্মহত্যা করেছে? এটি একটি খুন।
কনস্টেবল: কীভাবে হতে পারে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
দারোগা সাহেব: আঘাতের চিহ্ন নেই কিন্তু তার বুকে নখের আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে এবং সেখানে লেখা " HAPPY HOUNTED NEW YEAR" এই লেখাটিই বুঝিয়ে দিচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
কনস্টেবল: তাহলে'ত স্যার এর ভিতরে কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।
দারোগা সাহেব: হুম কিন্তু কিছু রহস্য আছে যা উন্মোচন হয় না সেগুলোকে নিয়তির উপর ছেড়ে দিতে হয়। ঠিক এই কেসটিকেও নিয়তির উপর ছেড়ে দিলাম।
এই কথা বলে তিনি গাড়িতে উঠে চলে যান থানার উদ্দেশ্যে।
ঠিক তেমনই এই হত্যার রহস্য সবার কাছে অজানা রয়ে গেল।
সমাপ্ত...
Copyright: January 01,2020 at 02:34 AM.
Maruf Tamim (Author).
লেখক: মোঃ আব্দুল্লাহ-হিল-মারুফ তামিম
......
রাত ১১টা ৫৯ মিনিট..
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তামিম। হঠাত কারও পায়ের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তার।
অবাক করার বিষয় এই বাড়িতে তামিম ছাড়া আর কেউ থাকে না। চাকরির সুবাদে অফিস থেকে এই বাড়িটি তাকে উপহার দেওয়া হয়েছে।
বাড়ীটি কিছুটা পুরাতন হয়ে গিয়েছে কিন্তু থাকার জন্য উপযোগী।
তাছাড়া এই বাড়ীটি তামিমের খুব পছন্দ হয়েছে কারণ এই জায়গাটি শহর থেকে একটু বাইরের দিকে তাই জনগণ এবং কোলাহলমুক্ত।
বরারবরের মতো তামিম শান্ত পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে তাই তার এই বাড়ীটি পছন্দ হয়েছে।
আজকে ডিসেম্বর মাসের ৩১তারিখ আর আজকেই তামিম এই বাড়ীতে নতুন এসেছে। আগামীকাল থেকে শুরু হবে নতুন একটি বছর এবং নতুন কাজের চাপ।
সারাদিন ঘর গুছিয়ে রাত্রে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
এখন কারও পায়ের শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায় তাই বিছানা থেকে নেমে ঘরের বাইরে যায় দেখার জন্য কে এতো রাত্রে হাটছে।
ভালোভাবে খেয়াল করে শুনতে পায় এই শব্দটি বাড়ির ছাদ থেকে আসছে।
এতো রাত্রে ছাদে কে আসবে তা ভেবে পাচ্ছে না আবার ভাবছে হয়ত চোর এসেছে। তাই ঘরের দরজা খুলে ছাদের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। ছাদে যেয়ে দেখে ছাদের দরজা লাগানো কিন্তু ভিতর থেকে শব্দটি এখনও পাওয়া যাচ্ছে।
তামিম সাথে করে ছাদের দরজার চাবি নিয়ে এসেছিল তাই সে দ্রুত তালা খুলে ছাদে প্রবেশ করে। ছাদে প্রবেশ করার পর কাউকে দেখতে পেল না। অনেক খোজাখুজির পর কাউকে দেখতে না পেয়ে ছাদ থেকে ফিরে আস্তে যেয়ে টং করে শব্দ হয়।
এই শব্দ শুনে তামিম কেপে উঠে কিন্তু পরে তার মনে হল তার বাড়ীর সামনে একটি বড় দেওয়াল ঘড়ি রয়েছে যেটা প্রতি ঘন্টা অন্তর অন্তর টং করে শব্দ করে জানান দেয় সময়ের।
ঘড়ির শব্দ থেমে যাওয়ার পর সে পা বাড়ায় ঘরে ফিরে আসার জন্য। আর তখনই ছাদের দরজা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়। এটি দেখে তামিম ভয় পায় এবং কয়েক পা পিছিয়ে যায়।
তখন তার মনে হল কোনো কিছুর সাথে তার পিঠ স্পর্শ লেগেছে এবং সে অনুভব করল অনেক ঠান্ডা কিছু।
এমনিতেই শীতের রাত তার উপরে এমন ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ পেলে যে কারও শরীর শিহরিত হবে।
তামিম বিষয়টি দেখার জন্য পিছন ফিরে তাকায় এবং যা দেখে তার জন্য সে কখনও প্রস্তুত ছিল না।
সে দেখতে পায় একটি মেয়ে সাদা কাপড় পরে দাঁড়িয়ে আছে যার লম্বা চুলগুলো সামনের দিকে ছেড়ে দেওয়া এবং চেহারার এক পাশ ঢেকে রাখা।
চেহারার যে বাকী অংশটুকু দেখা যাচ্ছে তা খুবই ভয়ংকর এবং বিদ্ঘুটে।
মেয়েটির এমন রূপ দেখে তামিম ভয়ে দৌড় দেয় কিন্তু ছাদের দরজা যে আগে থেকেই বন্ধ হয়ে আছে। সে অনেক চেষ্টা করছে খোলার জন্য কিন্তু দরজা খুলতে পারছে না।
এদিকে মেয়েটি তার খুব কাছে চলে এসেছে এতোটা কাছে এসেছে যে মেয়েটির শরীরের শীতল তাপ অনুভব করা যাচ্ছে।
তামিম কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটি তার ভয়ংকর রূপ আরও তীব্রভাবে ধারণ করে এবং তার উপর হামলে পড়ে।
পরদিন সকালে...
আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ আসে। তারা এসে দেখে একজন যুবকের লাশ বাড়ীর সামনে যে বড় দেওয়াল ঘড়িটি রয়েছে তার ঘন্টার কাটার সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয় ছেলেটি যে ঘন্টার কাটার সাথে ঝুলে রয়েছে সেটি ১২টার দিকে স্থির হয়ে আছে।
অনেক চেষ্টার পর পুলিশ ছেলেটির লাশ নামাতে সক্ষম হয়। তারা ছেলেটির ঘর খোজাখুজি করার পর অবশেষে জানতে পারে ছেলেটির নাম তামিম।
তামিমের শরীরে খুজে দেখছে তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে। খোজাখুজির এক পর্যায়ে দারোগা সাহেব লক্ষ্য করে তামিমের বুকের উপর কেউ নখের আঁচড় দিয়ে কিছু একটা লিখে রেখে গিয়েছে খুব ছোট করে।
আঁচড়ের জায়গাটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় সেখানে লেখা রয়েছে- "HAPPY HOUNTED NEW YEAR"
থানার দারোগা সাহেব লেখাটি পড়ে বুঝতে পারল তামিমকে হত্যা করা হয়েছে এবং এটি কোনো স্বাভাবিক হত্যা নয়।
তিনি লাশটিকে থানায় নিয়ে যেতে বলে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তখন তার সাথে থাকা কনস্টেবল জিজ্ঞাসা করে-
কনস্টেবল: স্যার ঐ ছেলেটা এভাবে আত্মহত্যা করার কারণ কী?
দারোগা সাহেব: কে বলেছে সে আত্মহত্যা করেছে? এটি একটি খুন।
কনস্টেবল: কীভাবে হতে পারে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
দারোগা সাহেব: আঘাতের চিহ্ন নেই কিন্তু তার বুকে নখের আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে এবং সেখানে লেখা " HAPPY HOUNTED NEW YEAR" এই লেখাটিই বুঝিয়ে দিচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
কনস্টেবল: তাহলে'ত স্যার এর ভিতরে কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।
দারোগা সাহেব: হুম কিন্তু কিছু রহস্য আছে যা উন্মোচন হয় না সেগুলোকে নিয়তির উপর ছেড়ে দিতে হয়। ঠিক এই কেসটিকেও নিয়তির উপর ছেড়ে দিলাম।
এই কথা বলে তিনি গাড়িতে উঠে চলে যান থানার উদ্দেশ্যে।
ঠিক তেমনই এই হত্যার রহস্য সবার কাছে অজানা রয়ে গেল।
সমাপ্ত...
Copyright: January 01,2020 at 02:34 AM.
Maruf Tamim (Author).