আমজনতার নিকট অনেক গুলবাজি তো শুনলেন ডার্ক-ওয়েব সম্পর্কে... এবার একজন "যথেষ্ট" নিয়মিত ব্যাবহারকারির দৃষ্টি থেকে কিছু শুনুনঃ
প্রথমে, আপনার প্রশ্নের একটা ছোট্ট উত্তরঃ
সাধারণ ব্রাউজার ব্যাবহার করে আপনি অনায়াসে প্রবেশ করতে পারেন -> সার্ফেস ওয়েব;
সাধারণ ব্রাউজার দিয়েই তবে সাইট কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে (রেজিস্ট্রেশন, পেমেন্ট, রেফারেল ইত্যাদি মাধ্যমে) প্রবেশ করতে পারেন -> ডিপ ওয়েব;
সাধারণ ব্রাউজার এক্সেস করতে অক্ষম, স্পেশালাইজড্ ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করতে হয় এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে আলাদা অপারেটিং সিস্টেম এবং/অথবা হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হয় -> ডার্ক ওয়েব;
ডার্ক-ওয়েব ব্রাউজ করার সবচেয়ে সুপরিচিত মাধ্যম হলো টর ব্রাউজার, টর ব্রাউজার যে মাধ্যমে আপনাকে ইন্টারনেটে কানেক্ট করে তাকে বলে অনিয়ন রাউটিং। এই অনিয়ন রাউটিং প্রযুক্তি ডেভেলপ করা হয় অ্যামেরিকান Naval Research Laboratory তে, এটি এমন ভাবে তৈরি যাতে করে নেটওয়ার্ক রিকুয়েস্ট কোন আইপি থেকে এসেছে তা বোঝা না যায়।
তৈরির উদ্দেশ্য মিলিটারি কমিউনিকেশনের জন্য হলেও পরে রেন্ডমাইজেশনের (যাতে অনিয়ন মানেই মিলিটারি না বুঝায়) সুবিধার্থে এই প্রজেক্ট ওপেন সোর্স করে দেয়া হয়। ওপেন সোর্স হওয়ার পর একাধিক প্রতিষ্ঠান এটি মেইনটেইন করার দায়িত্ব নেয়, এই ধারাবাহিকতায় পরে এককভাবে The Tor Project, Inc. প্রতিষ্ঠিত হয়। অনিয়ন রাউটিং থেকে একে টর নেটওয়ার্ক নাম দেয়া হয়, কারণ বর্তমান ভার্সনে ডার্কওয়েবের পাশাপাশি ক্লিয়ারনেটও ব্রাউজ করা যায়।
যাই হোক, ফিরে আসি আমার মূল কথায়ঃ
ডার্কওয়েব শুধু খারাপ লোকেদের যায়গা নয়, এমনকি তুলনামূলক ভাবে ক্লিয়ারনেটে ডার্কওয়েবের তুলনায় কয়েক হাজারগুণ বেশি বেআইনি কাজ হয়।
আপনার যদি খারাপ উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে ডার্ক ওয়েবে আপনার অভিজ্ঞতাটা হবে অনেকটা এরকম-
>- আপনি ইলিগ্যাল ড্রাগ কিংবা কন্টেন্ট কিনতে চান?
>- খুব সহজেই সামান্য কয়েকটা গুগল সার্চে অনেক ডার্ক-ওয়েব লিঙ্ক পাবেন।
>- সেখানে গিয়ে টাকা দিবেন, আপনার অর্ডার পরের মাসের ১২ তারিখ আসবে।
>- খুব ভালো
>- অপেক্ষা করেন...
>- অপেক্ষা করেন...
>- অপেক্ষা করতেই থাকেন, কিন্তু আপনার ডেলিভারি আর পৌছবেনা।
হ্যাঁ, ডার্কওয়েবের সব ড্র্যাগ ট্রাফেকিং, হিটম্যান হায়ার করা, ব্লা ব্লা ইত্যাদি ওয়েবসাইটের ৯৯.৯% ই ফেইক, যা কিছু অরিজিনাল আছে সেগুলোও ঘনঘন এড্রেস চেঞ্জ করে কেননা বিভিন্ন দেশের LEA তাদের পিছনে লেগেই থাকে।
কিছু মানুষের ফ্যাক্ট-চেক না করেই সবকিছু গিলে নেয়ার বদঅভ্যাস আছে, তার উপর আনাড়ি ক্লিকবেইটি ব্লগারদের আর মিডিয়ার ভুল উপস্থাপনায় সবকিছু আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায়। এই জটিলতার সুযোগ নিয়েই অনেক ইমপোস্টার সাইটের তৈরি হয় এবং অনেকটা ফিশিং নেটের মতো সময়ে সময়ে কিছু আবা* পাবলিক এসব সাইটে ধরা পড়ে আর সাইট ক্রিয়েটরদের পকেট ভারি করে, এটা আসলেই ভালো বিজনেস।
তো, আমার মতে ডার্কনেট আসলে কি...
ডার্কনেট হলো জীবনের নিরাপত্তা প্রদানকারী একটি নেটওয়ার্ক, বাক স্বাধীনতা নেই এমন দেশের মানুষদের জীবনের ঝুঁকি ছাড়া প্রতিবাদের মাধ্যম এই ডার্কনেট। বিভিন্ন দেশের সরকার কিংবা বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কুকর্ম প্রচার করার একমাত্র নিরাপদ পন্থাও এই ডার্কনেট। ডার্কনেটের বদৌলতেই জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ (উইকিলিক্স), স্নোডেনের মতো মানুষেরা সাধারণ জনতাকে তাদের রাষ্ট্রের অনৈতিক কাজ সম্পর্কে অবহিত করতে পেরেছে।
আজকের ডাটা-খোর কোম্পানিগুলো থেকে নিজের গোপন তথ্য লুকাতে গেলে টর নেটওয়ার্কের তুলনা হয়না।
আমি আরও কিছু পয়েন্ট তুল ধরতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু এখানের মেজরিটিই সেগুলো ভুলভাবে নিবেন বলে বাদ দিলাম। তবে আমার পুরো উত্তরের উদ্দেশ্য একটাই, আপনাকে বুঝানো যে ডার্কওয়েব ভয় পাওয়ার যায়গা নয়, ভয়কে জয় করার যায়গা।
প্রথমে, আপনার প্রশ্নের একটা ছোট্ট উত্তরঃ
সাধারণ ব্রাউজার ব্যাবহার করে আপনি অনায়াসে প্রবেশ করতে পারেন -> সার্ফেস ওয়েব;
সাধারণ ব্রাউজার দিয়েই তবে সাইট কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে (রেজিস্ট্রেশন, পেমেন্ট, রেফারেল ইত্যাদি মাধ্যমে) প্রবেশ করতে পারেন -> ডিপ ওয়েব;
সাধারণ ব্রাউজার এক্সেস করতে অক্ষম, স্পেশালাইজড্ ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করতে হয় এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে আলাদা অপারেটিং সিস্টেম এবং/অথবা হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হয় -> ডার্ক ওয়েব;
ডার্ক-ওয়েব ব্রাউজ করার সবচেয়ে সুপরিচিত মাধ্যম হলো টর ব্রাউজার, টর ব্রাউজার যে মাধ্যমে আপনাকে ইন্টারনেটে কানেক্ট করে তাকে বলে অনিয়ন রাউটিং। এই অনিয়ন রাউটিং প্রযুক্তি ডেভেলপ করা হয় অ্যামেরিকান Naval Research Laboratory তে, এটি এমন ভাবে তৈরি যাতে করে নেটওয়ার্ক রিকুয়েস্ট কোন আইপি থেকে এসেছে তা বোঝা না যায়।
তৈরির উদ্দেশ্য মিলিটারি কমিউনিকেশনের জন্য হলেও পরে রেন্ডমাইজেশনের (যাতে অনিয়ন মানেই মিলিটারি না বুঝায়) সুবিধার্থে এই প্রজেক্ট ওপেন সোর্স করে দেয়া হয়। ওপেন সোর্স হওয়ার পর একাধিক প্রতিষ্ঠান এটি মেইনটেইন করার দায়িত্ব নেয়, এই ধারাবাহিকতায় পরে এককভাবে The Tor Project, Inc. প্রতিষ্ঠিত হয়। অনিয়ন রাউটিং থেকে একে টর নেটওয়ার্ক নাম দেয়া হয়, কারণ বর্তমান ভার্সনে ডার্কওয়েবের পাশাপাশি ক্লিয়ারনেটও ব্রাউজ করা যায়।
যাই হোক, ফিরে আসি আমার মূল কথায়ঃ
ডার্কওয়েব শুধু খারাপ লোকেদের যায়গা নয়, এমনকি তুলনামূলক ভাবে ক্লিয়ারনেটে ডার্কওয়েবের তুলনায় কয়েক হাজারগুণ বেশি বেআইনি কাজ হয়।
আপনার যদি খারাপ উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে ডার্ক ওয়েবে আপনার অভিজ্ঞতাটা হবে অনেকটা এরকম-
>- আপনি ইলিগ্যাল ড্রাগ কিংবা কন্টেন্ট কিনতে চান?
>- খুব সহজেই সামান্য কয়েকটা গুগল সার্চে অনেক ডার্ক-ওয়েব লিঙ্ক পাবেন।
>- সেখানে গিয়ে টাকা দিবেন, আপনার অর্ডার পরের মাসের ১২ তারিখ আসবে।
>- খুব ভালো
>- অপেক্ষা করেন...
>- অপেক্ষা করেন...
>- অপেক্ষা করতেই থাকেন, কিন্তু আপনার ডেলিভারি আর পৌছবেনা।
হ্যাঁ, ডার্কওয়েবের সব ড্র্যাগ ট্রাফেকিং, হিটম্যান হায়ার করা, ব্লা ব্লা ইত্যাদি ওয়েবসাইটের ৯৯.৯% ই ফেইক, যা কিছু অরিজিনাল আছে সেগুলোও ঘনঘন এড্রেস চেঞ্জ করে কেননা বিভিন্ন দেশের LEA তাদের পিছনে লেগেই থাকে।
কিছু মানুষের ফ্যাক্ট-চেক না করেই সবকিছু গিলে নেয়ার বদঅভ্যাস আছে, তার উপর আনাড়ি ক্লিকবেইটি ব্লগারদের আর মিডিয়ার ভুল উপস্থাপনায় সবকিছু আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায়। এই জটিলতার সুযোগ নিয়েই অনেক ইমপোস্টার সাইটের তৈরি হয় এবং অনেকটা ফিশিং নেটের মতো সময়ে সময়ে কিছু আবা* পাবলিক এসব সাইটে ধরা পড়ে আর সাইট ক্রিয়েটরদের পকেট ভারি করে, এটা আসলেই ভালো বিজনেস।
ভালো পয়েন্ট, কিন্তু এই ০.১% এর ৯৯%-ই প্রাইভেট সাইট। অর্থাৎ স্পেসিফিক অনুমতি ছাড়া আপনি সেগুলোতে প্রবেশ করতেই পারবেননা, তার উপর এসব সাইট খুঁজে পাওয়া কতটা দুঃসাধ্য তা বুঝাতে "Needle in the hay stack" প্রবাদটিও যথেষ্ট নয়।কিন্তু শাকিল, ০.১% খারাপ সাইট মানেওতো অনেক আহামরি অবস্থা, সেটার কি হবে?
তো, আমার মতে ডার্কনেট আসলে কি...
ডার্কনেট হলো জীবনের নিরাপত্তা প্রদানকারী একটি নেটওয়ার্ক, বাক স্বাধীনতা নেই এমন দেশের মানুষদের জীবনের ঝুঁকি ছাড়া প্রতিবাদের মাধ্যম এই ডার্কনেট। বিভিন্ন দেশের সরকার কিংবা বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কুকর্ম প্রচার করার একমাত্র নিরাপদ পন্থাও এই ডার্কনেট। ডার্কনেটের বদৌলতেই জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ (উইকিলিক্স), স্নোডেনের মতো মানুষেরা সাধারণ জনতাকে তাদের রাষ্ট্রের অনৈতিক কাজ সম্পর্কে অবহিত করতে পেরেছে।
আজকের ডাটা-খোর কোম্পানিগুলো থেকে নিজের গোপন তথ্য লুকাতে গেলে টর নেটওয়ার্কের তুলনা হয়না।
আমি আরও কিছু পয়েন্ট তুল ধরতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু এখানের মেজরিটিই সেগুলো ভুলভাবে নিবেন বলে বাদ দিলাম। তবে আমার পুরো উত্তরের উদ্দেশ্য একটাই, আপনাকে বুঝানো যে ডার্কওয়েব ভয় পাওয়ার যায়গা নয়, ভয়কে জয় করার যায়গা।