What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review একটি ডিলিউশনাল নাটক ‘সব চরিত্র বাস্তব’ (1 Viewer)

uR3JbqF.jpg


আমরা যারা গল্প লিখি কিংবা পড়ি তারা কি কখনো ভেবে দেখেছি এখানকার চরিত্রগুলো যদি কোনো প্যারালাল ডাইমেনশনে সত্য হিসেবে আবির্ভূত হয় তাহলে কেমন হতো?

গৌতম কৈরী এবার ঈদে সে রকমই একটা গল্প নিয়ে বানিয়েছেন নাটক ‘সব চরিত্র বাস্তব’।

৩৭ মিনিটের এই নাটকের গল্পের প্রধান চরিত্র সজীব আহসান। টানা চারটি বেস্ট সেলার উপন্যাস উপহার দিয়ে যিনি পাঠক এবং প্রকাশক মহলে বেশ সমাদৃত হয়ে উঠেছেন। নতুন একটি কমপ্লিকেটেড উপন্যাস লিখতে গিয়ে তিনি একটা পর্যায়ে চরিত্রের পরিণতি ঠিক করতে গিয়ে দ্বিধায় ভুগতে শুরু করেন। একসময় পড়ে যান রাইটার্স ব্লকে।

1fqEQhD.jpg


এই রাইটার্স ব্লকে থাকাবস্থায় তার কাছে এসে উপস্থিত হন ‘পুষ্প’ (ওই উপন্যাসের নায়িকা) নামের একটা স্টেরিওটাইপ মেলোড্রামাটিক চরিত্র (মেলোড্রামা শব্দকে নেগেটিভ অর্থ ধরে নিলে ভুল করবেন)। এই চরিত্রের উপস্থিতি লেখকের জীবনকে দুর্বিষহ গড়ে তোলে। একের পর এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে শুরু করেন।

রাজিব একই সাথে ওই চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছিলেন আবার প্রভাব কাটাতে চেষ্টাও করছিলেন। সব মিলিয়ে এই যে নিজের উদ্ভুত চরিত্রের গোলকধাঁধায় নিজের আটকে পড়ে যাওয়া তা থেকে তিনি কি মুক্তি পাবেন নাকি শেষ হয়ে যাবেন নিজের অজান্তেই তা জানতে আপনাকে দেখতে হবে এই নাটক।

আলফা আই-এর নিবেদনে এবং শাহরিয়ার শাকিলের প্রযোজনায় এই নাটকের গল্পটি লিখেছেন সামান্তা সৌমি। গল্প ভালোই। তবে দুয়েকটা ফ্যাক্ট রিয়্যালিটিকে টাচ করতে পারেনি। একজন বেস্ট সেলার ঔপন্যাসিককে কেন কোনো প্রকাশক প্রভাবিত করতে চাইবেন সেটা বড় প্রশ্ন। আবার লেখক যে পুষ্প দ্বারা প্রভাবিত হতে চেয়েও নিজের মানবিকতাবোধ থেকে প্রকাশককে বাঁচাতে চলে যান সেটা দারুণ ব্যাপার।

চিত্রনাট্য আর পরিচালনা গৌতম কৈরির। চিত্রনাট্যের সবকিছু ভালোই যাচ্ছিল, কেয়ারটেকার চরিত্রের দু-একটা ডায়ালগ ছাড়া। ‘বড় বাড়ি’ বলে ফেলেছেন বাসা বলতে গিয়ে। যেখানে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছিল এপার্টমেন্ট ধাঁচের বাড়ি ওটা। আর ঘড়িতে ৩:৫০ দেখানোর পরের দৃশ্যে ঘড়ির কাঁটা ৩:৪৫-এ চলে আসাটা চোখে পড়ছিল ওয়াইড শটে টেক নেওয়ায়।

VP7aKfA.jpg


গৌতম কৈরী বাংলাদেশের প্রথম সারির টিভি নাটক নির্মাতা। তার কাজ নিয়ে নতুনভাবে বলার কিছুই নেই। এই নাটকের ৯০ ভাগ শটই ইনডোরের। সেখানে বেশিরভাগ সময়েই স্টিল শট দেখা গেছে। কোথাও কোথাও ক্লোজ শট নিচ্ছিলেন, দারুণ ভারসাম্য দেখা যায়। লাইটিংয়ের আধিক্য ছিল। ইনডোরের শুটিং বেশি হওয়ায় লাইটটা অপরিহার্য ছিল, কিন্তু এমন একটা অবস্থায় চলে গিয়েছে লাইটিংয়ে সকাল-রাত পার্থক্য কম বোঝা যাচ্ছিলো।

গৌতম কৈরী বেশিরভাগ সময়ই নয়েজসহ সাউন্ড নিয়েছেন। সেটা একটা ন্যাচারাল ব্যাপার রাখছিলো সবসময়েই। আর পুরো নাটকজুড়েই হালকা ধাঁচের বিজিএম শোনা যায়। সেটা মনোরোম করে তুলেছে স্ক্রিনপ্লে’কে।

সজীব আহসান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাহসান। তার ডায়ালগ ডেলিভারি দারুণ। আর দাড়িতে একটা সূক্ষ্ম পাকা রং তাকে লেখক চরিত্রে মানাতে সাহায্য করেছে।

পুষ্প চরিত্রে তানজিন তিশার ভূমিকাও বেশ সাবলীল। মেলোড্রামাটিক ধাঁচটা ধারণ করতে পেরেছেন নিজের ভিতরে। দীপ্তিময় দীপ্তি, সায়েম সামাদ, শামীম, লাভলী আক্তারদের অভিনয়ও ইন্টারেস্টিং।

এই নাটকের উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো ইনট্রো মিউজিক, ক্রেডিট নেইমের ডিজাইন আর নাটকের লগো। তিনটা জায়গায়ই সাধারণ কাজ করেও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা গেছে।

গৌতম কৈরী ট্রেন্ডি নাটকের বাইরে নীরবে নিজের মতো করে কাজ করে চলা একজন নির্মাতা। ‘সব চরিত্র বাস্তব’ এক কথায় অসাধারণ বলা চলে না। কিন্তু এই ধাঁচের কাজ খুব বেশি চোখে পড়ে না। ডিলিউশন তৈরির কাজগুলোয় যে অতিরঞ্জন সচরাচর চোখে পড়ে গৌতম কৈরি তার বাইরে হিয়ে ভিন্নতা আনার যে চেষ্টা চালিয়েছেন তার জন্য সাধুবাদ জানাই।

* লিখেছেন: সাইদ খান সাগর
 

Users who are viewing this thread

Back
Top