What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review এ গল্প অভিনেতা টনি ডায়েসের (1 Viewer)

Tbx6xZ5.jpg


টনি ডায়েস…♥ এক অভিনেতা ছিলেন।

আমরা যারা নব্বই দশকে শৈশব-কৈশোর পার করেছি তাদের সময়টাকে রঙিন করে দিতে যে অভিনেতাদের অবদান ছিল টনি ডায়েস তাদেরই একজন।

এমন কোনো অভিনেতা কী আছে যে কথা বললে মনে হয় আপনি ঠিক কবিতা শুনছেন। হুম, টনি ডায়েস হাতের কাছেই আছেন। তিনি কথা বললে মনে হতো কবিতা আবৃত্তি শুনছি। ভরাট কণ্ঠে সংলাপ বলতেন। অভিনয়ের সাথে সাথে দর্শক হয়ে মিলে যায় কবিতার আমেজও। একে বলে একের ভেতর দুই। এ হচ্ছে অভিনেতার সৌন্দর্য।

I4tnA95.jpg


মঞ্চ কাঁপানো অভিনয়শিল্পীরা আগে টিভি নাটকে রাজত্ব করতেন। শেখার জন্য যে শক্ত প্ল্যাটফর্ম লাগে এবং তাকে চর্চা করতে হয় আগের অভিনয়শিল্পীরা তার প্রমাণ দিয়ে গেছেন। টনি ডায়েস ১৯৮৯ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। মঞ্চের কাজ তাকে দিয়েছে অভিনয়ের শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম।

টনি ডায়েস প্রায় চার শতাধিক নাটক-টেলিফিল্মে কাজ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোবারকের ঈদ, গাওগেরামের কিসসা, প্রেরণা, লোহার চুড়ি, খড়ের পুতুল, যত দূরে যাই, প্রায়শ্চিত্ত, দূরের মানুষ, কাছের মানুষ, গল্প, আংশিক আকাশ, তোমাতেই, আমার আছো তুমি, ভালোবাসা ছুঁয়ে গেলে, কথা দিলাম, অনুরাগের ছোঁয়া, অন্তরায়, অভিমানে অনুভবে, গার্লফ্রেন্ড, হঠাৎ দেখা, কাছের মানুষ, শেষ চিঠির পরে, পাশাপাশি, নিঃশব্দে, রজনীগন্ধা, রোদেলা আকাশে মেঘ, যে আছে অনুভবে, এই যে দুনিয়া, বিপরীত, সেই তুমি, একটি মুক্তা, স্বপ্নের মেঘবালিকা, স্বপ্ন সুন্দরের খোঁজে, তথাপি, বেদনার রং নীল, নীলা নামের মেয়েটি, সমুদ্র কন্যা, রৌদ্র ছায়ার খেলা, আমি তুমি সে, হঠাৎ দেখা, ভূতের গলি, চমচম, ছায়াবৃতা ইত্যাদি।

আমি পারব না কিছুতে

তোমাকে ভুলে যেতে

মন যদি চায় ভুলে যেও

যেখানে যতদূরে থাকো না তুমি

আমার ভালোবাসা নিও

এস ডি রুবেলের জনপ্রিয় এ গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল টনি ডায়েস-শ্রাবন্তী অভিনীত ‘রৌদ্র ছায়ার খেলা’ নাটকে। গানটি নাটকে ব্যবহারের পর দুজনকে নিয়ে সাড়া পড়ে যায়। তখন নাটকে প্রচুর গান করা হতো এবং সব জনপ্রিয় গান ছিল। আর্টিস্ট পারফেক্ট হওয়ার কারণে গানগুলোর ভিডিও সমানভাবে জনপ্রিয় হতো। টনি ডায়েসের নাটকে গানের ব্যবহার আরো ছিল।

নাটক বা টেলিফিল্মে বৈচিত্র্য থাকাটা একজন অভিনয়শিল্পীর জন্য খুবই জরুরি। টনি ডায়েসের মধ্যে ছিল। তিনি সিরিয়াস গল্পের নাটকে কাজ করেছেন তেমনি থ্রিলার, কমেডি, ট্র্যাজিক নাটকেও কাজ করেছেন। ২০০০ পরবর্তী ঈদের অত্যন্ত জনপ্রিয় নাটক ‘মোবারকের ঈদ’-এ নির্মল বিনোদন উপহার দিয়েছিলেন কমেডিতে। মোহাম্মদ হোসেন জেমীর নাটক। তিনি তখন টিভি নাটকে একপ্রকার রাজত্ব করে যাচ্ছিলেন। একই পরিচালকের ‘লোহার চুড়ি’ নাটকে টনি ছিলেন থ্রিলার আবহে। সমু চৌধুরীর সাথে তার থ্রিলিং স্টোরির অভিনয় অনবদ্য ছিল।

bg2xA1h.jpg


একইভাবে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত ‘গাঁও গেরামের কিসসা’ নাটকেও হাসিয়েছেন। হাসির পাশাপাশি নাটকের শেষে করুণ পরিণতিতে কাঁদিয়েছেনও। গ্রাম-শহর দুই প্রেক্ষাপটে একজন অভিনয়শিল্পীকে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে হয় এবং তিনি পেরেছেন। প্রেমের নাটক/টেলিফিল্ম অনেক আছে তার। রিঙ্গো পরিচালিত শমী কায়সারের বিপরীতে ‘প্রেরণা’ টেলিফিল্মটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।

পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী ইন্দ্রানী হালদার টনি ডায়েসের বিপরীতে অভিনয় করেন ‘প্রায়শ্চিত্ত’ নাটকে। টনি তখন কোথায় পৌঁছে গিয়েছিলেন সে কথা বলাই বাহুল্য। কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘তিন পুরুষ’ নাটকে কাজ করেছেন। সম্প্রতি অভিনেত্রী রিচি সোলায়মানের সাথে ‘ওপারে তুমি’, ‘অনাহুত’ নামে নিউইয়র্কে চিত্রায়িত দুটি নাটকে টনি ডায়েসকে দেখা গেছে। এখনও অভিনয়ের নেশা তাঁর আছে।

বড়পর্দায় টনি ডায়েস ছিলেন ৩টি ছবিতে— মেঘের কোলে রোদ, পৌষ মাসের পিরিতি ও রূপকথার রাজকন্যার গল্প। ‘মেঘের কোলে রোদ’ তার সেরা ছবি। পপির বিপরীতে ছিলেন। ছবিটিতে ‘সব কথা বলে না হৃদয়’ নামে জনপ্রিয় গান আছে তাঁর।

একজন আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও টনি ডায়েসের ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। ভরাট কণ্ঠে তাঁর আবৃত্তি মন ভরিয়ে দেয়। ইউটিউবে ‘DiasEbiz’ নামে আবৃত্তির চ্যানেল আছে টনির এবং অনেক কবিতার দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপনা আছে।

২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবেসে বিয়ে করেছেন আরেক অভিনেত্রী প্রিয়া ডায়েসকে। টনি চাইতেন ভালোবাসা দিবসে বিয়ে করবেন। অনেক অপেক্ষার পর তার জীবনে আসে প্রিয়া ডায়েস। বিয়ে হয় তাদের এবং টনির পরিবার প্রিয়াকে খুব আপন করে নিয়েছিল। তাদের মেয়ে অহনা ডায়েস।

f6n6Pcn.jpg


প্রিয়া ডায়েস ও টনি ডায়েস

২০১৫ সাল থেকে আমেরিকান হোন্ডা মটর কোম্পানিতে ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনে কাজ করছেন টনি ডায়েস। নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বসবাস করছেন। একজন সফল তারকা হবার পাশাপাশি সফল ব্যক্তিত্বও তিনি। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন বিদেশ বিভুঁইয়ে। আমেরিকা প্রবাসী হয়েও টনি ডায়েস প্রতিনিয়ত দেশের খোঁজখবর রাখেন। তার ফেসবুক প্রোফাইলে নিয়মিত দেশের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে পোস্ট দেখা যায়। এতে বোঝা যায় তিনি দেশের প্রেক্ষাপট নিয়ে সর্বদা সচেতন। এমনকি দেশ থেকে বিভিন্ন তারকা তার সঙ্গে দেখা করতে যান এবং তাদের আপ্যায়নের খবরও পাওয়া যায়। এটা অনেক কম তারকার ক্ষেত্রেই দেখা যায়।

আমরা যারা নব্বই দশকে বেড়ে উঠেছি একজন টনি ডায়েসকে শুধুমাত্র তাদের পক্ষেই মন থেকে অনুভব করা সম্ভব। আর আজকের দিনের জন্য একজন টনি ডায়েস অভিনয়জগতে অনেকের জন্য আদর্শ। যারা ভালো অভিনয়শিল্পী হতে চায় মানসম্মত কাজে তাদের জন্য টনি ডায়েস উদাহরণ।

* লিখেছেন: রহমান মতি
 
Good actor মেঘের কোলে রোদ কয়_বার দেখছি আমার নিজেরো মনে নাই
 

Users who are viewing this thread

Back
Top