maruftamimauthor
Member
গল্পের নাম: ভাঙা খাট
(একটি শিক্ষণীয় গল্প)
লেখক: মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
**********************************
কোনো এক উচ্চবিত্ত পরিবারের স্বামী-স্ত্রী এর মাঝে কথা হচ্ছে। তাদের কথোপকথন এর মূল বিষয় হল একটি পুরাতন ভাঙা খাটকে নিয়ে। যা তাদের এখন কোনো কাজে লাগবে না। তাই তারা এই খাটটিকে জঞ্জাল মনে করে বাইরে ফেলে দিতে চাইছেন। স্ত্রীর কথায় তার স্বামীও মত দিলেন এবং তাদের বাড়ির কর্মচারীদেরকে আদেশ দিলেন ভাঙা খাটটিকে ফেলে দিয়ে আসার জন্য।
কর্মচারীরা তাদের কর্তার আদেশ অনুযায়ী সেই খাটটিকে নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে এক রাস্তার পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসে।
...
সেই রাস্তার থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে ছোট একটি বস্তি। সেই বস্তির মধ্যে কোনো এক নিম্নবিত্ত পরিবারের স্বামী-স্ত্রী এর মাঝে কথা হচ্ছে। কিছুদিন আগে সেই পরিবারের কর্তা তার চাকরি হারান। তারপর থেকে তাদের সংসারে টানাপড়েন লেগেছে। তাই তার স্ত্রী তাকে কিছু করার জন্য বলছেন কারণ তাদের ছোট ছেলে-মেয়েরা না খেয়ে রয়েছে।
স্ত্রীর কথানুযায়ী সেই ঘরের কর্তা বেরিয়ে পড়লেন নতুন কাজ খোঁজার জন্য।
....
সারাদিন চলে যায় রাত আসে কিন্তু বাড়ির কর্তা এখনও বাড়ি ফিরল না। তাই তার স্ত্রী এখন চিন্তায় আছেন আর ভাবছেন সকালে এভাবে তাকে না বলাটা ভালো ছিল এখন কোথায় গিয়েছেন। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী বাড়িতে ফিরলেন আর তার হাতে রয়েছে বাজারের ব্যাগ।
স্বামীর হাতে বাজারের ব্যাগ দেখে স্ত্রী জিজ্ঞেস করে "তুমি এগুলো কোথায় পেয়েছ?"
স্ত্রীর হাতে ব্যাগ দিয়ে বাড়ির কর্তা হাসিমুখে বললেন "সে এক লম্বা ইতিহাস আস্তে আস্তে বলছি, একটু ধৈর্য নিয়ে শুনতে হবে।"
এরপর তিনি বলতে শুরু করলেন-
" সকালে যখন আমি তোমার সাথে কথা শেষ করে বাইরে বেরিয়ে যাই কাজ খুঁজতে। তখন আমাদের বস্তির মাথায় যে বড় রাস্তা সেখানে যেয়ে দেখি রাস্তার পাশের ডাস্টবিনে কেউ একটা খাট ফেলে দিয়ে গিয়েছে। আমি সেই খাটটির কাছে যাই আর ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে দেখি সেটিকে। কিছু কিছু জায়গাতে ভাঙা আছে। আমার মাথায় তখন একটা বুদ্ধি আসে। আমি দৌড়ে আমাদের বস্তিতে কাঠমিস্ত্রির দোকান থেকে তাদের মাল জিনিস চেয়ে নিয়ে আসি। এরপর আমি খাটটিকে রাস্তার একপাশে নিয়ে যাই এবং খাটের সব অংশগুলো আলাদা করলাম। ছোটবেলায় কিছুদিন কাঠমিস্ত্রির কাজ করেছি তাই সেই পুরাতন অভিজ্ঞতা দিয়ে সুন্দরভাবে বানিয়ে ফেললাম দুইটি জুতা রাখার তাক। তারপর সেই তাক দুইটি আবার কাঠমিস্ত্রীর দোকানে বিক্রি করি এক হাজার টাকায়। আর সেই টাকা এক রিক্সার মালিকের কাছে জমা দিয়ে রিক্সা নিয়ে আসি। সেই রিক্সা চালিয়ে যা টাকা পেলাম তাই দিয়ে এই বাজার করলাম। এখন থেকে আমি রিক্সা চালাব নিয়মিত আমাদের আর সমস্যা হবে না।"
সবশুনে স্ত্রীর মুখে হাসি ফুটে উঠল।
বিঃদ্রঃ বাংলায় একটি প্রবাদ আছে "একের জঞ্জাল অন্যের সম্পদ" আপনি বা আমি যা জঞ্জাল মনে করে ফেলে দেই সেটা অন্য কারও কাছে সম্পদ হয়ে যায়। সেটা আমরা সবাই দেখে থাকি এর আর কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া লাগবে না।
সমাপ্ত...
(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। সবাই ভালো থাকবেন। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।)
Copyright: July 05,2019 at 4:59 PM
Md. Abdulla-hill-Maruf Tamim
Powered by: Maruf Tamim's Story Book.
(একটি শিক্ষণীয় গল্প)
লেখক: মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
**********************************
কোনো এক উচ্চবিত্ত পরিবারের স্বামী-স্ত্রী এর মাঝে কথা হচ্ছে। তাদের কথোপকথন এর মূল বিষয় হল একটি পুরাতন ভাঙা খাটকে নিয়ে। যা তাদের এখন কোনো কাজে লাগবে না। তাই তারা এই খাটটিকে জঞ্জাল মনে করে বাইরে ফেলে দিতে চাইছেন। স্ত্রীর কথায় তার স্বামীও মত দিলেন এবং তাদের বাড়ির কর্মচারীদেরকে আদেশ দিলেন ভাঙা খাটটিকে ফেলে দিয়ে আসার জন্য।
কর্মচারীরা তাদের কর্তার আদেশ অনুযায়ী সেই খাটটিকে নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে এক রাস্তার পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসে।
...
সেই রাস্তার থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে ছোট একটি বস্তি। সেই বস্তির মধ্যে কোনো এক নিম্নবিত্ত পরিবারের স্বামী-স্ত্রী এর মাঝে কথা হচ্ছে। কিছুদিন আগে সেই পরিবারের কর্তা তার চাকরি হারান। তারপর থেকে তাদের সংসারে টানাপড়েন লেগেছে। তাই তার স্ত্রী তাকে কিছু করার জন্য বলছেন কারণ তাদের ছোট ছেলে-মেয়েরা না খেয়ে রয়েছে।
স্ত্রীর কথানুযায়ী সেই ঘরের কর্তা বেরিয়ে পড়লেন নতুন কাজ খোঁজার জন্য।
....
সারাদিন চলে যায় রাত আসে কিন্তু বাড়ির কর্তা এখনও বাড়ি ফিরল না। তাই তার স্ত্রী এখন চিন্তায় আছেন আর ভাবছেন সকালে এভাবে তাকে না বলাটা ভালো ছিল এখন কোথায় গিয়েছেন। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী বাড়িতে ফিরলেন আর তার হাতে রয়েছে বাজারের ব্যাগ।
স্বামীর হাতে বাজারের ব্যাগ দেখে স্ত্রী জিজ্ঞেস করে "তুমি এগুলো কোথায় পেয়েছ?"
স্ত্রীর হাতে ব্যাগ দিয়ে বাড়ির কর্তা হাসিমুখে বললেন "সে এক লম্বা ইতিহাস আস্তে আস্তে বলছি, একটু ধৈর্য নিয়ে শুনতে হবে।"
এরপর তিনি বলতে শুরু করলেন-
" সকালে যখন আমি তোমার সাথে কথা শেষ করে বাইরে বেরিয়ে যাই কাজ খুঁজতে। তখন আমাদের বস্তির মাথায় যে বড় রাস্তা সেখানে যেয়ে দেখি রাস্তার পাশের ডাস্টবিনে কেউ একটা খাট ফেলে দিয়ে গিয়েছে। আমি সেই খাটটির কাছে যাই আর ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে দেখি সেটিকে। কিছু কিছু জায়গাতে ভাঙা আছে। আমার মাথায় তখন একটা বুদ্ধি আসে। আমি দৌড়ে আমাদের বস্তিতে কাঠমিস্ত্রির দোকান থেকে তাদের মাল জিনিস চেয়ে নিয়ে আসি। এরপর আমি খাটটিকে রাস্তার একপাশে নিয়ে যাই এবং খাটের সব অংশগুলো আলাদা করলাম। ছোটবেলায় কিছুদিন কাঠমিস্ত্রির কাজ করেছি তাই সেই পুরাতন অভিজ্ঞতা দিয়ে সুন্দরভাবে বানিয়ে ফেললাম দুইটি জুতা রাখার তাক। তারপর সেই তাক দুইটি আবার কাঠমিস্ত্রীর দোকানে বিক্রি করি এক হাজার টাকায়। আর সেই টাকা এক রিক্সার মালিকের কাছে জমা দিয়ে রিক্সা নিয়ে আসি। সেই রিক্সা চালিয়ে যা টাকা পেলাম তাই দিয়ে এই বাজার করলাম। এখন থেকে আমি রিক্সা চালাব নিয়মিত আমাদের আর সমস্যা হবে না।"
সবশুনে স্ত্রীর মুখে হাসি ফুটে উঠল।
বিঃদ্রঃ বাংলায় একটি প্রবাদ আছে "একের জঞ্জাল অন্যের সম্পদ" আপনি বা আমি যা জঞ্জাল মনে করে ফেলে দেই সেটা অন্য কারও কাছে সম্পদ হয়ে যায়। সেটা আমরা সবাই দেখে থাকি এর আর কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া লাগবে না।
সমাপ্ত...
(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। সবাই ভালো থাকবেন। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।)
Copyright: July 05,2019 at 4:59 PM
Md. Abdulla-hill-Maruf Tamim
Powered by: Maruf Tamim's Story Book.