রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দুই বাসের চাপায় হাত হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনকে সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ঢামেক হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান শাহীন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় রাজীবের মাথার সামনে ও পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। মস্তিস্কের সামনের অংশেও তিনি আঘাত পেয়েছেন। সোমবার রাতে হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
রোববারই রাজীবের আরেক খালা জাহানারা বেগম বলেছিলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে এ ক’দিন চোখই খুলছিল না রাজীব। তবে এখন চোখ খুলছে।
গত ৩ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে গা ঘেঁষে অতিক্রম করে। এ সময় দুই বাসের প্রবল চাপে গাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা রাজীবের ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আর্তনাদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। এতে তার মাথায়ও প্রচণ্ড আঘাত লাগে।
দুর্ঘটনার পর তাকে প্রথমে শমরিতা হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। পরে ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। তিতুমীর কলেজে স্নাতকে ভর্তি হওয়ার পর যাত্রাবাড়ীতে একটি মেসে ভাড়া থেকে পড়াশোনা করতেন রাজীব। পাশাপাশি একটি কম্পিউটারের দোকানেও কাজ করতেন তিনি। নিজের পাশাপাশি ছোট দুই ভাইয়ের খরচও চালাতে হতো তাকে।