দেহেরও আছে বিশেষ ভাষা। হোক না তা নীরব। তবু এ ভাষা বোঝার আশা জলাঞ্জলি দেওয়ার দরকার নেই। সর্বজনীন এ ভাষা বোঝার জন্য কোনো বিশেষ দেশে জন্ম নেওয়ারও দরকার পড়ে না। দেহ বা চোখ দেখে সেটা পড়তে জানলেই হয়।
কখনো কখনো শরীরের ভঙ্গি বলে দেয় অনেক কথা। মডেল: নাহিদ ও মিথিলা
ঠোঁট কি অজান্তেই অবলেহন করছেন
হতে পারে আপনি মধ্যাহ্নভোজের দিবাস্বপ্ন দেখছেন। লোভনীয় কোনো খাবার দেখেও ঠোঁট নাড়ান অনেকে। তবে ঠোঁটের এই একই ভাষা দিয়ে বোঝাতে পারে অন্য অর্থও। আপনার পাশে যদি থাকে প্রিয় সঙ্গী, তাহলে সেটা হতে পারে কামনার ভাষা। রোমান্টিক সঙ্গীর কথা ভেবে ঠোঁট হতে পারে জলে ভেজা পদ্মের মতো।
করমর্দন
হাত মেলানোর সঙ্গে আছে প্রথম পরিচয়ের সম্পর্ক। এই এক করমর্দনের মাধ্যমে কোনো কথা না বলেও কারও সঙ্গে ‘হাই, হ্যালো’ ধরনের কথা সারা যায়। উষ্ণ দৃঢ় করমর্দন হলো এক আত্মবিশ্বাসী দৃঢ়চেতা মানুষের লক্ষণ। আবার দুর্বলভাবে আলতো ছুঁয়ে হাত মেলানো মানে হলো নিজের ওপর আপনার বিশ্বাস কম আর মানুষ হিসেবেও অনিশ্চিত। করমর্দনে দ্রুত হাত ছেড়ে দিলেন মানে আপনি বেশ লাজুক।
করমর্দনে বোঝা যায় ব্যক্তিত্ব, ছবি: সংগৃহীত
মাথা নাড়ানোও একটা ভঙ্গি
কথোপকথনের সময় মাথা ওপর–নিচ করা মানে আপনি এই কথায় সম্মত আর বেশ আগ্রহ নিয়ে শুনছেন। কথা শুনে মাথা নোয়ানোটাও দক্ষতার বিষয়। কারণ, একাধারে মাথা নুইয়ে থাকার অর্থ আপনি অধস্তন। প্রেমিক–প্রেমিকা বলুন আর কঠিন কোনো ‘নেগোসিয়েশন’, দক্ষভাবে মাথা নাড়াতে পারলে আপনাকে আর হারায় কে!
দেহভঙ্গি
সবকিছু যে ঠিকঠাক চলছে না, সেটা মানুষের একা বসে থাকা দেখলেও বোঝা যায়। কাঁধ দুটো নামিয়ে গা ছাড়া ভঙ্গিতে থাকলে বোঝা যায় বেশ দুশ্চিন্তায় আছেন আর মন ভালো নেই।
ঋজু ভঙ্গিতে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছেন মানে আপনি আত্মবিশ্বাসী আর লক্ষ্যভেদী মানুষ। লম্বা হয়ে দাঁড়াতে সমস্যা হলে ডাক্তারের উপদেশ নিতেই পারেন। তবে মনে রাখবেন, কাঁধ ছেড়ে দাঁড়ানো মানেই আপনার আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে।
হাসি হাসি রাশি
মন ভালো করা হাসি কী সুমধুর। কারও দিকে তাকিয়ে হাসলেন আর তখন সেই সংকেত চলে গেল তার মুখের পেশিগুলোতে। এই হাসি মগজের সেই অংশকে খবর দেয়, যা সুখকেন্দ্র আর এতে পরস্পরের সংযোগ বাড়ে। হাসি বড় সংক্রামক।
কোনো কথা না বলেও যে অনেক কথা বলা যায়, সেটা নিশ্চয় জানতেন। আরেকবার মনে হলো নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নিলেন। খারাপ কী!
হাসলে শরীর ও মন ভালো থাকে। মডেল: মাশিয়াত ও তৃণ
মুখ ছুঁয়ে চুল নাড়ছেন
এক গোছা চুল পড়েছে অলসভাবে চিবুক ছুঁয়ে। নয়তো মাথা নিচু করে চুল হাতের আঙুলে পেঁচিয়ে চলেছেন আর দৃষ্টি অপলক। নিজেই বুঝতে পারবেন, এটা কখনো আবেদনের, আবার অনেক সময় ফ্লার্টিংয়ের ইশারা। বিশেষ কারও দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাও হতে পারে।
স্থির দৃষ্টি মানে মিশ্র অনুভূতি
যার সঙ্গে কথা বলছেন, তার সঙ্গে যদি বিশ্বাসের সম্পর্ক হয়, তাহলে তার দিকে চোখ রেখে কথা বলবেন। এতে অপর পক্ষের বিশ্বাস হবে আরও মজবুত। কিন্তু অপরিচিত কারও প্রতি এমন স্থির দৃষ্টির অর্থ হতে পারে হুমকি। ছলছল চোখ মানে এখুনি বুকের মধ্যে বৃষ্টি নামবে, সেটা আর কে না জানে? রক্তাক্ত লাল চোখও অনেক কথা বলে দেয়।
[FA]pen[/FA] লেখক: ডা. শুভাগত চৌধুরী